বাংলায় তারার মেলায় আমার পরিচিতমূলক পোষ্ট | ১০% বেনিফিশিয়ারি হবে @btm-school (31-08-2022)
হ্যালো, আমি অনিক কুমার ফণী, জন্ম ১৯৯৪ সালের ২৯ জানুয়ারি। জন্মস্থান বাংলাদেশে, নওগাঁ জেলার মহাদেবপুরে, আমার মামার বাড়িতে। নওগাঁ জেলার মান্দা থানার কুসুম্বা ইউনিয়নের কির্ত্তলী গ্রামে ব্রাহ্মণ সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারে আমি জন্মগ্রহণ করেছি। আমার বাবা আমি যখন ৯ বছরের তখন তিনি মারা গিয়েছেন, আমার মা একজন গৃহিণী। আমরা ছোট বোন আছে, আমার ছোট বোন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় ( ভারত, পশ্চিম বংগ) থেকে অনার্স ( ইংরেজি) শেষ করে বর্তমানে কলকাতার একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছে। নওগাঁ জেলা ভারতের একটা সীমান্তবর্তী জেলা, যার ওপারে বালুরঘাট। আমার গ্রাম থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে গেলেই বাংলাদেশের কুসুম্বা মসজিদ, যা বাংলাদেশের পাঁচ টাকার নোটে আছে।
বাংলাদেশের গ্রামগুলি সুন্দর, অন্য সব গ্রামের মতো আমার গ্রামও অনেক সুন্দর, কিন্তু গ্রাম হলেও এখানে প্রাইমারি স্কুল, হাই স্কুল, কলেজ এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্র সবগুলো হাতের নাগালের মধ্যে রয়েছে।এই গ্রামে মুসলমান, হিন্দু, সাঁতাল, কামার, জেলে, খ্রিস্টান তথা সব জাতি-ধর্ম-বর্ণ ও পেশার মানুষজন মিলেমিশে একসাথে বসবাস করে। বড় বড় উৎসবগুলো সকলে মিলে একসাথে পালন করে। আমাদের নওগাঁ জেলায় প্রচুর ধানের জমি এবং ধানের মিল রয়েছে। কৃষি প্রধান অঞ্চল হওয়ায় প্রায় সব পরিবারেরই কম-বেশি কৃষি জমি রয়েছে। সেখানে ধান, পাট, গম, আখ, আলু, সরিষা, ভুট্টাসহ সব ধরনের খাদ্যশস্য ও শাক-সবজি উৎপাদন হয়। যেগুলো আবার এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রির জন্য পাঠিয়ে দেয়া হয়। ছোটবেলায় দেখেছি, প্রায় সবার বাড়িতেই উঠানের এক কোণে এক বা একাধিক গোলা বা গোলাঘর থাকতো, তার মধ্যে সারা বছরের ফসল রাখা হতো। আমাদের বাড়িতেও গোলাঘর দেখেছি। তবে কালের বিবর্তন ধারায় এখন আর সেসব কারো বাড়িতেই তেমন দেখা যায় না। আমাদের গ্রাম থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে আত্রাই নদী এঁকেবেঁকে চলে গিয়ে যমুনা নদীর সাথে মিলেছে। সেই নদীতে সারাবছর ধরে কিছু মানুষ মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। শুকনো মৌসুমে এই নদীর পানি দিয়ে ফসলের ক্ষেতে পানি সেচ দেয়। নওগাঁ জেলায় পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার আছে, যা বদলগাছী থানার অন্তর্ভুক্ত। সেটি এখন জাদুঘরে রুপান্তরিত করা হয়েছে।
আমাদের গ্রামের প্রায় সবারই মাটির ঘর একতলা, দোতলা দুই ধরনেরই, তবে এখন থাকলেও ধীরে ধীরে হয়তো বিলুপ্তর দিকে যাবে এই মাটির বাড়ি গুলো। টিন শেডের এই রকম মাটির বাড়ি গুলোতে বৃষ্টির দিনে বৃষ্টি পড়ার শব্দ খুব শ্রুতি মধুর লাগে। যা বড় বড় দালান কোঠায় পাওয়া যাবে না।আমাদের গ্রামে শিক্ষিতের হার তুলনামূলক অনেক ভালো। বিভিন্ন পেশা তথা ব্যবসায়ী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, প্রফেসর, শিক্ষক, পুলিশ অফিসার, প্রায় সকল ক্ষেত্রে আমাদের গ্রামের ছেলে-মেয়েরা সুনামের সাথে সারাদেশ এবং দেশের বাইরে কাজ করছে।
এই গ্রাম থেকেই আমি আমার শিক্ষা জীবন শুরু করি ৬ বছর বয়সে, ২০০৪ সালে প্রাইমারি স্কুল পাশ করি এবং ২০১০ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে পাশ করি। এরপর রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট পড়ার সুযোগ পাই ২০১০ সালেই মাধ্যমিক পাসের পর, মেকাট্রনিক্স টেকনোলজিতে ভর্তি হই। সময়ের পরিক্রমায় ২০১৪ সালে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করি এবং ২০১৫ সালে ঢাকায় আসি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ডুয়েট থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নেওয়ার জন্য। কিন্তু সেখানে পড়ার সুযোগ না পাওয়ায়, ২০১৬ সালে একটা প্রাইভেট ইউভার্সিটিতে ভর্তি হই এবং ২০১৭ সালে একটি প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ পাই। পড়াশোনা এবং কাজ দু'দিকেই তাল দিয়ে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে গেছি অনেক বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করি এবং সেই বছরের মার্চ এ করোনা ভাইরাস ধরা পড়লে চাকরি থেকেও বাদ পড়ে যাই। ২০২০ এপ্রিল থেকে পুরো বছর বাড়িতেই কাটে। তারপর ২০২১ সালে রাজশাহী একটা প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে আবার কাজের সুযোগ আসে এবং বর্তমানে এখানেই কর্মরত আছি। আমি অবিবাহিত এবং সেই সাথে ভালো কোন কাজের সন্ধান পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা এবং সুযোগ পেলে ভ্রমনে বেড়িয়ে পড়ি জ্ঞানের সন্ধানে, এইগুলো নিয়ে জীবন চলছে জীবনের মত।
আরেকটা কথা না বললেই নয়, বর্তমানে দিন দিন ক্রিপ্টো কারেন্সি জনপ্রিয় হচ্ছে। বিটকয়েন ছাড়াও আরও বেশকিছু ক্রিপ্টো কারেন্সির নাম আমরা শুনতে পাই।তবে সম্প্রতি কাছের এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে 'স্টিমিট.কম' সাইটের সন্ধান পাই। সাইটটা নিয়ে আমি গুগল, ইউটিউব ও উইকিপিডিয়া থেকে রিসার্চ করে অনেক পজিটিভ তথ্য পেয়েছি। এখানে মূলত লেখালেখির মাধ্যমে ক্রিপ্টো স্টিমিট উপার্জন করতে হয়, পরে উপার্জিত স্টিমিটগুলো ডলারে কনভার্ট করে নিজস্ব কারেন্সিতে ট্রান্সফার করা যায়। বর্তমানে স্টিমিট সাইটটি ঘরে বসে লেখালেখির মাধ্যমে অনলাইন থেকে উপার্জনের একটা জনপ্রিয় মাধ্যমে পরিণত হয়েছে।
এই হচ্ছে আমি ও আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আশাকরি সবাই আমার সম্পর্কে মোটামুটি একটা ধারণা পেয়েছেন।
ভালো থাকবেন, সবার জন্য শুভ কামনা!
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
যদিও এটি একটি পরিচিতি মূলক পোস্ট তারপরও খুব ভালো লেগেছে। অনেক সুন্দর লেখা আপনার। বাংলায় তারার মেলা প্লাটফর্ম আপনাকে স্বাগত। নিয়মিত পোস্ট করবেন আশা করি।
আপনাকে স্বাগতম আমাদের গ্রুপে অনিক দাদা একসাথে ভাল কিছু করব আশা করছি
আপনার পরিচিতি পোস্টি খুবই সুন্দর। আশাকরি সবাই মিলে একসাথে কাজ করে একদিন ভালো কিছু করতে পারবো।
অনিক, আপনার ডিটেইল পরিচয় পেলাম, অনেক ভাল লাগলো।
স্টিমিটে আপনাকে স্বাগতম।
বাংলায় তারার মেলা ব্লগে আপনাকে স্বাগত জানাই। ধন্যবাদ। এগিয়ে যান।