🍹 টক-ঝাল-মিষ্টি বিলিম্বির শরবত 🍹

---

হ্যালো বন্ধুরা, আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের মত আজকেও আপনাদের সামনে এসে হাজির হলাম। কিন্তু আজকের ভিন্নতা হল আজকে একটা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি। প্রথমত ধন্যবাদ জানাই আমাদের সম্মানিত এডমিন শুভ ভাইয়া এত সুন্দর একটা প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্য। একদম পারফেক্ট সময়ে পারফেক্ট বিষয় নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন। এখন যা গরম পড়ছে, এমন কি গরমের মধ্যে রমজান মাস চলছে। রমজান মাসের ইফতারিতে শরবত কিংবা জুস না হলে তো চলেই না। আর যদি হয় বিভিন্ন ফলের এক গ্লাস ঠাণ্ডা শরবত তাহলে তো সারা দিনের ক্লান্তি এক নিমেষেই দূর হয়ে যায়। এই গ্রীস্মে নানান ধরনের ফল পাওয়া যায়। আর এই ফলগুলোর শরবত বরফের সাথে খেলো একদম প্রাণটা জুড়িয়ে যায়।

আমি আজকে একটি ভিন্ন ধরনের ফলের শরবত তৈরি করলাম। আসলে সবাই তো সব ধরনের ফল দিয়ে শরবত তৈরি করে নিয়েছে। এইজন্য আমি অনেক ভেবে চিন্তে একটা ফল বের করলাম। আমাদের এখানে এখন এই ফলটা খুব সহজে পাওয়া যায় না। আমি তো একদম অনেক সময় লেগে গেল এই ফলটা খুঁজে বের করতে। প্রায় কয়েক দিন ধরে ফলটা খুজতেছি। আমি আজকে যে ফলের শরবত তৈরি করলাম এই ফলটির নাম হচ্ছে "বিলিম্বি"। অনেক কিছুর বিনিময় ফলটি শেষমেষ পাওয়া গেল।

বিশেষ করে আমি মিষ্টি জাতীয় কিছু খেতে কম পছন্দ করি। আমের টক এবং ঝাল খেতে বেশি পছন্দ করি। এইজন্য আমি খুজতেছিলাম টক-ঝাল-মিষ্টি জাতীয় কিছু তৈরি করার। প্রথমত বলে বিলিম্বি ফল একদম টক জাতীয় ফল। টক মিষ্টি ঝাল এর সবগুলোর সাথে যখন একটু ঠান্ডা ভাব থাকে তাহলে তো আরো বেশি ভালো লাগে। যেহেতু আমি মিষ্টি খুব একটা পছন্দ করি না। এইজন্যই আমি আজকে এই টক ফল দিয়ে আজকের শরবত তৈরি করলাম। এমনকি টক এর সাথে একটু ঝাল এবং একটু মিষ্টি ব্যবহার করি। এই ফলের উপকারিতা নিয়ে কিছু কথা বলি।

• আমি শুনেছি বিলিম্বি ফলগুলো ডায়াবেটিসের জন্য অনেক উপকারী। এই ফল খেলে নাকি ডায়াবেটিস অনেক নিয়ন্ত্রণে থাকে।

• তাছাড়া বিলিম্বি ফলের শরবত সর্দি-কাশি এসব দূর করতে অনেক কার্যকরী। এই ফলের শরবত সেবন করলে সর্দি কাশি ভালো হয়ে যায়।

• এছাড়াও চুলকানি রোগ নিরাময় করতে নাকি এই ফলের উপকারিতা অনেক বেশি। তাছাড়া আরও কয়েক ধরনের রোগ প্রতিরোধ করে এই ফল। শরবত নিয়ে কয়েকটা লাইন:

কবিতার নাম : শরবতের মেলা

এই গরমে অতিষ্ঠ মন, ক্লান্ত সারা দেহ
এক গ্লাস ঠান্ডা শরবতে, প্রানটা ফিরে এলো।
সারাদিন কাটে উপোস, মনের গহীনে তৃষ্ণার্ত,
যদি হয় একটু টক-ঝাল-মিষ্টি তার সাথে একটু ঠান্ডা।
নানান রঙের ফলের ভিড়ে থাকছি সারাদিন,
কিন্তু খাওয়ার উপায় নেই কি করবো বলেন।
সন্ধ্যেবেলায় যদি পাই, অনেকগুলো ইফতারের মেলা
কিন্তু সবার আগে চাই, ঠান্ডা শরবতের মেলা।
যদি হয় নানান ফলের শরবত, প্রাণটা যেন ফিরে পাই।
তার সাথে একটুখানি টক-ঝাল-মিষ্টি, দেহের শীতলতা ফিরে পাই।

এবার চলে যায় মূল রেসিপিতে।এই রেসিপিটি তৈরি করতে আমার কি কি উপকরণ লাগলো এবং আমি পুরো রেসিপি কিভাবে তৈরি করলাম তার বর্ণনা নিচে প্রতিটা ধাপে উপস্থাপন করলাম। আশা করি আমার আজকের বিলিম্বি ফলের রেসিপি আপনাদের ভালো লাগবে।

🍹 টক ঝাল মিষ্টি বিলিম্বীর শরবত 🍹

---

🍹 উপকরণ 🍹

উপকরণ	পরিমাণ
বিলম্বী ফল	৬ টা
বরফের টুকরো	৫/৬ টা
চিনি	২ টেবিল চামচ
বিট লবণ	পরিমাণমতো
শুকনো মরিচ	১ টা

⬇️ ধাপ ১ ⬇️

প্রথমে আমি বিলিম্বি ফলগুলো ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিলাম। এরপর একটি বাটিতে বিলিম্বি ফলগুলো টুকরো টুকরো করে কেটে নিলাম।

---

⬇️ ধাপ ২ ⬇️

এরপর আমি বিলিম্বি পরের টুকরোগুলোকে একটি ব্লেন্ডারের জাগে নিয়ে নিলাম।

---

⬇️ ধাপ ৩ ⬇️

এখানে আমি সামান্য পরিমাণ একটু পানি দিয়ে দিলাম। আমি এখানে বেশি পানি দিব না কারণ এই ফলগুলো একটু পানি জাতীয়। এরপর ফলগুলোকে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিলাম।

---

⬇️ ধাপ ৪ ⬇️

ফলগুলো ব্লেন্ড করার পর এরকম হলো। একদম একটা পেস্টের মতো তৈরি করলাম।

---

⬇️ ধাপ ৫ ⬇️

এরপর আমি একটা ছাঁকনি দিয়ে বিলিম্বি ফলের পেস্টটাকে ছেঁকে নিলাম।

---

⬇️ ধাপ ৬ ⬇️

সম্পূর্ণ পেস্ট ছেঁকে তার থেকে ফলের রস গুলো বের করে নিলাম।

---

⬇️ ধাপ ৭ ⬇️

এরপর আমি এর মধ্যে পরিমাণমতো বিট লবণ দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিলাম।

---

⬇️ ধাপ ৮ ⬇️

এরপর আমি এর মধ্যে পরিমাণমতো চিনি দিয়ে দিলাম। চিনি গুলো দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিলাম।

---

⬇️ ধাপ ৯ ⬇️

এরপর এর মধ্যে বরফের টুকরো গুলো দিয়ে দিলাম। বরফের টুকরো দিলে সব থেকে বেশি ভালো লাগে খেতে।

---

⬇️ ধাপ ১০ ⬇️

এরপর আমি শুকনো মরিচ তেলে গুঁড়ো করে নিয়েছিলাম। শুকনো মরিচের গুঁড়া গুলো শরবত এর উপরে ছিটিয়ে দিলাম। এভাবে আমি টক-ঝাল-মিষ্টি শরবত তৈরি করে নিলাম।

---

⬇️ শেষ ধাপ ⬇️

এরপর সুন্দরভাবে সাজিয়ে পরিবেশন করলাম। আশা করি আমার আজকের টক-ঝাল-মিষ্টি বিলিম্বি ফলের শরবত আপনাদের ভালো লাগবে। পরবর্তীতে আবারও আসবো নতুন কিছু নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন।

---

পোস্ট বিবরণ

শ্রেণী	রেসিপি
ডিভাইস	Redmi note 9
ফটোগ্রাফার	@tasonya
লোকেশন	ফেনী

আমার পরিচয়

আমার নাম তাসলিমা আক্তার সনিয়া। আমি বাংলাদেশী। বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা বলে আমি অনেক গর্বিত। আমি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অনার্স ফাইনাল ইয়ারের একজন ছাত্রী। আমি ছবি আঁকতে ভালোবাসি। বিশেষ করে যে কোন ধরনের পেইন্টিং করতে পছন্দ করি। যখনই অবসর সময় পায় আমি ছবি আঁকতে বসে পড়ি। এছাড়াও আমি ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। কিছুদিন পর পর বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করার চেষ্টা করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের কারুকাজ করতে পছন্দ করি। রান্না করতেও আমার খুব ভালো লাগে। আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে পছন্দ করি। আমি যখনই সময় পাই আমার পরিবারের সবাইকে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করে খাওয়াই। আমি সব সময় নতুন নতুন কিছু করার চেষ্টা করি।