|| হেলথ ইজ ওয়েলথ - কথাটির সারমর্ম এ ক'দিনে বোঝা গেলো ||
প্রিয় বন্ধুরা কেমন আছেন? আশাকরি সকলে বেশ ভালো আছেন।
কিছুদিন যাবত পড়াশোনার চাপ বেড়ে যাওয়ায় আমি নিয়মিত পোস্ট করতে পারিনি। নিজের ইউনিভার্সিটির পড়া ব্যতীত একটা এন্ট্রান্স এক্সামের প্রস্তুতি জোরদার করতে হচ্ছিল, যার কারণে নিয়মিত ব্লগ, লেখা আনা হচ্ছিল না। গল্প, কবিতা, অজানা-কথা ও নানান স্মৃতিকথন যা আমি লিখি, সে সকল কথা-লেখা নিয়ে শীঘ্রই ফিরবো।
বিগত দশ দিনে পড়ার বাইরেই মূলত আমি কাজ করেছি, সেটা হল আমার বোনকে ডক্টর দেখানো। শুধু বোন নয়, মামা মামীকেও আমার কাছে রেখে ডক্টর দেখাতে হয়েছে। এই দশ থেকে বারোটা দিন আমাকে খুবই ব্যতিব্যস্ত থাকতে হয়েছে। সবারই অসুখ একসাথে হয়েছে আর সকলেরই দায়িত্বটা সম্পূর্ণ রূপে আমার ওপর। কলকাতায় ট্রিটমেন্ট এর দরকার পড়লেই আমাকেই তার পুরো দায়িত্ব নিতে হয়।
এবারও নিতে হলো। তবে এবার চাপটা বেশিই হয়ে গেছিলো একটু। আসলে গতবারে একজন পেসেন্ট নিয়েই ভাবনা চিন্তা করতে হয়েছে। এবার তিন তিন জন। তাছাড়া বোনের সমস্যা অনেকগুলো। বোন বহুদিন ধরেই আমাদের মালদার ভালো সরকারি হসপিটালের ডক্টর কে দেখিয়েছে। কিন্তু বাড়ির কাছাকাছি ডক্টরের কাছে এবার আর আস্থা পাওয়া গেলনা। বহুদিন ধরেই সে ডক্টর দেখাচ্ছে, সুস্থতার লক্ষণ নেই। এই কদিন একটু ভালো, তারপর আবার একই অবস্থা।
বোনকে নিয়ে খুবই চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম। না আর বাকি সমস্ত রোগের জন্য নয়, তার চোখের জন্য। চোখে বেচারা দিন দিন খুবই দেখতে পাচ্ছে। আমরা অতটা খেয়াল করিনি।
বহুদিন আগে একবার ডক্টর দেখিয়ে চশমা নিয়েছিলাম, তখন চোখ ও চশমার ওপর খুব একটা ধারণা ছিলনা। বোনেরও ছিলনা। তখন সেতো আরো বাচ্চা ছিল। দেড় বছর আগেও একবার দেখানো হয়েছে। সেখানে আমার উপস্থিতি ছিলনা। বাবার ছিল কিন্তু বাবা অতটা বুঝতে পারেনি।
সে যে তখন থেকেই কম দেখছে এবং এই তার দৃষ্টি ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে তখন মোটেই বুঝতে পারিনি। এটা আমাদেরই ভুল বলে আমি স্বীকার করি। বইয়ের অক্ষর নিয়ে তখন যদি পরীক্ষা করতাম তবে আমাদের একটা ধারণা তৈরি হতো যে সে ঠিক কতটা কম দেখছে। তবে সেটা করা হয়নি আর সেও ক্রমশ তার দৃষ্টি হারিয়েছে।
আমি বেশ কিছুদিন আগে বই আর খবরের কাগজ তার সামনে ধরে অবাক হয়ে যায়। তার দৃষ্টি অনেকটাই ঝাপসা হয়ে গেছে। যা আগে ছিলনা। আগে ছিলনা সে নিজেই সেটা বললো। এরপর আমি দ্রুত ডক্টরের কাছে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করি।
কলকাতার এক সরকারি হসপিটালে আমার এক বন্ধু ইন্টার্নশিপ করছিল, তার কাছেই আগে নিয়ে যায় পরামর্শ ও অন্য ট্রিটমেন্ট করার জন্য।
চোখের ব্যাপারে কলকাতার সব থেকে ভালো হসপিটাল, মেডিকেলের আর. আই. ও - তে নিয়ে যেতে বলে এবং বাকি সমস্যা গুলোর প্রাথমিক ট্রিটমেন্ট গুলো সে নিজেই করে। তারপর আরোভালো ভাবে বিষয়গুলোকে পর্যবেক্ষণ করার এন. টি বিভাগে নিয়ে যায়।
ডক্টর যে খুবই ভালো তা বুঝতে পারলাম বোনের সুস্থতা দেখে। কানের ভেতরে ও বাইরে কিছু ইনফেকশন হয়ে গেছিলো সেগুলো ধীরে ধীরে সেরে উঠছে। তবে চোখের জন্যে আমাদের আশাহত হতে হলো। ডক্টর বললেন চোখের পাওয়ার কমতে কমতে এখন যে -9 হয়ে গেছে , এটা নাকি আর আগের অবস্থায় যাবেনা।
২০/২২ বছর এটা এমনিতেই থেমে যাবে। তবে যতটুকু ক্ষতিগ্রস্থ তা আর সুস্থ হবে না।
আমি অবাক চোখের এই বিষয়ে আমার মোটেই ধারণা ছিলনা। প্রথম ডক্টর বলার পর এ বিষয়ে আমার সন্দেহ থেকে যায়। তাই আরেকটা ডক্টর দেখায় বিষয়টি সম্পূর্ণ ক্লেয়ার করার জন্য। মাঝখানে আমি ইন্টারনেট ঘেঁটে দেখি সেখানেও একই কথা। তারপর আমার একরকম ধারণা চলে আসে। পরের ডক্টর ও সেই কথা বলেন।
শেষমেষ আমি হতাশ হলেও সাহস জোগাড় করি। চশমায় শেষমেষ ভরসা। বোনের আগের চশমাটি মোটা কাঁচের ছিল, এটা আরো বেশি হয়ে গেলো। তবে উপায় আর নেই , চশমা পরেই চালাতে হবে।
আজ এই অব্দি রইল। আগামীকাল আবার নতুন কিছু কথা ও লেখা নিয়ে হাজির হব। ততক্ষণ আপনারা ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদ।
প্রথমে আপনার ছোট বোনের চোখের পাওয়ার কম হওয়ায় আপনাদের যে হতাশা সেজন্য খুবই খারাপ লাগছে। তবে এইখানে আপনাদের যথেষ্ট ভুল ছিল প্রথম থেকে এই ব্যাপারে যথেষ্ট মনোযোগ দেওয়া উচিত ছিল তাহলে হয়তো এই পর্যন্ত সমস্যা হত না। কিছুদিন আগে আমার মেয়েরও সামান্য মাথা ব্যাথা এবং চোখে ঝাপসা দেখার মত সমস্যা আমিও ডাক্তার দেখিয়েছি এবং সেখানেও আমার মেয়ের ০.৫০ পাওয়ার কমে গিয়েছে দুচোখে। যাইহোক ডাক্তার বলেছে এটা এমন কোন ব্যাপার নয় তবে আরো কমতে পারে পাওয়ার যতটুক হয়েছে তা কারেকশন হওয়ার কোন সুযোগ নেই। আর এই জন্যই যথাযথভাবে চশমার ব্যবহার বাড়াতে হবে। তাই আপনার বোনের ব্যাপারেও চশমার ব্যবহারটা কন্টিনিউ করবেন আশা করি সামনের দিকে এর চেয়ে খারাপ আর নাও হতে পারে।
আপনার মন্তব্য পড়ে ভালো লাগলো। ঠিকই বলেছেন, আমাদের সচেতন হওয়ার আরো দরকার ছিল, আমরা বুঝতে পারিনি ওর সমস্যাটা। কারণ ও নিজেও খুব চুপচাপ। যাইহোক মন্তব্য রাখার জন্যে ধন্যবাদ আপনাকে।