নোয়াখালীর বেকুব জামাই || নাটক রিভিউ।
প্রিয় বন্ধুগন, সবাই কেমন আছেন? আজকে আপনাদের মাঝে একটি নাটক রিভিউ নিয়ে হাজির হলাম। আশা করছি নাটক রিভিউটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।
নোয়াখালীর বেকুব জামাই নাটক রিভিউ। |
---|
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
নাটকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য |
---|
নাটকের নাম | নোয়াখালীর বেকুব জামাই |
---|---|
পরিচালক | এম ডি কায়কোবাদ |
অভিনয় | জামিল হোসেন, মনোসি প্রকৃতি, কাজী উজ্জ্বল, রুমান আপসার, রেশমা আরো অনেকেই |
ভাষা | বাংলা |
মুক্তির তারিখ | ১১ নভেম্বর ২০২৩ |
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
নাটকটির নাম শুনে বুঝতেছেন কি রিলেটেড নাটক। নাটকের নাম যখন দেখলাম "নোয়াখালীর বেকুব জামাই" তখন দেখার ইচ্ছে দ্বিগুণ হারে বেড়ে গেল। কারণ "নোয়াখালীর" নিয়ে যতগুলো নাটক নির্মিত হয়েছে, সবগুলো নাটকই অসাধারণ হয়েছে। তাই মূলত নাটকটি দেখা। নোয়াখালীর বেকুব জামাই নাটকটি একটি রোমান্টিক নাটক। এটি সেফ বিনোদনের জন্যই বেশি কার্যকর। নাটকের শুরু থেকেই পুরো নাটক জুড়ে হাসির সংলাপ থাকলেও শেষে কিন্তু খুবই শিক্ষনীয় একটি দৃশ্য ফুটিয়ে তুলেছে পরিচালক। পরিচালকের দক্ষতার মধ্য দিয়ে একটি নাটকের সৌন্দর্য ফুটে ওঠে। অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অভিনয় দক্ষতার মধ্য দিয়ে একটি নাটকের সার্থকতা নিয়ে আসে।
আজকে খুবই আনকমন একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হলাম। আশা করছি নাম দেখে বুঝতে পারছেন নাটকটি কি রিলেটেড? বাংলাদেশের আলোচিত জেলা নোয়াখালী জেলা। নোয়াখালী জেলার নাম শুনে নাই, বাংলাদেশের এমন কোন জায়গা নেই। নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষা নিয়ে নির্মিত হয়েছে অসংখ্য নাটক। যে নাটকগুলো বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ নাটক হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষা নিয়ে যে নাটকই নির্মাণ করা হলো সেটিই আলোচিত হয়ে গেল। যাইহোক কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক-
নাটকের শুরুতেই খুবই রোমান্টিকতার মধ্য দিয়ে নাটকটি শুরু করা হলো। নোয়াখালীর একটি প্রথা তৈরি করা হলো নতুন বিয়ের পরে জামাই প্রথম দিন তরকারি রান্না করতে হয়। নায়িকা এবং নায়িকার মা নায়ক কে বলল, জামাই আমাদের প্রথা হচ্ছে বিয়ের প্রথম দিন জামাই তরকারি রান্না করতে হবে এবং সবাইকে খাওয়াতে হবে। তখন নায়ক বলল এটা আমার জন্য কোন ব্যাপার না, আমি ব্যাচেলর লাইফে অনেক বার রান্না করেছি। রান্না আমার জন্য খুবই সামান্য ব্যাপার। তখন শাশুড়ি এবং বউ বেগুন রান্না করার জন্য দিল। তরকারিগুলো কেটে দিয়ে তারা ঘরে চলে গেল।
নায়ক তখন বেগুন রান্নার জন্য পাতিলে পানি দিল এবং চুলায় আগুন দিল। পাতিলে পানি দেওয়ার পর যখন বেগুন ছেড়ে দিল তখন দেখল বেগুন গুলো ভাসতেছে। এ নিয়ে নায়কের মাথায় এলোমেলো হয়ে গেল। তখন সে পাতিলে আরো পানি ঢালে, বেগুনগুলো তারপরও ভেসে উপরে উঠে যায়। এরপর আবার পাতিলে পানি দেয়, তখনো বেগুনগুলো উপরে উঠে যায়। তখন নায়ক গরম হয়ে তার বউ এবং শাশুড়িকে ডাকলো। ডেকে বলল বেগুনের যতই পানি দেয় বেগুনগুলো উপরে উঠে যায়, এগুলো ডুবে না কেন? এটি চরমভাবে বেয়াদবি করছে। তখন বউ এবং শাশুড়ি বলল বেগুনগুলো সিদ্ধ হলে তখন ঢুকবে। তখন নায়ক যথেষ্ট রেগে গিয়ে বলল আমাকে কি রান্না শিখান! নাটকের এই বিষয়টি খুবই বাড়াবাড়ি হয়ে গেল, যেটি বাস্তবতার সাথে কোন মিল নেই।
এভাবেই শুরু হলো নাটকের কাহিনী। এরপর দেখালো শ্বশুর বাগানে গিয়ে একটি মেয়ের সাথে ফোনে কথা বলছে। খুবই রোমান্টিক প্রেমের আলাপ চলতেছে। আড়ালে থেকে জামাই সবকিছু শুনলো। তখন শশুরের কাছে গিয়ে বিস্তারিত জানল এবং শশুরের সাথে বন্ধুত্ব করলো। শশুরকে বিভিন্নভাবে কনভেন্স করে মেয়েটির সাথে দেখা করতে চাইলো। শশুরও জামাইকে বিশ্বাস করে রাজি হয়ে গেল। পরবর্তীতে জামা শ্বশুর দুজন মিলে মেয়েটির সাথে দেখা করতে গেল। জামাই মেয়েটিকে দেখেই বলে এটি তো আপনার মেয়ের বয়সী। তারপরও আম্মা আম্মা বলে সম্বোধন করতে লাগলো। তাদেরকে বিয়ে দেওয়ার আশ্বস্ত করলো। এ নিয়ে মেয়েটির থেকে অনেকগুলো তথ্য নিলো।
মেয়েটি বারবার মুরুব্বী প্রেমিক থেকে অনেক টাকা হাতিয়ে নিল। এবার প্রেমিকা দাবী রাখল তার জন্য একটি গরু নিতে। তখন বৃদ্ধ প্রেমিক গরু কেনার জন্য হায় হুতাশ শুরু করলো। এদিক সেদিক ছুটে বেড়াচ্ছে গরু কেনার জন্য। এদিকে জামাই মেয়েটির আসল রূপ ধরে ফেলল। এবং বিভিন্নভাবে খোঁজখবর নিয়ে দেখল মেয়েটি একটি ধান্দাবাজ। সে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জনের সাথে প্রেম করে তাদের থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়। জামাইয়ের সাথে ওই মেয়েটির বিভিন্ন দ্বন্দ্ব শুরু হলো। বিভিন্ন তর্ক বিতর্কের মাধ্যমে জামাই বলল, তোর আসল চেহারা আমি প্রকাশ করব। এদিকে মুরুব্বি গরুর টাকা জোগাট নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত।
হঠাৎ করে দেখা গেল নায়কের শ্বশুরবাড়িতে পুলিশ চলে আসে। এবং নায়কের শ্বশুরকে খুঁজতে লাগলো। তখন নায়িকা এবং তার মা বের হয়ে আসলো পুলিশকে জিজ্ঞেস করল কি সমস্যা? তখন পুলিশ জানালো নায়িকার শশুর একটি গরু চুরি করে এনেছে। এ কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে গেল, এবং নায়কের শ্বশুর অনেক বেশি পুলিশের সাথে বিতর্কে জোড়ালো। এবং বলতে লাগলো আমি গরু চুরি করিনি বরং গরু কিনেছি। গরু কেনার জন্য হাটে যাওয়ার পথে রাস্তায় সস্তা গরু পেয়ে কিনে নিলাম।
সবাই অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল গরু কেন কিনলেন? তখন নায়কের শশুর কোন উত্তর দিল না। সে মুহূর্তে নায়ক গরু চোরকে ধরে নিয়ে এলো, এবং জানানো এ ব্যাক্তি গরু চুরি করেছে এবং আমার শশুর গরুটি এই ব্যক্তি থেকে কিনে নিল। তখন ওই গরু চোর স্বীকার করল, হ্যাঁ গরু সে চুরি করেছে। এরপর ওই মেয়েটিরও আসল চেহারা পরিষ্কার হলো। এরই মাঝে নাটকটির পরিসমাপ্তি ঘটলো।
আমার ব্যক্তিগত মতামত।
নাটকটির নামের সাথে কাজের মিল রয়েছে, এদিক থেকে ঠিক আছে। তবে এ নাটকে কিছুটা ওভার অ্যাক্টিং করলো। তবে খুব সুন্দরভাবে পরিচালক নাটকটি উপস্থাপন করলো। অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অসাধারণ অভিনয়ের দক্ষতার পরিচয় দিলো। নাটকটি দেখে খুবই ভালো লাগলো। আপনাদের সময় সুযোগ যদি হয় তাহলে নিচে লিঙ্ক দেওয়া আছে নাটকটি দেখে নেবেন।
আমার ব্যক্তিগত মতামত অনুসারে নাটকের রেটিংঃ |
---|
৮.৯৯/১০
সমাপ্ত
ধন্যবাদ জানিয়ে আজকের মত এখানে বিদায় নিচ্ছি।আগামিতে অন্য কোন নাটকের রিভিউ নিয়ে আবারও হাজির হবো। ভালো থাকবেন সবাই। আর কষ্ট করে রিভিউটি যারা পড়ছেন তাদেরকে ধন্যবাদ।
সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে এখানেই শেষ করছি।
নিজেকে নিয়ে কিছু কথা
আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন। প্রথমেই সবাইকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। আমি তাহেরুল ইসলাম, আমার স্টিমিট ইউজার আইডি হল - @ti-taher। আমি ফেনী জেলায় জন্মগ্রহণ করেছি। বর্তমানে ফেনী শহরে অবস্থান করছি। আমি ফেনীতে পড়াশোনা করেছি এবং বড় হয়েছি। আমি একজন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ, আমি ভ্রমণ করতে এবং ছবি তুলতে ভালোবাসি। নতুন জায়গায় ঘুরতে আগ্রহী, নতুন জায়গায় ঘুরতে এবং নতুন কিছু আবিষ্কার করতে ভালোবাসি। আমি বই পড়তেও ভালোবাসি, অনেকে আমাকে বই পোকাও বলে থাকে। আমি কবিতা, গল্প, উপন্যাস এবং বৈজ্ঞানিক বই সহ সব ধরনের বই পড়তে পছন্দ করি। আমার প্রিয় কবি "কাজী নজরুল ইসলাম"। প্রিয় কবিতা "বিদ্রোহী"।( ফি আমানিল্লাহ)
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
https://x.com/titaherul/status/1806153109581996057?t=_B2hXe4DHFh1SeKpxJQFsA&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
নাটকটার নাম দেখে তো আমার নিজেরও প্রথমে নাটকটা দেখার জন্য ইচ্ছা জেগেছে। তবে আপনার রিভিউ পোস্ট পড়ে নাটকটার পুরো কাহিনী জেনে নিলাম। নাটকটা কিন্তু অনেক বেশি সুন্দর ছিল। আমার কাছে এই ধরনের নাটকের রিভিউ অনেক ভালো লাগে। এই নাটকের মধ্যে নায়েক নায়িকা সবাই অনেক সুন্দর অভিনয় করেছে। নাটকের শেষটা অনেক সুন্দর হয়েছে। আপনার অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া, এত সুন্দর একটা নাটকের রিভিউ সবার মাঝে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।
আমার নাটক রিভিউ পোস্ট আপনার মহামূল্যবান মন্তব্য দেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। নাটকটি বেশ মজার একটি নাটক। সময় সুযোগ হলে অবশ্যই নাটকটি দেখে নিবেন। আশা করছি ভালো লাগবে।
নোয়াখালীর বেকুব জামাই নাটক টা অনেক সুন্দর করে আপনি রিভিউ করেছেন। দেখে খুবই ভালো লাগলো।প্রতিটি পয়েন্ট খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার নাটক রিভিউ পোস্টের মন্তব্য করার জন্য। নাটকটি খুব চমৎকার একটি নাটক। শেষের দিকে শিক্ষনীয় একটি বিষয় তুলে ধরেছে।
এই ধরনের নাটক গুলো আমি একটু বেশি পছন্দ করি দেখতে। এই নাটকটার কাহিনী অনেক সুন্দর বলে মনে হচ্ছে। এরকমভাবে নাটকের রিভিউ পড়া হলে নাটক তো আর দেখাই লাগেনা। আপনি অনেক সুন্দর করে পুরো নাটকের রিভিউ লিখেছেন। এই নাটকটার রিভিউ পড়ে পুরো কাহিনীটা জেনে নিলাম, এতে আমার কাছে অনেক ভালো লাগতেছে। এই নাটকের শেষে অনেক সুন্দরভাবে মিল হয়েছে, এটা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। নায়ক শেষে গরু চোরকে ধরিয়ে দিয়েছে এটা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। না হলে তো গরু চোরের কেসে তার শ্বশুর ফেসে যেতো।
নাটকের কাহিনী অনেক সুন্দর। খুবই রোমান্টিক একটি নাটক যা দেখলে আপনার ভালো লাগবে। এই নাটকটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অনেক বেশি বিনোদন চরিত্র রয়েছে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আমার নাটক রিভিউ পোস্ট আপনার মহামূল্যবান মন্তব্য করার জন্য।
আপনি আমাদের মাঝে খুব সুন্দর একটি নাটক রিভিউ করেছেন। আপনার রিভিউ করা নাটকের নাম দেখেই তো আমার এখন নাটকটা দেখতে ইচ্ছে করছে।এ ধরনের নাটকগুলো আমি একটু বেশি পছন্দ করি দেখতে। নাটকের রিভিউ পড়ে মনে হচ্ছে নাটকটা দেখতে অনেক সুন্দর। আপনি নাটকটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খুব সুন্দর করে রিভিউ করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এ নাটকটি খুবই রোমান্টিক একটি নাটক যা দেখলে আপনার খুব ভালো লাগবে। নোয়াখালীর নাটকগুলো অনেক বেশি মজাদার হয়ে থাকে। সময় সুযোগ হলে অবশ্যই নাটকটি দেখে নিবেন অনেক বেশি ভালো লাগবে।
জি ভাইয়া সময় পেলে নাটকটি অবশ্যই দেখবো। এমন মজার নাটক দেখতে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে।
খুব সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন আপনি। আপনার কাছ থেকে এই সুন্দর নাটক এর রিভিউ দেখে খুবই ভালো লাগলো৷ খুব সুন্দর ভাবে আপনি নাটকের মধ্যে ঘটে যাওয়া সব কিছু ফুটিয়ে তুলেছেন৷ আমি নাটকটি এখনো দেখে নিতে পারিনি৷ তবে আপনাদের রিভিউ থেকে ধারনা নিয়ে অবশ্যই এই নাটকটি দেখে নেওয়ার চেষ্টা করব৷
নোয়াখালীর নাটক গুলো অনেক বিনোদনমুখী হয়। নাটকটি দেখতে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। সময় সুযোগ হলে অবশ্যই নাটকটি দেখে নিবেন, আশা করছি খুবই ভালো লাগবে। অসংখ্য ধন্যবাদ নাটক রিভিউ পোস্টে মন্তব্য করার জন্য।
অবশ্যই সময় করে নাটকটি দেখে নেওয়ার চেষ্টা করব৷ আর নোয়াখালীর নাটক বলে কথা দেখতে তো হবেই৷