কলকাতায় বিপর্যয়
নমস্কার বন্ধুরা,
কলকাতা শহর জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ডুবে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে যা বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরেই সতর্ক করছেন।শহরটি হুগলি নদীর তীরে অবস্থিত এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র কয়েক মিটার ওপরে অবস্থান করছে ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সরাসরি প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা প্রবল।বিশ্বব্যাপী গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর কারণে মেরু অঞ্চলের বরফ গলছে এবং বঙ্গোপসাগরের পানির স্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।গবেষণা বলছে, আগামী ৫০ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ০.৫ থেকে ১ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে যা কলকাতার উপকূলবর্তী এবং নিম্নভূমি এলাকাগুলোর জন্য চরম হুমকি সৃষ্টি করবে।বিশেষত, পূর্ব ও দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকা যেখানে শহরের মূল আবাসন ও শিল্প অঞ্চল রয়েছে তা দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতার শিকার হতে পারে।
একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হল ভূগর্ভস্থ পানির অত্যধিক উত্তোলন যা শহরের ভূমি ধীরে ধীরে নিচে বসিয়ে দিচ্ছে।কলকাতা শহরের কিছু অংশ প্রতি বছর ২-৩ মিলিমিটার পর্যন্ত নিচে বসে যাচ্ছে যা ধীরে ধীরে প্লাবনের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলছে। শহরের চাহিদা মেটাতে বিশাল পরিমাণ ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করা হয় যার ফলে মাটির স্তর দুর্বল হয়ে পড়ছে।এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অপরিকল্পিত নগরায়ন ও জলাশয় ধ্বংস।শহরের গুরুত্বপূর্ণ জলাভূমি, যেমন পূর্ব কলকাতা জলাভূমি ও আদিগঙ্গা, ধীরে ধীরে সংকুচিত হচ্ছে ফলে প্রাকৃতিকভাবে বৃষ্টির পানি ও অতিরিক্ত জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।ফলে প্রতি বর্ষায় কলকাতার বিভিন্ন অংশে স্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা যায় যা ভবিষ্যতে স্থায়ী প্লাবনের দিকে ধাবিত হতে পারে।
হুগলি নদীর প্রবাহ পরিবর্তন এবং নদীর পাড়ের অবনতি কলকাতার স্থিতিশীলতার জন্য আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ।শহরটি নদীর পাশে অবস্থিত হওয়ায় হুগলি নদীর তীর ক্ষয়প্রাপ্ত হলে ভূমিধস এবং প্লাবন বৃদ্ধি পেতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে নদীর গভীরতা ও প্রাকৃতিক প্রবাহ ঠিক রাখতে না পারলে, বিশেষত বর্ষার সময় অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলে, শহরের নিম্নাঞ্চল দীর্ঘ সময়ের জন্য জলমগ্ন হয়ে থাকতে পারে।পাশাপাশি, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ঘটনা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে।আম্পান, ফণী, ইয়াসের মতো ঘূর্ণিঝড় কলকাতার অবকাঠামোর ক্ষতি করেছে এবং এই ধরনের দুর্যোগ ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। বঙ্গোপসাগরে উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় অতিরিক্ত শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে যা জলোচ্ছ্বাসের মাধ্যমে শহর প্লাবিত করতে পারে।
এই বিপর্যয় রোধে নগর পরিকল্পনার উন্নতি, জলাশয় সংরক্ষণ, ভূগর্ভস্থ পানির টেকসই ব্যবহার, সবুজায়ন বৃদ্ধি এবং বন্যা প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।শহরে আধুনিক নিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তোলা ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া গেলে জলাবদ্ধতা কমানো সম্ভব। সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসন যদি সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তবে আগামী কয়েক দশকে কলকাতার কিছু অংশ স্থায়ীভাবে ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে যা শহরের ভবিষ্যৎ বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলবে।
VOTE @bangla.witness as witness

OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |


Congratulations, your post has been upvoted by @nixiee with a 5.380751402856607 % upvote Vote may not be displayed on Steemit due to the current Steemit API issue, but there is a normal upvote record in the blockchain data, so don't worry.
এই আশঙ্কার খবরটি আমিও বহুবার শুনেছি। কিন্তু নিজেকে বুঝিয়েছি যে এখনই এমন কিছু হয়তো হওয়া সম্ভব নয়। আপনি আবার সেই ভয়ের কথাটিই মনে করিয়ে দিলেন। যদি কলকাতা ধ্বংস হয়ে যায় তবে আমরা বহু মানুষ হয়তো সলিল সমাধি হয়ে যাব। তাই ভবিষ্যতে কি আছে তা আমরা জানতে পারি না। তবু আমার মনে হয় এই বিষয়টি নিয়ে গবেষণা হওয়া খুব প্রয়োজন। কারণ যদি কোন ভাবে আমাদের প্রাণের শহরকে বাঁচানো যায় তবেই তা মঙ্গলের।
সত্যি বলতে বর্তমান সময়ে পৃথিবী এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছেছে যে প্রতিটির দেশের জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রত্যেকটা দেশ হুমকির মুখে পড়ছে। বাংলাদেশেও এমন কিছু অঞ্চল রয়েছে যেগুলো সমুদ্রপৃষ্ঠের তলে ডুবে যাবে ৫০-১০০ বছরের মধ্যে। আসলে আমরা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি করছি। কলকাতার অবস্থা শুনে খুব খারাপ লাগছে দিদি। আপনার পোস্টটা একদম সচেতনতামূলক পোস্ট। এজন্য সবাইকেই সচেতন হতে হবে এবং এই বিপর্যয়ের বিপরীতে কাজ করতে হবে।
এই নিউজটা আমিও শুনেছি বৌদি। শুধু কলকাতা না,বরং আমাদের দেশের বেশ কিছু অঞ্চল ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এই ব্যাপারে অবশ্যই খুব শীঘ্রই যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। নয়তো আমাদেরকে চরম বিপদে পড়তে হতে পারে। যাইহোক এমন সচেতনতামূলক একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
শুধু কলকাতায় না দিদি ভাই, প্রকৃতির উপর যে ভাবে আমরা প্রতিনিয়ত অত্যাচার করছি, তাতে আগামী দিনের কথা চিন্তা করলে, ভীষণ শঙ্কিত হয়ে যাই। বেশ তথ্যবহুল লেখা।