"১০০০ জনের বনভোজন" //১০% পেআউট লাজুক খ্যাঁক-কে
নমস্কার বন্ধুরা,
আশা করি সবাই ভাল আছেন।সুস্থ আছেন।আজ আমি আপনাদের সাথে পিকনিকে কাটানো আনন্দের মুহূর্ত গুলো ভাগ করে নিলাম।
শীতকাল মানেই হলো সুস্বাদু খাবার পিকনিক,রংচঙে গরম পোশাক,ঘুরতে যাওয়া,মন জুড়ে শুধু আনন্দ আর আনন্দ। শীতকাল পড়তে না পড়তেই আমি মোটামুটি দুটো পিকনিক এটেন্ড করে ফেলেছি। তাই আজকে একটা পিকনিকের কথাই আপনাদের সাথে ভাগ করে নিচ্ছি।পিকনিকের দিনটা ছিল ৩১ডিসেম্বর। আর আমার পরীক্ষা শেষ হয়েছিল ৩০ শে ডিসেম্বর। আজ আমি যে পিকনিকের কথা বলছি আমার কাছে সারা জীবন হয়তো মনে থেকে যাবে।আমি ছোটবেলা থেকেই বহুবার স্কুল পিকনিক,ক্লাবের পিকনিক,পরিবারের সাথে পিকনিক গিয়েছি। কিন্তু এই ১০০০জন মানুষের সাথে পিকনিক একদম আলাদা অভিজ্ঞতা ছিল আমার।
আমাদের এলাকায় যখনই কোনো অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় তখনই সেটা আমাদের মাইকে এনাউন্স করে দেওয়া হয়।এরকমই হঠাৎ করেই ২৬ ডিসেম্বর আমি তখন সন্ধ্যা বেলা পড়তে বসেছিলাম। ঠিক তখনই মাইকে খেলার প্রতিযোগিতা নিয়ে কথা বলতে বলতেই পিকনিকের কথা অ্যানাউন্স করছে। তার পরই শুনলাম এই পিকনিকে জয়েন করতে হলে শুধু মাত্র ১০০টাকা দিলেই হবে। এটা শোনার পর পড়া তো তখন আর হলোই না, আর এদিকে ভেবে যাচ্ছি ১০০ টাকায় কি রকম পিকনিক হয় 🤭!
পরীক্ষার সময় আমার মা বাবা বাড়িতে ছিল না।নেপাল ঘুরতে গেছিল। তার মধ্যে আমার কপাল এতটাই ভালো পরীক্ষার জন্য ঘুরতে যাওয়া ক্যানসেল করতে হয়েছিল😒। যেহেতু আমাদের জয়েন ফ্যামিলি তাই খাওয়া-দাওয়া নিয়ে খুব একটা চিন্তাযর কিছু ছিল না। যাইহোক রাতে কাকিমনির কাছে খাওয়ার সময় ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান করছিলাম সবাই মিলে।হঠাৎ তখন আমি পিকনিকের কথাটা বললাম তাছাড়া সবাই জানতো। প্রথমে কেউ রাজি ছিল না কারণ এটা কাউন্সিলারের পিকনিক ছিল। তাছাড়া কখনও সেই ভাবেই এই ধরনের পিকনিকে যায়নি,কেমন হবে তার ব্যাপারে কোনো আইডিয়া ছিলো না।এসব ভেবে প্রথমদিকে না করলেও আমাদের বাড়ির বাচ্চারা একটু জোর করতেই রাজি হয়ে গেল। তারপর থেকেই এই পিকনিকে যাওয়ার জন্য আমি ভীষণ এক্সাইটেড ছিলাম।পিকনিকের দিন সকালবেলা সাতটার বাস ছাড়ার কথা ছিল, আর কাকিমনিরা আমাকে ভোর পাঁচটা থেকে ঘুম থেকে ওঠার জন্য ফোন করছিল। কষ্ট করেই উঠলাম।কষ্ট এই কারণেই বললাম কারণ তার আগের দিন আমি সাড়ে তিনটের সময় ঘুমিয়ে ছিলাম, মাত্র ২ঘন্টা ঘুমিয়ে আবার উঠে পড়াটা একটু চাপেরই ছিল।এমনিতেও কোথাও ঘুরতে গেলে ক্লান্তি চলে যায়। এটা তো আর সকালে উঠে পড়তে বসা না 🤭।
সকাল সকাল উঠে স্নান করে রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়লাম।বাসের সংখ্যা ছিল ১৮টা।সেই বাস ধরার জন্য আবার ১০ মিনিট হেঁটে যেতে হয়েছে।পিকনিক বলে কথা সব ম্যানেজ করা সম্ভব😜।বাসে উঠলাম যখন তখন ঘড়িতে সাড়ে সাতটার। বাঙালির সময় বলে কথা, বাস ছাড়ার কথা ছিল সাতটা সেখানে বাস ছাড়লো ৮:৩০টা।
পিকনিকের জায়গা ছিল দত্তপুকুর।বারাসাত থেকে দত্তপুকুর এর দূরত্ব কিন্তু খুব একটা বেশি না।তাই দেড় ঘন্টার মধ্যেই পৌঁছে গেলাম।এর আগে দত্তপুকুরএ অনেক পিকনিকে এসেছি কিন্তু এই পিকনিক স্পটে কখনো আসিনি,আর তার থেকেও বড় কথা এই পিকনিক স্পটটা এত বড় যে না দেখলে বিশ্বাসই করবেন না ।সাড়ে ৯টায় পৌছে গেলাম পিকনিক স্পটে। সকাল সকাল উঠে আমার খুব খিদে পেয়ে গেছিল কিন্তু পিকনিক স্পটে আমার আসার পর সত্যি বলছি খিদে বলে কিছু ছিল না।এত সুন্দর জায়গা দেখে বাস থেকে নেমেই ফটো তুলতে শুরু করে দিয়েছিলাম😅।
অনেকক্ষণ ফটো তোলার পর ভাবলাম এবার খেতে যেতে হবে, খেতে গিয়ে দেখছি সব খাবার আগে দিয়েই রেডি ছিল। এখানে একটা কথা না বললেই নয় সেটা হলো আমাদের সবার কাছে একটা করে টোকেন রাখতে হয়েছিল যেখানে ব্রেকফাস্ট, স্ন্যাক্স ও লঞ্চের তিনটে ভাগ ছিল, আর যদি কেউ এই টোকেন নিতে ভুলে যায় তাহলে কোনোভাবেই তাদের কোনো ব্যবস্থা ছিলনা। ব্রেকফাস্টের দু'ধরনের খাবার ছিল একদিকে লুচি এবং চানা,আরেকদিকে পাউরুটি,ডিম, কলা যে যেটা পছন্দ করবে সেটাই নিতে পারবে, আমি লুচি চানা আর ডিম সিদ্ধ নিয়েছিলাম।
এবার আসি আসল কথায় হঠাৎ করে পিকনিক স্পটে ঘুরতে ঘুরতে চোখ গেল চিকেন কাবাব এর উপর। চিকেন কাবাব গুলো দেখে তো চোখ ছানাবড়া। দেখতেও তার মধ্যে দারুন লাগছিল।
এবার খাওয়া দাওয়া করে ছবি তুললাম,খেলাধুলা করলাম। চারিদিকে কয়েকটা ছবি তুলতে তুলতে আবার স্ন্যাকসের ডাক পড়ল। উফফফ এটারই তো অপেক্ষা করছিলাম🤭 ১০মিনিট লাইনে দাঁড়ানোর পর কাবাব পেয়ে গেলাম,তার সাথে ফ্রেঞ্চ ফ্রাইও ছিল। আবার মকটেল এর ও ব্যবস্থা ছিল।
পিকনিক স্পট পুরোটা ঘোরার পর সত্যিই মন ভরছিল না।এত সুন্দর ছিল জায়গাটা তারই কিছু ছবি আপনাদের সাথে ভাগ করে নিলাম।এবার হল মেন পার্ট লাঞ্চ 😍।এই লাঞ্চের জন্য বেশি অপেক্ষা করতে হলো না যখন আমরা ভাইবোনেরা একসাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম,তখন মেজোকাকা অনেক আগে থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে সবার জন্য খাবার নিয়ে এসেছিল। খাবারে ছিল সরু চালের ভাত, সবজি দিয়ে ডাল,বেগুন ভাজা, কাতলা কালিয়া, মটন, রসগোল্লা,পাপড়,চাটনি আর ছিল সবার শেষে মিষ্টিমুখ করার জন্য পান।
খাওয়া দাওয়ার পর আরও কিছুক্ষণ বসে সবার সাথে আড্ডা দিয়ে ছবি তুলে ফেরার জন্য প্রস্তুতি নিলাম।
খাওয়া দাওয়া করে আর ওখানে থাকতে মন চাইছিলো না।কারণ এত ভিড়ের মধ্যে ভালো লাগছিল না। আর আইসক্রিম ছিল সবশেষে সেটার জন্য আর লাইন দিইনি, ইচ্ছা করছিল না ঠান্ডার মধ্যে খেতে।আর বাড়ি আসতে যেহেতু অনেক রাত হয়ে যাবে তাই আমরা পাঁচজন বিকেল পাঁচটার ট্রেন ধরে দত্তপুকুর দিয়ে বাড়ি চলে আসলাম।
এই মানুষটার(কাউন্সিলার )জন্যই আজ এই পিকনিক❤️।
খুব সুন্দর ভাবে আপনি আপনার দিনটা কাটিয়েছেন সেটা বোঝাই যাচ্ছে। তবে এতো রকমারি খাওয়া দাওয়ার আয়োজন, আপনি তো মনে হয় সারাদিন কিছু না কিছু খেতে খেতেই কাটিয়ে দিয়েছেন।তবে সব মিলে আপনার বছরের শেষ দিনটা খুব সুন্দর ভাবে কাটিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনার কিছু সুন্দর মুহুর্তের কথা আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।
হ্যাঁ খুব সুন্দর করেই দিনটা কাটিয়ে ছিলাম। খাওয়া-দাওয়ার থেকে বেশি ছবি তুলি দিনটা কাটিয়ে দিয়েছি 🤭🤭।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাদের আয়োজনটি ছিল খুব সুন্দর। বন্ধুদের সাথে নিয়ে এত বড় আয়োজন ছিল বিরল।সারাদিন খুব সুন্দরভাবে কাটিয়েছেন,সেই সাথে বিস্তারিত উপস্থাপনাটাও ছিল বেশ চমৎকার। জায়গাটিও ছিল বেশ দৃষ্টিনন্দন।সব মিলিয়ে দারুন হয়েছে।ধন্যবাদ আপনাকেও
হ্যাঁ দাদা খুব মজা করেই সারাটা দিন কাটিয়ে ছিলাম। আর জায়গাটাও অনেক বড় ছিল সবমিলিয়ে দারুন এনজয় করেছিলাম।অনেক ধন্যবাদ আপনাকেও।
ধন্যবাদ আপনাকেও।
আপু আপনার ছবি দেখে মনে হচ্ছে আপনি অনেক ভালো সময় কাটিয়েছেন।এবং জায়গাটাও অনেক সুন্দর ছিল,বনভোজনের জন্য এরকম জায়গা আমার ভালো লাগে। খোলামেলা জায়গা।ধন্যবাদ আপু।
হ্যাঁ আপু সত্যিই ভীষণ আনন্দ মজা করেছিলাম সেই দিনটাতে।এত বড় খোলামেলা জায়গা হলে খুবই আনন্দ হয়।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।
দিদি প্রথমেই বলব আপনাকে এত এত এত মিষ্টি লাগছে 🥰🥰👌❤️। আর এমন পিকনিকের যে কেমন মজা এটা আমার বেশ কবার অভিজ্ঞতা হয়েছে। ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।
ভোর থেকে শুরু করে একদম শেষ পর্যন্ত মজা করেছেন। এটাই সব থেকে বড় কথা। দত্ত পুকুর জায়গা টা আমারও বেশ পরিচিত। দারুন খোলামেলা সবকিছু। খাবার দাবারের আয়োজন টাও দেখি দারুন ছিল। ভালো লাগলো খুব পুরো জার্নি টা পড়ে। ❤️
প্রথমেই অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এত মিষ্টি একটা মন্তব্যের জন্য❤️❤️।
হ্যাঁ দিদি আমাদের কলকাতায় কোনো পিকনিক হলেই দত্তপুকুর জায়গাটাকেই অনেকেই বেছে নেয়।খুব খোলামেলা জায়গা।হ্যাঁ খাবারের আয়োজনও দারুন ছিলো আসলে এটা আমার প্রথমবার এরকম পিকনিকে যাওয়ার অভিজ্ঞতা। ভীষণ মজা করেছিলাম ওই দিনটা।
পরীক্ষার জন্য আপনার বাবা মার সঙ্গে নেপাল ঘুরতে যেতে না পারলেও,দত্তপুকুর পিকনিক স্পটে খুব সুন্দর সময় উপভোগ করেছেন। অনেকগুলো লোকজন মিলে একত্রিত হয়ে পিকনিকে গিয়েছিলেন। সময়টা বেশ ভালোই উপভোগ করেছেন। ৩১ ডিসেম্বর সবাই খুব সুন্দরভাবেই দিনটি কাটিয়েছে। তবে আপনি দেখছি সবার থেকে ভিন্ন হবে দিনটি উপভোগ করেছেন। শুভকামনা রইল আপনার জন্য
হ্যাঁ দাদা ঠিকই বলেছেন নেপাল ঘুরতে না যাওয়ার মন খারাপটা পিকনিকে গিয়ে কিছুটা হলেও আনন্দ করে খারাপ লাগাটা মিটিয়ে নিতে পেরেছিলাম 🤭। সত্যি ওই দিনটা দারুন কাটিয়েছিলাম। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য
অসাধারণ পিকনিক এটা বলতেই হবে।আর এই বাগান বাড়িটা ও খুব সুন্দর।
হ্যাঁ দাদা বাগানবাড়িটা দারুন ছিলো আর বিশাল বড় ছিল জায়গাটা। আর আমিও দারুন মজা করেছিলাম ওই দিনটা।অনেক ধন্যবাদ দাদা।
আপনার বন ভোজনের ছবিগুলো অনেক ভালো লাগলো। সেই জায়গায় না গিয়েও দেখার সুযোগ হলো আপনার পোস্টের মাধ্যমে। দেখেই বুঝা যাচ্ছে আপনি অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। আসলে পিকনিক মানেই মাজা আর মজা।
যাইহোক অনেক অনেক শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
❤️❤️❤️❤️
হ্যাঁ দাদা বিশাল মজা করেছিলাম সেই দিনটা। আসলেই পিকনিক হচ্ছে শুধুই আনন্দের।অনেক ধন্যবাদ দাদা এত সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।