প্রতিযোগিতা- স্কুল জীবনের মজার স্মৃতি

in Steem For Tradition2 years ago (edited)
আসসালামু আলাইকুম

আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। কমিউনিটি কর্তৃক আয়োজিত স্কুল জীবনের মজার স্মৃতি কন্টেস্টটিতে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি। তো চলুন শুরু করা যাক।
Picsart_23-06-27_12-53-48-591.jpg

Device : Mi A2 | | Plus code : HJ3G+23

স্কুল লাইফটা হলো এমন একটা সময় যা কখনো ভোলার নয়। বিশেষ করে নবম-দশম শ্রেনির সময়টা সবচেয়ে বেশী স্মৃতিমধুর হয়ে থাকে। আমারও এই রকম অনেক স্মৃতি আছে। আমি ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড উচ্চ বিদ্যালয়, খোলাহাটি, পার্বতীপুর, দিনাজপুরে লেখাপড়া করতাম। ২০১৭ সালে আমি নবম শ্রেনিতে উঠি। নবম শ্রেনির ছাত্র মানে নতুন পাখা গজানো। আমাদের স্কুলে সাধারণত মোবাইল নিয়ে যাওয়া যায় না। সপ্তাহে ১দিন করে চেক করা হয়। যদি কারো কাছে মোবাইল পাওয়া যায় তাহলে তার অভিভাবক ডেকে একটা ফয়সালা করে তারপর মোবাইল দেয়া হয়। আমার বন্ধু জয় বিশ্বাস একদিন সাহস করে মোবাইল নিয়ে আসলো। সেদিন আমরা খুব ভয়ে ছিলাম যে যদি আজকে সার্চ করে তাহলে তো শেষ। কিন্তু সেদিন সার্চ করা হয় নি। তারপর থেকে জয়ের সাহস আরো বেড়ে গেলো। এরপর থেকে থেকে প্রায়ই স্কুলে মোবাইল নিয়ে আসা শুরু করলো।

এরপর জয় আরেকদিন মোবাইল নিয়ে আসলো। ওইদিন সেদিন আমরা ক্লাস চলাকালীন মোবাইল দিয়ে ভিডিও করেছিলাম। বুদ্ধিটা ছিলো আমার। মোবাইলটা বই সাথে দাড় করিয়ে মোবাইলের যেই যায়গায় ক্যামেরা থাকে ওই যায়গা বরাবর বই এর অপ্রয়োজনীয় একটা পেজে ফুটা করেছিলাম। তারপর স্যারও বুঝতে পারে নি এবং ক্লাসের বাকি সবাইও বুঝতে পারেনি। ওইদিন আমরা টিফিনের সময় যখন টয়লেটে গিয়েছিলাম তখন সবাই মিলে সেলফি তুলেছিলাম। সেলফি তোলার সময় তখন কেউ কেউ প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ব্যাস্ত ছিলো।

Picsart_23-06-27_12-55-17-822.jpg

Device : Mi A2 | | Plus code : JJC9+WV

তারপর স্কুল ছুটির পর জয় আর আমি ট্রেনে করে গেলাম দিনাজপুর। আমাদের পরনে স্কুল ড্রেস ও আইডি কার্ড ছিলো যার কারনে টিটি এসে আমাদের কাছে টিকিট টাকা কোনোটাই চায়নি। দিনাজপুরে মডার্ন হলে গিয়ে সিনেমা দেখেছিলাম সেই দিন। ওতাই ছিলো আমার জীবনের প্রথম সিনেমা হলে সিনেমা দেখা।

একদিন স্কুল ছুটির পর আমরা বীর উত্তম শহীদ মাহবুব সেনানিবাস থেকে লিচু চুরি করতে গিয়েছিলাম। রাস্তার দুই পাশে দুইজন পাহাড়া ছিলো, আমি ছিলাম গাছের নিচে আর গাছে উঠেছিলো মনির। মনির একটি ব্যাগে অনেকগুলো লিচু ভরেছিলো। তবে ওইদিন গাছ থেকে নামার সময় মনিরের হাতে আঘাত লাগে।

1687848719015.jpg

Device : Mi A2 | | Plus code : MX3H+X7
Kholahati, Bangladesh

আমরা টিফিনের সময় আমাদের স্কুলের ক্যান্টিন থেকে খাবার এনে সাইকেল গ্যারেজে বসে টিফিন খেতাম। একদিন আমি জয়ের ছোটো ভাইয়ের ছোটো সাইকেলটা উপরে তুলেছিলাম। ওটা দেখে জয়ও অন্য একটা ছোটো ছেলের একটা সাইকেল তুলে হাটতে থাকলো। একসময় ভার সহ্য করতে না পেরে সাইকেলটা ফেলে দিলো। আর অমনি ওই সাইকেলের মালিক স্যারের কাছে বিচার দিলো। বিচারে আমার বন্ধু জয়কে ১সপ্তাহের জন্য স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হলো ও তার নাম দেয়া হলো বাহুবলী।

স্কুল থেকে প্রতিবছর পিকনিকে নিয়ে যেতো। তবে সবচেয়ে মজা হয়েছিলো যে বার আমরা দশম শ্রেনির ছাত্র ছিলাম। কেননা তখন আমরাই স্কুলের সবচেয়ে সিনিয়র। পিকনিকে আমাদেরকে আর্মিদের বাসে কপ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। ২০১৮ সালের পিকনিকে নাচতে নাচতে আমরা বাসের সব লাইটগুলো ভেঙে ফেলেছিলাম। দিনাজপুর রামসাগরে সবাই মিলে বিশাল একটা দল নিয়ে ঘুরেছিলাম।

1687848967773.jpg

Device : Mi A2 | | Plus code : MX3G+WW

আমাদের যেদিন বিদায় দেয় সেইদিন সবাই মিলে বসে গল্প করছিলাম। তখন আমার বন্ধু টুটন বললো যে এতোবছর ধরে এই স্কুলে পড়লাম একটা প্রেম করা হইলো না। তখন আমাকে বললো দোস্ত তুই একটা মেয়ে পছন্দ কর আমরা সবাই মিলে।তোর প্রেম করে দিবো। তারপর সবাই জোড়াজুড়ি করলে আমি একটা মেয়েকে দেখিয়ে দিলাম। আমার বন্ধু মাহফুজ গিয়ে মেয়েটিকে বললো। মেয়েটি কিছু না বলে চলে গেলো। তারপর সবাই আমাকে বললো যে তুই খালি মেয়েটার দিকে তাকিয়ে থাকবি। ওইদিন অনেক্ষন মেয়েটার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। ওরা যেখানে যায় আমরাও সেখানে যেতাম। আমাদের বিদায় দেয়ার পরও আমার সব বন্ধুরা স্কুলে আসতো ওই মেয়ের জন্য। এরকম আরো অনেক স্মৃতি আছে যেগুলো বলে শেষ করবার মতো নয়।

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iQCW3x9n2uynVMGW3wmT9DUY3tkL5yKqreL6eXfh8wAstP8uJhgF1re5crbeDud2G1F9PgppiRC.png

তো বন্ধুরা এই ছিলো আমার আজকের পোস্ট। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। ভূল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

ধন্যবাদ সবাইকে


Vote for @bangla.witness

Sort:  
 2 years ago 

স্কুল জীবন টা অনেক আনন্দের। সে সময়ের স্মৃতিগুলো সারা জীবন মনে থাকবে। আর আমরা স্কুল জীবনে এরকম অনেক মজা করেছি। অনেক সুন্দর পোস্ট করেছেন ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

ধন্যবাদ

 2 years ago 

স্কুল জীবনের অনেক স্মৃতি মনে আছে, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়া। ক্লাস ফাঁকি দিয়ে সিনেমা দেখা। খুবই সুন্দর উপস্থাপন করেছেন ভাই। অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই

 2 years ago 

স্কুল জীবনের আমাদের অনেক স্মৃতি রয়েছে যেগুলো কখনো ভোলার নয়।আপনার পোস্টটি পড়ে আমার ও স্কুল জীবনের কথা মনে পড়ে গেল। স্কুল জীবনে অনেক বার ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতাম।ধন্যবাদ ভাইয়া স্কুল জীবনের স্মৃতি নিয়ে এতো সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু

Loading...
 2 years ago 

স্কুল জীবনটাই হয়তো বেশি ভালো হয়। কিন্তু আমরা যখন যে জায়গায় থাকি, তখন মনে করি পরবর্তী ধাপে গেলে মনে হয় বেশি ভালো হয়৷ তবে পড়াশোনা শেষ করে এখন চাকরি করার পর মানুষ ভাবে স্কুলের লাইফটাই বেস্ট ছিলো৷ চমৎকার একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই

 2 years ago 

আপনি ঠিকই বলেছেন স্কুল জীবনে যখন নবম-দশম শ্রেণিতে উঠি তখন সিনিয়র হওয়ার ফলে আলাদা একটা ভালো লাগা কাজ করে। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার স্কুল জীবনের স্মৃতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু

 2 years ago 

আপনি খুব সুন্দর একটি স্মৃতি শেয়ার করেছেন। প্রতিযোগীতার জন্য শুভকামনা রইল। সবারই জীবনে এমন কিছু স্মৃতি থাকে।অনেক ধন্যবাদ আপনার স্মৃতিটি শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু

 2 years ago 

Screenshot_2023-06-27-23-34-21-26_40deb401b9ffe8e1df2f1cc5ba480b12.jpg

তুই আমাদের জমিরহাটে ভালো ছিলিস। ওখানে গিয়ে পাঠা সেজেছিস। ক্লাস ফাঁকি দিয়ে সিনেমা দেখতে গিয়েছিস, আর একবার যে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে গার্লফ্রেন্ডের সাথে ঘুরতে গিয়েছিলিস সেটা তো বললি না।

 2 years ago 

স্কুলে বন্ধুদের সাথে এমন অনেক মজার স্মৃতি থাকে যেগুলো আমরা পরবর্তীতে মিস করি। কিছুটা আফসোস হয়, কারণ এরকম সময় আর ফিরে আসেনা। আপনার পোস্টটি পড়ে ভালো লাগল। আপনার বন্ধুদের সাথে আপনার সুসম্পর্ক বজায় থাকুক এটাই চাই। ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.13
TRX 0.23
JST 0.031
BTC 82268.63
ETH 2074.55
USDT 1.00
SBD 0.77