উদ্ভিদের রোগ ও প্রতিকার
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
Image Created by OpenAI
আজকে আপনাদের সাথে উদ্ভিদ সম্পর্কে একটি পোস্ট শেয়ার করে নেবো। আমাদের চারিপাশের বিভিন্ন ধরণের উদ্ভিদ যেমন তার বিভিন্ন আকার-আকৃতি, রং এর মাধ্যমে পরিবেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে থাকে। তেমনই আমাদের প্রত্যাহিক জীবনে এইসব উদ্ভিদের গুরুত্বও অনেক প্রয়োজনীয়। আবার আমরা মানুষ সহ বিভিন্ন ধরণের প্রাণিকুল যেমন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকি, তেমনি উদ্ভিদও কিন্তু বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। তো উদ্ভিদ নিয়ে আজকের বিষয়টিও এই রোগ সম্পর্কে এবং তার প্রতিকারও কিভাবে করা যায়, সেটা এই বিষয়ে তুলে ধরবো। মূলত এই রোগের বিষয়টিও যেমন আমাদের প্রাণীকুলের ক্ষেত্রে যদি সঠিক সময়ে নির্বাচন করে নিরাময় না করা যায়, তাহলে অনেক বড়ো ক্ষতি হয়ে যায়। তেমনই এই একইভাবে যদি উদ্ভিদের বিভিন্ন রোগের বিষয়ে সঠিক সময়ে নিরাময় না করা যায়, তাহলে ঠিক ওই একইভাবে সমস্ত উদ্ভিদ মারা যেতে পারে।
উদ্ভিদের একটি প্রধান রোগের বিষয়ে যদি বলি, তাহলে ফাঙ্গাসের বিষয়টা উঠে আসে, এখানে ফাঙ্গাস অতি সাধারণ রোগের মধ্যে হলেও এটি অনেক ক্ষতিকারক উদ্ভিদের ক্ষেত্রে। এই ফাঙ্গাসের বিষয়টা হলো, এটি আদ্র আবহাওয়ায় খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এই ফাঙ্গাস এর আবার বিভিন্ন প্রকারের রোগ আছে, যেমন- পাউডারি মিলডিউ, ডাউনির মিলডিউ এবং রুট রট। এই যে প্রকারের বিষয়ে বললাম, আপনারা যারা উদ্ভিদ পরিচর্যা করে থাকেন, তারা দেখবেন যে, উদ্ভিদের পাতায় উপরিভাগের দিকে সাদা সাদা একধরণের পাউডার মতো পড়ে থাকে, আবার পাতা হলুদ হয়ে যায় এবং সেই পাতায় হাত দিলেই আবার ঝরে পড়ে। এছাড়া উদ্ভিদের অনেক ক্ষেত্রে এই ফাঙ্গাসের কারণে মূল পচে গিয়ে মারা যায়।
এই সমস্যাগুলো এই তিন প্রকারের ফাঙ্গাসের কারণেই দেখা যায়। তবে এইগুলোর প্রতিকার করা যায়, যেমন- উদ্ভিদের চারিপাশ প্রতিদিন পরিষ্কার রাখা, অতিরিক্ত জল জমতে না দেওয়া এবং যেসব অংশ আক্রান্ত হচ্ছে, সেই অংশ কেটে ফেলা। ফাঙ্গাসের পরে যে রোগটা উদ্ভিদে আক্রমণ করে থাকে, সেটি হলো-ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ। এই ব্যাকটেরিয়া আরেকধরণের জটিল রোগ, যার ফলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উদ্ভিদ টিকিয়ে রাখা যায় না। আর এই ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগগুলো দ্রুত ছড়াতে থাকে। এই ব্যাকটেরিয়ার কারণে দেখবেন, অনেক সময় গাছের পাতায় কালো কালো দাগ হয়ে যায়, আবার লেবু গাছের ক্ষেত্রে দেখবেন যে- হলুদ বা বাদামি কালারের একধরণের ক্ষত মতো হয়ে গিয়েছে। এই সমস্যাগুলো মূলত ব্যাকটেরিয়াল ব্লাইট এবং সাইট্রাস ক্যানকার এর কারণেই হয়ে থাকে।
এটারও প্রতিকার আছে, যেমন- এক্ষেত্রে যেসব উদ্ভিদ আক্রান্ত হচ্ছে, তা অন্য উদ্ভিদ থেকে আলাদা করে রাখা। তারপর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কৃষি খাতে ব্যবহৃত সরন্জাম ব্যবহার করা। তারপর উদ্ভিদে কোপার ভিত্তিক যেসব ছত্রাকনাশক আছে, তা ব্যবহার করা। ব্যাকটেরিয়ার পরে যে রোগটা উদ্ভিদের ক্ষেত্রে একটা কঠিন সমস্যা নিয়ে আসে, সেটি হলো ভাইরাস। ভাইরাস কিন্তু যেকোনো উদ্ভিদের স্বাভাবিক বৃদ্ধিকে থামিয়ে দেয় এবং উদ্ভিদগুলো ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে যায়। আপনারা টোবাকো মোজাইক ভাইরাস এর কথা শুনে থাকবেন, যেটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আলু গাছের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই ভাইরাসের কারণে পাতাগুলো বিবর্ণ এবং মোচড়ানো ভাব এসে যায়। এছাড়া আরেকটা ভাইরাস আছে, যেমন- ক্যাভেন্ডিশ ব্যানানা ভাইরাস। এটা নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে, এটা কলা গাছের ক্ষেত্রে দেখা যায়। তবে এর মধ্যে টোবাকো মোজাইক ভাইরাসটাই কমন, কারণ এটি বেশি দেখা যায়।
এর প্রতিকার স্বরূপ, আক্রান্ত উদ্ভিদগুলোকে সনাক্ত করে ধংস করে ফেলতে হবে, তাছাড়া পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং রোগ প্রতিরোধী জাতের উদ্ভিদ ব্যবহার করতে হবে। উদ্ভিদ কিন্তু শুধু এইসব ব্যাকটেরিয়াম ভাইরাস এর দ্বারা আক্রান্ত হয় না। কীটপতঙ্গ দ্বারাও আক্রান্ত হতে পারে। অনেক সময়ে ক্ষেতে লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন যে, কীটপতঙ্গ উদ্ভিদের ক্ষতি করে থাকে এবং তাদের মাধ্যমে আবার রোগও ছড়িয়ে থাকে। তবে সবধরণের কীটপতঙ্গ না, কিছু কিছু প্রকারের কীটপতঙ্গ আছে, যাদের দ্বারা এই রোগ ছড়িয়ে থাকে। যেমন-এফিড, হোয়াটফ্লাই এবং কাটওয়ার্ম জাতীয় কীটপতঙ্গ আছে, যারা বিভিন্ন ভাবে উদ্ভিদের ক্ষতি করে থাকে। আপনারা রাস্তাঘাটে চলার সময়ে হয়তো লক্ষ্য করেছেন, একধরণের পোকা গাছের সমস্ত পাতা খেয়ে ফেলে।
এইরকম বিভিন্ন ভাবে ক্ষতি এবং রোগ এর প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে থাকে। এর প্রতিকার করার একমাত্র উপায় হলো- উদ্ভিদে জৈব কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে, তারপর যেসব পোকা উদ্ভিদের জন্য উপকারী, তাদের রাখতে হবে। এছাড়া এই ক্ষেত্রেও আক্রান্ত উদ্ভিদগুলো তুলে আলাদা করে ফেলতে হবে। এইরকম আসলে বিভিন্ন কারণে উদ্ভিদের রোগ বালাই ছড়িয়ে থাকে। তবে এইসবের যদি সঠিক সময়ে প্রতিকার করা যায়, তাহলে উদ্ভিদে রোগ নিরাময় করা যায়। এটা উদ্ভিদ প্রেমীদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় বিষয়।
শুভেচ্ছান্তে, @winkles
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |




Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ফাঙ্গাস যে উদ্ভিদের ক্ষতি করে সেটা জানা ছিলো, কিন্তু ফাঙ্গাস এর যে বিভিন্ন প্রকারের রোগ আছে সেটা জানা ছিলো না দাদা। এই পোস্টটি পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম। আপনি উদ্ভিদের রোগ ও প্রতিকার সম্পর্কে দারুণ আলোচনা করেছেন দাদা। বেশ ভালো লাগলো পোস্টটি পড়ে। এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
উদ্ভিদ সম্পর্কে যেন এক বিস্তারিত বর্ননা পড়লাম এবং অনেক কিছু সম্পর্কে ধারণা পেলাম।আসলে আগে অনেক উদ্ভিদের জুরিবুটি নিয়ে মানুষ বেশ চর্চা করতো রোগ প্রতিকারে।কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবকিছুই যেন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।তাছাড়া বিভিন্ন উদ্ভিদের রোগ সম্পর্কেও জানতে পারলাম,ধন্যবাদ দাদা।
দাদা আপনি আজ উদ্ভিদের রোগ ও প্রতিকার বিষয়ে সুন্দর একটি ব্লগ শেয়ার করেছেন। খুব চমৎকার ভাবে উদ্ভিদের রোগ ও এর প্রতিকারের নানা দিক গুলো তুলে ধরেছেন। খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট আজ শেয়ার করেছেন। অনেক কিছুই জানা হলো উদ্ভিদের রোগ ও প্রতিকার বিষয় নিয়ে।অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি শেয়ার করার জন্য।