ফিচার | সাতক্ষীরার মাছ | হোয়াইট গোল্ড অব বাংলাদেশ (১ম পর্ব) | ১০% @btm-school
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একেবারে শেষ সীমান্তের জেলা হচ্ছে সাতক্ষীরা। সীমান্ত ঘেঁষা এই জেলার ওপারেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গ। সাতক্ষীরা জেলাটি মূলত একটা কৃষি প্রধান অঞ্চল। দেশের রাজধানী ঢাকা শহর থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। ঢাকা থেকে এতদূরে এবং এই অঞ্চলে প্রাকৃতিক গ্যাসের লাইন না যাওয়ায় সাতক্ষীরা অঞ্চলে তেমন কোন বড় মিল-ফ্যাক্টরী গড়ে ওঠেনি। এছাড়াও সারাদেশের রেল সংযোগের সাথেও সাতক্ষীরার কোন যোগাযোগ নেই। এসব কারণে ওখানকার অর্থনীতিটা মূলত কৃষির উপর অধিকতর নির্ভরশীল। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনিকভাবে বৃহত্তর খুলনা বিভাগের আন্ডারে পড়েছে।
সাতক্ষীরায় সব ধরণের ফসল আবাদের পাশাপাশি প্রচুর মাছ চাষ হয়ে থাকে। এখানকার বেশিরভাগ মাঠ গুলোতে গ্রীষ্মের ফসল তুলে নেয়ার পরে একই জমিতে মাছ চাষ করা হয়ে থাকে। মাছ চাষের জন্য প্রত্যেকের জমিগুলোকে চারিপাশে উচু বাউন্ডারি দিয়ে ঘিরে রাখা হয় যাতে একজনের মাছ আরেকজনের জমিতে চলে যেতে না পারে। ঘিরে রাখা এই জায়গাকে স্থানীয় ভাষায় বলা হয় 'ঘের'। সাতক্ষীরা অঞ্চলের প্রায় প্রতিটা মাঠেই এরকম হাজারো মাছের ঘের দেখতে পাওয়া যায়। কোনটা বড়, কোনটা মাঝারি, কোনটা ছোট আবার কোনটা পুরো মাঠ জুড়েই থাকে। যেসব ঘের অনেক বড় হয় তার মালিক অনেকজন একসাথে হয়ে থাকে, আর যেসব ঘের ছোট হয় তার মালিক সাধারণত একজন হয়ে থাকে।
এসব ঘেরে সারাবছর ধরেই কোন না কোন মাছ চাষ হতে থাকে। তবে ঘেরের প্রধান চাষকৃত মাছ হচ্ছে চিংড়ি, গলদা চিংড়ি ও বাগদা চিংড়ি (এগুলো চাষযোগ্য চিংড়ি মাছের নানা প্রকার)। এই চিংড়িকেই বাংলাদেশের হোয়াইট গোল্ড বা সাদা সোনা বলা হয়ে থাকে। কারণ এসব চিংড়ি সরাসরি দেশের বাইরে রপ্তানী করা হয়ে থাকে, যার মাধ্যমে দেশে প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা আসে। ঘেরে লোনা পানি ভর্তি করে (এই লোনা পানি আসে সরাসরি বঙ্গোপসাগর থেকে নানা ছোট ছোট নদী ও খালের মাধ্যমে) চিংড়ির পোনা ছাড়া হয়, এরপর চার মাস পর থেকে সেই চিংড়ি ধরার উপযুক্ত হয়ে ওঠে। এভাবে ঘেরগুলোতে প্রায় সারাবছর জুড়েই চিংড়ির চাষ হতে থকে।
গ্রীষ্মের সময় যখন মাঠ-ঘাট সহ চারিদিকের পানি শুকিয়ে যায় তখন ঘেরগুলোর উচু বাউন্ডারির চারিপাশে বেশ কিছুটা করে গর্ত তৈরি করা হয় এবং তাতে পানি জমা রেখে মাছগুলোকে বাঁচিয়ে রাখা হয়। আর ঘেরের মাঝখানের উচু শুকনো জায়গায় গ্রীষ্মের ফসল তথা ইরি বা বোরো ধানের আবাদ করা হয়। ধান পেঁকে গিয়ে কাটতে কাটতে আবার বর্ষার সিজন চলে আসে, ততদিনে ধান কাটাও শেষ। বর্ষায় পুরো ঘের আবারও পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়, তখন আবারও নতুন করে মাছের পোনা ছাড়া হয়। এভাবে চক্রাকারে বছরের পর বছর ধরে ঘেরে মাছ ও ফসল একসাথে চাষ করা হয়ে থাকে।
আজ এই পর্যন্ত। আগামী পর্বে চিংড়ির পাশাপাশি অন্যান্য মাছের ব্যাপারেও জানতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।
ততক্ষণে সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন।
সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।
Flourishing in the sunshine!🌞🌻
Many thanks!
What a TOAD!
Ha ha ha!
ওরে বাবা কতো মাছ !!
হুম, সাতক্ষীরা মানেই মাছ আর মাছ!