ঐতিহ্যবাহী নকশিকাঁথা যা ছিল বাঙ্গালী রমনীদের মনের ডাইরি।
রবিবার ,
তারিখ -২৩ জুলাই ২০২৩
আসসালামু আলাইকুম,
প্রিয় ভাই ও বোনেরা, সকলে কেমন আছেন। আশা করি আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহেরবানিতে আপনারা সবাই ভালোই আছেন। আমিও আল্লাহ তায়ালার রহমতে ভালোই আছি। স্টিম ফর ট্রাডিশন কমিউনিটিতে আজ আমি ঐতিহ্যবাহী নকশীকাঁথা নিয়ে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। আশা করি সকলের ভালো লাগবে।
নকশিকাঁথা হলো সাধারণ কাঁথার উপরে সেলাই করা একধরনের বিশেষ কাঁথা। নকশিকাঁথা আমাদের গ্রামীণ ঐতিহ্যের একটি অন্যতম অংশ। গ্রামের মহিলারা বিভিন্ন কালারের সুতার সাহায্যে কাঁথার উপরে ফুল,ফল,লতাপাতাসহ নানান ধরনের জ্যামিতিক নকশাঁ ফুটিয়ে তোলে।গ্রামীণ নারীরা তাদের অবসর সময়ে বসে একসাথে গল্প করতে করতে এসব কাঁথা সেলাই করে থাকে।তারা তাদের জীবনের গল্প এসব কাঁথায় ফুটিয়ে তোলা। এক একটি বড় আকারের নকশিকাঁথা সেলাই করতে আট কিংবা দশ মাসের মতো সময় লাগে।
বাংলাদেশের প্রায় সব জেলাতেই নকশিকাঁথা তৈরি করা হয়ে থাকে। তবে একেক জেলাতে এই নকশিকাঁথা একেক নামে পরিচিত। নকশিকাঁথা তৈরি করার মূল উপকরণ হলো পুরনো কাপড় ও নানান রঙের সুতা।আধুনিক যুগে এখন অনেকে পুরনো কাপড়ের পরিবর্তে নতুন এক কালারের কাপড় ব্যবহার করছে।তবে নকশিকাঁথায় লাল ও হলুদ রঙের কাপড়েই বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে।
নকশিকাথাঁ সেলাই করার আগে সাধারণ কাঁথার উপরে আগেই কলম কিংবা পেন্সিল দিয়ে নকশাঁ ফুটিয়ে তোলা হয়। তারপর ঐ নকশাঁর উপরে বিভিন্ন রঙের সুতা দিয়ে নকশিকাঁথা সেলাই করা হয়।নকশিকাঁথায় নকশা প্রথমে মধ্যের অংশে আঁকতে হয়। এরপর পুরো কাঁথার উপরেই নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়।প্রাচীন কালে গ্রামের মহিলারা পুরনো শাড়ির পাড় থেকে রঙিন সুতা বের করে বিভিন্নরকম নকশিকাঁথা সেলাই করতো।এখন বাজারেই রঙের সুতা পাওয়া যায়।যা দিয়ে রমনীরা নিজের ইচ্ছে মতো পছন্দের রঙের সুতা দিয়ে নকশিকাঁথা সেলাই করছে।
ছবিতে আপনারা যে নকশিকাঁথাটি দেখতে পাচ্ছেন এটি আমার মামির হাতের সেলাই করা।এখনো সেলাই শেষ হয়নি।আরো একটু সেলাই বাকি রয়েছে। মামির কাছে শুনলাম তিনি নাকি এটি সাত মাস থেকে সেলাই করতেছে।তিনি লাল এক কালারের কাপড়ের উপর হলুদ সাদা ও নীল রঙের সুতা দিয়ে নকশিকাঁথাটি সেলাই করতেছেন। আমি ও মামির কাছে নকশিকাঁথা সেলাই শিখেছি কিন্তু তেমন একটা ভালো হয় না। আর আমার সেলাই করতে ও অনেক সময় লাগে।
নকশিকাঁথা শুধু এখন গ্রামের মহিলারাই নয় শহরের মহিলারাও অবসর সময়ে এসব নকশিকাঁথা সেলাই করছে।তবে অন্যান্য সময়ের থেকে বর্ষাকালে রমনীদের কাথাঁ সেলাই করতে বেশি দেখা যায়। কারন এ সময় তাদের কাজের চাপ একটু কম থাকে।আগেরকার দিনে গ্রামের মহিলারা সবাই অবসর সময়ে একসাথে বসে পানের বাটা পাশে নিয়ে পান খেয়ে গল্প করতে করতে কাঁথা সেলাই করতো।এখনো অনেক গ্রামেই এই রকম দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়।
আমার লেখা পোস্ট পড়ার জন্য সকলকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। সকলে সুস্থ ও ভালো থাকবেন।
মোবাইল | Tecno 9t spark |
---|---|
ক্যামেরা | ৩৮ মেগাপিক্সেল |
পোস্টের ধরণ | ঐতিহ্যবাহী নকশীকাঁথা। |
লোকেশন | চিরিরবন্দর, গুড়িয়া পাড়া। |
ধন্যবাদ,
@siza
বর্তমানে এই ধরনের নকশিকাঁথা গ্রামের মানুষ খুবই ভালো ভাবে তৈরি করে বিক্রি করে থাকেন। তবে এই ধরনের নকশিকাঁথা আমাদের দেশের ঐতিহ্য বহন করে। আর এই নকশিকাঁথা গুলো বড় বড় শপিং মলে পাওয়া যায়। কিন্তু দাম অনেক বেশি। দারুণ ফটোগ্রাফি করেছেন আপনি। ধন্যবাদ
নকশী কাঁথা আমাদের দেশের একটি বড় ঐতিহ্য। প্রাচীনকাল থেকে নকশী কাঁথার ব্যবহার আমাদের দেশে হয়ে আসছে। কিন্তু বর্তমানে নকশী কাঁথার দাম অত্যন্ত বেশি হওয়ায় এর ব্যবহার কম হয়। নকশী কাঁথা গুলো অনেক বেশি পরিশ্রম করে তৈরি করা হয়।
ধন্যবাদ ভাইয়া
নকশীকাঁথা বাঙালি নারীদের এক ঐতিহ্যবাহী শিল্প। এই নকশীকাঁথার সাথে বাঙালি মেয়েদের আবেগ জড়িয়ে আছে, একসময় প্রতিটি বাড়িতে অবসর সময়ে এই নকশীকাঁথার কাজ করা হতো, এখন খুব একটা দেখা যায় না। এখন নকশীকাঁথা বাণিজ্যিক আকার ধারণ করেছে। কাথার উপরে ফুল তৈরি করে হস্তশিল্প ফুটিয়ে তুলা হয়। সুন্দর লিখছেন আপু। অনেক ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনার পোস্টটি পড়ে জসিম উদ্দিনের নকশী কাঁথার মাঠ কবিতার কথা মনে পড়ে গেল। আমাদের দেশের কিছু পুরাতন ঐতিহ্যের ভেতর নকশী কাঁথা হলো অন্যতম।গ্রামীণ মহিলারা খুব সুন্দর ভাবে কাঁথাতে তাদের ভালোলাগা, সুখ-দুঃখের ছবি পশু পাখির ছবি ফুটিয়ে তোলেন। দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন ধন্যবাদ আপনাকে।
নকশিকাঁথা আমাদের গ্রামীণ ঐতিহ্যের অন্যতম একটি অংশ। নকশিকাঁথা বলতে আমরা বুঝি সাধারণত কাঁথার উপরে সুই সুতোর মাধ্যমে সেলাই করা এবং বিভিন্নরকমের নকশা তৈরি করাকে বুঝায়।নকশিকাঁথা নিয়ে বেশ সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন আপু।
https://twitter.com/siza37854890783/status/1683433346087673857?t=cfWIbeJUM-NkX8SV6vkE3g&s=19
ধন্যবাদ আপু
খুবই চমৎকার একটি পোস্ট করেছেন। নকশিকাঁথা শুধু গ্রাম বাংলার না এটি পুরো বাংলার ঐতিহ্য। বৃষ্টির দিনে গ্রামের মহিলারা বাড়িতে বসে এই নকশিকাঁথা সেলাই করতো। তবে এখন আর সেই দিনগুলো দেখা যায় না।
আপনার টাইটেলটা অনেক জোস।নকশি কাঁথা শত শত বছরের পুরনো ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের সংস্কৃতির একটা অংশ। নারীরা সবচেয়ে বেশি নকশী কাঁথার প্রতি আকর্ষিত। নকশি কাঁথা বাংলাদেশের ঐতিহ্য বহন করে। পিকচারগুলো দেখেই মনে হচ্ছে মামীর হাতে জাদু রয়েছে। আপনার জন্য দোয়া করতেছি আপনিও সুন্দর পারদর্শী হন নকশী কাঁথার উপর। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।
আপনি একদম ঠিক কথা বলেছেন আপু। গ্রামের নারীদের সৌখিনতা ,মন খারাপ সবকিছুই তারা ডায়েরির মত করে ফুটিয়ে তুলতো এই নকশি কাঁথায়। তাইতো এই নকশি কাঁথাগুলোর এত কদর। নকশি কাঁথা নিয়ে অসাধারণ একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন আপু। আপনার ফটোগ্রাফিতে দিয়েছেন নকশি কাথাটি অনেক সুন্দর। ধন্যবাদ আপনাকে।