বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সে গিয়ে ইফতারির অনুভূতি
আসসালামু আলাইকুম
আমার বাংলাব্লগের বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আমি আবার আপনাদের সামনে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম । আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সে গিয়ে ইফতার করার অনুভূতি ।বেশ কিছুদিন ধরেই ভাবছিলাম যে বসুন্ধরা সিটিতে যাবে শপিং করতে কিন্তু সময় করে উঠতে পারছিনা । রোজার দিনে সারাদিন রোজা রেখে কোন কিছুই করতে ভালো লাগে না । তারপরও ঈদের সময় তো শপিং করতেই হবে শপিং কি আর বাদ দেওয়া যতই খারাপ লাগুক না কেন । মনে মনে আগে থেকেই ভেবে রেখেছিলাম যে একদিন যাব হুট করে । একদিন ঘুম থেকে উঠে মনে হল যে আজকে বসুন্ধরা গেলে কেমন হয় যেই ভাবা সেই কাজ । প্রথম ভাবলাম যে যদি সন্ধ্যার পরে যাই তাহলে ইফতারি করে বাসা থেকে বের হয়ে যেতে যেতে অনেকটা সময় লেগে যাবে, বেশি সময় ঘোরাফেরা করতে পারব না । আর আমাদের বাসা থেকে বসুন্ধরা যেতে হলে একটু সময় লাগে। বিশেষ করে আমি রিকশায় চড়তে পছন্দ করি এ কারণে দূর দুরান্তের পথে হলেও আমি রিক্সায় যাওয়ার চেষ্টা করি । শান্তিনগর থেকে বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সে আমরা রিকশা করেই গিয়েছিলাম ।
আমরা ঠিক করলাম দুপুরের পরপরই বাসা থেকে বের হয়ে যাব যাতে ইফতারির আগে ও পরে অনেক সময় নিয়ে ঘোরাফেরা করতে পারি । আমরা পনে চারটার দিকে বাসা থেকে বের হলাম ওখানে গিয়ে পৌঁছাতে পৌঁছাতে পাঁচটা বেজে গিয়েছিল । তাই আমরা ভাবলাম যে এখন একটু ঘোরাফেরা করি ইফতারি করে তারপর কেনাকাটা শুরু করব । প্রথমে ওখানে গিয়ে ভাবলাম যে কোথায় গিয়ে ইফতারিটা করা যায় সেই জায়গাটা আগে ঠিক করি । তাই আমরা প্রথমে একেবারে আট তলায় উঠে গেলাম । কারণ ওইখানে রয়েছে ফুটকোর্ট খেতে হলে ওখানে গিয়ে খেতে হবে । প্রত্যেকটা এসকে লেটারের সামনে ওরা বিভিন্ন জুস এর ব্যবস্থা রেখেছে সাথে অনেক রকম স্যান্ডউইচ রেখেছে । ওরা যদিও বারবার বলছিল যে আমাদের এখানে ইফতারির ব্যবস্থা রয়েছে । আবার বিভিন্ন দোকান থেকেও বলছে যে আমাদের এখানে ইফতারির ব্যবস্থা রয়েছে আপনারা ইচ্ছা করলে এখানে ইফতারি করতে পারেন ।কিন্তু আমরা ভাবলাম যে আগে উপরে গিয়ে একটু দেখে আসি তারপর না হয় এদিকে চিন্তা করা যাবে ।
উপরে গিয়ে তো আমার একেবারে মাথায় হাত । মনে হলো কয়েক ঘন্টা আগে থেকে মনে হয় লোকজন এখানে এসে সিট নিয়ে বসে রয়েছে । তিল পরিমাণ ঠাঁই নেই মানুষের জন্য । চেয়ার টেবিলতো দখল হয়েই আছে তারপরে ফ্লোর গুলো দখল হয়ে আছে । ফ্লোরে হাঁটা পর্যন্ত যাচ্ছে না মানুষজনের জন্য । প্রত্যেকটা রেস্টুরেন্ট থেকে সবাইকে একটা করে পাটি দিয়েছে এবং সেই পাটি বিছিয়ে লোকজন বসে রয়েছে ইফতারি করার জন্য । আমরা যে গিয়ে একটু দাঁড়াব সেই জায়গাটুকু পাচ্ছি না । আর পাটি নিয়ে বসা তো দূরের কথা । এদিকে ছেলে বলছে মা ওদের থেকে একটা তোষক নাও আমরা বসি । ও পাটি চিনে না তাই ওটাকে তোষক বলছে ।
তারপরও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি যদি কোথাও কোন বসার জায়গা পাই । চেয়ার টেবিল তো পেলামই না তারপরে আবার ওরা আমাদেরকে পাটিও দিল না । আমরা তখন আর কি করবো তারপরও মনে হলো যে এখানে যখন এসেছি তাই সবার সাথে মিলে একসাথে বসেই ইফতারি করতে পারলে একটা অন্যরকম অনুভূতি হবে যেটা আগে কখনো হয়নি । যার কারণে আমরা নিচে আর না গিয়ে উপরেই বসার ব্যবস্থা খুঁজতে থাকলাম । প্রথমে আমরা ভাবলাম যে আগে খাবারটা নিয়ে আসি তারপর না হয় বসা যাবে । এবং আমরা চলে গেলাম একটা দোকানে সেখান থেকে আমরা রাইস পরোটা চিকেন এসব জিনিস ইফতারির জন্য নিলাম এবং খাবার হাতে নিজেদের বসার জায়গা খুঁজতে লাগলাম । ওদের কাছে যদিও আমরা পাটি চেয়েছিলাম কিন্তু ওরা দিতে পারেনি । কারণ সেগুলো সব শেষ হয়ে গিয়েছে । এরপর খুঁজতে খুঁজতে যখন কিছুই পেলাম না এবং বসার জায়গাও পাচ্ছিলাম না তখন একটা দোকানের সামনে একটু ফাঁকা জায়গা ছিল সেখানটাতে বসতে চাইলাম ফ্লোরেই ।
এর ভেতরে দেখলাম পাশের থেকে একজন বলছে আপনারা পারলে আমাদের সাথে শেয়ার করেন । পরে ওদের সাথে কিছুটা শেয়ার করে নিলাম । এখানে লোকজন সবাই যার যার এক একটা পাটি নিয়ে ছড়িয়ে বসে আছে কিন্তু সবার ভিতরে আন্তরিকতার বড়ই অভাব । শুধুমাত্র এই একটা ফ্যামিলিকে দেখলাম আমাদেরকে বসার জন্য একটু অফার করলো । যদিও আমরা তাদের তাদের পাটিতে না বসে পেপার বিছিয়ে তাদের পাশেই বসে ছিলাম তারপরও অফার তো তারা করেছে । এরপর খাবার নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকলাম আজান দেওয়ার এবং চারদিকে দেখতে লাগলাম । এই শপিং কমপ্লেক্স গুলোতে আসলে এবং ফুডকোর্টে আসলে বোঝা যায় যে মানুষজন কতটা শপিং করতে ও খেতে পছন্দ করে । এরপর আযান দিলে তারপর ইফতার শেষ করে নিলাম । তারপর ছেলে আবার বায়না করলো, ওখানে প্লেজন আছে ওখানে গিয়ে খেলবে । তারপর সেখানে নিয়ে গেলাম যদিও সেটা বন্ধ ছিল । ও গাড়িতে বসে কিছুক্ষণ গাড়ি নিয়ে ঘুরাঘুরি করল তারপর সেখান থেকে আমরা কেনাকাটার দোকানে ঢুকে গেলাম । কেনাকাটা নিয়ে অন্য আরো একদিন পোস্ট করব ।
আশা করছি আমার আজকের এই ব্লগটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লেগেছে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
ফটোগ্রাফার | @tauhida |
---|---|
ডিভাইস | samsung Galaxy s8 plus |
ধন্যবাদ
আমি তৌহিদা, বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি।বাংলাদেশে আমার জন্ম।আমি আমার মাতৃভূমিকে ভালোবাসি। আমি বিবাহিতা, এক সন্তানের মা। আমি রান্না করতে ও খেতে ভালোবাসি,আমি ঘুরতেও অনেক ভালোবাসি। |
---|
@tauhida
*** VOTE @bangla.witness as witness
OR SET @rme as your proxy

আপনার ইফতার করার অনুভূতি গুলো পড়ে অনেক কিছুই আসলে জানা হলো আপু।আমার বাসা এখানে হলেও আমি কখনো ইফতার করিনি।কারন বাইরের খাবার আমি খুব একটা খেতে পছন্দ করি না।তবে একবার মনে আছে আমরা ইফতার বাসা থেকে করেই কেনাকাটা করতে বসুন্ধরাতে যাই।আর কেনাকাটা করে রাত ২ টায় বাসায় আসি।সেদিন কি করে সময় চলে গেছে তা বুঝতেই পারিনি।ধন্যবাদ আপু অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।
আমার বাসা দুরে হওয়ার কারণে আমি ইফতারির আগেই গিয়েছিলাম কাছে হলে তো ইফতারি করার প্রয়োজন হয় না । তবে অন্যরকম একটা অনুভূতি হয়েছিল ভালই লেগেছিল ।
বাইরে তেমন একটি ইফতার করা হয় না আমাদের। তবে এখানকার ভিড় দেখে অবাক হলাম। ঈদের আগমুহূর্তে যদিও এরকম ভিড় হওয়া স্বাভাবিক। জায়গা না পেয়ে অনেকে ফ্লোরে বসে ইফতার করল। আপনারাও জায়গা না পেয়ে সেখানেই বসলেন। একটা জিনিস ভালো হলো আপনার ছেলের পাটি চিনা হয়ে গেল যেটাকে সে তোষক বলছিল। মুহূর্তগুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
বাইরে ইফতারি করতে আমার কাছে ভালোই লাগে তবে আমিও বেশিরভাগ সময় বাসায় করি। সেদিন তো ইফতারের টাইম হয়ে গিয়েছিল দেখে করে নিয়েছিলাম ।
এখানে তো দেখছি অনেক বেশি ভিড়। এত বেশি ভিড়ের মধ্যে তো আপনারা বসার জন্যই জায়গা পাচ্ছিলেন না। তবে একটা ফ্যামিলি আপনাদেরকে বসার জন্য অফার করেছিল, তাদের কথাটা শুনে ভালো লেগেছে। যাই হোক শেষ পর্যন্ত একটা জায়গায় বসে ভালোভাবে ইফতার করতে পেরেছেন এটাই অনেক। নিশ্চয়ই এতগুলো মানুষের সাথে ইফতার করায় ভালোই অনুভূতি হয়েছিল। তবে একটা কথা বললেই নয় আপু, নিচে বসে সবাই মিলে ইফতার করার মজাটাই আলাদা হয়। আপনাদের ইফতার করার মুহূর্তটা ভালোভাবেই উপভোগ করলাম।
ঢাকা শহরে বেশিরভাগ মানুষই বাইরে খাওয়া দাওয়া করতে বেশি পছন্দ করে রোজার ভিতর সেটা দেখেই বোঝা গেল ।
আপনারা যখন বলছিলেন যে ফুডকোর্টে গিয়ে ইফতারি করবেন আমি তখনই ভাবছিলাম যে ফুডকোর্টে গিয়ে কি আপনারা জায়গা পাবেন। নরমাল দিনে বসুন্ধরা ফুডকোর্টে জায়গা পাওয়া যায় না আর ইফতারের দিন হলে তো কথাই নেই। শেষমেষ তাই হলো টেবিলে তো জায়গা পেলেনি না পাটিও জুটলো না। খাবার যে পেয়েছেন তাই অনেক। যাক বেশ ভালোই ঘোরাফেরা করেছেন বোঝা যাচ্ছে।
আমি তো প্রথমে ভাবতেই পারিনি যে এরকম হতে পারে গিয়ে তো অবাক হয়ে গিয়েছিলাম । তারপরও শেষ পর্যন্ত যে নিচে বসতে পেরেছি এটাই বড় কথা ।
বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স এ গিয়ে ইফতারি করার খুব সুন্দর একটি মুহূর্ত শেয়ার করেছেন আপনি৷ আপনার কাছ থেকে এরকম সুন্দর একটি মুহূর্ত দেখে খুবই ভালো লাগছে৷ একইসাথে এখানে আপনি যেভাবে খুব সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন তার পাশাপাশি আপনি এখানে খুব সুন্দর কিছু সময় অতিবাহিত করে তা আমাদের মাঝে খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন৷ অসংখ্য ধন্যবাদ৷
আসলেই অনেক কষ্ট করে জায়গা পেয়েছিলাম এবং মজার মজার খাবার খেতে পেরেছিলাম । অনেক ভালো লেগেছিল মুহূর্তটা ।
তা তো দেখেই বুঝে গিয়েছিলাম৷ অনেকে ধন্যবাদ।
রমজানের সময় কিন্তু অনেকেই বাহিরে খাওয়ার প্ল্যান করে থাকে। আর বেশিরভাগ মানুষ কেনাকাটা করতে এসেছে বলে বাহিরে ইফতার করছে। যার কারণে আপনারা তো গিয়ে জায়গাই পাননি। শেষ পর্যন্ত একটা জায়গায় বসে ইফতার করেছিলেন, আর ভালো সময় অতিবাহিত করেছিলেন দেখে ভালো লেগেছে। এখন বাহিরে অনেক বেশি ভিড়। প্রত্যেকটা শপিংমলে কেনাকাটার ঝামেলা চলতেছে এখন। কেনাকাটা করতে গেলে সময় যেন চলে যায়। যাইহোক কেনাকাটার মুহূর্ত আশা করছি খুব শীঘ্রই আমরা দেখতে পাবো।
এটাই বড় কথা শেষ পর্যন্ত যে একটা জায়গায় বসে ইফতারি করতে পেরেছিলাম । কিন্তু সবকিছু মিলিয়ে নতুন একটা অভিজ্ঞতা হলো ভালই লেগেছিল ।