"বহু প্রাচীন তীর্থক্ষেত্র মহাপীঠ তারাপীঠে একটি দিন ও মহাশ্মশানের কিছু আলোকচিত্র"
বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। আপনারা জানেন কয়েক মাস আগে পরিবারের সবাই শান্তি নিকেতন গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত হলো পবিত্র তীর্থস্থান মহাপীঠ তারাপীঠ যাবো। আসলে আমার অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল তারাপীঠ যাবার। এবং সেখানে গিয়ে মাকে দর্শন করার। এই কথাটি আমার প্রিয় মানুষটি জানতো।তাই ও চাইলো আমার ইচ্ছাটি পূরণ করার। আমাকে এবার হাতে সময় কম শুধু মাকে দর্শন করে পূজো দিয়ে আসবো। এরপর এসে তারাপীঠ দুইদিন থেকে ঘুরে ঘুরে দেখবো। আর আমি ও ভেবে দেখলাম কথাটা সে ঠিকই বলেছে। তাই আমরা শনিবার দেখে সকাল সকাল স্নান করে বেরিয়ে পড়লাম। আমাদের পৌঁছাতে প্রায় দুই ঘণ্টার মত সময় লেগেছিলো।
বীরভূমের প্রাচীন তীর্থস্থান তারাপীঠ আজ আন্তর্জাতিক সাধন ক্ষেত্রের ভূমি কেন্দ্র। দ্বারকা নদীর তীরে অবস্থিত এই তারাপীঠ। রহস্যের নানা জালে আবৃত এই শক্তিপিঠ। তবে এই পীঠ স্থান তৈরি হয়েছিল তা আজও সঠিকভাবে জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হয় এখানে সতির ত্রিনয়ন এখানে পড়েছিলো। কিন্তু পুরাণে এর কোন রূপ তথ্য পাওয়া যায় নি। প্রাচীন দেবী শিলা উগ্রতারাকে ঘিরে রয়েছে অসংখ্য কাহিনী। তবে তারাপীঠ এক মহাশক্তি কেন্দ্রবিন্দু। তারাপীঠ আসলে একটি সিদ্ধ পীঠ। এখানে বহু সাধক এসেছেন এখানে সাধনা করতে। এবং তাদের সাধনায় সিদ্ধপীঠ ধন্য হয়েছে তারাপীঠ। তারাপীঠ মন্দিরের স্থাপত্য বাংলার স্থাপত্য ভাবনার পুরোছাপ রয়েছে। মন্দিরের টালা নকশা বাংলার ঐতিহ্য পরিস্ফুটিত করে। তারাপীঠ এখানকার পাগলা সন্ন্যাসী বামাক্ষ্যাপা অর্থাৎ বামাচরণ চট্টোপাধ্যায়ের জন্য প্রসিদ্ধ। বামাক্ষ্যাপা এই মন্দিরে পূজা করতেন এবং মন্দির সংলগ্ন শ্মশান ক্ষেত্রে কৈলাস প্রতি বামা নামে একতান্ত্রিকের কাছে তন্ত্রসাধনা করতেন। বামাক্ষ্যাপা তারা দেবীর পূজাতে জীবন উৎসর্গ করেন। তারাপীঠ মন্দির সংলগ্ন শ্মশান ক্ষেত্র তন্ত্র শক্তির জন্য বিখ্যাত।
![IMG_20220416_111342.jpg](UPLOAD FAILED)
এত কষ্ট করে এত দূর এসে পূজো দেবো না এটা কি করে হয়।তাই মাকে বললাম আমি আপনার সাথে থাকবো আর পুজোটা আপনি দেন। ওখানে গিয়ে দেখি মায়ের পূজো দিতে গেলে পান্ডা ধরতে হয়। আমরা ও ঠিক তাই করলাম। ফুলের ডালা নিয়ে পূজো দিতে। গিয়ে দেখি অসম্ভব ভীড়। তবে একটা সুযোগ আছে একটু বেশি টাকা দিলে সবার আগে পূজো দেওয়া যাবে। তবে এই নিয়ম গুলো আমার ভালো লাগে না। তীর্থ স্থানে টাকার ব্যাবসা। কিন্তু ভালো না লাগলেও কাজটি করতে হলো। কারণ টিনটিন বাবু কে ওর বাবা ও কাকার কাছে রেখে গিয়েছি। আর মার ও গরমে লাইনে দাঁড়াতে কষ্ট হচ্ছে। তাই আমরা ১০০০ টাকা দিয়ে সবার আগে পূজো দিয়ে আসলাম। পুজো দেওয়ার পর মা আর আমি কিছুক্ষন মন্দিরের চারপাশে কিছুক্ষন ঘুরলাম।এরপর মন্দির থেকে বের হতে গিয়ে আমি রাস্তা ভুলে গেলাম। কারণ মন্দিরের চারপাশে ছোট ছোট পথ। এখন পথ গুলো আমার কাছে একই রকম লাগছে। আমি আর মা বেশ কিছুক্ষন ঘুরেছি কিন্তু যেখানে আপনাদের দাদা আছে সেই জায়গা খুঁজে পাচ্ছি না। প্রায় আধা ঘণ্টার মতো ঘুরেছি। কিন্তু তাদেরই খুঁজে পাই না। হটাৎ এই সময় আপনাদের দাদা ফোন দিলো। আমি সবকিছু বললাম। আপনাদের দাদা শুনে ড্রাইভারকে পাঠিয়ে দিলো। এরপর মন্দির থেকে বেরিয়ে এসে গেলাম মহাশ্মশান ঘুরে দেখতে।
কিছুক্ষন ঘুরাঘুরি করে আমরা আমরা রওয়ানা দিলাম। তবে অনেক কিছু দেখার আছে কিন্তু সময়ের অভাবে যাওয়া হয়নি।
বৌদি তারাপীঠ জায়গাটি দেখেই তো বেশ দারুন লাগছে। তবে আপনার মনের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবে না দাদা এটা কি হয়। আপনাদের দর্শনীয় স্থানটি ছিল অসাধারণ এবং কি আপনার পুজটি ভালোভাবে সম্পন্ন করে ঘুরে বেড়িয়েছেন নিজের ইচ্ছে মত। তবে সময় স্বল্পতার কারণে তাড়াতাড়ি ফিরে আসতে হয়েছে। আমাদের মাঝে এত সুন্দর ফটোগ্রাফির সাথে আপনার অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!
খুবই ভালো লাগলো আপনার ফটোগ্রাফিগুলো। বিশেষ করে আপনি অনেক তথ্য উল্লেখ করেছেন। আপনার তথ্যগুলো থেকে নতুন ভাবে অনেক কিছু জানতে পারলাম। জায়গাটা অনেক প্রাচীন দেখেই বুঝা যাচ্ছে। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ বৌদি। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
একান্ন খণ্ডের একটি খন্ড এই তারাপীঠ।খুবই প্রসিদ্ধ মন্দিরটি আপনারা দর্শন করে পুজো দিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো।
ঠিক বলেছেন ,সত্যিই ধর্মীয় স্থানগুলো এখন অসাধু ব্যবসায়ীরা অসৎ ভাবে ব্যবহার করছে।ধন্যবাদ বৌদি।
এ রকম একটা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এ ধর্মীয় ব্যবসা শুনে বেশ খারাপ লাগলো।যাই হোক অবশেষে দিতে পেটেছেন এটাই অনেক।ভালো ছিলো।ধন্যবাদ
বৌদি আপনার প্রিয় মানুষটি আপনার সব ভালো লাগা মন্দ লাগার খেয়াল রাখে দেখে খুব ভালো লাগে। আপনার মনের ইচ্ছা টি দাদা ঠিকই পূরণ করে দিল অল্প সময়ের জন্য হলেও। সব জায়গায় এই টাকার খেলা। যাদের টাকা আছে তারাই সব কিছুতে আগে থাকে। যদিও এই নিয়মগুলো আমারও ভালো লাগে না, কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিছু করার থাকে না। তখন এই টাকা দিয়ে কাজ সারতে হয়। অবশেষে গরমে কষ্ট না করে আপনারা সবার আগে পুজো দিতে পেরেছেন যেন ভালো লাগলো। খুব ভালো একটি সময় কাটিয়েছেন বৌদি।
বৌদি আপনি খুবই সুন্দর জায়গায় ভ্রমণ করেছেন এবং সাথে ফটোগ্রাফি করেছেন। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে খুবই ভালো লাগলো। আসলে ঠিকই বলেছেন এতদূর এসেছেন পূজো না দিয়ে কি যাওয়া যায়। আপনি নিজে পুজো দিলেন এবং অনেক ভিড় থাকার কারণে টাকা দিতে হল আসলে ১০০) টাকা দিয়ে অনেকটা ভিড় কাটিয়ে উঠলেন।প্রথমেই পূজো দিতে পারলেন। আসলে টাকা দেওয়া এটা খুবই খারাপ একটা বিষয়, তারপরেও যেহেতু সময়ের ব্যাপার সময়টা খুবই দরকার। সকলেই ও আপনাদের জন্য অপেক্ষা করছিল। সে ক্ষেত্রে আপনি টাকা দিয়ে পূজা দিলেন। যাক অবশেষে পূজো দেওয়ার পরে জায়গাটা কিছুক্ষণ ঘুরে দেখলেন। খুবই আনন্দময় মুহূর্ত কাটিয়েছেন বৌদি। শুভকামনা রইলো আপনাদের সকলের জন্য।
মহাপীঠ তারাপীঠে এই নামটি অনেক শুনেছি।বৌদি আপনি এই জায়গায় গিয়েছেন এবং পুজো দিতে গিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। আপনি অনেক সুন্দর ভাবে আপনার কাটানো মুহূর্ত ফটোগ্রাফির মাধ্যমে উপস্থাপন করেছেন এবং আপনার লেখনীর মাঝে প্রকাশ করেছেন জেনে ভালো লাগলো। আপনার জন্য শুভকামনা রইল বৌদি।
মহাপিঠ তারাপিঠ নিয়ে অনেক গল্প যেমন শুনেছি, তেমন টিভিতেও অনেক কাহিনী দেখেছি। কবে যে মা এর দর্শন করতে পারব জানি না। তবে খুব ইচ্ছে আছে দক্ষিণেশ্বর আর তারা মায়ের দর্শন করার। দেখি মা কবে টেনে নেন আমাকে। মা না চাইলে তো কোন কিছুই সম্ভব নয়। তবে দিদিভাই তীর্থস্থানগুলোতে ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করে যারা এদের একদম সহ্য হয় না। পুরো পৃথিবীটাকেই কলুষিত করে দিচ্ছে। মা সকলের মনে শুভ বুদ্ধির উদয় করে দিন।
জয় মা 🙏
মহাপিঠ তারাপিঠ সম্পর্কে কিছুটা হলেও জানতে পারলাম আপনার পোষ্টের মাধ্যমে। সত্যি বলতে বৌদি টাকার প্রভাবটা এখন সর্বত্র ছড়িয়ে গেছে, সে যাইহোক সব ঠিক ঠাক করতে পেরেছেন এটাই হলো বড় কথা। তবে এতো অল্প ফটোগ্রাফি না, আরো ফটোগ্রাফি দেখতে চাই।