ঐতিহ্যবাহী কাঠের তৈরি হাঁড়ি চাং যা এখন বিলুপ্তের পথে।

in STEEM FOR TRADITIONN10 months ago (edited)

আসসালামু আলাইকুম


কেমন আছেন আপনারা, আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন, আলহামদুলিল্লাহ আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী হাঁড়ি চাং সম্পর্কে আলোচনা করতে এসেছি। তাহলে চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।

ঐতিহ্যবাহী হাঁড়ি চাং


IMG_20230921_102831-01.jpeg

গ্রাম অঞ্চলে ঐতিহ্যবাহী অনেক কিছুই আজ বিলুপ্তর পথে। এর মধ্যে একটি হলো বাঁশের তৈরি বা কাঠের তৈরি হাঁড়ি চাং। হাঁড়ি চাং আমাদের গ্রাম বাংলার অন্যতম একটি ঐতিহ্য। এই হাঁড়ি চাং গুলোতে গৃহিণীরা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখেন। বিশেষ করে এই হাঁড়ি চাং গুলো রান্না ঘরে বসানো হয়। আবার হাঁড়ি চাং গুলোর মতো একটি মাচা রয়েছে গুলোতে মানুষ ধান সংরক্ষণ করে রাখেন। তবে সেগুলো হলো অনেক বড় মাচা মূলত বাঁশ দিয়ে সেই মাচা গুলো তৈরি করতে হয়। আমি আপনাদের সঙ্গে যেই ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছি। এটি কে আমাদের গ্রাম অঞ্চলের ভাষায় হাঁড়ি চাং বলা হয়। এই হাঁড়ি চাং গুলোতে মূলত মহিলা মানুষরা রান্নার জিনিসপত্র রাখেন।


IMG_20230921_102729-01.jpegIMG_20230921_102810-01.jpeg
IMG_20230921_114107-01.jpeg

এই হাঁড়ি চাং গুলোর আমরা দুই থাক হিসেবে ব্যবহার করে। ওপরে এক ধাক নিচে এক থাক। উপরে মূলত ভারী জিনিসপত্র গুলো রাখা হয় এবং নিচের অংশে হালকা জিনিসপত্র রাখা হয়। এই হাঁড়ি চাং গুলো মূলত বাস এবং কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়। আমি যে হাঁড়ি চাংটি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি এটি মূলত কাঠ দিয়ে তৈরি করা। কাঠের তৈরি হাঁড়ি চাং গুলো বেশিদিন ব্যবহার করা যায়। তাই বেশিরভাগ মানুষেরা কাঠের তৈরি হাঁড়ি চাং ব্যবহার করে থাকেন। এই হাঁড়ি চাং গুলো মূলত মিস্ত্রির কাছ থেকে বানিয়ে নিতে হয়। তাছাড়া এমন হাঁড়ি চাং গুলো কিনতে খুবই কম পাওয়া যায়।


IMG_20230921_102848-01.jpegIMG_20230921_102914-01.jpeg
৯০ দশকের মানুষরা এরকম হাঁড়ি চাং বেশি ব্যবহার করেছেন এবং কি গ্রাম অঞ্চলের প্রতিটি বাড়িতে এরকম হাঁড়ি চাং দেখা যেত। কিন্তু এখন আর তেমন হাঁড়ি চাং দেখা যায় না। এখন সবাই প্লাস্টিক এবং স্টিলের তৈরি রেক ব্যবহার করেন। দেশ উন্নত হওয়ার কারণে আমাদের ঐতিহ্যবাহী অনেক কিছুই আজকে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। আগে গ্রাম অঞ্চলের পাশাপাশি শহর অঞ্চল গুলোতেও এরকম হাঁড়ি চাং দেখা যেত। কিন্তু এখন এমন অবস্থায় গ্রাম অঞ্চল থেকেই হাঁড়ি চাং উঠে গিয়েছে। এর মূল কারণ হল এখন প্লাস্টিক এবং স্টিলের অনেক জিনিসপত্র বের হওয়ার কারণে বাঁশের তৈরি বা কাঠের তৈরি হাঁড়ি চাংগের গুরুত্ব কমে গেছে। তবে এখনো গ্রাম অঞ্চলে অনেক বাড়িতে হাঁড়ি চাং দেখা যায়।


IMG_20230921_102713-01.jpeg

এরকম হাঁড়ি চাং গুলো আমি সেই প্রাচীনকাল থেকেই দেখে আসতেছি। এই হাঁড়ি চাং গুলো আমাদের গ্রাম বাংলার পুরনো একটি ঐতিহ্য। আর কয়েক বছর পর এই হাঁড়ি চাং গুলো আপনারা কোথাও খুঁজে পাবেন না। এখনই তেমন একটা খুঁজে পাওয়া যায় না। কারণ সবাই এখন দালানকোটার বাড়ি তৈরি করতেছে এবং সেই বাড়িতে রান্না ঘরে ইট দিয়ে সানসেটের মত তৈরি করি সেখানে রান্নার জিনিসপত্র রাখেন। তাই এখন আর এরকম হাঁড়ি চাং এর প্রয়োজন হয় না। খুব শীঘ্রই বিলপ্ত হতে চলেছে ঐতিহ্যবাহী হাঁড়ি চাং। কিছু বছর পর ঐতিহ্যবাহী কিছু জিনিসপত্রের নামটাও শোনা যাবে না। এখনই যা কিছু ঐতিহ্যবাহী জিনিসপত্র আছে সব গ্রাম অঞ্চলে খুঁজে পাওয়া যায়। যাইহোক ঐতিহ্যবাহী হাঁড়ি চাং সম্পর্কে এটুকুই বলার ছিল৷


আমার ফোনের বিবরণ
পোস্টের বিষয়ঐতিহ্যবাহী হাঁড়ি চাং
ক্যামেরা মডেলrealme 9i
ফটোগ্রাফার@rubayat02
লোকেশনরংপুর বাংলাদেশ




প্রিয় বন্ধুরা এই ছিলো আমার আজকের প্রাচীন কালের ঐতিহ্যবাহী হাঁড়ি চাং সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা, আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে। সবার প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা জানিয়ে এখানেই বিদায় নিলাম, দেখা হবে আবার কোনো নতুন বিষয় নিয়ে, সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।



❤️‍-খোদা হাফেজ-❤️‍



UF7UDccXmKiRkXceCavGEKH3TNDM65wJtxFfBvK53mUcMEN1RtxDtd2qctmxbj85zamfAyPuQoVu5pH2hQSYC82VLsES2d3cmZ8aKnsxxU...ZRqX57aCNfBEVr8xP4ZVQvXtGnN9RTYY3tTRTP3iJsec9qp2U7UVz8sdPRmeySEvfJ4wcrT5G4DKYMC3jwNKSbfqbxJiCzMFawmJqraZZFqesWqtUQ4fXishWN.png

IMG_20230513_190258.jpg

আমি রুবাইয়াত হাসান হৃদয়, সোনালী বাংলাদেশে আমার বসবাস, বাংলা আমার মাতৃভাষা, পেশায় আমি একজন ছাত্র এবং এর পাশাপাশি আমি Steem For Tradition কমিউনিটির নিয়মিত একজন সদস্য, Steem For Tradition কমিউনিটিতে কাজ করতে পেরে সত্যি আমি অনেক গর্বিত, কারণ আমি এখনে আমার জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং সৃজনশীলতা প্রকাশ করতে পারি, আমার আগ্রহ, আমি বাংলার ইতিয্য এখানে নতুন করে ফুটিয়ে তুলবো, এছাড়াও আমি ফটোগ্রাফি, অঙ্কণ, রেসিপি এবং DIY পোস্ট করতে অনেক ভালোবাসি, এবং এটা মন দিয়ে মানি যে মানুষ মানুষের জন্য।

UF7UDccXmKiRkXceCavGEKH3TNDM65wJtxFfBvK53mUcMEN1RtxDtd2qctmxbj85zamfAyPuQoVu5pH2hC82VLsES2d3cmZ8aKnsxxU...ZRqX57aCNfBEVr8xP4ZVQvXtGnN9RTYY3tTRTP3iJsec9qp2U7UVz8sdPRmeySEvfJ4wcrT5G4DKYMC3jwNKSbfqbxJiCzMFawmJqraZZFqesWqtUQ4fXishWN.png

you can also vote for @bangla.witness witnesses

IMG-20230513-WA0000.jpg

VOTE for @bangla.witness

Sort:  
 10 months ago 

এগুলো আগে বাঁশ দিয়ে তৈরি করত। কিন্তু এখন এগুলো কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়। এই টেবিলগুলো আগেও আমাদের বাড়িতে ছিল কিন্তু এখন নেই।এগুলোর নাম যে হাঁড়ি চাং তা আমার জানা ছিল না। এগুলো আগে সবার বাড়িতে দেখা যেত কিন্তু এখন আর তেমন দেখা যাচ্ছে না। কারণ এখন মানুষ সিমেন্ট লোহা দিয়ে তৈরি করে নেয় রান্না ঘরে কিছু জিনিস রাখার জন্য। তবে অনেকের বাসায় এমন আছে যেগুলোর উপর রান্না করার বিভিন্ন জিনিস রাখা হয়। এটি থাকলে সুবিধা হচ্ছে যে রান্না করার সময় বিভিন্ন জিনিস হাতের কাছে পাওয়া যায়। আপনি বেশ চমৎকার একটি ঐতিহ্যবাহী জিনিস আমাদের কাছে তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

 10 months ago 

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া

 10 months ago 
DescriptionInformation
plagiarism-free
#steemexclusive
Ai Content - free

We expected you to be friendly and active in the Steem For Tradition Community. We appreciate your effort. Thank you for sharing your beautiful content with us ❤️.

 10 months ago 

গ্রামঞ্চলে বাঁশের তৈরি বা কাঠের হাঁড়ি চাং নিয়ে দারুণ লিখেছেন। এই গুলো একটি অঞ্চলে এক এক নামে পরিচিত। তবে আমাদের এলাকায় এই হাঁড়ির চাং কে বাঁশের তৈরি বা কাঠের তৈরি হারং বলে থাকে। এই কাঠের তৈরি হাঁড়ি চাংগে মুলত যেকোন ধরনের জিনিসপত্র রাখা হয়। কাঠের তৈরি হাঁড়ি চাং নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন ভাই।

 10 months ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া

 10 months ago 

গ্রামের বাড়িতে এই ধরনের বাঁশের চাং এখনো দেখা যায়। গ্রামের সাধারণ মানুষ এই চাং এ তারা তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখে। কেউ কেউ ভাত তরকারি রেখে দেয় যাতে বিড়াল বা অন্য কোন প্রাণী সেগুলো খেতে না পারে আবার কেউ কেউ এই চাং এ ধান বা অন্য কোন বস্তা সেখানে রেখে দেয়। যাতে সেগুলো একটু ভালো থাকে। অনেক সুন্দর লিখেছেন আপনি ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 10 months ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া

 10 months ago 

কাঠের তৈরি মাচাঁ বা চাং নিয়ে দারুণ উপস্থাপন করছেন ভাই, আগের যুগে এগুলো বাঁশ দিয়ে বানানো হতো। হাড়ি পাতিল রাখার জন্য। গ্রামের মানুষ বেশি ব্যবহার করতো। কারণ বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ নিম্নবিত্ত। সংসারের বিভিন্ন জিনিসপত্র এই মাচাঁতে রাখা হতো। তবে খুব একটা এখন দেখা যায় না। আধুনিকতার ছোঁয়া বদলে দিয়েছে অনেক কিছুই। আপনি অনেক সুন্দর সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন। ফটোগ্রাফি দারুন হয়েছে, অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই ।

 10 months ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া

 10 months ago 

চমৎকার একটা পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। গ্রামের কম বেশি প্রতিটা বাড়িতেই ব্যবহৃত হাড়ি পাতিল গুলো শুকাতে দেওয়ার জন্য এই মাচা ব্যবহার করা হয়। মাচা ব্যবহারের এই কৌশলটি বেশ পুরনো। অনেকেই কাঠের ও বাঁশের মাচা বানিয়ে প্রয়োজনীয় হাঁড়ি-পাতিল গুলো ধুয়ে এখানে শুকাতে দেয়। আপনি চমৎকারভাবে গুছিয়ে আজকের এই পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। গ্রামের ঐতিহ্য বহন করা এই জিনিসটি নিয়ে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 10 months ago 

ধন্যবাদ আপু

 10 months ago 

আমাদের এলাকায় এটিকে মাচাং বলে। রান্নাঘরের পাশে বা রান্নাঘরে রাখা হয় মাচাং। মাচাং গুলোতে প্রয়োজনীয় কিছু আসবাবপত্র রাখা হয়ে থাকে। কাঠ দিয়ে বানানোর পাশাপাশি অনেকেই আবার আবার বাঁশ দিয়েও এমন মাচাং বানিয়ে থাকে। বৃষ্টি এবং রোদ না পড়লে এই মাচাং গুলো অনেক দিন ভালো থাকে।

 10 months ago 

ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া

 10 months ago 

ঐতিহ্যবাহী কাঠের তৈরি হাড়ি রাখার চাং নিয়ে চমৎকার একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন ভাই। একটা সময়ে গ্রামের বেশীরভাগ বাড়িতেই এই ধরনের চাং দেখা যেতো। ছোটবেলায় আমাদের বাড়িতেও দেখেছি আমি। তবে এখন নতুন নতুন সব জিনিস বের হওয়ার কারনে এই ধরনের চাং হারিয়ে গেছে।

 10 months ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া

 10 months ago 

হাঁড়ি চাং সম্পর্কে আপনি অনেক সুন্দর লিখেছেন। আসলে আপনি ঠিক বলেছেন এখন দিন দিন আগের অনেক কিছুই ধীরে ধীরে বিলুপ্তর পথে। কেননা বর্তমান সবাই আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আগের অনেক কিছুই ভুলে যাচ্ছে কিন্তু আমাদের মাথায় রাখা উচিত এগুলো আমাদের ঐতিহ্য। আগের মানুষরা এসব ব্যবহার করত এবং এগুলোর মাধ্যমে তারা তাদের জিনিসপত্র রাখত। আর এগুলো বেশিরভাগ সময় বাঁশের তৈরি করা হয় এবং বাঁশের গুলো দেখতে আরো অনেক সুন্দর দেখায়। ধন্যবাদ আপনাকে এরকম সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সকলের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 10 months ago 

ধন্যবাদ আপনাকে

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 58080.30
ETH 3102.16
USDT 1.00
SBD 2.40