কান্তিজীউ মন্দিরের মেলা।

13 December, 2022, Late Autumn
২৮শে অগ্রহায়ণ ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, হেমন্ত-কাল


🌼আস‌সালামুআলাইকুম/আদাব🌼

মার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল সদস্যকে জানাই আমার শুভেচ্ছা এবং ভালোবাসা। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি।

PXL_20221205_192924551.jpg

what3words Location

Device : Oppo F17

প্রতিবছর নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে কান্তজিউ মন্দিরকে কেন্দ্র করে মেলা অনুষ্ঠিত হয়। সেই মেলাটি মূলত একমাস ব্যাপী স্থায়ী থাকে। কান্তজির মন্দিরের আশেপাশে বিভিন্ন ধরনের দোকানপাট বসে। এছাড়াও বিনোদনের জন্য মোটরসাইকেল খেলা থেকে শুরু করে সার্কাসের মাধ্যমে জনগণকে বিনোদন দেওয়া হয়। আমি আর আমার বন্ধুরা মিলে মেলাটি উপভোগ জন্য গিয়েছিলাম তারই কিছু অভিজ্ঞতা আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি।



কান্তজির মন্দির সম্পর্কে কিছু তথ্য

কান্তজিউ মন্দির বা কান্তজী মন্দির বা কান্তনগর মন্দির বাংলাদেশের দিনাজপুরে অবস্থিত একটি প্রাচীন মন্দির। মন্দিরটি হিন্দু ধর্মের কান্ত বা কৃষ্ণের মন্দির হিসেবে পরিচিত যা লৌকিক রাধা-কৃষ্ণের ধর্মীয় প্রথা হিসেবে বাংলায় প্রচলিত। আমার জানামতে মহারাজা সুমিত হর কান্ত এখানেই জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। দিনাজপুর শহর থেকে ২০ কিলোমিটার উত্তরে এবং কাহারোল উপজেলা সদর থেকে সাত কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে সুন্দরপুর ইউনিয়নে, দিনাজপুর-তেঁতুলিয়া মহাসড়কের পশ্চিমে ঢেঁপা নদীর তীরবর্তী গ্রাম কান্তনগরে অবস্থিত এই প্রাচীন মন্দির। ১৭৫২ সালে কান্তজিউ মন্দির স্থাপিত করা হয়।

মেলায় তোলা কিছু ছবি এবং বর্ণনা

IMG20221119184839.jpg

PXL_20221205_192747007.jpg

what3words Location

Device : Oppo F17

আমরা দিনাজপুর সদর থেকে কয়েকজন বন্ধু মিলে বিকেলের দিকে অটো ভাড়া করে কান্তজিউ মন্দিরের মেলার উদ্দেশ্যে রওনা দেই। অটোতে করে যেতে প্রায় ৪০ মিনিটের মতো সময় লেগেছিল। তো আমরা প্রথমেই কান্তনগরে গিয়ে মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করি। সেখানে আমি এবং আমার বন্ধুরা মিলে কিছু স্মরণীয় ছবি তুলে রাখি। তারপর আমরা মন্দির থেকে বের হয়ে মন্দিরের চারপাশে বিভিন্ন ধরনের দোকানে ঘোরাঘুরি করি।

IMG20221119185650.jpg

IMG20221119190206.jpg

what3words Location

Device : Oppo F17

মেলায় আচারের দোকান থাকবে না এটা কখনো হতে পারে। আমি প্রায় তিন থেকে চারটি আচারের দোকান দেখেছিলাম। সবগুলো দোকান বেশ বড়ই ছিল। বিভিন্ন ধরনের আচার সেখানে পাওয়া যায়। চালতার আচার, বড়ইয়ের আচার, আমের আচার আরো অনেক প্রকার আচার যেগুলোর নাম আমার ঠিক মনে নেই। আচারগুলো অনেক সুন্দর ভাবে গামলার মধ্যে রাখা ছিল।

IMG20221119185328.jpg

IMG20221119185348.jpg

what3words Location

Device : Oppo F17

পুজো করার জন্য বিভিন্ন ধরনের সামগ্রি। যেমন ঘন্টা, প্রদীপ জালানোর জন্য পিতলের বাটি, ইত্যাদি আরো অনেক ধরনের সামগ্রী এই দোকানে বিক্রি করা হয়। এরকম দোকান মন্দিরের চারপাশে অনেকগুলো ছিল।

IMG20221119185724.jpg

IMG20221119185755.jpg

এই দোকানে ছিল বিভিন্ন ধরনের শামুকের তৈরি অলংকার, শামুকের মালা, আরো বিভিন্ন ধরনের শোপিস ঘর সাজানোর জন্য। আমি দোকানদারের সাথে কথা বলেছি তাদের ব্যবহার অনেক সুন্দর ছিল। তাদের ব্যবহার আমার হৃদয় ছুঁয়ে গেছে।

IMG20221119190245.jpg
এই ছবিতে মূলত একটি কসমেটিকের দোকানের। বিভিন্ন ধরনের কসমেটিকস সহ চশমা,মানিব্যাগ ইত্যাদি এগুলো বিক্রি করা হয়। দোকানে জিনিসপত্র গুলো অনেক সুন্দর ভাবে সাজানো ছিল।

IMG20221119190033.jpg

IMG20221119190047.jpg

রাস্তার পাশে সামান্য একটু জায়গা নিয়ে চট বিছিয়ে আমাদের এই চাচা ট্যাটুর দোকান দিয়েছিল। চাচা ছিল মুসলিম তিনি আবার পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন।
তার সাথে কথা বললে সত্যি আমার মনটা অনেক ভালো হয়ে গিয়েছিল। মাত্র ২০ টাকার বিনিময়ে হাতের মধ্যে সুন্দর ডিজাইন করে কালির মাধ্যমে নকশা করে দিচ্ছিলেন। নকশাগুলো আবার দীর্ঘস্থায়ী না। দুই এক সপ্তাহ পর হাত থেকে এমনিতেই উঠে যাবে।

IMG20221119190446.jpg

IMG20221119190528.jpg
মেলায় ভাজাপোড়ার দোকান থাকবে না তাকি কখনো হতে পারে। ভাজাপোড়ার দোকান থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের মাখার দোকান দিয়েছিল দোকানিরা।
সেখানে বিভিন্ন ধরনের মুড়ি মাখা, বারো মিশালি মাখা, আলুর চপ, পিঁয়াজি,বেগুনের চপ, ধনিয়ার চপ, আরও বিভিন্ন ধরনের খাবার ছিল ।

IMG20221119190324.jpg

PXL_20221205_194021532.jpg

PXL_20221205_194100150.jpg

what3words Location

Device : Oppo F17

মেলার মধ্যে অনেকগুলো পানের দোকান দেখেছিলাম। সেখানে বিভিন্ন ধরনের পান পাওয়া যায়। বিশেষ করে মিষ্টি পানের জন্য দোকানগুলো সেরা ছিল। ১০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ টাকা পর্যন্ত পান পাওয়া যায়। আমি ইন্ডিয়ার একটা ব্লগে এক লক্ষ টাকার পান খাওয়া দেখেছিলাম।😱 তাই আমার কাছে দামটা স্বাভাবিকই মনে হয়েছিল। বিভিন্ন প্রকার মসলা দিয়ে পানগুলো তৈরি করা হয়। চুল সুপারি পান, মিষ্টি পান, ভালোবাসা লাভ পান, বেনারসি মিষ্টি পান, বিলাসী পান,আগুন পান ইত্যাদি আরো অনেক রকমের পান পাওয়া যায়। আমি ২০ টাকা দিয়ে বেনারসি মিষ্টি পানি খেয়েছিলাম। দারুন মজা ছিল।😋

পুরো মেলাটি ভালোভাবে ঘুরে দেখতে আমাদের প্রায় দুই ঘন্টা সময় লেগে গিয়েছিল। তারপর আমরা একটু বিশ্রাম নিয়ে অটো ভাড়া করে আবার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেই। মেলায় কাটানো সময় গুলো আমরা সুন্দর করে উপভোগ করেছিলাম। আজকে এই পর্যন্তই। কান্তজিউ মন্দির নিয়ে আরো একটি পোস্ট করব ভাবছি। পরবর্তী ব্লগে আবারো দেখা হবে আপনাদের সাথে। ভালো থাকবেন সবাই। 🥀

😇চাইলে আমার সাথে যুক্ত হতে পারেন😇


FacebookInstagramTwitter

আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়

IMG-2224.JPG

IMG_5972 (1).JPG

আমার নাম মোহাম্মদ তাশিক। সবাই আমাকে তাশিক নামেই চেনে😇 আমি একজন মুসলিম এবং আমি বাংলাদেশের নাগরিক। বর্তমানে আমি ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করছি। ট্রাভেল এবং ফটোগ্রাফি আমার নেশা। নতুন নতুন জিনিস শেখার প্রতি আমার প্রচুর আগ্রহ রয়েছে। আমি মানুষের সাথে মিশতে পছন্দ করি। আমি অনেক মিশুক। একজন বাঙালি হিসেবে আমি গর্বিত।
Sort:  
 2 years ago 

কান্তিজীউ মন্দিরের মেলাতে অনেক সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। আসলে মেলা মানে অনেক হাসি আনন্দ একটু ঘুরাঘুরি। মেলাতে তো অনেক কিছু উঠেছে বিশেষ করে খাবারের দোকান এবং ঝিনুকের দোকান দেখে খুবই ভালো লাগলো আমার কাছে। পুজোতে ব্যবহৃত জিনিসপত্র গুলো দেখতে বেশ চমৎকার লাগছে। মেলাতে কাটানো এত সুন্দর মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করে সম্পূর্ণভাবে পোস্টটি পড়ার পর এত সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।🥀

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 65915.92
ETH 3486.15
USDT 1.00
SBD 2.67