
আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আপনাকে স্বাগতম |
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজ আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি আমার নিজের তৈরি মাংস রেসিপি নিয়ে। যেখানে বয়লার মুরগির মাংস ডিমের সাথে সুন্দর করে রান্নার কৌশল আপনাদের দেখাতে চলেছি। তাই চলুন আর দেরি না করে এখনই রান্নার কার্যক্রম শুরু করে দেওয়া যায়।
রেসিপি বানানোর উপাদান সমূহ: |
ক্রমিক নম্বর | উপাদান | পরিমান |
১. | মুরগির মাংস | এক কেজি |
২. | পেঁয়াজ কুচি | তিন পিস |
৩. | রসুন কুচি | এক পিস |
৪. | কাঁচা মরিচ | পাঁচ পিস |
৫. | সয়াবিন তেল | ৫০ গ্রাম |
৬. | লবণ | পরিমাণ মতো |
৭. | মরিচের গুঁড়া | এক চা চামচ |
৮. | হলুদের গুঁড়া | এক চামচ |
৯. | ধনিয়া গুড়া | এক চা চামচ |
১০. | পানি | পরিমাণ মতো |
১১. | সিদ্ধ ডিম | তিন পিচ |
রান্নার জন্য প্রথমের সমস্ত উপাদান গুলো আমি নির্দিষ্ট পরিমাণে কয়েকটি পাত্রে চুলার পাড়ে নিয়ে গেলাম। এদিকে মুরগির মাংস গুলো খুব সুন্দর করে ধুয়ে একটি গামলায় তুলে রান্নাঘরে নিয়ে গেলাম। আমরা জানি ব্রয়লার মুরগির মাংস খুবই নরম হয়ে থাকে তাই সেটাকে রান্না করতে হলে ভালো করে ধুয়ে নিতে হয় আবার ধোঁয়ার সময় খুব সুন্দর মনোযোগী হতে হয় জানো কোন প্রকার ময়লা লাগেনা। সমস্ত দিক বিবেচনা করে আমি মাংস ও মসলাগুলো চুলার পাড়ে আনলাম।



এই পর্যায়ে আমি চুলার আগুনের জ্বাল শুরু করলাম এরপরে কড়াইটি খুব ভালোভাবে ধরে নিয়ে চুলার উপরে দিয়ে দিলাম। প্রথমেই বলে রাখা ভালো খড়ি দিয়ে রান্না করতে হলে ফটোগ্রাফির সময় খুব মনোযোগী হতে হয় কারণ চুলায় অনেক ধোয়া হয়ে থাকে। আর এমন মুহূর্তে ফটোগ্রাফি গুলো নষ্ট হয়ে যায় এবং অনেক কষ্ট পোয়াতে হয় তাই সকল দিকে বিবেচনা রেখে আমি চেষ্টা করলাম ফটোগ্রাফি টা ঠিক করার জন্য। চুলা অনেকটা গরম হয়ে গেল আর সেই সাথে চুলার উপর দেওয়া কড়াইতেও গরম হয়ে গেল। আর এই অবস্থায় কড়াইয়ের মধ্যে আমি সয়াবিন তেল ঢেলে দিলাম। তবে একটু নির্দিষ্ট পরিমাণে তেল দিয়ে দিলাম যেন বেশি না হয় আবার কমতি না থাকে। ঠিক এমনই একটি চোখের আন্দাজে তেল ঢেলে দিলাম। গরম কড়াইয়ের মধ্যে তেল ঢেলে দেওয়া মাত্র তেল গুলো একটু ফুটতে থাকলো।


এই পর্যায়ে আমি গরম তেলের মধ্যে যাবতীয় মসলাগুলো দেওয়ার চেষ্টা করলাম, যেমন রসুন কুচি, পেঁয়াজ কুচি, ঝালের গুড়া, হলুদের গোড়া, তেজপাতা সহ আরো অনেক কিছু। এগুলো কড়াইয়ের মধ্যে দেওয়ার পরে আমি খুনতি দিয়ে খুব সুন্দর করে নাড়াচাড়া করতে থাকলাম যেন ভালোভাবে সিদ্ধ হয়ে যায়। আরে মসলা জাতীয় উপাদানগুলো গরম হওয়া পর্যন্ত আমি অপেক্ষা করতে থাকলাম। আর মাঝে মধ্যে খুন্তি দিও নাড়তে থাকলাম যেন ভালোভাবে সব উপাদানগুলো ভাজা হয়ে যায়। এভাবে কিছুটা সময় চলল।

এবার তেলে ভাজা মসলাগুলোর উপর মাংসগুলো একটু একটু করে দিতে থাকলাম। গরম কড়াইয়ের মধ্যে যে সময় মাংসগুলো দিতে থাকলাম তখন সাবধানতা অবলম্বন করলাম জেনো আগুনের তাপ হাতে না লাগে, এমনকি গরম কড়াই এর বায়লা হাতে ঠেকে যেন হাত পুড়ে না যায়। যাইহোক সমস্ত মাংষ গুলো কড়াই এর উপর দেয়া হল।


এবার সমস্ত উপাদান গুলো একসাথে মিক্সচার করে দিলাম। কড়াইয়ের মধ্যে যত সব মসলা জাতীয় উপাদানগুলো দিয়েছিলাম তার সাথে মাংসগুলো ভালোভাবে উল্টিয়ে পাল্টিয়ে মিশিয়ে দিলাম যেন মাংসে কোন মসলার ঘাটতি না হয় অর্থাৎ প্রত্যেকটা মাংসের গায়ে যেন মসলা লাগে।


কিছুটা সময় ধরে জাল দিতে থাকলাম আর নাড়তে থাকলাম। এভাবে লক্ষ্য করলাম মাংস অনেকটা সিদ্ধ হয়ে আসলো। আমরা সকলেই জানি বয়লার মুরগির মাংস অনেকটা নরম হয়ে থাকে, তাই সিদ্ধ হতে বেশি সময় লাগে না। তাই বয়লার মুরগি মাংস রান্না করার সময় আমাদের সকল বিষয়ে অবশ্য সচেতন জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। কিছুটা সময় ধরে মাংস জাল দিতে থাকায় লক্ষ্য করলাম মাংসের কালার পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে।


এবার মাংসের মধ্যে হালকা হাফ কাপ পরিমাণে পানি দিলাম একটু ঝোল তৈরি করার জন্য। আমাদের ফ্যামিলি মেম্বাররা তরকারিতে ঝোল পছন্দ করে বেশি তাই তরকারির মধ্যে হালকা পানি দেওয়ার পর নির্দিষ্ট পরিমাণে লবণ দিয়ে দিলাম। এবার একটি ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিলাম যেন ভালোভাবে সিদ্ধ হতে পারে। বয়লার মুরগির মাংস সিদ্ধ হতে বেশি সময় লাগে না তাই বেশিক্ষণ ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখার প্রয়োজন নেই। এদিকে মানুষের মধ্যে সিদ্ধ ডিম দিতে হবে সে বিষয়টা মাথায় রাখতে হলো ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দেওয়ার পূর্বে নাকি পরে দিলে ভালো হয়। ঢাকনা থাকা অবস্থায় ঢাকনাটা একটু উঁচা করে তার মধ্যে সিদ্ধ ডিম তিনটা দিয়ে দিলাম।


রান্নার এক পর্যায়ে ঢাকনা তুলে দিলাম লক্ষ্য করলাম মাংসগুলোর কালার অনেকটা পরিবর্তন হয়ে গেছে এবং পাশাপাশি ডিম তিনটা আলাদা রূপ ধারণ করেছে। এদিকে লক্ষ্য করলাম মাংসের ঝোল অনেকটা কমিয়ে গেছে এবং মাংসগুলো যথেষ্ট নরম হয়ে গেছে। এ মুহূর্তে রান্নার কার্যক্রম কেমন হলো সেটা যাচাই-বাছাই করার জন্য একটু চামচে করে ঝোল তুলে পরীক্ষা করে দেখলাম মাংসের গুণগত মান কেমন রয়েছে। লক্ষ্য করলাম মাংসের গুণগত মান ঠিক রয়েছে আর ঝাল লবণ দেওয়া লাগবে না। আর এভাবেই একটি সময় রান্নার কার্যক্রম সম্পন্ন হল।


মাংস রান্না শেষ হলে মাংসগুলো আমি একটি গামলায় উঠিয়ে নিলাম। লক্ষ্য করে দেখলাম আমার মাংসর অনেক সুন্দর স্বাদ যুক্ত বাসনা বের হচ্ছে। চুলার কড়াই থেকে মাংস খুব সুন্দর করে গামলার মধ্যে নামিয়ে নিয়ে কড়াই টি দূরে হেঁটিয়ে রাখলাম। যেন কড়াইয়ের কালি গায়ে লেগে না যায়। এরপর রান্না মাংস তরকারিটা চুলার পাড় থেকে ঘরের উদ্দেশ্যে নিয়ে গেলাম আর এভাবেই আমার রান্নার কাজ শেষ হলো।

|
দুপুরে খাবার খাওয়ার মুহূর্ত পরিবারের সকল মানুষের খাবারের প্লেটে এই মাংস তুলে দেওয়া হলো। সুন্দর মিষ্টি যুক্ত গন্ধ সবার নাকের ডগায় পৌঁছে গেল। কেউ বলতে থাকলো ডিমের কারনে এত সুন্দর রেসিপি হয়েছে আবার কেউ বলতে থাকলো রান্না করতে জানলে সুন্দরভাবে রান্না করা সম্ভব আর এভাবেই খাওয়া মুহূর্তে সবার মাঝে এ মাংস পরিবেশন করার মধ্য দিয়ে কার্যক্রম সম্পন্ন হল। আশা করি আমার এই রান্নার কৌশল আপনাদের অনেক ভালো লেগেছে। আর কতটুকু ভালো লাগলো সেই বিষয়টা অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন


আশা করি,আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনি অনেক বিষয় সম্পর্কে জানতে বুঝতে ও শিখতে পেরেছেন। পোস্টটি উপস্থাপনা কেমন ছিল এবং এ বিষয়ে আপনার অনুভূতি কেমন আমাকে জানাতে ভুলবেন না। আপনার জন্য আমার পক্ষ থেকে শুভকামনা রইলো। |
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোষ্টে,ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |

|
---|
ব্রয়লার মুরগি যদিও আমার তেমন একটা খাওয়া হয় না কিন্তু বয়লার মুরগি যদি এভাবে ভুনা ভুনা করে রান্না করা যায় তাহলে খেতে খুবই ভালো লাগে। তার উপরে আপনার বয়লার মুরগির তো আবার ডিমও রয়েছে। আপনার রান্নার পদ্ধতি দেখে বোঝা যাচ্ছে যে খেতে অনেক সুস্বাদু হয়েছিল। দেখতেও বেশ লোভনীয় লাগছে।
খাওয়ার চেষ্টা করবেন আপু অনেক শান্তি খেয়ে
মামা আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন মুরগির মাংসের অসাধারণ রেসিপি। আপনার রেসিপি তৈরি দেখে সত্যিই জিভে জল চলে আসছে। আপনি রেসিপি তৈরিতে প্রত্যেকটি জিনিস বেশ সুন্দরভাবে পরিমাণ মতো দিয়েছেন। দেখে মনে হচ্ছে খেতে বেশ সুস্বাদু লাগবে। ধন্যবাদ মামা এত সুন্দর ভাবে রেসিপি তৈরি করে শেয়ার করার জন্য।
অবশ্যই মামা অনেক টেস্ট হয়েছিল
একদম জিভে জল আসার মত আপনি রেসিপিটি শেয়ার করলেন। রেসিপির কালার কম্বিনেশন এত দারুণ এসেছে খেতে ইচ্ছে করতেছে। আপনি বেশ মজার করে মুরগির মাংস রান্না করলেন একদম ভুনা করে বেশ ভালো লাগবে খেতে। মুরগির মাংস আমার অনেক ভালো লাগে আমার পরিবারের সবাই বেশ ভালোবাসা খেতে। আপনি দারুণ করছেন ধন্যবাদ আপনাকে।
একদম ঠিক বলেছেন আপু অনেক সুস্বাদু ছিল কিন্তু
সিদ্ধ ডিম দিয়ে বয়লার মুরগি এভাবে রান্না করে কখনো খাওয়া হয়নি। বয়লার মুরগি ভুনা এভাবে নিশ্চয়ই খুব ভালো লাগে খেতে। রেসিপির কালার দেখে বোঝা যাচ্ছে অনেক সুস্বাদু হয়েছে। খুব সুন্দর ভাবে সম্পূর্ণ রেসিপিটি উপস্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
হ্যাঁ এইভাবে আমাদের এখানে অনেকে রান্না করে
বয়লার মুরগি আমি তেমন খাই না। তবে আপনি খুব সুন্দর করে মুরগির মাংস রেসিপি করেছেন। তবে আমি কখনো মুরগির মাংসের সাথে ডিম দিয়ে রান্না করেনি। তবে আজকে আপনার রেসিপিটি একটু ভিন্ন রকম হয়েছে। রেসিপিটি কালার দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে অনেক মজাই হয়েছে। অনেক সুন্দর করে রেসিপিটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করছেন।
অবশ্য অনেকেই এটা পছন্দ করে না তারপরে আমার বেশ ভালো লাগে
আমি যে কোন মাংস খেতে অনেক পছন্দ করি। আজকে আপনি খুব সুন্দর করে ব্রয়লার মুরগির মাংস রেসিপি করেছেন। আপনার রেসিপি দেখে আমার জিভে জল এসে গেল। তবে কখনো মুরগির মাংস সাথে ডিম দিয়ে রান্না করা হয়নি বা খাওয়া হয়নি। তবে মনে হয় রেসিপিটি খুব মজা করে খেয়েছেন। অনেক সুন্দর করে রেসিপিটি আমাদের মাঝে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উপস্থাপনা করেছেন।
জেনে অনেক খুশি হলাম