টুইন টাওয়ার বিল্ডিং এ আগুন|| বাংলাদেশ থেকে হঠাৎ বোনের কল
বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন ? আশা করি ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুল্লিাহ ভালো আছি।
আগুন লাগার ঘটনাগুলো বাংলাদেশে অহরহ ঘটে চলছে। আর সেগুলো বেশিরভাগই দেখা যায় গরমের সময়ে, শীতের সময় একটু কম হয়ে থাকে।নিমিষের মধ্যেই সব পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে।প্রাণ হারাচ্ছে শত শত মানুষ।হ্যাঁ বন্ধুরা গত পরশুদিন বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার শান্তিনগরে টুইন টাওয়ার বিল্ডিং এ আগুন লেগে যায়।সকলেরই অনেক লাক ভালো কারণ আগুন অল্পের মধ্য দিয়েই লেগে আবার নিভেও গিয়েছিল।টুইন টাওয়ার বিল্ডিং এ মোট ২১ তলা রয়েছে।আমার মেঝ বোনের ফ্লাট ৭ তলায়।আর আগুন লেগেছিল যে ফ্লাটে সেটি হচ্ছে চার তলায়, একটি মার্কেটে।আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন এক সপ্তাহ আগে আমার মায়ের গলব্লাডারের অপারেশন হয়।এ কারণে আমার ভাইবোন সকলেই আমার বোন তৌহিদার বাসায় ছিল। শুধুমাত্র আমার ভাই অপারেশনের দুই দিন পর, আগুন লাগার একদিন আগে ফরিদপুর চলে যায় কারণ ওর পরীক্ষা ছিল।
বাংলাদেশের রাত তখন গভীর।সকলেই তখন ঘুমে।হঠাৎ তাদের দরজা নক হয়।আমার বোনের হাসবেন্ড লুকিং গ্লাস দিয়ে দেখে একটি মহিলা বোরখা পরে দাঁড়িয়ে রয়েছে।চিনতে পারেনি কিন্তু তারপরও দরজা খুলে দিয়েছে।খোলার সাথেই মহিলা বলল বিল্ডিং এ আগুন লেগেছে সকলেই নিচে চলে যান।তখন বোনের হাজব্যান্ড চারিদিকে একটা শোরগোল শুনতে পাচ্ছিল।তখন তিনি দ্রুত রুমে ঢুকে সকলকে ডেকে উঠানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সকলের ঘুম যেন ভাঙছিলই না। তখন আমার বোন দ্রুত বিছানা থেকে লাফ দিয়ে উঠে বসে পরে।তখন ওর হাজব্যান্ড বলল তাড়াতাড়ি সকলকে নিয়ে নিচে চলো বিল্ডিং এ আগুন লেগেছে।এ কথা শুনে তো আমার বোনের অবস্থা খারাপ, আমার আম্মাসহ তানিয়া আর ওয়াহিদাকে ডেকে উঠালো।সাথে ছিল সকলের বাচ্চারা।বাচ্চাদেরকে ঘুম থেকে উঠানো খুব কষ্ট হচ্ছিল।সকলে রুম থেকে বের হওয়ার পর তাওহিদা আবার তার রুমে ঢুকে।সে তার মোবাইল ফেলে এসেছে।দৌড়ে গিয়ে তার মোবাইল নিয়ে আসে।আসলে ওই সময় জরুরী জিনিসপত্র নেওয়ার সময় থাকে না।দ্রুত যে যেভাবে থাকে সেভাবেই বের হয়ে যেতে হয়।তা না হলে একটু দেরি হলেই বড় রকমের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।ওদের ফ্ল্যাটের সামনের ফ্ল্যাটে যিনি থাকেন তিনি তো তার টাকার ব্যাগ নিয়েই নেমে এসেছিলেন।তিনি টাকার ব্যাগ সবসময় সাথে সাথেই রাখেন। এটা অবশ্য ভালো একটি লক্ষণ, কারণ হঠাৎ বিপদ-আপদের কথা বলা যায় না।আমার মনে হয় সকলেরই এভাবে জরুরি কাগজ পত্র, ব্যাংকের কার্ড, টাকা-পয়সা একটি ব্যাগে হাতের নাগালের কাছে রেখে দেওয়াই ভালো।এভাবে হঠাৎ আগুন লেগে গেলে সহজেই তা নিয়ে আসা যায়।
যাইহোক সকলেই তখন লিফটে না গিয়ে সিঁড়ি দিয়ে আল্লাহ আল্লাহ করে নিচের দিকে নামতে থাকে।আমার আম্মার একটু কষ্ট হয়েছে নামতে যেহেতু তার কিছুদিন আগে অপারেশন হয়েছে।যতই তারা নিচের দিকে নামতে থাকে ততই শুধু ধোঁয়া আর ধোঁয়া। শুধু ধোঁয়াই দেখতে পাচ্ছিল।তখন সকলের টেনশন হচ্ছিল শেষে গিয়ে কি তারা বের হতে পারবে।অবশেষে তারা সিঁড়ি বেয়ে সাত তলা থেকে নিচের তলায় নামতে সক্ষম হয়।আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আগেই ফায়ার সার্ভিসের লোকেরা এসে আগুন নিভিয়ে ফেলে।অনেক বড় বাঁচা বেঁচে গিয়েছে সকলে। কারণ ২১ তলা বিল্ডিং, আর প্রতিটি ফ্লোরে তিন চারটি করে ফ্ল্যাট। তাহলে চিন্তা করুন কত মানুষ ছিল সেই বিল্ডিং এ।
বাংলাদেশে তখন বাজে রাত চারটা, আর আমাদের রাত দশটা।হঠাৎ আমার বোন মোবাইলে কল করে।আমি ওর কল দেখে একটু ভয় পেয়ে যাই। বুঝলাম না এত রাতে কেন ফোন দিয়েছে। তাড়াতাড়ি ফোন রিসিভ করি।রিসিভ করার সাথে সাথেই বলল তাঁদের আগুন লাগার ঘটনা।শুনে তো আমার অবস্থাও খারাপ।আমারও হাত পা কাঁপাকাঁপি। আল্লাহর অশেষ রহমতে অল্পের মধ্য দিয়েই আগুন লেগে আবার তা নিভে যায়, তা না হলে অনেক বড় ধরনের বিপদ হয়ে যেতে পারত।তাই আমাদের সকলেরই আগে থেকে কিছু প্রস্তুতি নিয়ে রাখা ভালো।
বন্ধুরা এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজন।আগামীতে নতুন কিছু নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।
Photographer | @tangera |
---|---|
Device | I phone 15 Pro Max |
বন্ধুরা এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজন।আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে।
ধন্যবাদ,
👉 আমাদের discord চ্যানেল এ JOIN করুন :
VOTE @bangla.witness as witness
OR
[

সবাই সুস্থ স্বাভাবিক ভাবে নীচে নেমে গেছে আল্লাহর অশেষ রহমত বলতে হয়।বাংলাদেশে গরম কালে আগুন লাগার কথা বেশী শোনা যায়।সময় মতো ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিভাতে পেরেছে এটা খুব স্বস্তির কথা।আপনার আম্মু অসুস্থ মানুষ তার জন্য বিষয়টি খুব কষ্টের গিয়েছে।আল্লাহ সবাইকে হেফাজতে রাখবেন,আমিন।
আসলে আগুন লাগার কথা শুনে একদম ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আর সাত তলা বিল্ডিংয়ে যেহেতু সবাই রয়েছে আপনার অসুস্থ মা সহ তাহলে আরও ভয়ের বিষয় ছিল। ভাগ্যিস আগুনটা অল্পতেই নিভে গিয়েছিল। আসলে এরকম আগুন লাগলে তখন মাথায় অন্য কিছুই আসে না। কিভাবে নিজের জান বাচবে এটাই সবচেয়ে বড় কথা। সবাই যে ধীরেসুস্থে সেখান থেকে বেরিয়ে নিচে নেমে যেতে পেরেছে এটাই ভালো হয়েছে। কারণ কখন কোথায় কি হয়ে যায় সেটার কোনো গ্যারান্টি নেই।
প্রথমেই আপনার আম্মার পরিপূর্ণভাবে সুস্থতা কামনা করছি। সেই সাথে আপনার বোনদের বিল্ডিং এ আগুন লাগার কথাটি শুনে সত্যিই খারাপ লাগলো।বাংলাদেশে আগুন লাগার বিষয়টি এখন অহরহ ঘটবে কেননা সামনে গরমের সিজন আসতে চলেছে। তবে আমাদের প্রত্যেকের উচিত ঐ লোকটির মতো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সব সময় হাতের নাগালেই রাখা তাহলে খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রগুলো নিয়ে আমরা নিরাপদ জায়গায় যেতে পারবো। সর্বোপরি এ নিয়ে শুকরিয়া আদায় করছি আপনার বোনরা এবং আপনার আম্মা সহ প্রত্যেকেই নিরাপদ রয়েছেন।
আমাদের দেশে যে এসব কি হচ্ছে,কিছুই বুঝতে পারছি না। একের পর এক আগুন লেগেই যাচ্ছে। ভাগ্যিস সাত তলা থেকে তৌহিদা আপুর পরিবার সহ বাকি সবাই নামতে পেরেছিল। তবে সিঁড়ি দিয়ে নামতে আপনার মায়ের আসলেই খুব কষ্ট হয়েছিল। তাছাড়া আগুন যদি দ্রুত কন্ট্রোলে না আনতে পারতো,তাহলে বেশ ঝামেলা হয়ে যেতো। যাইহোক সবার জন্য অনেক অনেক দোয়া রইলো।