স্বার্থের জন্য যে দূরে সরে রয়, সে কখনো আপন নয়

in আমার বাংলা ব্লগ5 days ago (edited)


আসসালামু আলাইকুম


হাই
বন্ধুরা!

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। প্রথমে বলে রাখি,
মানুষ ভুলের উর্ধ্বে নয়, ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
আজকে আমি স্বার্থবাদী মানুষকে নিয়ে কিছু কথা বলব।


Picsart_24-12-29_11-32-47-322.jpg




আলোচনার বিষয়:
স্বার্থবাদী


দুনিয়াটা স্বার্থের কারখানা। যেখানে স্বার্থ আছে সেখানে আপনি আছেন আমি আছি। যেখানে স্বার্থ নেই সেখানে আপনিও নেই আমিও নেই। তবে কিছু কিছু জায়গা রয়েছে যেখানে ভোগে শান্তি নাই, ত্যাগে শান্তি রয়েছে। আর এই বিষয়টা যারা উপলব্ধি করতে পারে তারা স্বার্থকে পরিহার করে সামঞ্জস্য বজায় রেখে চলার চেষ্টা করে সব সময়। কারণ স্বার্থ এমন একটা খারাপ জিনিস যেটা মানুষের মধ্যে সুসম্পর্ক নষ্ট করতে বাধ্য। সমাজে চোখ মিলে তাকালে লক্ষ্য করা যায় স্বার্থের জন্য মারামারি কাটাকাটি হানাহানি হতেই থাকে। এমন কিছু সময় রয়েছে স্বার্থের টানে অনেক মানুষ আপন হয়ে প্রাণের সাথে মিশে যায়। স্বার্থ উদ্ধার হয়ে গেলে এক নিমিষেই ভুলে যায়। আবার আরো কিছু স্বার্থ পাওয়ার জন্য পিছু লেগে থাকে। সাথে চলা মানুষটাও যেন একসময় স্বার্থবাদী হয়ে ওঠে। সামান্য স্বার্থের অভাবে দেখা যাবে আপনার থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। অথবা স্বার্থ সংরক্ষণ করতে না পাওয়া পর্যন্ত আপনার সাথে দুর্ব্যবহার চালিয়ে যাচ্ছে। হতে পারে সেটা মানসিক টর্চার অথবা সরাসরি আঘাত।

একবার নিজের মায়ের পানে লক্ষ্য করে দেখেন তো। আপনার কাছে কোন একটা জিনিস দাবি করেছে। কিন্তু আপনি এখনো দিতে পারেন নাই। কিন্তু আপনার আম্মা হাসিখুশি ভাবে মন থেকে বরণ করে নিয়েছে। আমার সন্তান যেদিন পারে দিবে, না পারে না দিবে। কিন্তু কখনো তিনি রাগ তেজ অভিমান দেখাতে যাবে না। কারন সে নিজেই জানে আমার বড় স্বার্থ আমার সন্তানটাই। সে হাসি খুশি থাকলেই আমি হাসি খুশি। ঠিক তেমনি আপনজন যিনি, তাকে চেনার উপায় এখানে। আপনার আপনজন আপনার প্রিয়জন যারা হবে তারা আপনাকে তার নিজের বড় স্বার্থ হিসেবে দেখে নিবে। আপনার থেকে কোন কিছু পাওয়া না পাওয়া নিয়ে স্বার্থবাদীতা দেখাতে আসবে না। যে আপনার কাছ থেকে কোন কিছু দাবি করে রাগ অভিমান দূরে সরে যাওয়ার মত পর্যায় সৃষ্টি করবে, জানবেন সে কখনো আপনার আপনজন নয়। আপনার ব্যথায় সে কখনোই ব্যথিত হয় না। বরঞ্চ আপনাকে ব্যাথা দিতে সে ভয় পায় না।

কিছু কিছু আপনজন থাকবে তারা অত্যাধিক লোভি। আবার কিছু কিছু আপনজন থাকবে সুকৌশল বুদ্ধি সম্পন্ন। তবে আপনি আপনার পথ চলায় তাদেরকে বিচার করতে শিখুন। সেই বিচার করতে হবে বিবেক দ্বারা। কখনো কারো মনে আঘাত দিয়ে কথা বলে নয়। কারণ দিনশেষে ভালো-মন্দ মানুষের সাথে চলাচল করতে হবে আপনার। সমাজে লক্ষ্য করা যায়, এক থালে ভাত খাওয়া দুইটা ভাইয়ের মধ্যে এমন একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়; বাবার জমি জায়গা নিয়ে ভাইয়ে ভাইয়ে মারামারি। আমার একটা বিষয় বুঝে আসেনা। যখন পিতা মাতার মায়ার বন্ধন ছিল। একই হাঁড়ির ভাত দুই ভাই খাওয়া নিয়ে গ্যাঞ্জাম ফ্যাসাদ হয়নি, তখন মায়ার বন্ধন এতটা স্ট্রং ছিল যে পিতা মাতার সম্পত্তি নিয়ে কোন ভাগাভাগি চিন্তা করতে হয়নি। কিন্তু বয়স প্রায় লাস্টের দিকে এসে অথবা মাঝ বয়স পার হয়ে কেন গ্যাঞ্জাম ফ্যাসাদ সৃষ্টি হবে। আসলে এই মুহূর্তটা মানুষের অনেক স্বার্থবাদী হয়ে ওঠে। তাই সেই ছোটবেলার কোমল অনুভূতি, মায়ার বন্ধন হারিয়ে ফেলে। যার জন্য স্নেহের সম্পর্ক বিসর্জন দিয়ে ফেলে স্বার্থের জন্য। কিন্তু পরিশেষে দেখা যায় কি, সেই স্বার্থ সে ভোগ করতে পারে না। অন্যের জন্য স্বার্থ সংরক্ষণ করতে গিয়ে নিজের মায়ার বন্ধন হারিয়ে ফেলছে। অনেকেই রয়েছে স্বার্থ উদ্ধার করতে গিয়ে মারামারি খুনাখুনি জেল হাজত পর্যন্ত হয়ে যায়।

কিন্তু এ স্বার্থই কখনোই কাজে আসে না। তাই আমাদের নিজেদের মধ্যে সে বুঝ শক্তি সৃষ্টি করতে হবে। ছোটবেলায় যেমন পিতা-মাতার স্নেহের ভাই বোনের মধ্যে অন্যরকম মায়ার বন্ধন ছিল। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত যেন সেই বন্ধন টিকে রাখতে পারা যায়। কারণ বিদায় বেলায় মানুষ শুধু নিজের পাপ পুণ্য নিয়ে দুনিয়া ত্যাগ করে, এছাড়া সাথে এক পয়সাও যায় না। আপনার আমার অর্জিত সম্পদ সবই দুনিয়ার বুকে পড়ে থাকে পরবর্তীতে আপনার সন্তান বা অন্যজন ভোগ করবে। আপনি যদি হালালভাবে স্বার্থ সম্পদ গুছিয়ে যান অবশ্যই আপনার শিক্ষা ও সম্পদ আপনার আগামী প্রজন্মের জন্য সুফল বয়ে আনবে। আর আপনি যেমন বিপথে স্বার্থ সংরক্ষণ করেছেন, আপনার সেই সম্পদ বিপথেই পরিচালিত হবে আরেকজনের দ্বারা। মাঝখানে পাপের ভাগীদার নিজেকেই হতে হবে নিজের ভুলের জন্য ও স্বার্থলোভীর জন্য। তাই সময় থাকতে নিজেদের স্বার্থবাদী মন মানসিকতা দূর করতে হবে। মহান সৃষ্টিকর্তা সবার বুঝার শক্তি দান করুক।


পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ

qjrE4yyfw5pEPvDbJDzhdNXM7mjt1tbr2kM3X28F6SraZgB7TZjdex8Jfeum4QdvWrYyVKf1TVdkBn3Afz5h9WN46gBh4J5bjeVSUjgbCkhDF2MvcDktfM1Q.jpeg


পোস্ট বিবরণ


বিষয়স্বার্থবাদী
ফটোগ্রাফি ডিভাইসInfinix Hot 11s
Photo editing apppicsart app
লোকেশনগাংনী-মেহেরপুর
ব্লগার@sumon09
দেশবাংলাদেশ


পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকুন সবাই। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png


6VvuHGsoU2QBt9MXeXNdDuyd4Bmd63j7zJymDTWgdcJjnzpQii6mQVp5A4gDGCDR68W9RxwfgYXDkuSdrT6M7Y7xaaSUX484gjnbdCNf4usUnqiHpgSG4y2v9nUyHY.png

Sort:  
 5 days ago 
 5 days ago 

29-12-24

Screenshot_20241229-125448.jpg

Screenshot_20241229-115139.jpg

Screenshot_20241229-115005.jpg

 5 days ago 

খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি টপিক নিয়ে আলোচনা করেছেন ভাইয়া। স্বার্থ ছাড়া কেউ কখনো কারোর পাশে থাকে না। এই দুনিয়ায় সবাই নিজের স্বার্থ খোঁজে। একেবারে ঠিক কথা বলেছেন, দুনিয়াটা স্বার্থের কারখানা। নিঃস্বার্থভাবে কেউ কখনো কারোর পাশে থাকে না বা থাকতে চায় না। ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে

 4 days ago 

সঠিক বিষয় বোঝার জন্য ধন্যবাদ।

 4 days ago 

আমরা সবাই কম বেশি স্বার্থের পাগল। আদিকাল থেকেই মানুষ স্বার্থকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে আসছে। আপনি অনেক সুন্দর একটি টপিকস আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার পোস্টটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাই

 3 days ago 

হ্যাঁ, এটা সত্য

 3 days ago 

আসলে এই জিনিসটা এখন আমরা সবাই দেখতে পাই। কেননা স্বার্থ একটা মানুষকে অন্যান্য মানুষের থেকে আলাদা করে ফেলে এবং তারা যদি অন্য মানুষকে কষ্ট দেয় তাহলে কিন্তু এতে তাদের আনন্দ হয়। আর দিন শেষে স্বার্থপর মানুষগুলো সব সময় জয়ী হয়। তবুও আমরা কখনো স্বার্থপর মন মানসিকতা নিয়ে বেঁচে থাকব না।

 3 days ago 

একদম ঠিক কথা দাদা।

Coin Marketplace

STEEM 0.24
TRX 0.26
JST 0.040
BTC 96605.56
ETH 3461.33
SBD 1.57