রাসেলস ভাইপার, বাস্তবতার চেয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে বেশি।
হ্যালো প্রিয় বন্ধুরা ,
আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন। সদা-সর্বদায় সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করি। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। যাইহোক আমি আজকে আপনাদের মাঝে একটা বাস্তবিক পোস্ট শেয়ার করবো। আমি নিয়মিত লেখালেখি করতে চেষ্টা করি। যখনই সময় সুযোগ হয়ে ওঠে ঠিক তখনই বই পড়া কিংবা লেখালেখিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। তবে আমি বাস্তবসম্মত লেখা লিখতে চেষ্টা করি । তো বন্ধুরা আজকে আপনাদের সাথে তেমনি বাস্তবসম্মত একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম।
এডিট snapseed
দক্ষ সাঁতারু রাসেলস ভাইপার একটি আতঙ্কের নাম। নদী-সমুদ্র সাঁতরে বন্যার সময় চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে এই রাসেলস ভাইপার।সাম্প্রতিক সময়ে একটি আলোচিত বিষয় হচ্ছে রাসেলস ভাইপার। এটি একটি বিষধর সাপ হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিত। বিশ্বের পাঁচটি বিষধর সাপের মধ্যে এটি অন্যতম। রাসেলস ভাইপারের এক ছোবলে বিষক্রিয়া হয়ে মারা যায় কিছুক্ষণের মধ্যেই। এ সাপটি বাংলাদেশে বিলুপ্তির পথে ছিল, কিন্তু বর্তমান সময়ে এ সাপটি বাংলাদেশের কিছু জেলা উপজেলাতে দেখা যাচ্ছে। যায় দেখা যাচ্ছে তার চেয়ে বেশি আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। এখন মনে হচ্ছে প্রতিটা সাপকে রাসেলস ভাইপার হিসেবে আখ্যায়িত করে একটি ট্রল সৃষ্টি হল।
বাংলাদেশর মিডিয়াগুলো বর্তমানে অনেক বেশি প্রচারের চেয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। যা সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। যখন সচেতনতার চেয়ে আতঙ্ক বেশি হয় তখন মানুষের মধ্যে ভয় ভীতি সৃষ্টি হয়। আমাদের মেডিয়া গুলোর উচিত সব সময় সচেতনতামূলক ভিডিও শেয়ার করা এবং বার্তা প্রদান করা। বিশেষ করে ইউটিউবার যারা রয়েছে তারা এগুলো নিয়ে একটা ব্যবসার হাতিয়ার করে ফেলল। তাদের সস্তা ভিউ বাড়ানোর জন্য মানুষের ভিতরে আতঙ্ক প্রতিনিয়ত সৃষ্টি করতেছে। যত আকর্ষণ করে টাইটেল দেওয়া যায়, কথা বলা যায় ততই ভিউ বাড়ে। ভিউ বাড়লে তাদের ইনকাম সেখান থেকে বের হয়।
রাসেলস ভাইপার জীবিত কিংবা মৃত ধরতে পারলে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। মিডিয়ার মধ্যে এই ধরনের একটি গুজব ছড়িয়েছে। যার কারণে অনেকেই জীবনের রিস্ক নিয়ে রাসেলস ভাইপার ধরতে উঠে পড়ে লেগে রইল। এতে রয়েছে জীবনের আশঙ্কা। এ ভয়ানক এই সাপকে ধরতে হলে পারদর্শী সাপুড়ে হতে হবে। তার ব্যতিক্রম হলে তো জীবনের আশঙ্কা থাকবেই, এটাই স্বাভাবিক। আমরা কয়েক জায়গায় দেখেছি কিছু সাধারণ সাপকে রাসেলস ভাইপার বলে মেরে মিডিয়াতে প্রচার করা হলো। এগুলোর স্বচ্ছ কোন জবাব দিহিতা নেই। যার কারণে, যে যেভাবে পারে তার মতো করে অপপ্রচারগুলো চালিয়ে যায়।
রাসেলস ভাইপার মূলত সমুদ্রের আশেপাশেই বসবাস করে। মরু অঞ্চলে বালির দেশেও এই সাপ অনেক বেশি দৃশ্যমান। বাংলাদেশে আসার মূল প্রেক্ষাপট খুঁজতে গিয়ে বিশ্লেষকরা জানালো বন্যার কারণে এসবগুলো বাংলাদেশে এসে পড়েছে। আমরা দেখেছি ২০২১-২২ সালের দিকেও এ সাপ নিরবিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটা জেলা পেয়েছিল। তখনো এটি নিয়ে অনেক বেশি অপপ্রচার ছিল। কিন্তু বর্তমানে ২০২৪ এ এটি অনেক বেশি দৃশ্যমান হচ্ছে। অনেক বেশি দৃশ্যমান হওয়ার বিষয়টাও ধোঁয়াশা হয়ে আছে। শুধু আমরা শুনেই যাই অমুক জেলা রাসেল ভাইপার পাওয়া গেল কিন্তু সেটির সত্যতা যাচাই করার জন্য যাওয়ার পরে, প্রমাণিত হলো ভুয়া তথ্য।
আমি যদি আমাদের ফেনী জেলার কথা বলে থাকি তাহলে দেখতে পাই, হঠাৎ করে একটি গুজব উঠল, একটি রাসেলস ভাইপার পাওয়া গেল। কিন্তু অনেকেই সেখানে জড়ো হল গিয়ে দেখে ভাইপার নয় বরং খুবই বিরল একটি সাপ, যা সচারাচর দেখা যায় না। পরবর্তীতে সাপটিকেও মেরে ফেলা হলো, কিন্তু প্রচারণা হল রাসেলস ভাইপার। ঠিক একইভাবে আমাদের দাগনভূঞা উপজেলার মধ্যে একটি রেস্টুরেন্টে নাকি রাসেলস ভাইপার পাওয়া গেল। এমনভাবে গুজব ছড়ালো যে, কয়েকশো মানুষ
সেখানে উপস্থিত হয়ে গেল। গিয়ে দেখল এটি পুরো মিথ্যা একটি প্রচারণা। এসব প্রচারণা গুলো মানুষের মনে আতঙ্ক এবং ভীতি তৈরি করে।
বাংলার মানুষ হুজুকে বাঙাল হিসেবে পরিচিত। কোন গুজব তুলে দিলে সেটা নিয়ে সারাক্ষণ পড়ে থাকে। আলোচনা সমালোচনার মধ্য দিয়ে পুরো দিন কাটায়। দোকানপাট চা-দোকানে সব সময় আলোচনা শুধু হয়। বিপরীত পাশের দেশ তলিয়ে গেল সেদিকে এই হুজুকে বাঙাল ঘুলোর দৃষ্টিভঙ্গি থাকে। তাই একটি গুজব তুলে দিয়ে বাংলাদেশকে সহজে ধ্বংস করাও যাবে। আমরা কখনই সচেতন নয়। আমরা যদি একটু সুন্দরভাবে সচেতন হই তাহলে আমাদের দেশ অনেক উন্নত হবে। কুসংস্কার এবং অপপ্রচারকে না বলি। সুন্দর একটি দেশ গড়ার লক্ষ্যে নিজের অবদান রাখি। রাসেলস ভাইপার আতঙ্ক নয়, আমরা একটু সচেতন হই।
আজকের লেখাটি আমি বাস্তবতাকে সামনে রেখে লেখার চেষ্টা করেছি। আমি তুলে ধরতে চেষ্টা করেছি বাস্তবতা। আমাদের বাংলাদেশের মিডিয়াগুলো প্রচারের চেয়ে অপপ্রচার বেশি ছড়ায়, যেকোনো বিষয়ে। যার কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। তাই আমরা গুজবে কান না দিয়ে বাস্তবতা বিশ্বাসী হয়ে এগিয়ে যাওয়া উচিত। আমার লেখাটিতে যদি কোন ভুল ত্রুটি থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আপনাদের মূল্যবান মন্তব্য অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
নিজেকে নিয়ে কিছু কথা
আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন। প্রথমেই সবাইকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। আমি তাহেরুল ইসলাম, আমার স্টিমিট ইউজার আইডি হল - @ti-taher। আমি ফেনী জেলায় জন্মগ্রহণ করেছি। বর্তমানে ফেনী শহরে অবস্থান করছি। আমি ফেনীতে পড়াশোনা করেছি এবং বড় হয়েছি। আমি একজন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ, আমি ভ্রমণ করতে এবং ছবি তুলতে ভালোবাসি। নতুন জায়গায় ঘুরতে আগ্রহী, নতুন জায়গায় ঘুরতে এবং নতুন কিছু আবিষ্কার করতে ভালোবাসি। আমি বই পড়তেও ভালোবাসি, অনেকে আমাকে বই পোকাও বলে থাকে। আমি কবিতা, গল্প, উপন্যাস এবং বৈজ্ঞানিক বই সহ সব ধরনের বই পড়তে পছন্দ করি। আমার প্রিয় কবি "কাজী নজরুল ইসলাম"। প্রিয় কবিতা "বিদ্রোহী"।(ফি আমানিল্লাহ)
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
https://x.com/titaherul/status/1805843298554400794?t=9uRHv-kamPQg2WI7gigz9A&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আসলে ভাইয়া আমরা বাঙালি। আমরা কোন কিছু না জেনেই আতঙ্ক ছড়িয়ে দেই। ঠিক তেমনটিই হয়েছিল করণা ভাইরাসের সময়।করনা ভাইরাসের সময় আমরা বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। বেশ কিছু দিন ধরে রাসেল ভাইপার সাপ কে ফেসবুকের মধ্যে যে পরিমাণে ভাইরাল করছে, তাতে মনে হচ্ছে রাসেল ভাইপার সাপ দিয়ে পুরো বাংলাদেশ ভরে গিয়েছে। আমাদের এসব গুজব থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
হুজুকে বাঙালকে নিয়ন্ত্রণ করাই অসাধ্যের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্টটি পড়ে আপনার মহামূল্যবান মন্তব্য করার জন্য। আপনার মন্তব্যটি পড়ে খুব ভালো লেগেছে।
এটা অবশ্য ঠিক বলেছেন ভাইয়া আমরা হুজুকে বাঙালি। কোন কিছু নিয়ে বেশি মাতামাতি করি। রাসেল ভাইপার আতঙ্কে পুরো দেশবাসী অস্থিরতার মধ্যে সময় কাটাচ্ছে। আসলে যতটা না ভয়ঙ্কর তার চেয়ে বেশি আতঙ্ক আমাদের বেশি কাজ করছে। আপনার লেখাগুলো পড়ে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া।
বাঙালি অল্পতেই সবকিছু নিয়ে বেশি মাতামাতি শুরু করে। তাই তাদের মাঝে গুজব ছড়ানো অনেক বেশি সহজ হয়ে দাঁড়ায়। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্টে মন্তব্য করার জন্য।
রাসেলস ভাইপার সত্যিই ভয়ংকর সাপ, কিন্তু ফেসবুক এবং ইউটিউবের মাধ্যমে যেভাবে গুজব ছড়ানো হচ্ছে, এতে করে মানুষের মনে সত্যি সত্যিই আতঙ্কের সৃষ্টি হচ্ছে। ইউটিউবে নিজেদের চ্যানেলের ভিউ বাড়ানোর জন্য তারা বলছে, রাসেলস ভাইপার তেড়ে এসে মানুষকে কামড় দিয়ে থাকে। আসলে এসব ভিত্তিহীন খবর ছড়ানোর মাধ্যমেই অনেকে ভয় পাচ্ছে। আমরা আসলেই হুজুগে বাঙালি। যাইহোক সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক সেই কামনা করছি। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
বিশেষ করে ইউটিউবাররা তাদের সস্তা ভিউর জন্য মারাত্মকভাবে গুজব ছড়া। যা মোটেও কাম্য নয়। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্টে আপনার মহামূল্যবান মন্তব্য উপস্থাপন করার জন্য।
আমরা বাঙালিরা কোন কিছু শুনলে সেটার প্রতি বেশি আসক্ত হয়ে যাই। আর সেই সাধারণ কিছু ভয়ংকর বানিয়ে ফেলি। রাসেল ভাইপার নিয়ে বর্তমানে সবার মাতামাতি দেখে মাঝে মাঝে খুবই বিরক্ত লাগে। আপনার লেখাগুলো পড়ে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া।
আমি বাঙালি হয়েও বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, আমাদের দেশের মানুষ কোন কিছু পেলে তার বারোটা না বাজিয়ে ছাড়ে না।যেকোনো ব্যাপারকে তারা এতো বেশী ভয় ভীতির সৃষ্টি কে প্রচার করে,তাতে সাধারণ মানুষ গুলো মরে যাওয়ার আগেই মরে যায়। এটা আসলে ঠিক নয়।ভয়ংকর হলেও তা থেকে কিভাবে ভালো থাকা যায় তা আমাদের সর্বসাধারণের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।আশাকরি সবাই সচেতনামূলক পোস্ট, ভিডিও শেয়ার করবেন।অযথা ভয় ভীতি নয়।
আপনার এই তথ্যটা সঠিক না। বিশ্বে বিষধর সাপেদের তালিকায় রাসেল ভাইপার এর অবস্থান ২০। এবং বাংলাদেশে এর অবস্থান ৫। রাসেল ভাইপারের চেয়েও আমাদের দেশের কালাচ, পদ্মগোখরা, শঙ্খিনী অনেক বেশি বিষধর।
তবে হ্যা এটা নিয়ে অনেক গুজব রটেছে। পাশাপাশি স্যোসাল মিডিয়া শুরু হয়েছে ট্রল।
বাঙালী জাতি হলো হুজুগে জাতি। তারা বেহুদা একটা বিষয় নিয়ে মাতামাতি করে। ভালো কিছু ভাইরাল করবে না। রাসেলস ভাইপার নিয়ে যা শুরু করেছে, মনে হচ্ছে করোনার থেকেও বেশি ভয়াবহ। যায়হোক একটু সতর্ক থাকলেই যথেষ্ঠ। ধন্যবাদ।