সবাইকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজকে আমি ব্যাতিক্রম একটি পোস্ট নিয়ে উপস্থিত হয়েছি। যেখানে মৃত্যুর চিন্তাভাবনা মনের মধ্যে জাগ্রত হবে একটি বিশেষ মৃত্যুকে কেন্দ্র করে। তাহলে চরম বিস্তারিত আলোচনা করি।
মানুষের জীবনের কোন গ্যারান্টি নেই। এক সময় আমরা অনুভব করতাম জন্ম মৃত্যুর মধ্যে বেশ তফাৎ রয়েছে। মানুষ বৃদ্ধ হয়ে মারা যাবে। বৃদ্ধ হলে রোগ শোক হতে পারে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বুদ্ধিমান হওয়ার পরপর দেখতে পারলাম না মানুষ যে কোন মুহূর্তেই অল্প বয়সে মৃত্যুবরণ করে। অল্প বয়সে বিভিন্ন রোগে কারণে অকারণে মৃত্যুবরণ করে। আস্তে আস্তে যেন ছোটবেলার সেই চিন্তা ধারা দূর হয়ে যায়। বাস্তবতার সম্মুখীন হতে থাকে এবং দেখতে থাকে হ্যাঁ এটাই সত্য। যার বয়সের কিছুই হয়নি যাকে নিয়ে একটা পরিবার অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে শুয়ে রয়েছে সেই মানুষটা হুট করে দুনিয়া ছেড়ে বিদায় হয়ে যায় হাজার হাজার মানুষকে কাঁদিয়ে।
ঠিক তেমনি একটা ঘটনা ঘটে গেল আমাদের গেস্টের মধ্যে। আমার মেজ জামাই গত রবিবার চির জনমের জন্য দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। তিনি প্রতিনিয়ত ফজরের নামাজ পড়ে হালকা খাওয়া-দাওয়া করে তার কাজে অংশগ্রহণ করেন। ঠিক এই দিন বাড়িতে ধানের কাজ শুরু করেছিলেন। মাঠ থেকে এসে হঠাৎ বুকের মধ্যে সমস্যা অনুভব করে। এর কিছুক্ষণ পর শরীরটা ভেঙ্গে পড়ে। দ্রুত হসপিটালে নিতেই পথের মধ্যে নিথর দেহ। সাথে থাকা মানুষেরা অনুমান করল ইনি কি মারা গেলেন? হসপিটালে নিয়ে ডক্টর মৃত ঘোষণা করলেন। সবাই আশ্চর্য হয়ে গেলেন কোন সমস্যা নেই কিছু নেই হুট করে বুকের মধ্যে কেমন করছে এই বলতে বলতে মানুষটা মারা যাবে! সত্যিই কল্পনার বাইরে। বয়স আনুমানিক ৫২ বছর হবে। শরীরে তেমন কোন রোগ বালা নেই। তবে এর অনেক আগে একবার স্টক করেছিলেন। হাই প্রেসার এর প্রবলেম রয়েছে হালকা।
পরিবার খুব সুন্দরভাবে পরিচালনা করেছিলেন তিনি। বেশ কঠোর পরিশ্রম করেন। কৃষি কাজে বেশি দক্ষ। কিন্তু পারিবারিক দিক থেকে মনের শান্তি নেই। নেই কোন গ্যাঞ্জাম ফ্যাসাদ। রয়েছে ঘাড়ের উপর একাধিক কন্যা সন্তান। বড় মেয়েটা বিবাহ হয়েছিল একটা মেয়ে সহ তালাক হয়ে যায়। বুঝতে পারছেন ঘাড়ের উপরের বড় মেয়ে এবং তার কন্যা সন্তান। নাতনিটা প্রায় বিয়ের উপযুক্ত হয়ে আসছে। এছাড়া মেঝো মেয়েটা সবে মাত্র বিয়ে হয়েছে ছয় মাস হল। বিয়ে হয়েছে মেহেরপুর থেকে যশোরে। জামাইটা ঢাকায় থাকে। এদিকে ছোট মেয়েটাও বিয়ের উপযুক্ত হয়ে এসেছে। এমন অবস্থায় বাড়িতে একমাত্র কর্মশীল ব্যক্তি যিনি ছিলেন তিনি মারা গেলেন।
জানাজায় শরিক হলাম। এরপর গোরস্থানে যখন মাটি দেওয়ার জন্য উপস্থিত হয় তখন ওই গ্রামের বৃদ্ধ মানুষেরা খুবই আফসোস করেছিল। সকলে জামাইয়ের ভালো দিকটা বলাবলি করছিল। কারো মুখে কখনো কোনো খারাপ কথাগুলো শুনি নাই। কারণ ভালো মানুষের খারাপ দিক থাকবে না এটাই স্বাভাবিক। তবে এ কথা সত্য ভালো মানুষের মৃত্যু অকালে হয়। বাড়ি থেকে সোজা বাগানের মধ্যে লাশ দাফন করা হলো। গোরস্থান ময়দান দূরে হলেও পরিবারের লোকজনরা একটু ভুলে থাকতে পারে। কিন্তু বাড়ি থেকে বের হলেই পুকুরের পাড়েই গোরস্থান ময়দান। সজনরা কিভাবে ভুলে থাকবে। এদিকে পরিবারকে পরিচালনা করবে এখন। সমস্ত চিন্তাধারা ফুফুর মাথায় এসে পরল। এদিকে গোরস্থান ময়দানে সকল মানুষেরা এই বিষয় নিয়েই বলাবলি করছিল। তবে মহান সৃষ্টিকর্তা আছেন এটা সত্য। এখন মহান সৃষ্টিকর্তা যেভাবে পরিচালনা করেন সেভাবেই চলবে আর কি। এছাড়াও আত্মীয় স্বজনেরা যতটা সম্ভব চেষ্টা করবে তাদের দেখাশোনা করার। তবে জামাই এর কোন ভাই নেই। পাঁচটা বোন ছিল। আজকে জানতে পারলাম পাঁচটা বোন অত্যাচার শুরু করে দিয়েছেন এই কয়েকটা দিনের।
তাদের দাবি ভাই মারা গেছে বাপের বেটার অংশ ভাগ করে দাউ। মাত্র ৪ কাঠা জমি। সেখান থেকে তারা ভাগ নিতে চায়। জামাইয়ের আম্মা অনেক ভালো মানুষ ছিলেন। নয় কাঠা জমির মধ্যে ৫ কাঠা জমি জমায়েত নামে আগে লিখে দিয়ে গেছিলেন। পরবর্তীতে জমিটা দিবে কিন্তু দেওয়ার মতো আর্থিক ভাবে হয়ে ওঠেনি। তবে জামাই এর কাছে তার মা একটা দাবি করেছিলেন তার পাঁচটা মেয়েকে বিয়ে দেওয়া দেখাশোনা করা। আমাদের সেই মেজ জামাই মায়ের কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন। 5 টা নিজ দায়িত্বে বিয়ে দেওয়া দেখাশোনা করা করেছেন তিনি। তাই বন্ধুরা ভাইয়ের সাথে খারাপ আচরণ করতে পারেনি। ভাই বেঁচে থাকতে কিছু বলেনি। ভাই মরার সাথে সাথে ভাবি ভাইয়ের মেয়েদের উপর তাগিদ দেওয়া শুরু করে দিয়েছে। এখন তাদের ভরণপোষণ কে নিবে কে দেখবে সেটাই তাদের বড় দুঃখ। এর মাঝখানে আপনজনদের অত্যাচার শুরু। কি একটা দুনিয়া, কি মানুষের বিবেক। এই মুহূর্তে তাদেরই প্রয়োজন সহায়তা দেওয়া। যেন তারা একটু শান্তি নিঃশ্বাস ফেলতে পারে। কিন্তু একটি পরিবারের মূল খুঁটি যদি ভেঙে যায় তাহলে বাইরের খুটি দিয়ে পরিবার সচল করা যায় না, এটাই সত্য। কিন্তু আপনজনদের এমন মুহূর্তে শত্রুতা করা মোটেও কম্য ছিল না।
বিষয় | সবজি আড়ত |
---|---|
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Infinix Hot 11s |
লোকেশন | গাংনী-মেহেরপুর |
ব্লগার | @sumon09 |
দেশ | বাংলাদেশ |
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকুন সবাই। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
05-12-24
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
খুব সুন্দর গুছিয়ে লিখেছেন ভাইয়া।মেঝ জামাই অনেক কর্মিষ্ঠ ছিলেন এবং অনেক কষ্ট লুকিয়ে ছিলো বুকের ভীতরে।বড়ো মেয়ে বাড়িতে, ছোট মেয়ে বিয়ের উপযুক্ত আসলে ওনি হার্ড এটাক করেছে এবং মারা গেছেন। মানুষের মৃত্যুর পর তার প্রসংসা করছে মানে সত্যি ভালো ছিলেন তিনি।আমি সত্যি অবাক ওনার বোন দের আচরণে এহ সময় ওনাদের উচিত ছিলো ভাবিও ভাইয়ের মেয়েদের শান্তনা দেয়ার কিন্তুু ওনারা হিস্য বুঝে নিতে চাচ্ছে। হায়রে মানুষ এতো সার্থপর। সৃষ্টি কর্তা আছে ভাইয়া তিনি সব ঠিক করে দেবে।ধন্যবাদ পোস্ট টি ভাগ করে নিয়েছেন জন্য।
মানুষ তো অনেক ভালো ছিল। কিন্তু এখন তার পরিবারটা নিয়ে চিন্তা
যার জীবন আছে তাকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতেই হবে এটাই প্রকৃতির নিয়ম। আপনার মেজো জামাই হঠাৎ মৃত্যু বরণ করেন। যেহেতু এর আগে তিনি একবার স্টোক করেছেন তাই হয়তো এবার শেষ রক্ষা হয়নি। যাহোক আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুক সেই দোয়া করছি।
আমরা সবাই উনার জন্য দোয়া করি