ঘরোয়া পদ্ধতিতে বরই আচার

in Steem For Tradition10 months ago (edited)

আসসালামু আলাইকুম বন্ধুগণ।আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজ আমি বরই আচারের একটি রেসিপি শেয়ার করব ইনশাআল্লাহ। আশা করি সবার ভাল লাগবে।

IMG-20230904-WA0025.jpg

আমাদের দেশের একটি বিপুল জনপ্রিয় একটি খাবার হল আচার।আচার পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না।তবে মেয়েরা আচারের প্রতি একটু বেশি আকৃষ্ট থাকে।আচার সাধারনত বিভিন্ন ধরনের ফল দিয়ে তৈরী করা হয়। যেমন বরই,আম,আমড়া,চালতা,লেবু,কামরাঙা,জলপাই,তেঁতুল ইত্যাদি সহ বিভিন্ন ফলের মিক্সড আচারও পাওয়া যায়। আচার শুধুমাত্র বিভিন্ন ফলের নয় বরং মরিচ,রসুন এসবেরও আচার পাওয়া যায়।ফলের সিজনগুলোতে আচার বাসায় তৈরী করা হয় আবার আচার কিনতেও পাওয়া যায়।গ্রাম বা শহরের বিভিন্ন মেলা,পিকনিক স্পট বা ঝালমুড়ির দোকানগুলোতে আচার পাওয়া যায়। বিভিন্ন খাবার প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলো প্যাকেটজাত আচার বিক্রি করে।তবে বাড়ির আচার সবার থেকে সেরা।আমার মা প্রতিবছর বরই ও আমের সিজনে আচার তৈরী করেন।আজ আমি একটি বরই আচারের একটি রেসিপি শেয়ার করব। চলুন শুরু করা যাক,

উপকরণসমূহঃ
উপাদানপরিমাণ
বরই১ কেজি
চিনি বা গুড়১ কেজি
লবন১ চা চামুচ
পেঁয়াজ কুচি১ বাটি
রসুন কুচি২ টি থেকে ৩ টি রসুন
শুকনো মরিচ১৫-২০ টি
তেজপাতা৪/৫ টি
গরম মসলা৫০ গ্রাম
কার্যপদ্ধতি
ধাপঃ১

IMG-20230904-WA0033.jpg

প্রথমে বরই এর বোঁটাগুলো ছাড়িয়ে নিয়ে বরইগুলো একটু ফেটে দিয়ে এগুলো ধুয়ে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এতে করে বরইগুলা ভিজে নরম হয়ে যাবে এবং আচারটি যথাসম্ভব নরম হবে।

ধাপঃ২

IMG-20230904-WA0031.jpg

এরপর এক থেকে দেড়ঘন্টা পর এগুলোকে পানি থেকে উঠিয়ে নিয়ে ডালা বা প্লাস্টিকের ছিদ্রযুক্ত পাত্রে রাখতে হবে যাতে পানি ঝড়ে যায়।

ধাপঃ৩

IMG-20230904-WA0007.jpg

এরপর শুকনো মরিচ ও গরম মসলা ভেজে নেব তারপর এগুলো গুড়ো করে রেখে দিব যাতে পরবর্তীতে কোনো ঝামেলা না হয়।

ধাপঃ৪
IMG-20230904-WA0009.jpg

এরপর চুলায় কড়াই বসিয়ে এতে ৫০০ গ্রাম সরিষার তেল বা সয়াবিন তেল দিতে হবে। এরপর পেঁয়াজ কুচি ও রসুন কুচিগুলো এখানে ভেজে নিতে হবে।

ধাপ৫
IMG-20230904-WA0016.jpg

২-৩ মিনিট পর পেঁয়াজের রং বাদামী বর্ণের হয়ে এলে এতে তেজপাতা দিতে হবে এবং এগুলো সহ কিছুক্ষণ ভেজে নিতে হবে।

ধাপঃ৬
IMG-20230904-WA0031.jpg

এগুলোর রং যখন গোল্ডেন ব্রাউন হয়ে আসবে তখন এতে বরইগুলো দিতে হবে।

ধাপঃ৭
IMG-20230904-WA0030.jpg

বরইগুলো ঢেলে দেওয়ার পর এগুলো কিছুক্ষণ নাড়তে হবে এবং পরে শুকনো মরিচ গুড়া ও লবণ, হলুদ,আদা বাটা দিতে হবে। এখানে কয়েকটি আস্ত ভাজা শুকনো মরিচও দিতে পারেন।

ধাপঃ৮
IMG-20230904-WA0018.jpg

এরপর এগুলো কিছুক্ষণ রান্না করে তারপর এতে চিনি বা গুড় দিতে হবে। তবে আমি এখানে ১ কেজি গুড় ব্যবহার করেছি।

ধাপঃ৯
IMG-20230904-WA0028.jpg

এরপর এগুলো ২০-২৫ মিনিট কষিয়ে নিতে হবে। এসময় আচারের মিষ্টতা চেখে নিতে পারেন। কম হয়ে গেলে আবার মিষ্টি দেওয়া যায়।তবে এগুলো থেকে পানি বের হয় তাই একবারই দেওয়া ভাল।কারন আবার কষতে এক্সট্রা টাইম লাগে।

ধাপঃ১০
IMG-20230904-WA0022.jpg

২০-৩০ মিনিট কষার পর যখন মনে হবে যে আচারটি কষা হয়ে গেছে এবং কালচে খয়েরী রং চলে আসবে তখন এতে গুড়ো করে নেওয়া মসলাগুলো দিতে হবে।

ধাপঃ১১
IMG-20230904-WA0022.jpgIMG-20230904-WA0026.jpg

এরপর ৪-৫ মিনিট ভালভাবে নাড়িয়ে দিলে আচার তৈরী করা শেষ হবে এবং এগুলো নামিয়ে নিতে হবে।

পরিবেশনঃ
IMG-20230904-WA0024.jpg

আচার তৈরী করা হয়ে এলে এগুলোকে একটি পাত্রে ঠান্ডা হওয়ার জন্য রাখতে হবে। এরপর ঠান্ডা হয়ে গেলে পরিবারের সবাইকে নিয়ে আচার উপভোগ করুন।আচার সারা বছর সংরক্ষণ করে রাখা যায়। আমার ছবিতে আচারের আসল কালার আসেনি।কেন জানি সাদা সাদা এসেছে।আচার কাচের পাত্রতে রাখলে সবথেকে বেশি ভাল থাকে।এজন্য কাচের পাত্রটি ভালভাবে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে এরপর এতে আচার রাখতে হবে। তবে আচার খালি হাতে স্পর্শ করা উচিৎ নয়।এতে করে ছত্রাকের জন্ম নেয়। আচার কক্ষ তাপমাত্রায় বা ফ্রিজে রেখেও খাওয়া যায়। তবে মাঝে মাঝে রোদে দিলে ভাল হয়।এটি একটি মুখরোচক খাবার এবং এটি মুখের স্বাদও বৃদ্ধি করে।

ডিভাইজ সংক্রান্ত তথ্যঃ
ডিভাইসরেডমি ১০ সি
ক্যামরা৫০ মেগাপিক্সেল
ফটোগ্রাফার@tamannafariah
লোকেশনভবের বাজার,পার্বতীপুর

4i88GgaV8qiFU89taP2MgKXzwntUGAvkoQiKU7VxyD37q94i8e38qvF9HBknYTWLbKs3wg1cbtfZvU44CUYbBqLEEX6YDgQznQURMvBExn7FCAPjAUKLwJ1kpe.png

পোস্টটি পড়ার জন্য সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ
Sort:  
 10 months ago 

আচার আমার খুবই প্রিয় একটা খাবার। প্রতিবছর আমার আম্মু বাড়িতে আচার বানায়। আমার আম্মুর চেয়ে আমার খালা অনেক ভালো আচার বানায়। আমার খালা আচার বানালেই আমাদের বাড়ুতে এক বইয়াম আচার দিয়ে যায়। খুবই সুন্দরভাবে আচার বানানোর রেসিপিটি দেখিয়েছেন। ছবি দেখেই জিভে জল এসে গেলো।

 10 months ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া।

 10 months ago 

আচার আমার অনেক ভালো লাগে। আর যদি সেটা বাসায় বানানো আম বা বরই আচার হয় তাহলে কথাই নেই। আপনি ধাপে ধাপে অনেক সুন্দর করে আচার বানানোর রেসিপি দেখিয়েছেন যা আমার কাছে অনেক বেশি মজার মনে হয়েছে। মা বানিয়ে রাখলে আমি হাত দিয়েই বারবার এসে একটু করে খেয়ে চলে যাই। অনেক সুন্দর রেসিপি ছিলো এটি।

 10 months ago 

হুম আমিও এমনটাই করি।ধন্যবাদ আপনাকে।

 10 months ago 

ঠিকই বলেছেন আচার পছন্দ করে না এমন মানুষ কম পাওয়া যাবে।যারা কম খায় আচার তারাও একবার হলেও টেস্ট করে।আচার বানানোর পদ্ধতি আমিও জানি কিন্তু কখনো বানাইনি।কখনো৷ কারো না কারো হাতের বা কিনা আচার খেয়েছি।বিভিন্ন মৌসুমে যে ফল বের হয় সেগুলো দিয়ে আচার বানানো হয়ে থাকে।আপনি সুন্দর করে ধাপে ধাপে রেসিপি দিয়েছেন,যারা আচার বানানোর পদ্ধতি জানেনা তাদের জন্য অনেক উপকারে আসবে রেসিপিটি।আচার যে কোনো খাবারের সাথে খেলে সে খাবারের স্বাদ আরো বেড়ে যায়।এছাড়া বিভিন্ন খাবারে আচার দিয়ে রান্না বা মাখানো হয় সে খাবার খেতেও দারুণ হয়।ঠিকই বলেছেন আচার খেলে মুখের স্বাদ বৃদ্ধি পায়।ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।আপনার ফটোগ্রাফি সুন্দর হয়েছে।ধন্যবাদ আপনাকে।

 10 months ago 

ধন্যবাদ আপু।

 10 months ago 

বাড়ির তৈরি বড়ই আচার গুলো খুবই সুস্বাদু এবং মজাদার হয় আপু। আমাদের বাড়িতেও এখনো বড়াইয়ের আচার রয়েছে। গরম ভাতের সঙ্গেও বড়ই আচারগুলো খেতে খুবই ভালো লাগে। অনেক সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপু। রেসিপিটির প্রতিটি ধাপ অনেক সুন্দর করে আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করেছেন। আমার পছন্দের একটা রেসিপি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 10 months ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া।

 10 months ago 

আমার আবার তেতুলের আচার অনেক বেশি পছন্দের এই বড়াই আচার এর তুলনায়। তাছাড়া বাড়িতে ছোট বোন ও মা মিলে প্রতিবছরই বড়ই আচার করে থাকে। তবে বেশ ভালো লাগে খেতে। আপনি অনেক সুন্দর ভাবে রেসিপিটি উপস্থাপন করেছে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।

 10 months ago 

ধন্যবাদ আপনাকে।

 10 months ago 

আমাদের বাসায় ও অনেক ধরনের আচার বানানো হয়। তবে অন্যান্য আচারের তুলনায় বরই আচার খেতে ভীষন ভালো লাগে। আমার অনেক পছন্দের একটি আচার হলো বরই আচার। স্বাদে গুনে অতুলনীয় এই বরই আচার। আচার তৈরির উপকরণ ও ধাপ সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে লিখেছেন।

 10 months ago 

ধন্যবাদ।

 10 months ago 
DescriptionInformation
plagiarism-free
#steemexclusive
Ai Content - free
300+ Words

We expected you to be friendly and active in the Steem For Tradition Community. We appreciate your effort. Thank you for sharing your beautiful content with us ❤️.

IMG-20230413-WA0003.jpg
 10 months ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া।

 10 months ago 

আমাকে তো আচার গরম গরমই ভালো লাগে। ঠান্ডা হয়ে গেলে তেমন আর ভালো লাগেনা। আমাদের বাড়িতে আগে একটি বরই এর গাছ ছিল আমার মা প্রতিবছর সেই গাছের বরই গুলো নিয়ে আচার তৈরি করতেন।গুড়ের বরই আচার খাওয়ার মজাই আলাদা। আপনি খুব সুন্দর ভাবে রেসিপির উপকরণগুলো দিয়েছেন। আচার হয়তো খুব সুন্দর হয়েছে খেতে।দারুন একটি পোষ্ট উপস্থাপন করেছেন আপু শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 10 months ago 

হুম খুব মজা হয়েছে। অনেকদিন আগে করা হয়েছিল।ছবি তুলে রেখেছিলাম। ধন্যবাদ।

 10 months ago 

ঘরোয়া পদ্ধতিতে বড়ই আচার রেসিপি দেখে জিভে জল আসছে। আসলে এই বরই আচার আমার ভিষণ প্রিয় বলাবাহুল্য এককথায়। বরই আচার রেসিপি দেখে লোভ সামলানো কঠিন। প্রতিটি ধাপ আপনি বেশ সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন আপু।

 10 months ago 

ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 56400.87
ETH 2980.27
USDT 1.00
SBD 2.19