আমার ছেলেবেলায় শুনা রূপকথা" রাঘব বোয়াল" অন্তিম পর্ব

image source: copyright freepixabay || image credit: Comfreak
Hello
বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন।আজ আমার ছেলেবেলায় শুনা রূপকথা "রাঘব বোয়াল" এর শেষ পর্ব ( অন্তিম পর্ব ) শেয়ার করব।
জেলে তখন আনন্দে আত্মহারা হয়ে ছুটে চলে গেল। জেলে গিয়ে দেখতে পেলো যেখানে তার ঘর ছিল সেখানে সুন্দর দেখতে একটা বড় ঘর।জেলে সেই ঘরের ভিতরে গিয়ে দেখলো সত্যি তার স্ত্রী ড্রইং রুমে বসে আছে। জেলে তখন তার স্ত্রী কে দেখে বললো এখন তুমি খুশি তো। তুমি সুন্দর একটি বাড়ি পেয়েছো। এখন খুশি তো। স্ত্রী বললো ও সব থাক এখন চল আমরা খেয়ে ঘুমাই।আমার খুব ঘুম পাচ্ছে।এরপর জেলে আর তার স্ত্রী খেয়ে দেয়ে ঘুমোতে গেলো। কিন্তু কিছুতেই তার স্ত্রীর ঘুম পাচ্ছে না। কারণ এতে সে খুশি না। রাতে সে এপাশ ওপাশ করতে লাগলো। আর ভাবলো কাল আর কি চাওয়া যায় এই ভাবতে ভাবতে সকাল হয়ে গেল। তার স্ত্রী ঘুম থেকে উঠে জেলেকে ডাকতে লাগল।এই তাড়াতাড়ি উঠো, শুনতে পারছো।জেলে উঠে বললো কি হলো আবার তোমার।স্ত্রী বললো আমি এতে খুশি না আমি এই রাজ্যের রানী হয়ে চাই। সকল প্রজারা আমার কথায় উঠবে আর বসবে। এ কথা শুনে জেলে বললো এটা তুমি কি বলছো। তুমি রানী হতে চাও, কিন্তু কেনো আমাদের যা আছে এতে তো আমরা খুব খুশি। স্ত্রী রেগে গিয়ে বললো আমি যা বলেছি তাই করো। জেলে বাধ্য হয়ে নদীর কাছে গিয়ে দেখে আকাশ আজ রক্ত বর্ণ ধারণ করেছে আর জলের রং লাল হয়ে গেছে।
জেলে ভয়ে ভয়ে ডাকতে লাগল ও জাদুর মাছ তুমি কোথায় তুমি আমার কথা কি শুনতে পারছো। হটাৎ মাছ জলের থেকে উঠে বললো কি চাই তোমার। জেলে বললো আমার স্ত্রী এখনও খুশি না। সে রানী হতে চায় রাজ্যের। মাছ বলে ওকে তুমি গিয়ে দেখো তোমার স্ত্রী রানী হয়ে গেছে। জেলে চলে গেল। এগিয়ে দেখে প্রচুর দাসদাসী ঘুরা ঘুরি করছে। ভিতরে গিয়ে দেখে সিংহাসনে তার স্ত্রী বসে আছে তার দুই পাশে দুই দাসী তাকে বাতাস করছে। জেলে বললো এবার তুমি খুশি তো । রানী বললো তুমি ভিতরে এসো আমি কাল সকালে বলবো। জেলে রাতে ঘুমিয়ে পড়ল কিন্তু তার স্ত্রীর কিছুতেই ঘুম আসছে না সে উঠে পায়চারি করতে লাগলো।এভাবে রাত কেটে গেলো। সকালে জেলে কে বলে তুমি এবার গিয়ে বলো আমার প্রসাদ সোনার করে দিতে হবে। আর সবাই যেনো আমার কথা মতো চলে। আমার চারপাশে শুধু সোনা, হীরা, মুক্তো, চুন্নি পাথর থাকবে। জেলে আবার চলে গেল এবার নদীর কাছে গিয়ে দেখে নদীর জল কুচকুচে কালো হয়ে গেছে আর ঝর বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। আবার মাছ কে ডাকতে লাগল। ও জাদুর মাছ তুমি কি শুনতে পারছো আমি তোমাকে ডাকছি। মাছ জলের উপর ভেসে ওঠে বলে কি চাই তোমার। এবার ও আমার স্ত্রী খুশি না।আমার স্ত্রীকে মহারানী করে দিতে হবে। মাছ বলে তুমি যা বলেছো তাই হবে। জেলে ফিরে গিয়ে দেখে তার স্ত্রীর কথা মতো মহারানী হয়ে গেছে। এবার খুশি তো। জেলে ভয়ে ভয়ে রয়েছে এবার নাকি আবার কি চাইবে। তখন স্ত্রী বললো না আমি খুশি না। আমি সব কিছুর মালিক হতে চাই। আমার কথায় সূর্য উঠবে, আর রাত হবে। আমি এই অমরিবর হতে চাই। জেলে তো এবার অবাক। এ তুমি কি বলছো এটা কি সম্বব। জেলে আবার চলে গেল নদীর কাছে। এবার মাছ কে ডাকতে লাগল। মাছ উঠে বললো কি হলো এবার? জেলে তখন সব কিছু খুলে বললো। মাছ বলে তুমি এবার গিয়ে দেখো তোমার স্ত্রী অমরীবর হয়ে গেছে। জেলে ফিরে এসে আর তার স্ত্রী কে কোথাও খুঁজে পাচ্ছে না।সারা মহল খুঁজে ও পেলো না। জেলে আবার কাদতে কাদতে নদীর কাছে গিয়ে মাছ কে ডাকতে লাগল। মাছ উঠে বললো কি হলো এবার? জেলে বলে তুমি কি করেছো আমার স্ত্রীকে? আমি খুজে পাই না তাকে। তখন মাছ বলে তোমার স্ত্রী যা চাইলো আমি তো করেছি। এটাই তো তার নিয়তি । জেলে বলে তুমি তোমার ইচ্ছা ফিরিয়ে নেও।মাছ বলে এটা হতে পারে না আমি যা কাউকে একবার দিয়ে দেই তা আর ফিরিয়ে নিতে পারি না। তখন জেলে বলে তাহলে তুমি এবার আমার একটা ইচ্ছা পূরণ করো। মাছ বলে কি ইচ্ছে বলো। তুমি আমার স্ত্রীকে আমার কাছে এনে দেও।আর সে যেনো এবার আমার যা আছে তাই নিয়ে যেনো খুশি থাকে।মাছ বলে ঠিক আছে। জেলে চলে গেল আর গিয়ে দেখে তার স্ত্রী আগের ছোটো ঘরের দরজার সামনে হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছে। জেলে তার স্ত্রী কে দেখে খুব খুশি হলো। তখন স্ত্রী বললো আমার ভুল আমি বুঝতে পারছি। আজ আমার পাশে সব কিছু আছে। সেই থেকে জেলে আর তার স্ত্রী খুব সুখে ছিল।
আমার " রাঘব বোয়াল " রূপকথা শেষ হলো। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে রূপকথা টি।
Good!
হুম, পুরোটা এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেললাম। সত্যি গল্পটায় যেমন আকর্ষন ছিলো ঠিক তেমনি শিক্ষনীয়ও ছিলো। আগের মুরুব্বিরা আমাদের নানা গল্প শুনাতেন কিন্তু সবগুলো হতো শিক্ষনীয় গল্প। সেগুলো শুনতে যেমন ভালো লাগতো, ঠিক তেমনি কিছু শেখাও যেত। ধন্যবাদ বৌদি সুন্দর ও শিক্ষনীয় একটি গল্প ভাগ করে নেয়ার জন্য।
হ্যা, ঠিক বলেছেন ভাইয়া।আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া গল্পটি পড়ার জন্য।এবং আপনার মূল্যবান মন্তব্য শেয়ার করার জন্যে।
এইসব রূপকথার গল্পগুলো আমাদেরকে নতুন নতুন জ্ঞানের সন্ধান দেয় এবং শিখতে সাহায্য করে।সুন্দর ছিল গল্পটি বৌদি।ধন্যবাদ আপনাকে।
তোমাকেও ধন্যবাদ। সম্পূর্ণ গল্পটি পড়ার জন্য এবং তোমার মন্তব্য শেয়ার জন্য।
বৌদি আপনি আপনার গল্পের মাধ্যমে লোভী মানুষের শেষ পরিণতি তুলে ধরেছেন। লোভ মানুষকে সবসময় ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায় আপনি এই বিষয়টি স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিয়েছেন। জেলের বউ খুবই লোভী মানুষ তাই সে তার জীবনে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। আপনার লেখাটির মাধ্যমে অনেক শিক্ষণীয় বিষয় তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকেও ধন্যবাদ আপু আমার গল্পটি পড়ার জন্য।এবং মন্তব্য শেয়ার করার জন্য
Nice
Thank you.
Oke
আমাদের মানুষের স্বভাব ই এমন।
যত পাই তত চাই।
আমাদের এ স্বভাব না বদলাতেই এমন বিপদে পড়তে হয়।
অনেকদিন পর গল্পটি পড়লাম।খুব ভালো লেগেছে।
ধন্যবাদ আপু।
মানুষের চাওয়ার কোন শেষ নেই। মানুষ স্বভাবতই কোন কিছু নিয়ে সুখী থাকলেও আরো বেশি সুখে থাকার চেষ্টা করে। এতে মানুষের মধ্যে লোভের সৃষ্টি হয়। কথাই বলে লোভে পাপ ,পাপে মৃত্যু। এটি একটি শিক্ষনীয় গল্প। আপনার গল্পটি পড়ে আমার অনেক ভালো লেগেছে।
ধন্যবাদ ভাইয়া।
আসলে মানুষের যা আছে, তাতে তুষ্ট নয়।চাওয়ার কোন শেষ নেই।যা আছে তা নিয়েই খুশি থাকাইটাই সুখি মানুষ। গল্পটি সুন্দরভাবে লেখার জন্য ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ দাদা।গল্পটি পড়ার জন্য।
অতি আশা আসলেই কখনো ভাল কিছুর দিক নির্ণয় করে না। যাইহোক আপনি অনেক সুন্দর করে গল্পের মাধ্যমেতা প্রকাশ করে দিয়েছেন । আমি কৃতজ্ঞ বৌদি। কারণ এটা আসলেই শিক্ষনীয় গল্প ছিল । ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া। গল্পটি পড়ে আপনার মূল্যবান মন্তব্য শেয়ার করার জন্য।
মানুষ যত পাই তত চাই। মানুষের চাহিদার কোনো শেষ নেই। কিন্তু এই অতিরিক্ত চাহিদার জন্য মানুষ লোভে পড়ে। এবং লোভে পড়ে একসময়ে সব হারায়। এটাই ছিল এই গল্পের শিক্ষা। খুব ভালো লিখেছেন গল্পটা।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া। মানুষের চাহিদার কোন শেষ নেই। ধন্যবাদ ভাইয়া সম্পূর্ণ গল্পটি পড়ার জন্য এবং সুন্দর মন্তব্য শেয়ার করার জন্য।
🙂🙂🙂