|| বালিকাঠা - বিলুপ্তপ্রায় এক আশ্চর্য কচ্ছপ প্রজাতি ||
বালিকাঠা কচ্ছপের নাম শুনেছেন? সুন্দরবনের এই আশ্চর্য কচ্ছপ প্রজাতি এখন বিলুপ্তপ্রায়। একটা সময় বহু সংখ্যক এই প্রজাতির কচ্ছপ সুন্দরবন অরণ্য এলাকায় দেখা যেত। কিন্তু আজ ধীরে ধীরে এতটাই কমে এসেছে যে সুন্দরবন ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের তরফ থেকে এদের সংরক্ষণ করে রাখতে হচ্ছে। চলুন আজ এই বালিকাটা কচ্ছপের আশ্চর্য বৈশিষ্ট্য গুলো নিয়ে আলোচনা করি।
সুন্দরবনে এই বালিকাঠা কচ্ছপের দেখা মেলে। একটা সময় সুন্দরবনের বিভিন্ন অঞ্চলে এ কচ্ছপ বহু পরিমানে দেখা যেত কিন্তু এখন বিলুপ্তির মুখে। আমরা যে ধরনের কচ্ছপ দেখেছি ঠিক তেমনই দেখতে কিন্তু এই কচ্ছপ নয়।এর গঠন আকার আকৃতি ভিন্ন।
এই কচ্ছপের মুখের ভাগটা অনেকটাই বড়। সাধারণ কচ্ছপের থেকে অনেক বেশি লম্বা। এই কচ্ছপগুলোর এক একটি ওজন পরিণত আকারে প্রায় কুড়ি থেকে পঁচিশ কেজি।
সুদূর সমুদ্র থেকে থেকে এই কচ্ছপগুলো আসে। সুন্দরবনের নদীর চরে যেখানে রোদের পরিমাণ বেশি সেই জায়গা লক্ষ্য করেই এরা আসে। এই আসার কারণ মূলত ডিম পাড়ার জন্য। এরা ডিম পাড়ে বালির চরে যেখানে তাপমাত্রা বেশি। বালির ভেতর ডিমগুলো রাখে। এই খবরটা শুনে আশ্চর্য হতে হয় যে তাপমাত্রার ওপর নির্ভর করে ডিম ফুটে পুরুষ না স্ত্রী বাচ্চা হবে। যদি তাপমাত্রা বেশি থাকে তবে সেক্ষেত্রে পুরুষ হওয়ার সম্ভবনা অনেক বেশি থাকে।
আরেকটি আশ্চর্য বৈশিষ্ট হলো এই এই স্ত্রীটি হয় আকারে বড় পুরুষের থেকে। যেখানে আমরা দেখে আসছি যে সমস্ত প্রাণীর ক্ষেত্রেই পুরুষ প্রাণী হয় বড়। আকারে ও শক্তিতে। তবে এক্ষেত্রে আমরা ভিন্নতা লক্ষ্য করলাম। যদিও কয়েকটি আরো প্রাণী আছে পৃথীবিতে যাদেরও স্ত্রী রূপটি হয় আকারে ও শক্তিতে বড়। বালিকাঠা কচ্ছপের স্ত্রী কচ্ছপটি আকারে ও শক্তিতে পুরুষ কচ্ছপটির থেকে অনেক বড়।
সংরক্ষণে রাখা কচ্ছপ গুলোকে একটা পুকুরে রাখা হয়েছে। পুকুরগুলো যত্ন করে তারের বেড়া দিয়ে ঘেরা। যে ক'টি টিকে রয়েছে তাদের ওপর ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট এর আধিকারিকরা অত্যন্ত যত্ন নিয়ে থাকেন যাতে করে দুর্বল পরিবেশের অভাবে কচ্ছপ গুলো মারা না যায়। দেখভালের জন্যে রয়েছে একাধিক কর্মচারী। বুঝিয়ে দেওয়ার জন্যে রয়েছে ট্রাভেল গাইড ও টাঙানো রয়েছে একাধিক ব্যানার ফ্লেক্স যাতে করে পর্যটকরা সমস্ত কিছু সমন্ধে জ্ঞান আহরণ করতে পারে। কিছু ব্যানার ফ্লেক্স নিয়ম-বিধিরও রয়েছে। যদি পর্যটকরা ঢিল বা আর কিছু ছোড়ে কেননা গার্জেনদের শিশুরাও যায়, তাদের ভুল হতেই পারে, সেক্ষেত্রে ডিপার্টমেন্টের নজরদারি রয়েছে বেশ।
আমরা দেখলাম পুকুরের মধ্যে একাধিক কচ্ছপ রয়েছে। যথেষ্ট পরিমাণে যে রয়েছে তা তাদের আস্ফালন দেখে আন্দাজ করতে পারলাম।
এখানে কচ্ছপগুলোকে দু' ভাগে ভাগ করে রাখা হয়েছে। যে সকল কচ্ছপ দের বয়স বেশি যেগুলো বেশ বড় তাদের একটা পুকুরে রাখা হয়েছে। এবং যেগুলো ছোট বয়সে কম তাদের আরেকটা পুকুরে। যখন ছোট কচ্ছপগুলো বড় হতে থাকে এবং আকারে একটু বড়ই হয়ে যায়, তখন তাদের দ্বিতীয় পুকুরে ছেড়ে দেওয়া হয়, বড়দের সাথে।
এখন আর এই সুমদ্র থেকে ডিম পাড়ার লক্ষ্যে নদী চরে আসেনা কচ্ছপগুলো আর পরিমাণেও কমে গেছে। এরা এখন বিলুপ্তির মুখে। তবে পৃথিবীর বুকে এদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য বন অধিকারিকগণের চেষ্টা ত্রুটি নেই। সরকারও তাদের বেশ সহযোগিতা করে।
ক্যামেরা - Canon
মডেল - Canon PowerShot SX52
ফোকাস লেংথ- 180.60mm
আজ এই অব্দি রইল। আগামীকাল আবার নতুন কিছু কথা নতুন একটি লেখা নিয়ে হাজির হব। ততক্ষণ আপনারা ভাল থাকুন। সুস্থ থাকুন ধন্যবাদ।
বালিকাঠা এই কচ্ছপের উপরে আপনি খুব সুন্দর একটা ব্লক তৈরি করেছেন ভাই। এখানে এই কচ্ছপ সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম পোস্টটি পড়ে। আসলে বিলুপ্ত জিনিসগুলোকে সরকারি উদ্যোগে এইভাবে ধরে রাখার চেষ্টা করলে ভবিষ্যতে হয়তোবা এর একটা প্রজন্ম বেড়ে উঠতে পারে। অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের মাঝে এরকম একটি বিলুপ্ত প্রজাতির কচ্ছপের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ তারই একটা প্রচেষ্টা চলছে সরকারের তরফ থেকে। ধন্যবাদ সুন্দর একখানা মন্তব্য করার জন্য।