শৈশব স্মৃতি ||ছোট বেলায় দাদা বাড়িতে কাটানো কিছু মুহূর্ত
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করছি সবাই সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে মোটামুটি ভাল আছি।
শৈশব স্মৃতি ||ছোট বেলায় দাদা বাড়িতে কাটানো কিছু মুহূর্ত
ছোট বেলায় স্কুল ছুটি হলেই পুরো পরিবার চলে যেতাম দাদা বাড়িতে।সেখানে চমৎকার সময় কাটাতাম চাচাতো ভাই বোনেরা সবাই মিলে। বিভিন্ন ধরনের খেলায় মেতে উঠতাম । কখন যে ছুটির দিন গুলো কেটে যেত বুঝতেই পারতাম না। সত্যি ছোটবেলার আনন্দঘন মুহূর্ত ভোলার নয় । যদিও গ্রামের বাড়িতে যেয়ে বিভিন্ন দৌড় ঝাঁপ করা, লুকোচুরি খেলা, ঘুরে বেড়ানোর জন্য বাবা মায়ের কাছ থেকে বকাঝকাও কম খেতে হয়নি ।এরকমই একটি ঘটনা ঘটেছিল একবার ছুটির সময় দাদার বাড়িতে গেলে।
তখন আমি ক্লাস টু তে কিংবা থ্রি তে পড়ি। ভালোভাবে মনে নেই বেশ ছোটই ছিলাম ।আমার সমবয়সী আমার এক চাচাতো বোন ছিল তার সঙ্গে বেশিরভাগ সময় কাটানো হতো। আমার ছোট বোন আমার চাচাতো বোন আর আমি আমরা তিনজন মিলে বেশ খেলাধুলা করতাম ।তখন গ্রামে রিকশায় করে মাইকিং করা হতো। মানে সিনেমার এনাউন্সমেন্ট করা হতো ।তখন সিনেমা হল গুলোতে কোন সিনেমা চলছে সেই সব নিয়ে ।সেরকমই একটি রিক্সা আমাদের বাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছিল । আমরা তিনজন মিলে সেই রিক্সার পিছু নিতে থাকলাম। সে রিক্সার পেছনে দৌড়াতে দৌড়াতে আমরা অনেক দূর পর্যন্ত চলে গেলাম।
অনেক দূর পর্যন্ত দৌড়াতে দৌড়াতে যখন আমরা সবাই ক্লান্ত হয়ে পড়লাম তখন আমরা থেমে গেলাম। হঠাৎ আমাদের মাথায় আসলো আমরা এই রিক্সার পেছনে কেন দৌড়াচ্ছি? আমরা তো এভাবে অনেক দূর চলে এসেছি। এখন আমরা বাড়িতে ফিরব কি করে ।যেহেতু দীর্ঘ সময় আমরা দৌড়িয়েছি তাই কারো শরীরে আর এনার্জি ছিল না আবার দৌড়াতে দৌড়াতে বাড়ি ফিরে যাবার ।যদিও সোজা রাস্তা ছিল যার কারণে বাড়ির পথ খুব একটা কঠিন ছিল না। তারপর আমরা হেঁটে ধীরে সুস্থে দীর্ঘ সময় নিয়ে বাড়িতে ফিরেছিলাম।
এদিকে বাড়িতে দীর্ঘ সময় আমাদেরকে না দেখতে পেয়ে বাড়ির লোকজনেরা মোটামুটি একটু চিন্তিত হয়ে পড়েছিল। যদিও তখনকার দিনে এখনকার বাচ্চাদের মত অতটা ভয়ের কারণ ছিল না। তখনকার দিনে গ্রামে অতটা ভয়ের কোন কারণ ছিল না, যার কারণে তারা খোঁজাখুঁজি শুরু করেনি। কারণ তারা জানে আশেপাশে কোথাও আছি। যার কারণে তারা খোঁজাখুঁজি শুরু করেনি ।কিন্তু প্রচন্ড রেগে ছিল ।আমরা যখন দীর্ঘ সময় পর বাড়িতে পৌঁছলাম তখন সবাইকে এমন বকা দিল যে আমরা ভয়ে একদম চুপ হয়ে গেলাম । যদিও হাতের মার খাইনি ,তবে মুখের প্রচন্ড মার খেয়েছি। আমরা তিনজনই প্রচন্ড ভয় পেয়েছিলাম এবং বুঝতে পেরেছিলাম আমরা অন্যায় করেছি।
যদিও আমরা আনন্দের ছলে ছলে ওই রিক্সার পেছন পেছন গিয়েছিলাম ।আমাদের ওই কাজটি করা ঠিক হয়নি পরে যদিও নিজেরাই বুঝতে পেরেছিলাম। তারপরেও অনেক বকাবকি খেতে হয়েছিল। তারপরে আর কোনদিন এ ধরনের কোন ঘটনা আমরা ঘটাই নি। তবে সেই স্মৃতিগুলো আজও আমার কাছে মনে আছে । আসলে বাচ্চা বয়সে কখন কোন কাজটি করতে ভালো লাগে সেটি কেউই বলতে পারেনা। তাই ভাবলাম আপনাদের সঙ্গে ঘটনাটি শেয়ার করি ।আশা করছি আপনাদের কাছেও কিছুটা হলে ভালো লাগবে।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ।আগামীতে আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার ব্লগ টি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফার: | @wahidasuma |
---|---|
ডিভাইস: | OPPO Reno8 T |
🔚ধন্যবাদ🔚
@wahidasuma
আমি ওয়াহিদা আফরোজ সুমা।আমি একজন হাউজ ওয়াইফ। সমাজবিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স করেছি।ঘুরে বেড়াতে , ঘুমাতে এবং গান শুনতে আমি ভীষন পছন্দ করি।বাগান করা আমার শখ।এছাড়াও আর্ট , বিভিন্ন রেসিপি ট্রাই করতেও ভালো লাগে। আমি 🇧🇩বাংলাদেশি🇧🇩।বাংলা আমার মাতৃভাষা।আমি বাংলায় কথা বলতে ও লিখতে ভালোবাসি।ধন্যবাদ আমার বাংলা ব্লগকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ছোটবেলায় স্কুল ছুটি হলে দাদা বাড়িতে গিয়ে তো দেখছি বেশ ভালোই আনন্দ করতেন আপু। শৈশবের স্মৃতি কখনোই ভোলা যায় না ভোলার মতো না। আপনারা দেখছি রিক্সার পিছন পিছন অনেক দূর অব্দি চলে গিয়েছিলেন। আসলে ছোটবেলায় এরকম ঘটনা ঘটেই থাকে কমবেশি সবার জীবনে। আপনার বাড়ির লোকজনরা অনেক চিন্তায় ছিল চিন্তা করারই কথা।ছোট বাচ্চারা অনেক সময় ধরে চোখের আড়াল থাকলে সবাই টেনশনেই করে। ধন্যবাদ আপু শৈশবের স্মৃতিময় পোস্টটি আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নেয়ার জন্য।
হ্যাঁ আপু আপনি ঠিকই বলেছেন শৈশবের স্মৃতি কখনোই ভোলা যায় না ।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ।ভালো থাকবেন।
ঠিকই বলেছেন ছোটবেলার শৈশবগুলো আসলেই অনেক মধুর ছিল সেই স্মৃতিগুলো কি আর ভোলা যায় ।মাঝে মাঝে মনে পড়ে তবে এই গল্পটা আমার মনে পড়ছে না । পড়ে কিন্তু ভালো লাগলো । আর আগেকার দিনে এরকম ঘটনা প্রায়ই ঘটতো । মানুষজন কোন কিছু দেখলে তার পেছনে পেছন দৌড়াতে থাকতো । আপনারা তো আসলেই অন্যায় করেছিলেন বকা খাওইরি কাজ করেছিলেন ।
হ্যাঁ আপু শৈশবের স্মৃতি আসলেই ভোলার নয়। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
আপনার শৈশবের স্মৃতি পড়ে খুব ভালো লাগলো আপু। বেশ আবেগ আপ্লুত হয়ে গেলাম। আসলে সত্যি আমাদের জীবনের সাথে দাদা বাড়িতে কাটানো অনেক মধুময় মুহূর্ত জড়িয়ে আছে। ঐ মুহূর্ত গুলো মনে পড়লে এখনো হৃদয় শিহরিত হয়ে উঠে। শৈশব দাদার বাড়িতে বেশ চমৎকার মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন আপু। এতো চমৎকার শৈশবের স্মৃতি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
হ্যাঁ ভাইয়া সত্যিই শৈশবে দাদার বাড়িতে চমৎকার সময় অতিবাহিত করেছিলাম। যা মনে পড়লে আজও ভালো লাগে ।ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
ছোটবেলা মানেই ছিল মজার সময়।খাও দাও ঘুরাঘুরি করো। কিন্তু আপনারা এমন কান্ড করে হাতের মার খান নি সেটাই ভাগ্য। মুখের মার যতই হোক,এক কান দিয়ে গেলে আরেক কান দিয়ে বেরিয়ে যায়,হাহাহা।এরকম মজার মজার স্মৃতি আরও পড়তে চাই আপু।
হ্যাঁ আপনি ঠিকই বলেছেন শৈশব মানেই হচ্ছে আনন্দ আর আনন্দ ,কোনরকম চিন্তা ছাড়া ।ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
ছোটবেলার স্মৃতিগুলো মনে করিয়ে দিলেন আপু। ছোটবেলায় বাড়িতে যাওয়ার জন্য একেবারে অস্থির হয়ে থাকতাম। বাড়িতে গেলে ছোটাছুটি আর অনেক খেলাধুলা করা যেত তার জন্য। যদিও এই ঘটনাটা আমার মনে নেই। আপনি যেহেতু এত ছোট ছিলেন তাহলে আমি তো আরো ছোট থাকার কথা। যাই হোক ভালো লাগলো পড়ে।
হ্যাঁ ঠিকই বলেছেন বাড়িতে খেলাধুলা করার জন্যই যাবার জন্য অস্থির হয়ে যেতাম ।সেই মুহূর্তগুলো সত্যিই অনেক চমৎকার ছিল। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।