মাছ বিক্রয়ের জন্য চুয়াডাঙ্গা আড়তের উদ্দেশ্যে যাত্রা || তৃতীয় পর্ব
হাই বন্ধুরা!
কেমন আছেন সবাই? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাই-বোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। ইতোমধ্যে আমি দুইটা পোস্ট আপনাদের মাঝে প্রকাশ করেছি চুয়াডাঙ্গা মৎস্য আড়তে মাছ বিক্রয় করতে যাওয়া নিয়ে। আজকে তৃতীয় পর্ব নিয়ে উপস্থিত হলাম। যেখানে গল্পের গল্পে আড়তের দিকে এগিয়ে যাওয়ার অনুভূতি ব্যক্ত করব ফটোগ্রাফির সাথে। তাহলে চলুন মূল পর্বে যাওয়া যাক।
Infinix Hot 11s
মাছ বিক্রয়ের জন্য বিভিন্ন সময় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের দিকে ছুটে চলতে হয়। অনেকেই জানেন দীর্ঘদিন মাছ চাষের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছি। আর তাই এই চলার পথে, মাছ বিক্রয়ের পথে, বেশ অনেক ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়, অনেক কিছু জানতে হয় এবং অনেক দূর-দূরান্তে ছুটে চলতে হয় এভাবে। ভাংবাড়িয়া বাজার পার হয়ে আমাদের গাড়ি এগিয়ে যেতে থাকলো বগাদি আসমান খালীর দিকে। ততক্ষণে লক্ষ্য করে দেখলাম বেশ কর্মজীবী শ্রেণীর মানুষেরা রাস্তায় বের হওয়া শুরু করে দিয়েছে এবং নিজের কর্মস্থলের দিকে এগিয়ে চলছে। কিন্তু এখনো বেশ কিছু জায়গায় দোকানপাট খোলে নাই। আমরা জানি দোকান খুলতে প্রায় সকাল ৯ টা বেজে যায়। কারণ যারা দোকান চালান তারা বাড়ি থেকে খাবার খেয়ে রেডি হয়ে একবারের দোকানে এসে বসেন। তবে লক্ষ্য করে দেখলাম রাস্তায় বেশ অটো গাড়ি বের হয়েছে। গ্রামগঞ্জের মানুষেরা বাড়ি ঘর ছেড়ে রাস্তার দিকে বের হওয়া শুরু হয়েছে। ঠিক এই মুহূর্তে ড্রাইভার এর সাথে গল্প চলছিল। তাকে প্রশ্ন করলাম আপনি কত বছর ধরে মাছ বহন করে চলছেন। উনি তার ব্যস্ত জীবনের অনেক কিছুই বলছিলেন। মাছ বহন করার সাথে প্রায় 15-20 বছর সম্পর্ক। শুধু যে মাছ বহন করে তা নয়। যখন মাছের সিজন থাকে না তখন রাস্তায় ভাড়া মেরে থাকেন, রিজার্ভ কোন কাজে অথবা মানুষ বহন করার কাজে। তার কাছে জানতে চাইলাম এই রাস্তা দিয়ে চলাচল কত বছর। তখন বলেছিলেন যখনই গাড়ি কেনা হয় তারপর মাছ বহন করার কাজে যুক্ত হয় আর সেই থেকেই বিভিন্ন আড়তে যাওয়া আসা এদিকেও চলাচল। আমার সাথে কথা বলতে বলতে হঠাৎ আড়ত থেকে ফোন আসে, তিনি গাড়ির স্লো করে ফোন রিসিভ করেন এবং বলতে থাকেন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গাড়ি পৌঁছে যাবেন। নিকটের কোন গাড়ি আড়তে মহাজনের কাছে আসলে যেন সে মাছ না ভাঙ্গে। কারণ আমাদের দূরের মাছ আড়তে পৌঁছে থেমে রাখলে মাছ মারা যাবে অনেক।
Infinix Hot 11s
এদিকে ড্রাইভার বলেন আমি যদি গাড়ির ড্রামের উপর না থাকতাম তাহলে উনি আরো দ্রুত গাড়ি টানতেন। এখন জায়গায় জায়গায় রাস্তা উচা নিচা রয়েছে ভাঙ্গা রয়েছে অথবা সামনে কোন কিছু বাদলে ব্রেক ধরতে হয়, এমন অবস্থায় ড্রাম এর উপর মানুষ থাকলে সে ছিটকে পড়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু কি আর করার নিজের মাছ বলে কথা সাথে তো যাওয়াই লাগে। তখন নিজেদের মোটরসাইকেলটা ছিল না, আবার মোটরসাইকেল থাকলেই বা কি হবে লাইসেন্স তো নাই। আবার লাইসেন্স থাকলেই বা কিভাবে পুলিশের যখন গাড়ি আটকায় বিভিন্ন শুতনো করে গাড়ি আটকায়। আর চুয়াডাঙ্গার ব্রিজ পার হলে ট্রাফিক পুলিশ থাকেন সেখানে মোটরসাইকেল ধরেন হেলমেট জুতা না থাকলে সমস্যা কিন্তু আমাদের তো আর মাছ বিক্রয় করার জন্য তাড়াহুড়ার মুহূর্তে বাবু গিরিশ সাজার সময় নেই।
Infinix Hot 11s
ইতোমধ্যে খেয়াল করে দেখলাম রাস্তায় বেশ বিভিন্ন রকমের গাড়ি চলা শুরু হয়ে গেছে। কারণ দূর পথে যাত্রা করে যে সমস্ত গাড়িগুলো বিভিন্ন জিনিস বহন করে নিয়ে যায় তারা সকাল করে বের হওয়ার চেষ্টা করে। ঠিক তেমনি কিছু গাড়ি আমাদের গাড়ির সামনে লক্ষ্য করলাম এবং ড্রাইভার বেশ মনোযোগ সহকারে সে সমস্ত গাড়িগুলোকে কাটিয়ে এগিয়ে যেতে থাকলো। আমি উনাকে সাবধানে চালাতে বলছিলাম। উনি বলেছিলেন আমি যেন ঠিকভাবে সবকিছু ধরে বসে থাকি। হাট বোয়ালিয়া থেকে ভালাইপুর পর্যন্ত যেতে গ্রামের রাস্তা, এইজন্য একটু বুঝে শুনে চালানো তার প্রয়োজন। কারণ বিভিন্ন পশু-পাখি সকালবেলায় রাস্তার দিকে এসে জমা হয়। তবে ড্রাইভার একটা কথা বলছিলেন সরকার রাস্তা গুলোকে বেশ ভালই উন্নত করার চেষ্টা করছে এবং কোথায় ব্যাক কোথায় কোন রাস্তা তার সুন্দর সিগন্যাল দেওয়ার চেষ্টা করেছে রাস্তার পাশাপাশি। আগে বিট থাকার কারণে বেশ সমস্যা হতো এখন অনেক জায়গায় বিট উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এইজন্য তাদের গাড়ি চালাতেও সুবিধা হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশের রাস্তায় বিট দেয়া হতো, কিন্তু সে বিটগুলো সুবিধা জনক নয়। অনেক সময় রাতে মাছ বহন করতে গেলে আশেপাশের প্রতিষ্ঠান বুঝতে না পেরে বিটগুলো সুবিধা না হওয়াই এক্সিডেন্ট হয়ে যেত।
Infinix Hot 11s
এরপর একটি রাতের ঘটনা শেয়ার করলেন আমার সাথে। রাতে একটি মোটরসাইকেল দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছিলেন উনার পিছন দিয়ে। গাড়ি ক্রস করে সামনের দিকে এগিয়ে চলে যায়। সম্ভবত উনি ট্রেন ধরার জন্য যাচ্ছিলেন। মোটরসাইকেলের দুজন মানুষ। কোন এক গ্রামের কথা বললেন সেখানে বিট ছিল। মোটরসাইকেল চালানো ভাইয়েরা রাস্তার বিট লক্ষ্য করেছিলেন না, কারণ সে বিটের উপর কোন চিহ্ন ছিল না বোঝাই যায়নি এটা বিট কিনা। তারা দ্রুত চলছিল তাই বিটের উপরে উঠে পড়ে গাড়িটা স্লিপ করে দূরে গিয়ে পড়েছিল। এতে দুইজন ব্যক্তি বেশ আহত হয়েছিলেন, কারো হাত পা কেটে গিয়েছিল আবার ঘটনা স্থানে অনেক রক্ত ঝরে ছিল। হালকা হালকা শীতের রাত। রাস্তায় কোন মানুষ নেই। উনি তাদেরকে রাস্তা থেকে উঠানোর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু এক্সিডেন্টের শব্দ আর্তনাদ চিৎকার এমনটাই কিছু মানুষ জাগ্রত হয় রাস্তায় এগিয়ে আসে। তারা ভেবেছিল মনে হয় এই মাছের গাড়ির সাথে মোটরসাইকেল এক্সিডেন্ট হয়েছিল। একটু পরবর্তীতে তারা জানতে পারেনা মোটরসাইকেলটা অনেক আগেই মাছের গাড়ি অতিক্রম করে এসেছে এবং এখানে বিটের সাথে তাল লেগে এক্সিডেন্ট হয়েছে। ঠিক এমনই অনেক ঘটনা রাত থেকে তো জানতে পেরেছিল। আর এভাবেই আমাদের গাড়ি আসমান খালি বাজারের দিকে অগ্রসর হল।
Infinix Hot 11s
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পোস্ট বিবরণ
বিষয় | মাছ বিক্রয় |
---|---|
ব্লগার | sumon09 |
ডিভাইস | Infinix Hot 11s-50mp |
লোকেশন | What3words |
দেশ | বাংলাদেশ |
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন ভ্রমণ বিষয়ক পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকবেন সবাই। সকলের জন্য শুভকামনা রইল,আল্লাহ হাফেজ। |
---|
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
মামা আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন মাছ বিক্রয়ের জন্য চুয়াডাঙ্গা আড়তের উদ্দেশ্যে যাত্রা তৃতীয় পর্ব। আমিও বেশ কয়েকবার আমাদের পুকুরের মাছ বিক্রয় করতে গিয়েছিলাম চুয়াডাঙ্গা আড়তে। আসলে আমাদের আশেপাশে মাছ বিক্রয়ের আড়ত গুলোর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা আড়ত সব থেকে বড়। আপনারা আসমান খালি বাজারের মধ্য দিয়ে এসেছিলেন জানতে পারলাম। ধন্যবাদ মামা এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ ওখানে বড় আড়ত
অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া আপনার মাছ বিক্রয়ের অনুভূতি করে। যেখানে গাড়োয়ান ভাইয়ের সাথে আপনার আলাপ-আলোচনা এবং তার জীবনের জানা কিছু গল্প আপনাকে জানিয়েছেন এবং সেটাও আপনি এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। আসলে এই সমস্ত মানুষের সাথে চলাচল করলে অনেক কিছু সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় এবং তাদের বাস্তব জীবনের অনেক অভিজ্ঞতা জানতে পারা সম্ভব হয়। মাছ বিক্রয়ের অনুভূতি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
হ্যাঁ অনেক বার মাছ বিক্রয় করতে গেছি আরো অনেক রকমের কথা শুনেছি