ইনকোর্স পরিক্ষার জন্য ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরা।।
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু করতেছি-
হ্যালো আমার প্রিয় বাংলা ব্লগবাসি বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের জন্য নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে ইনকোর্স পরিক্ষার জন্য ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার অনুভূতি শেয়ার করবো। আশা করি ব্লগটি সবার কাছে ভালো ভালো লাগবে।
দেখতে দেখতে ২০২৪ সাল চলে যাচ্ছে। এখন সেপ্টেম্বর মাস চলতেছে। আর তিন মাস পরেই ২০২৪ সাল বিদায় নিবে। দিন গুলো কিভাবে যেন খুব দ্রুত চলে যায়। আপনারা সবাই জানেন যে আমি বাংলা বিভাগ নিয়ে অনার্স করতেছি। এই বছর আমি অনার্স তৃতীয় বর্ষে আছি। কিছুদিন আগে আমাদের ডিপার্টমেন্টের হোয়াটসআপ গ্রুপে জানতে পারলাম যে, আগামী ১৫ই সেপ্টেম্বর থেকে অনার্স তৃতীয় বর্ষের বাংলা বিভাগের ইনকোর্স পরিক্ষা শুরু হবে। নিউজটা জানার পরেই শরীরটা কেমন করে উঠলো। আসলে বাংলাদেশের স্টুডেন্টরা পরিক্ষাকে একটু ভয় পায়। পরিক্ষা আসলেই তো পড়াশোনা করা লাগবে। পড়াশোনা ছাড়া যদি থাকা যায়... কে পড়াশোনার চাপ নিতে চাই। আর যদি অটো পাশ দিয়ে দেয় তাহলে তো খুশিতে আত্বহারা হয়ে যাওয়ার অবস্থা হয়। তবে আমি সবসময় অটো পাশের বিরোধী। অটো পাশ মানে আজীবন একটা অভিশাপ ভয়ে বেড়ানো।
যায়হোক বলতেছিলাম ইনকোর্স পরিক্ষারর কথা শুনে খবরের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য আমাদের ডিপার্টমেন্টের প্রধান স্যারের কাছে ফোন দিলাম। তিনি বললেন ১৫ তারিখ থেকে ইনকোর্স পরিক্ষার শুরু হবে। সবাইকে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে পরিক্ষায় অংশগ্রহন করতে হবে। কারো কোন অভিযোগ শুনা হবে না। আমি আর আমার হাসবেন্ড প্লান করেছিলাম শুক্রবারে সকালে আমরা ব্রাহ্মানবাড়িয়ার উদ্যেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবো। কিন্তুু হঠাৎ করে কোন খুঁজ খবর ছাড়াই গত মঙ্গলবার রাতে আমার আম্মা এসে হাজির। আম্মাকে দেখে আমি তো অবাক। মা এমনই করে। কোন খুঁজ খবর ছাড়াই আমাদের বোনদের বাড়িতে চলে যায়। মা তো মেয়েদের কথা মনে পড়লে আর থাকতে পারে না। আর আসার সময় খালি আসে না মাছ ,মাংস, ময়দা, ফল ফ্রুট অনেক কিছু নিয়ে আসে। মায়ের ভালোবাসার কোন মূল্য দিতে পারবো না।
এখন মা যেহেতো চলে এসেছে আমার হাসবেন্ড ল্যাং ধরলো সে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাবে না। আমি যেন মায়ের সাথে চলে যায়। কারন সে আবার কিছুদিন পরে আমাকে আনতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাবে। যার ফলে দুইবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া যেতে চাই না। এখন আম্মুকে বললাম আমি তিনির সাথে বাড়িতে যাবো। তিনি বললেন সে বুধবারেই চলে যাবে। আমার হাসবেন্ড বলার কারনে আজকে বৃহস্পতিবারে মায়ের সাথে যাওয়া সিদ্ধান্ত হলো। এখন আমার তো আবার বাসে যেতে সমস্যা। বাসে গেলে বাবু কান্না করে আবার আমার বমি হয়, মাথা ঘুরায়। অনলাইনে ট্রেনের টিকেট সার্চ করেও পাওয়া গেলো না। অবশেষে তিতাস কমিউটার ট্রেনে যাওয়ার প্রোগ্রাম হলো।
তিতাস ট্রেন সকাল সাড়ে নয়টার সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে যায়। আমরা সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে সাতটার সময় বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম। সাইনবোর্ড থেকে বাসে উঠলাম কমলাপুর যাবো। কিন্তুু রায়েরবাগ গিয়েই জ্যামে আটকে গেলাম। সাইনবোর্ড থেকে কমলাপুর যেতে ১৫ থেকে ২০ মিনিট লাগে। সেখানে দুই ঘন্টা লেগেছে। সারা রাস্তায় জ্যাম ঠেলতে ঠেলতে যেতে হয়েছে। সনির আখড়া, যাত্রাবাড়ী, গোলাপবাগ, টিটি পাড়া সব জাগায় জ্যাম ছিল। সাড়ে নয়টার সময় কমলাপুর গিয়ে পৌছলাম।
বিশল বড় সিরিয়াল ধরে তিতাস ট্রেনের টিকেট সংগ্রহ করতে হয়। আমার হাসবেন্ড ও মা দুই জনে দুই লাইনে দাড়ালো। আমি বাবুকে নিয়ে একটু সামনে গিয়ে সুযোগ বুঝে দুইটা টিকে কেটে ফেললাম। তারপর মা ও হাসবেন্ডকে ডেকে বললাম সিরিয়াল ছেড়ে চলে আসতে। হাসবেন্ড আমাকে সবসময় গাদা বললেও আজকে আমার হাতে টিকেট দেখে বদ্ধিমান উপাধি দিলো,হা হা হা।
যায়হোক টিকেট নিয়ে কমলাপুরের ভিতরে গিয়ে একটু দাড়াতেই ট্রেন চলে আসলো। আমাদের তিতাস ট্রেন তিন নাম্বার লাইনে এসে দাড়ালো। আমরা ট্রলি ব্যাগ নিয়ে ট্রেনে গিয়ে বসলাম। আমার হাসবেন্ড পানি, কেক ও চিপস কিনে দিয়ে আমাদের থেকে বিদায় নিয়ে অফিসে চলে গেলেন। ট্রেন ঠিক ৯ঃ৪৫ মিনিটে ছেড়ে দিলো। আজকে ট্রেনে তেমন কোন মানুষের ভিড় ছিল না। খুবই আনেন্দ জার্নিটা হয়েছে। খুবই ভালো লেগেছে।
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | রেডমি নোট-৮ |
শিরোনাম | ইনকোর্স পরিক্ষার জন্য ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরা।। |
স্থান | কমলাপুর, ঢাকা,বাংলাদেশ। |
তারিখ | ১২-০৯-২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @titash |
আমার পরিচিতি
আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপি করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।
পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ঢাকা থেকে বাড়ি উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। আর সেখানে যাওয়ার মুহূর্তটা খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন। আমার অবশ্য বাইরে তেমন চলাচল নেই ট্রেন ভ্রমণ করা হয় না। তবে বেশ কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন হল এই পোস্ট করার মধ্য দিয়ে। একদিকে বর্ণনা করে আরেক দিকে স্টেশন দেখে কিছুটা আইডিয়া পেলাম।