খেলার আনন্দ ভাগাভাগি করে বন্ধুত্বের বন্ধন মজবুত করি
পৃথিবীতে যতগুলো খেলা রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ফুটবল।
বিশেষ করে চার বছর পরপর যেহেতু ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজিত হয় তাই এটাকে কেন্দ্র করে মানুষের আবেগ আরো বেশি কাজ করে।
প্রতি চার বছর পর পর যখন বিশ্বকাপ টুর্নামেন্ট পরিচালিত হয় তখন গ্রামে মহল্লায় শহরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র টুর্নামেন্ট পরিচালিত হয়।।
টুর্নামেন্ট গুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরিচালিত হয় ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনার সাপোর্টারদেরকে কেন্দ্র করে।
কিছুদিন আগে আমাদের বন্ধুদের মধ্যে আয়োজিত হয়ে গিয়েছিল ব্রাজিল সাপোর্টার ও আর্জেন্টিনা সাপোর্টারদেরকে নিয়ে একটি ফুটবল ম্যাচ।
ফুটবল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছে চট্টগ্রাম মহসিন কলেজের মাঠে।
অনেকদিন ধরে পরিকল্পনা করে অবশেষে খেলাটি আয়োজন করা সম্ভব হয়েছে ।
যেহেতু বর্তমানে সময়ে সবাই ব্যস্ত কেউ চাকরি কেউ ব্যবসা এক একজন এক এক জায়গায় নিজেদের জীবন পরিচালনা করছে তাই এরকম একটা আয়োজন করে সেটাকে বাস্তবায়ন করা অনেক কঠিন একটা কাজ ।
কিন্তু তবুও ফুটবল উন্মাদনা ও যারা ফুটবলপ্রেমী তারা নিজেদের ব্যস্ত সময় থেকে সামান্য সময় বের করে নিয়ে ঠিকই এই ম্যাচটি পরিচালনা করার জন্য চলে এসেছিল।
আমাদের বন্ধু মহলের দুই গ্রুপ তৈরি করে আমরা এই খেলাটি পরিচালনা করেছিলাম।
খেলা শুরু হয়েছিল দুপুর ৩:৩০ মিনিটে ।
আমি তো সেই ছোটবেলা থেকে আর্জেন্টিনা সাপোর্টার খেলা বুঝি আর না বুঝি কেন যেন আকাশি সাদা এ জার্সির প্রতি এক আলাদা ভালোলাগা কাজ করতো।
হয়তোবা আমি দেখেছি আমার পরিবারের বাকি সদস্যরা ও আর্জেন্টিনা সাপোর্ট করতো এ কারণেও হতে পারে ।
কিন্তু যখন থেকে খেলা বোঝা শুরু করেছি তখন থেকেও আর্জেন্টিনাকে আমার পছন্দ হয়েছে।
ম্যারাডোনার খেলা দেখার তো সুযোগ হয়নি কিন্তু মেসির খেলা দেখে আরো বেশি ভক্ত হয়ে যাই।
যাই হোক বলছিলাম আমাদের বন্ধুদেরকে নিয়ে আয়োজিত ফুটবল ম্যাচ সম্পর্কে ।।
খেলা শুরু করব এই পরিকল্পনা নিয়ে যখন আগাচ্ছিলাম তখন আমরা দেখছি আমাদের রেফারির নাই ।
সবাই যেহেতু বন্ধু তাই কাকে রেফারি হিসেবে দিব চিন্তা করছি কারণ এখানে শৃঙ্খলার একটা ব্যাপার রয়েছে।
আর বন্ধু তো কখনোই বন্ধুর কথা শুনতে চায় না।।
অবশেষে সবাই সম্মতি করে এক বন্ধুকে আমরা রেফারি হিসেবে দাঁড় করায় ।
রেফারি ঠিক হওয়ার পর আমরা বাঁশি খোঁজার জন্য ছোটাছুটি করি।
কারণ আসলে হঠাৎ যেহেতু এই আয়োজনটা হয়েছিল বাঁশি নিয়ে আসার কথা কেউ মনে রাখেনি।
অবশেষে আমাদের এক বন্ধুর ব্যাগে বাঁশি পাওয়া গেল।
সেই পরিকল্পিত বন্ধুদের মধ্যে একজন যে আগে থেকেই সবকিছু ঠিক করে রেখেছিল ।
অতঃপর ৩:৩০ মিনিটে খেলা শুরু হল।
আপনাদেরকে প্রথমেই বলেছি আমি যেহেতু আর্জেন্টিনার সাপোর্টার তাই আমি প্রথম থেকেই আর্জেন্টিনার সাপোর্টে যেই বন্ধুগুলো খেলছিল তাদের পক্ষে ছিলাম এবং তাদের জন্য চিৎকার করছিলাম ।
খেলা আয়োজিত হয়েছিল মোট 30 মিনিট করে ৬০ মিনিট।
অবশেষে খেলার প্রথম পাঁচ মিনিটে গোল করে দেয় আর্জেন্টিনার পক্ষে ।
খুবই উল্লাসে মেতে উঠেছিলাম আমরা সবাই। কারণ ব্রাজিলের পক্ষে তখন যারা খেলছিল তারা সবাই একটু মোটাসোটা দেখে মনে হচ্ছিল অনেক পারদর্শী খেলোয়ারা ।
কিন্তু ৫ মিনিটের মধ্যেই একটি গোল হয়ে যাবে সেটা আমরা কেউ কল্পনা করতে পারেনি।। এভাবেই খেলা চলতে থাকে প্রথম 30 মিনিটের মধ্যে ব্রাজিল টিমের জালে দুটি গোল দেয় আর্জেন্টিনা সাপোর্টার প্লেয়াররা।
অবশেষে হাফ টাইম শেষ হলো এবং দ্বিতীয় হাফ টাইমের জন্য আমরা সবাই প্রস্তুত নিচ্ছিলাম।
এই সময় সবচেয়ে হাস্যকর বিষয় ছিল যে কিনা এতক্ষন রেফারির দায়িত্ব পালন করেছে সে নিজে ব্রাজিলের জার্সি গায়ে দিয়ে হঠাৎ মাঠে খেলার জন্য নেমে গেল।
অবশেষে প্রথমবারের মতো আমরা আবার দিদায় পড়ে গেলাম যে আমাদের রেফারি এখন আমরা কাকে দাঁড় করাব ।
সে যাই হোক কোন রকম ভাবে এক বন্ধুকে আমরা ম্যানেজ করে রেফারী হিসেবে দাঁড় করিয়ে দিলাম ।
আমাদের রেফারি এখন ব্রাজিলের পক্ষে খেলছে।
আমি বিষয়টা দেখছিলাম এবং বারবার হাসছিলাম এবং সবাইকে বলছিলাম এটা কোন ধরনের ব্যাপার ব্রাজিলের পক্ষে খেলতে নামবে এটা মেনে নেওয়া যায় না ।এ বিষয়টা নিয়ে সবাই অনেক মজা করলাম ।
অবশেষে দ্বিতীয় অর্ধের খেলা শুরু হয়ে গেল।
দ্বিতীয় পর্যায়ে নেমে ব্রাজিলের সাপোর্টারের যে প্লেয়ারগুলো ছিল তারা অনেক ভালো খেলছিল।
মনে হচ্ছিল যেন রেফারি প্লেয়ার হিসেবে নেমে ওদের গতি আরো বেড়ে গেছে।
অবশেষে দ্বিতীয়বার ১০ মিনিটের মাথায় ব্রাজিল সমর্থকরা আর্জেন্টিনা একটা গোল দিয়ে দিল।
আরো কয়েকটা চেষ্টা করেছিল কিন্তু আমাদের যে দুর্দান্ত গোলকিপার ছিল আর্জেন্টিনার পক্ষে সে অনেকগুলো গোল রক্ষা করেছে । আমরা তাকে বলতে পারি খেলার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা মনে হয় আমাদের গোলকিপারটাই করেছিল একদম জান প্রাণ দিয়েছে । যেন এটা একটা ফাইনাল ম্যাচ চলছে ।
অবশেষে দ্বিতীয় টাইমের বাকি যে ২০ মিনিট ছিল সেই ২০ মিনিটের মধ্যে আর্জেন্টিনা সাপোর্টার আরও তিনটা গোল দিয়ে দেয় ব্রাজিলের সাপোর্টারদের জালে ।অবশেষে ৫-১ ব্যবধানে বিশাল জয়লাভ করে আর্জেন্টাইন দলের সাপোর্টাররা ।
জয় পরাজয়ের যাই হোক না কেন আমাদের এক বন্ধু স্পন্সর করেছিল ৮০০০ টাকা যার মধ্যে ৫ হাজার টাকা পেয়েছে বিজয়ীরা এবং তিন হাজার টাকা পেয়েছে যারা পরাজিত হয়েছে।
দিনশেষে আমরা সব বন্ধুরা এক ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনা সাপোর্টার হিসেবে নয় আমরা বন্ধুরাই সব সময় একে অপরের পাশে থাকবো এটাই হচ্ছে মূলত লক্ষ্য ।
পরবর্তীতে বন্ধুর দেওয়া সেই আট হাজার টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে সবাই মিলে রেস্টুরেন্টে একটা ট্রিট চালিয়ে দিল।
এর মাধ্যমে সুন্দর এই দিনটি শেষ হলো ।
আরো একটি বন্ধুত্বের বন্ধনের মাধ্যমে সুন্দর একটি সময় কাটানোর সুযোগ হয়েছিল ।
ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে শেষ পর্যন্ত লেখাটি পড়ার জন্য । আপনাদের সাথে আরও একটি জীবনের সুন্দর মুহূর্তের কথা শেয়ার করলাম। আশা করি আপনাদের ভাল লেগেছে আরো একটি লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে পুনরায় উপস্থিত হব।
ইনশাল্লাহ
Thank you for sharing posts, improve the quality of your posts and stay original.
Review |
Determination of Club75 Status refers to the https://steemworld.org/transfer-search Web-based Application