হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি ভ্রমণ বিষয়ক পোস্ট। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি ঈদের সন্ধ্যাকালীন মুহূর্তে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ভ্রমণের বেশ কিছু চিত্র নিয়ে। আশা করি আপনাদের বেশ ভালো লাগবে আমার আজকের এই ভ্রমণ বিষয়ক পোস্ট। তাহলে কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করা যাক।
What3words location, Dhaka jahangirnagar
Photography device: Huawei P30 Pro-40mp
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: |
মায়ের অসুস্থতার জন্য বেশ একমাস ধরে ঢাকা সাভার জাহাঙ্গীরনগর এলাকায় অবস্থান করছি খালাম্মার বাসায়। আজ থেকে তিন সপ্তাহ আগে আমার অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে। তবে মায়ের অবস্থা বেশি একটা ভালো না হওয়ায় এখনো বাড়ি পৌঁছাতে পারেনি। এমনকি ঈদের আগে বাড়িতে যাওয়ার খুব ইচ্ছে ছিল তাও যেতে পারি নাই। বেশ একাকীত্ব মনে হয়,বোরিং লাগে সব সময়। কারণ নিজের স্ত্রী সন্তান বাড়িতে রেখে দীর্ঘদিন এখানে। ঈদের দিনটা বিকেল মুহুর্তে ঘুম থেকে উঠে গোসল করে বের হয়ে পড়লাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় পায়ে হেঁটে ভ্রমন করবো সেই আশায়। খালাম্মার বাসা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন পানধোয়া বাজারে। আমার আংকেল একজন রিটায়ার্ড পারসন আর্মির অফিসার। উনারা এখানে নিজের জমিতে ঘর করেছেন এবং এখানেই থাকেন। বাসা থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাতে ১০ মিনিট সময় লাগে। যাইহোক বিকেল মুহুর্তে আমার হাটাহাটির অভ্যাস বেশি। প্রত্যেকদিন বিকেল মুহুর্তে এখানে হাঁটতে হাঁটতে চলে আসি। তাই আর কোন গাড়ির আশা না করে হাঁটতে হাঁটতে প্রবেশ করলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে। এটা ঢাকা সাভারবিশ মাইল জাহাঙ্গীরনগর গেটের রাস্তা। এ রাস্তায় আমার দীর্ঘদিনের চলাচল। আর পান ধোয়া গ্রামের মানুষ এই রাস্তা দিয়েই হাইরোডে আসেন, ওপাশের সেনানিবাসের রাস্তা ও গেট, তাছাড়া বিকল্প কোনো রাস্তা নেই। অর্থাৎ বলতে গেলে গ্রামটা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন। এমন সুন্দর একটি স্থানে অবস্থান করছি দীর্ঘদিন, বেশ ভালো লাগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করতে।
What3words location, Dhaka jahangirnagar
Photography device: Huawei P30 Pro-40mp
যাই হোক ঈদুল আযহার দিনে সন্ধ্যা মুহূর্তে স্বপন ভাইয়ের
@shopon700 সাথে আর বিজয়ের
@saimoon_bijoy1 সাথে চ্যাটিং করতে করতে একদম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঝ পয়েন্টে এসে উপস্থিত হয়ে গেলাম। চ্যাটিং করার মাঝে মাঝে বিশেষ বিশেষ স্থানের ফটো ধারণ করার চেষ্টা করছিলাম। তবে দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য আমার ভাল মোবাইলটা এখানে আসার পর নষ্ট হয়ে গেছে কিন্তু এখনো ঠিক করতে পারি নাই। তাই যতটুক সম্ভব হাতের মোবাইলটা দিয়েই ফটো ধারণ করার চেষ্টা করছিলাম। তবে দারুন একটা বিষয় সন্ধ্যাকালীন মুহূর্তেও এই মোবাইলে মোটামুটি ভালো ফটো হচ্ছিল। আর সন্ধ্যা মুহূর্তে এমন সুন্দর ফটো হয় এ মোবাইলে এটা কিন্তু আমার মোটেও জানা ছিল না। এভাবেই উপস্থিত হলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজ এর পাশে। এরপর খেলাধুলা করছে কিছু ছেলে মেয়ে চলাচল করছে অনেকেই,দেখতে দেখতে হাঁটতে হাঁটতে সন্ধ্যার আজান হয়ে গেল। এরপর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদ্মফুলের পুকুরের পাশে উপস্থিত হলাম। যে পুকুরটা গুগল ম্যাপে সার্চ করলে পাওয়া যায়। এর আগেও বেশ কয়েকবার এখানে উপস্থিত হয়েছি তবে ঈদের দিন বলে কথা, তাই আপনাদের মাঝে তুলে ধরলাম।
What3words location, Dhaka jahangirnagar
Photography device: Huawei P30 Pro-40mp
তবে উদ্দেশ্য ছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন গেট সংলগ্ন সোজাসুজি এই জায়গাটায় আসার। কারণ এই জায়গাটাতে আমি অনেকবার এসেছি বসেছি। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন পয়েন্ট বলতে গেলে এই জায়গাটা। বিকেল মুহূর্তে বেশিভাগ ছাত্রছাত্রী বাইরের মানুষ এই জায়গায় এসে বসে থাকেন এবং সেলফি ফটো ধারণ করেন। যাই হোক এখানে উপস্থিত হতে হতে মাগরিবের আযান পর চারপাশে বাতি জ্বলে উঠলো। এদিকে আমিও বেশ হাপিয়ে উঠেছি মনে হল। আর প্রচন্ড গরম,ছাগলের মাংস খেয়ে বের হওয়া প্রায় আগে থেকেই গা ঘেমে যাচ্ছিল। আমি এমনিতেই প্রত্যেক বিকেলে বিশ মাইল ফ্লাইওভার পর্যন্ত হাঁটতে হাঁটতে যায় এবং ফ্লাইওভারে উঠে প্রাকৃতিক পরিবেশের ঠান্ডা হাওয়া গ্রহন করি। তবে এতটা বোরিং মনে হয় না কোনদিন। কিন্তু কাল ঈদের দিন সন্ধ্যা মুহূর্তে বেশ টায়ার্ড হয়ে গেছিলাম। তবে আমার মত শত শত মানুষকে ভেতরে বেশ হাটাহাটি করতে দেখেছি ঘোরাঘুরি করতে দেখেছি জায়গায় জায়গায়, বসে থাকতে দেখেছি আরও অনেক কিছু। একটা সময় মনে করতাম ঢাকায় অনেকে গরু বিক্রয় করতে যাই,আবার এদিকে শুনি সবাই ঈদ করতে গ্রামে চলে আসে। তাহলে গরু গুলা কারা কিনে। এখন বুঝতে পারছি ঢাকায় যারা চাকরি করতে যান তারাই মূলত গ্রামের বাড়িতে চলে আসে। আর স্থানীয় মানুষগুলো সবই থাকে অর্থাৎ তিন ভাগের এক ভাগ মানুষ গ্রামে আসে দুই ভাগ মানুষ বলতে গেলে থেকে যায়।
What3words location, Dhaka jahangirnagar
Photography device: Huawei P30 Pro-40mp
যাইহোক বেশ কিছুক্ষণ এখানে অবস্থান করলাম। অন্যান্য মানুষের মতো রেস্ট নিলাম। ঠান্ডা খাওয়ার মুহূর্তে বেশ জোরে জোরে ঠান্ডা হাওয়া বয়ে চলেছিল। প্রায় এক ঘন্টা অবস্থান করলাম এই জায়গায় বসে বসে। ইচ্ছে ছিল কয়েকটা কবিতা লিখব। কিন্তু কবিতা লেখার কোন মুড যেন তখন মনের মধ্যে ছিল না। এদিকে লক্ষ্য করলাম প্রচুর মশা হাত পা জড়িয়ে ধরে কামড়াচ্ছে। আশেপাশের লক্ষ্য করলাম ভালো-মন্দ মানুষের পাশাপাশি কিছু সন্দেহ মূলক ছেলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কেমন যেন মনে হচ্ছিল তারা ছিনতাইকারী অথবা খারাপ প্রকৃতির হবে হয়তো।
What3words location, Dhaka jahangirnagar
Photography device: Huawei P30 Pro-40mp
দীর্ঘক্ষণ রেস্ট নেওয়ার পরে পুনরায় বাসায় ফেরার চিন্তা। তবে কিছু কিছু সময় পথ চলতে আবার কয়েক জায়গায় রেস্ট নিতেই লক্ষ্য করেছি লাইটিং পার হয়ে আঁধারে ছেলেমেয়েদের বসে থাকা। একসাথে দুই তিন জন ছেলে-মেয়ে বসে সিগারেট টানা। এখানে উপস্থিত হয়ে বেশ অনেক কিছু দেখার পর একটাই অনুভব করেছি, দিনরাত ছেলেমেয়েদের এমন স্বাধীনতা একটা রাষ্ট্রের জন্য কখনোই কল্যাণকর নয়। যায় হোক ভ্রমন করে দেখার ইচ্ছে ছিল, তাই ইচ্ছা মতো যতটা সম্ভব হয়েছে দেখার চেষ্টা করলাম। প্রথমত মনে করেছিলাম কোন ফটো ধারণ করবো না কারণ রাতে এ মোবাইলে ছবি হবে কিনা শুধুমাত্র ঘুরার দরকার। অন্যান্য দিনটি এ ভাবে ঘোরাঘুরি করেছি বিকেল মুহূর্তে। রাতের দৃশ্যটা দেখা ছিল না, তাই রাতে দৃশ্যটাও বুঝতে পারলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ পরিস্থিতি। এরপর সেখান থেকে এসে শুরুতে যে ফটোটা দিয়েছি সেখানে সুন্দর একটা মাঠ রয়েছে সেখানে বসে অনেকটা সময় অতিবাহিত করেছি। এখানেও সেই একই অবস্থা। এরপর বাজার থেকে কুলফি মালাই খেতে খেতে বাসার দিকে রওনা দিয়েছি। আর এটাই ছিল আমার ঈদের সন্ধ্যাকালীন মুহূর্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ভ্রমণের কিছু দৃশ্য।
What3words location, Dhaka jahangirnagar
Photography device: Huawei P30 Pro-40mp
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকুন সকলে। আল্লাহ হাফেজ। |
খুব ভালো লাগলো ভাইয়া আপনার সুন্দর এই ভ্রমণ বিষয়ক পোস্ট দেখে। আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ঈদের আনন্দে সন্ধ্যা কালীন মুহূর্তে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ভ্রমন করার মুহূর্ত। আপনার মাধ্যমে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু দৃশ্য দেখতে পেলাম। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদ্মপুকুরের কথা আমি আগে শুনেছি।
অনেক ভালো লাগলো মন্তব্য দেখে।
ভাইয়া প্রথমেই আপনার আম্মুর সুস্থতা কামনা করছি। আল্লাহ তায়ালা আপনার আম্মু কে সুস্থ করুক নেক হায়াত দান করুক। আসলেই সব সময় বাসায় বসে থেকে থেকে একদম ভালো লাগে না। আর ঘুরে আসলে একটু মন টা ও ভালো হয়।আপনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরতে গিয়েছেন।দারুণ মুহূর্ত কাটিয়েছেন পড়ে ভালো লেগেছে ভাইয়া।অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
হ্যাঁ আপু মাঝেমধ্যে চেষ্টা করি এখানে উপস্থিত হয়ে সময় কাটাতে
আমার সাথে এবং বিজয় ভাইয়ের সাথে চ্যাটিং করতে করতে আপনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে পৌঁছে গিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। আপনার আত্মীয়র বাসা থেকে যেহেতু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় খুবই কাছে তাই খুব সহজেই হেঁটে হেঁটে সেখানে পৌঁছাতে পেরেছেন ভাইয়া। ভেতরের দৃশ্যগুলো দেখে সত্যিই অনেক ভালো লাগলো।
হ্যাঁ ভাই ওই মুহূর্তের অনুভূতিটা শেয়ার করে রাখলাম
আপনার মায়ের অসুস্থতার জন্য বেশ কয়েকদিন ঢাকা রয়েছেন। আপনার মায়ের সুস্থতা কামনা করি। যাইহোক ঈদের দিন খুব সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ খুবই সুন্দর। খুব নিরিবিলি এবং শান্ত একটা পরিবেশ। খুব সুন্দর কিছু মুহূর্ত কাটিয়েছেন সেখানে।
হ্যাঁ এই পরিবেশে কিছুটা সময়ের জন্য উপস্থিত হয়েছিলাম।
শুনে খারাপ লাগলো আন্টির অপারেশন হয়ে গেছে কিন্তু এখনো অবস্থা ভালো না। আপনি ঈদের দিন তো বাড়িতে আসতে পারলেন না খুবই খারাপ লাগলো ভাইয়া আপনার জন্য। আশা করি আপনি খুব দ্রুত সময়ে চলে আসতে পারবেন দোয়া রইলো। কিন্তু সন্ধ্যা বেলায় খুব সুন্দর ঘুরাঘুরি করলেন। ব্লগটি পড়ে অনেক কিছু জানতে পেরে অনেক ভালো লেগেছে।
আমার আম্মার জন্য দোয়া করবেন
ঈদের দিন সন্ধ্যা জাহাঙ্গীরনগর ভ্রমণ অবশ্য আপনার খুবই আনন্দদায়ক হয়েছে। মায়ের অসুস্থতার কারণে জাহাঙ্গীরনগরের এরিয়ার আশেপাশে অবস্থান করা এটি আপনার জন্য সহজ হয়েছে। অসংখ্য ধন্যবাদ এমন একটি স্মৃতিময় ভ্রমণ আমাদের মাঝে উস্থাপন করার জন্য।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
আপনার মায়ের অসুস্থতার কারণে ঈদের দিন পর্যন্ত বাড়িতে যেতে পারেননি, বিষয়টা শুনে আমার কাছেও খুবই খারাপ লেগেছে। বাড়িতে আপনার স্ত্রী সন্তান রয়েছে, ঈদের দিন ও তাদের পাশে থাকতে পারলেন না। যাইহোক সবার সময় সব দিন এক রকম যায় না। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি আপনার মাকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবেন। ঈদের দিন বিকেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ঘুরে দারুন কিছু ফটোগ্রাফি করে আমাদের কাছে শেয়ার করেছেন। ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে। সেজন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
হ্যাঁ ভাই, ঈদে বাড়িতে আসতে পারছিলাম না।