দুটি মরিচ গাছের গল্প।।
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান সৃষ্টিকর্তার নামে আরম্ভ করিতেছে -
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগবাসি বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহেরবানীতে আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে দুইটি মরিচ গাছ নিয়ে একটি ব্লগ শেয়ার করবো।
আপনারা সবাই জানেন যে আমি প্রকৃতি অনেক ভালোবাসি। গাছপালা পশু পাখি এগুলো সব সময় আমাকে টানে। আমি সব সময় এগুলোর প্রতি আসক্ত। বাড়িতে গাছপালা থাকলে, ফুল ফল গাছ থাকলে, বাড়ির চেহারাটা অন্যরকম হয়ে যায়। গাছপালার মাধ্যমে আমরা লাভ ছাড়া ক্ষতি কোন কিছু পায় না। আমার বিয়ের আগে আমাদের বাড়িতে প্রচুর ফুল এবং ফলের গাছ লাগিয়েছিলাম। বিয়ের পরে সাংসারিক কাজ, পড়াশোনা, সব মিলিয়ে আমি ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। তারপরেও প্রকৃতির প্রতি আমার আসক্ত যাই নি।
গত বছর আমাদের বাড়ি থেকে আমি দুইটি মরিচ গাছের চারা খুব যত্ন সহকারে আমার শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে এসেছিলাম। মরিচ গাছের চারাগুলি দেখে আমার শাশুড়ি অনেক খুশি হয়েছিলেন। আমি এবং আমার শাশুড়ি দুইজন মিলে মরিচ গাছগুলো ছাদের মধ্যে মাটির পাতিলে লাগিয়েছিলাম। আমার শাশুড়ি প্রতিদিন সকাল বিকাল গাছের গোড়ায় পানি দিয়ে, গাছ গুলোর যত্ন নিয়েছেন। আমি গাছগুলো লাগিয়ে ঢাকা চলে গিয়েছিলাম। মাঝেমধ্যে বাড়িতে আসতাম। তিন চার মাস যাওয়ার পরেই গাছগুলো বড় হয়ে ফুল ধরা শুরু করলো। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত গাছগুলোতে মরিচ ধরেই যাচ্ছে।
কয়েকদিন আগে পরীক্ষা দিয়ে আমি আমার শ্বশুরবাড়িতে এসেছিলাম। এসে দেখি আমাদের বাড়ির ছাদের অবস্থা খুবই খারাপ। আমার শাশুড়ি অসুস্থ থাকার কারণে ছাদের মধ্যে প্রচুর ময়লা আবর্জনা জমেছিল। আমি সেগুলো পরিষ্কার করতে গিয়ে হঠাৎ সেই দুটো মরিচ গাছের প্রতি আমার নজর পড়লো। আমি দেখলাম মরিচ গাছগুলোতে প্রচুর পরিমাণে মরিচ ধরেছে। আম্মু বলেছে অনেক আগে থেকেই নাকি গাছগুলোতে মরিচ ধরতেছে। আমাদের ঘরের মানুষ সহ এলাকার অনেক মানুষ এই দুটো গাছ থেকে মরিচ পেরে নিয়ে যাই। কেউ চাইলে আমার শাশুড়ি মানা করে না। সবাই নিজের হাতেই মরিচ পেরে নিয়ে যাই।
আমি এটা বিশ্বাস করি যে, যেই গাছ থেকে পাড়া-প্রতিবেশী ফল ফুল পায়, সেই গাছগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ফলন আসে। এর সাক্ষী আমি নিজে। আমাদের বাড়ির পাশে দুইটি বাড়িতে দুইটি বরই গাছ ছিল। একটি বরই গাছ থেকে এলাকার সকল মানুষ বরই খেতে পারতো। গাছের মালিক অনেক ভালো মানুষ ছিল। যে ব্যক্তি গাছের নিচে যেতো তাকেই বরই খেতে দিতো। যার ফলে দেখতাম প্রতি বছরই এই গাছটিতে প্রচুর পরিমাণে বরই আসতো। অথচ এই গাছের সাথেই অন্য একজনের আরেকটি গাছ ছিল, সেটাতে তেমন বরই আসতো না, তার কারণ হলো সেই বরই গাছের মালিক খুবই খারাপ প্রকৃতির মানুষ ছিল। ছোট বাচ্চারা সেই বাড়ির গাছের নিচে গেলেই ঐ লোকটি গালাগালি করতো। যার ফলে আল্লাহ তায়ালা ও তার গাছের ফলন কেড়ে নিতো। এটাই প্রকৃতির খেলা। যে যেমন আচরণ করে সেও তেমন আচরণ পায়।
যাইহোক বলতেছিলাম মরিচ গাছের কথা, এখানে আমি দুই কালারের দুইটি মরিচ গাছ লাগিয়েছিলাম। একটি হলো কালো বোম্বাই মরিচ, আরেকটি হলো সাদা বোম্বাই মরিচ। মরিচগুলো প্রচুর পরিমাণে ঝাল। আমি ছাদ পরিষ্কার করার সময় মরিচ গুলোর কয়েকটি ফটোগ্রাফি করেছিলাম। এই গাছগুলো থাকার কারণে আমার শ্বশুর বাড়িতে কাঁচা মরিচ কিনতে হয় না। প্রতিদিন এই গাছগুলো থেকে কাঁচা মরিচ পেরে তরকারি রান্না করতে পারে। এজন্যই আমি সব সময় বলে থাকি, গাছ আমাদের পরম বন্ধু, গাছ লাগালে লাভ ছাড়া কোন ক্ষতি নেই। সর্বশেষ বলতে চাই গাছ লাগান স্বনির্ভরশীল হোন।
তো বন্ধুরা এ হলো আমার আজকের ব্লগ। আশা করি ব্লগটি আপনাদের সবার কাছে অনেক ভালো লাগবে। আজকে আর কোন কিছু লিখলাম না। এখান থেকে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিলাম। সবাই সবার জন্য দোয়া করবেন। আমিও সবার জন্য দোয়া করি। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল | |
---|---|---|
মডেল | রেডমি নোট-৮ | |
শিরোনাম | দুটি মরিচ গাছের গল্প ।। | |
স্থান | সৈয়দাবাদ, কসবা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ,বাংলাদেশ। | |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ | অনেক কষ্ট করা লাগে এত সোজা |
ফটোগ্রাফার | @titash |
আমার পরিচিতি
আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপি করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।
আপু আপনার মরিচ গাছের গল্প পড়ে খুবই ভালো লাগে। তাছাড়া এগুলো আপনি নিয়ে গিয়েছিলেন শ্বশুরবাড়িতে। দুইটা মরিচ গাছের চারা নিয়ে গিয়ে সেখানে রোপন করলেন। এতে করে সেগুলোই বেশ ভালো মরিচ ধরেছে দেখছি। এদের মধ্যে একটা হচ্ছে সাদা বোম্বাই আর একটা হচ্ছে কালো বোম্বাই। আসলে মরিচগুলো দেখে মনে হবে না যে এটা কি । তবে এগুলো আপনার পোষ্টের মাধ্যমে দেখতে খুব ভালো লাগলো ।ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
খুব সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করেছেন আপনি। আপনার আজকের এই গল্প পোস্ট করার মধ্য দিয়ে বেশ ভালো একটা বিষয় সম্পর্কে ধারণা পেলাম। আপনারা যেই ফটো শেয়ার করেছেন এটা আকাশি মরিচ নামে পরিচিত আমাদের এলাকায়। আমার পুকুর পাড়ে সবজি বাগানে রয়েছে এই মরিচ। যাই হোক বেশ ভালো লাগলো।