একটি উপকারী ইঁদুরের ফটোগ্রাফি || প্রিয় লাজুক খ্যাঁকের জন্য ১০%
আজ - শনিবার
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আপনারা জানেন যে সুমন মানেই নতুন কিছু এবং সুমন মানে ইউনিক পোস্ট। সেই কথাকে সামনে রেখেই আজ আমি উপস্থিত হয়েছি আপনাদের মাঝে।
আমরা সকলেই কমবেশি জানি ইঁদুর একটি ক্ষতিকারক প্রাণী। তাই আমরা চেষ্টা করে থাকি ইঁদুর দেখামাত্র তাকে হত্যা করার। ইঁদুর হত্যা করব নাই বা কেন? সে আমাদের ঘরের বিভিন্ন বিষয় ক্ষতি করে থাকে। যেমন বইখাতা কেটে টুকরো টুকরো করে থাকে, খেতা বালিশ কেটে টুকরো টুকরো করে থাকে। এছাড়াও আরো অনেক প্রকার ক্ষতির কাজে নিয়োজিত থাকে কিন্তু কখনো আমরা তার উপকারী কাজকর্ম লক্ষ্য করি না। তবে ইঁদুরও আমাদের উপকার করে থাকে! সে বিষয়ে আমরা কতটা জানি?হয়তো আমাদের তেমন একটা জানা নেই। আর সেই বিষয়টা জানানোর উদ্দেশ্যে আজকের পোস্ট। চলুন শুরু করা যাক।
'আমার বাংলা ব্লগ' কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট |
---|
উপকারী ইঁদুরের ফটোগ্রাফি ও তথ্য
আপনারা অনেকেই জানেন আমি একটি প্রি ক্যাডেট স্কুলে শিক্ষক। স্কুলটা বেশ উন্নত এবং সেখানে ভালো ফ্যামিলির সন্তানেরা লেখাপড়া করে। তাই তাদের ভালো টিচিং দেওয়ার লক্ষ্যে নিজেকেও প্রস্তুত রাখতে হয় এবং একটু পড়তে হয়। আর স্কুলে সকাল ৮ টা ১৫ উপস্থিত হতে হয় শিক্ষক ছাত্রছাত্রীদের, সাড়ে আটটার সময় এসেম্বলি ক্লাস এবং নয়টার সময় ক্লাস শুরু হয়ে থাকে। যার ফলে আমি আগেকার মত প্রতিনিয়ত সকাল ভোরে আমার পুকুরগুলোতে বক ও পানকৌড়ি তাড়াতে যেতে পারি না। যার ফলে ছোট ছোট পোনা মাছগুলো পাখিতে খেয়ে যাচ্ছিল। বেশ কিছুদিন আগে যশোর থেকে পাঙ্গাসের পোনায এনেছিলাম। যেহেতু ভাদ্র মাসে পাঙ্গাসের পোনা নিয়ে এসে বড় করতে হয় এবং শীত পড়ে চাষে ফেলতে হয়।পোনা চাষের উপযুক্ত স্থান ছোট পুকুর। পাঙ্গাস মাছের পোনা আনার পূর্বে পুকুরটা ভালোভাবে প্রস্তুত করেছিলাম শুধু উপরের সুতা টাঙানো বাকি ছিল। তাই একদিন সকাল ভোরে পুকুরে গিয়েছিলাম কিছুটা সুতা টাঙ্গিয়ে কাজ আগিয়ে আনার জন্য।
মাছের বাচ্চা চাষের পুকুরটা সুতা টাঙালে পাখিতে মাছ খেতে পারেনা এবং বক,মাছরাঙা ও পানকৌড়ির মুখ থেকে নিরাপদে থাকে। তাই আমি ঐদিন সকালবেলায় সুতা এপাশ থেকে ওপাশে বাঁধছিলাম। হঠাৎ লক্ষ্য করলাম পরিচিত একটি ইঁদুর প্রায় একটি গর্ত থেকে বের হয়ে আসে। পূর্বের দিনের মতো তখনই উপস্থিত হয়েছিল।
আমি যেখানে কাজ করছিলাম ইঁদুরটা খুবই নিকটে ছিল। সে আমাকে দেখে মোটেও ভয় পাচ্ছিল না। কারন সে খুবই সাহসী এবং প্রায় আমাদের নিকটে এসে যাওয়া আশা করে ভয় পায় না।
হয়তো আপনাদের মনে একটি প্রশ্ন জাগতে পারে ইদুরটা কেন বা সামনে আসা যাওয়া করে আর ভয় পায় না, আর ইঁদুরটা কি করছিল। আসলে পুকুর যখন প্রস্তুত করা হয় পুকুরের সমস্ত মাছ যখন ধরে ফেলা হয় ও পুকুরে পানি ছেঁকে ফেলা হয়। পুনরায় নতুন পানি দিয়ে পুকুর রেডি করা হয়, তখন পুকুরে অনেক ছোট ছোট শামুক জন্মায়। আর এই শামুক খাওয়ার জন্য ইঁদুর পুকুরের পাড়ে বাসা বাঁধে।
আমি যখন পুকুরের এপাশ থেকে ওপাশে সুতা টানছিলাম দুটি হঠাৎ গর্ত থেকে বের হয়ে এসে আমার সামনে এভাবেই শামুক তুলে নিয়ে ডাঙ্গায় বসে খাচ্ছিল। তখন আমি মনে মনে ভাবলাম যদি এমন সুন্দর দৃশ্য আমি একা ইনজয় না করে আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে পারি তাহলে হয়তো দেখার সুযোগ পাবেন আপনারা। তাই অতি তাড়াহুড়ার মাঝেও আমি আপনাদের উদ্দেশ্যে এর ফটোগ্রাফি করেছিলাম।
আমি তার খুব নিকটে গিয়ে হালকা জুম করে ফটোগ্রাফি করেছিলাম যেন আপনাদের বুঝতে সুবিধা হয়। কিন্তু তখনও ইঁদুরটা আমাকে দেখে ভয় না পেয়ে তার সাহসিকতার মধ্য দিয়ে তার আহার গ্রহণ করেছিল এভাবে। সে পুকুরে নেমে যাচ্ছে এবং একটি করে শামুক তুলে এনে ডাঙ্গায় বসে খাচ্ছে। আর তারই মধ্য দিয়ে বার বার আমার পানে তাকিয়ে দেখছে। আমি তার থেকে দুই থেকে তিন হাত দূরে অবস্থান করছিলাম। সে জানে আমি তার কোন ক্ষতি করব না তাই সে কোন ভয় না পেয়ে নির্ভয়ে আহার গ্রহণ করছিল এভাবে। আর পুকুর থেকে এভাবে শামুক দূর হলে আমাদের জন্য খুবই উপকার। কারণ পাঙ্গাস মাছের পোনা উৎপাদনের স্থানে কোন প্রকার ক্ষতিকারক জিনিস না থাকলে মাসের জন্য ভালো। পুকুরের শামুক নষ্ট করার মত বিশেষ কোনো ঔষধ আমাদের নিকটে নেই। একটি ওষুধের নাম জেনেছিলাম যা দিলে পুকুরে মাছের জন্য খুবই ক্ষতিক তাই তা ব্যবহার করি না। ফলে এমন ইঁদুরে থাকাটাই আমাদের জন্য বেশ উপকার। যখন পাঙ্গাস মাছের পোনাগুলো একটু বড় হয়ে যাবে তখন অবশ্য বড় সাইজ পাঙ্গাস মাছ অথবা ব্ল্যাক কাপ দিয়ে দিলেন শামুক দূর হয়ে যাবে কিন্তু পাঙ্গাসের পোন ছোট থাকা অবস্থায় কিছু দেওয়া যাবে না। কারণ পাঙ্গাস মাছের পোনা বৃদ্ধিতে ব্যাহত হবে। তাই এই মুহূর্তে ইঁদুরের কর্মকাণ্ড টা আমাদের জন্য বেশ উপকারী।
|
---|
আমার পরিচিতি | কিছু বিশেষ তথ্য |
---|---|
আমার নাম | @sumon09🇧🇩🇧🇩 |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | মোবাইল |
ব্লগিং মোবাইল | Infinix hot 11s |
ক্যামেরা | camera-50mp |
আমার বাসা | মেহেরপুর |
আমার বয়স | ২৫ বছর |
আমার ইচ্ছে | লাইফটাইম স্টিমিট এর 'আমার বাংলা ব্লগ' এ ব্লগিং করা |
পুনরায় কথা হবে দ্বিতীয় পর্বে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
আরেহ বাহ পাঙ্গাসের চাষ শুরু করেছেন দেখছি।এবার আমাদের পুকুরেও পাঙ্গাসের চাষ শুরু করেছে,পাঙ্গাস নাকি বেশ লাভ জনক এই জন্য।তবে ইদুর এর যে উপকারের কথা বললেন সেটা অতটাও গুরুত্ব বহন করে না,তার চেয়ে যতটা না ও ক্ষতি করে।তবে সব প্রানিয় উপকারী কোনো না কোনো ভাবে প্রকৃতির ব্যালান্স রক্ষা করে যাচ্ছে তারা।
পাঙ্গাস চাষ আজ নতুন নয়, দীর্ঘ দিন চাষ করছি। তবে বড় মাছের পাশাপাশি আবার ছোট পোনা চাষে ফেলতে হয় সিজন ধরার উদ্দেশ্যে।
আসলে এই ছোট ইদুর গুলো ভয় একটু কম পায়।আমিও যখন শুধু ছবিটি দেখছি কিভাবে ইদুর ছবি গুলো তুলতে পারলেন। ইদুর এক জায়গা থাকে না।পরে পুরা পোস্ট টা পড়ে জানতে পারলাম।
আপু ইঁদুরগুলো মোটেও ছোট না দেখতে ছোট লাগছে তাই। এগুলো মাঠের বড় জাতের ইঁদুর। ফটোগ্রাফিলে কেমন জানি ছোট মনে হচ্ছে।
ও আচ্ছা
এটা আমারও জানা ছিল না। মাছ চাষ সম্পর্কে আপনার বেশ ভালো জ্ঞান আছে দেখছি। সত্যি বলতে পৃথিবীতে প্রত্যেকটা প্রাণীরই দরকার আছে। যখন যে প্রাণী যার উপকারে আসে তখন সে সেই প্রাণীর উপকারিতা বুঝতে পারে।
ভাই আমি ক্লাস সেভেনে পড়াশোনার কাল অর্থাৎ ২০০৭ সাল থেকে পাঙ্গাস মাছ চাষ করে আসছি।
আমাদের বাস্তুতন্ত্রের জন্য প্রত্যেকটি প্রাণীই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তবে ইদুর শামুক খায় এটা এই প্রথম দেখলাম।ধন্যবাদ ভাই তথ্যবহুল পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।অনেক কিছু জানতে পারলাম।
মাটির বড় বড় ইঁদুর গুলা সামুক খেয়ে থাকে।
ভাইয়া বেশ চমৎকার, আপনার profession এবং কাজের ফাঁকে পাঙ্গাস মাছ এর পোনা বড় করার বাস্তব কৌশল, সেই সাথে উপকারী ইঁদুরের সাহসী গল্প। সব মিলিয়ে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনার ইউনিট পোস্টের জন্য।
এই অভিজ্ঞতাটা আমার দীর্ঘদিনের। ২০০৭ সাল থেকে এই কাজ করে আসছি।
আপনার কার্যক্রম কে সাধুবাদ জানিয়ে শুভকামনা রইল। ভাইয়া।।।
Thanks for everything