অচেনা ডাক ( পর্ব ৪ )
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
Image Created by OpenAI
আজকে আপনাদের সাথে "অচেনা ডাক" গল্পটির পরবর্তী অংশটি শেয়ার করে নেবো। অতনু যে মেঝেতে দাঁড়িয়ে ছিল, সেখানে হঠাৎ কম্পন শুরু হয়ে চারিদিকে অন্ধকার যেন ছেয়ে যায়। এরপর ওখানে সেই মূর্তিটি এক হাত তুলে একটি অগ্নি শিখা তৈরি করলো। এরপর ওই শিখাটি মেঝেতে পড়ে এবং একটি আগুনের বৃত্ত তৈরি হয়ে যায়। এখন এই যে আগুনের একটা সার্কেল তৈরি হলো, ওখানেই অতনুকে এই নতুন চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হবে। মূর্তিটি তখন অতনুকে বললো যে, তোমার মন যদি দৃঢ় শক্ত আর সাহসী না হয়, তাহলে এখানে তুমি টিকে থাকতে পারবে না। কারণ এই আগুনের বৃত্তের ভিতরে গিয়ে চ্যালেঞ্জ এর সম্মুখীন হওয়া কোনো সাধারণ বিষয় না।
এরপর অতনু অনেক সাহসের সাথে ওই অগ্নি সার্কেলের ভিতরে প্রবেশ করলো এবং সেই আগুনের শিখা যেন আরো বেশি প্রজ্জ্বলিত হয়ে গেলো। এরপর সেই আগুনের মধ্যে থেকে অতনুর সামনে একটা ধোঁয়ার কুন্ডলি মতো উঠলো এবং তার থেকে একটি ছায়ার উদয় হলো। আর এই ছায়াটা আবার অতনুর মতোই দেখতে। এইবার মূর্তিটি অতনুকে বললো যে, আমি তোমার ভিতরের ভয়, আমি সবকিছু জানি, যে তুমি কি নিয়ে সন্দেহ করছো এবং কি নিয়ে ভয় পাচ্ছ। কিন্তু এইরকম ভয় আর সন্দেহ নিয়ে তুমি কিভাবে আমার মুখোমুখি হবে? অতনু এই কথা শুনে থমকে গেলো, সে আমার সবকিছুই জানতে পারছে, বুঝতে পারছে, আমার মন পড়তে পারছে।
অতনুর মনের ভিতরে যেন আবার সেই আগের মতো পুরোনো ভয় এসে জর্জরিত হতে লাগলো। এই মূর্তিটি তখন তার এই সাধারণ দুর্বলতা নিয়ে একটু কটাক্ষ স্বরে বললো যে, তুমি তো জানো এইসব পারবে না, তুমি ব্যর্থ হবে আর সবাই তোমাকে ভুলে যাবে। অতনু কিছুক্ষন চুপ থাকার পরে আবারো সবকিছু ভুলে মনে সাহস আনার চেষ্টা করলো এবং সে ভাবলো এই মূর্তিকে হারানোর একমাত্র উপায় হলো নিজের ভয়কে স্বীকার করা এবং তাকে অতিক্রম করা। অতনু মূর্তিকে দৃঢ় ভাবে বললো যে- হ্যা, আমি ভয় পাই। কিন্তু তার মানে ভয়কে অস্বীকার করা নয়, তাকে মেনে নিয়েই সাহসিকতা দেখাতে হয়। অতনু মূর্তিটির সেই কটাক্ষ কথাকে কেন্দ্র করে আরো বললো যে-আমি ভুল করবো, ব্যর্থ হবো, কিন্তু তার মানে আমি থেমে যাবো না, আরো দৃঢ়তার সাথে লড়াই করবো।
এই কথা শোনার পরে মূর্তিটি একটা চিৎকার করে সেই ধোঁয়ার সাথে মিশে গেলো এবং সাথে সাথে তার চারিপাশে সার্কেলের মতো যে আগুনের শিখা জ্বলছিল, সেটা নিভে যায়। এরপর ওখানেই মেঝেতে একটি চিহ্ন প্রজ্জ্বলিত হয়ে উঠলো। এরপর অতনুর সামনে প্রথমে যে মূর্তিটি প্রকট হয়েছিল, তার কণ্ঠ আবারো অতনু শুনতে পায়, যে তুমি এই চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে পেরেছি, কিন্তু এটা কেবল শুরু হলো, সামনে আরো বিপদ আসছে। এরপর সেই আগুনের বৃত্তের বাইরে আসার সাথে সাথে সে একটি বই দেখতে পেলো। বইটি যদিও দেখে তার কাছে অনেক পুরানো মনে হয়, কিন্তু এই বইয়ের উপরে কিছু রহস্যময় প্রতীক জ্বলজ্বল করছিলো, যেন অতনুকে কিছু সংকেত দিচ্ছিলো।
এরপর অতনু বইটি খুলে পৃষ্ঠা উল্টিয়ে দেখতে থাকে। সেখানে একটি পৃথিবীর মানচিত্র দেখতে পায় এবং তাতে কিছু কিছু জায়গা লাল বিন্দু দিয়ে চিহ্নিত করা আছে। এইগুলো দেখে অতনু নিজে নিজে ভাবনায় ডুবে যায় আর বোঝার চেষ্টা করে এইসবের মানে। তখন সেই বয়স্ক লোকটি এসে তাকে বলে, এইগুলো সেইসব জায়গা, যেখানে অন্ধকার শক্তি জাগ্রত হয়ে উঠেছে। আর এইসব জায়গায় তোমাকে যেতে হবে এবং এই অন্ধকার শক্তিকে থামাতে হবে। কিন্তু অতনু এইসব কিছু কিভাবে কি করবে সেটা তার আসলে ধারণার বাইরে, কারণ সে নিজেও আসলে বুঝে উঠতে পারছে না কিভাবে করবে বা আদৌ করতে পারবে কিনা!
তবে লোকটি তাকে একটু সাহস দিয়ে বলে যে, তুমি একা নও এই যাত্রায়। যাত্রা পথে তুমি সঙ্গী বা মিত্র পাবে, কিন্তু একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যে, সব সঙ্গী সঠিক বন্ধু নাও হতে পারে। এইবার অতনুর আসল যাত্রা শুরু হলো, সে বইটি নিয়ে মন্দিরের ভিতর থেকে বাইরে বের হলো। অতনুর মনের ভিতরে ছিল ভয়, কারণ সে একা একা এই কঠিন যাত্রা করছে, তবুও তার মনে এক বিশাল দৃঢ়তা ছিল। এই বইয়ের প্রতীক চিহ্ন অনুযায়ী অতনুর প্রথম গন্তব্য ছিল একটি বিশাল গভীর জঙ্গল, যেখানে লুকিয়ে আছে অন্ধকার শক্তির প্রথম সূত্র।......
শুভেচ্ছান্তে, @winkles
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
অতনু আস্তে আস্তে তার প্রতিটা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে, আর এগুলো খুব ভালোভাবে অতিক্রম করছে দেখে ভালো লাগলো। আগুনের শিখার চ্যালেঞ্জটাও সে ভালোভাবে অতিক্রম করেছে। এই গল্পের চতুর্থ পর্ব টা সত্যি খুব ভালো লেগেছে দাদা। এর আগের পর্বগুলো আমার পড়া হয়েছে। আশা করছি আপনি একে একে প্রতিটা পর্ব শেয়ার করবেন। অপেক্ষায় থাকলাম দাদা পরবর্তী পর্ব পড়ার জন্য।
অতনুর সামনে তো দেখছি একের পর এক ভয়ংকর চ্যালেঞ্জ আসছে। এমন পরিস্থিতিতে মনের মধ্যে সাহস রাখাটা খুবই কঠিন। তবুও অতনু প্রতিটি ধাপে সাহসিকতার পরিচয় দিচ্ছে। দেখা যাক অতনু বিশাল গভীর জঙ্গলে গিয়ে অন্ধকার শক্তির প্রথম সূত্র খুঁজে পায় কিনা। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।
অতনু নিজের চ্যালেঞ্জ গুলোকে খুব ভালোভাবে অতিক্রম করছে। তবে একটার পর একটা ভয়ানক চ্যালেঞ্জ তার সামনে আসছে। তবে আশা করি তার সামনে যতগুলো চ্যালেঞ্জ আসবে, সে খুব ভালোভাবে প্রতিটা চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করে নিতে পারবে। আশা করছি শীঘ্রই পরবর্তী পর্ব আমাদের মাঝে শেয়ার করে নিবেন।