পৃথিবীতে বিশ্বাসের মর্যাদা কতটুকু??

আসসালামু আলাইকুম। আমার বাংলা ব্লগ এর সকল বন্ধুদের শুভেচ্ছা। আশা করছি সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনারা সকলেই বেশ ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর অশেষ রহমতে আমিও বেশ ভাল আছি। আমরা যেন সর্বদা সুস্থ সুন্দর এবং ভালো থাকতে পারি সে কারণে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি।

আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি জেনারেল রাইটিং ব্লগ লেখার জন্য উপস্থিত হয়েছি। আজকে বিষয়বস্তু নির্ধারণ করেছি পৃথিবীতে বিশ্বাসের মর্যাদা! চলুন সকলেই উপভোগ করে আসে আজকের এই জেনারেল ব্লগ।

এই পুরো পৃথিবী একটি বিশ্বাস নামক পিলারের ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। পৃথিবীতে যদি বিশ্বাস শব্দটা না থাকে কিংবা বিশ্বাস শব্দের যথেষ্ট প্রয়োগ না থাকে তাহলে আমরা এই পৃথিবীতে কখনোই একে অপরের সাথে চলাফেরা করতে পারব। পৃথিবীর মাঝে এখনো বিশ্বাস রয়েছে বলেই আমরা সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারছে এবং আমরা একে ওপরের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করতে পারছি।

স্কুল জীবনের প্রথম থেকেই কাউকে বিশ্বাস করতে হয় এবং এরপর তার সাথে বন্ধুত্ব করতে হয়। হোক সে ছেলে কিংবা মেয়ে একে অপর এর মাঝে বিশ্বাসের একটি বন্ধন তৈরি হয় এবং পৃথিবীতে এই বিশ্বাসের বন্ধনের মাঝেই আমরা 18 কোটি জীব পৃথিবীতে বেঁচে রয়েছি।

শুধু মানুষের মানুষের বিশ্বাস নয়। মানুষ এবং প্রাণীর মাঝেও যে বিশ্বাস রয়েছে সেই বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে পৃথিবীতে এক প্রাণী অপুর প্রাণের প্রতি নির্ভরশীল ও বিশ্বাসের প্রতি আস্থা রেখে সমাজে বসবাস করছে এবং এই পৃথিবীতে আমরা সকলে মিলে একসাথে বসবাস করছি।

তবে এই পৃথিবীতে অন্যান্য সকল প্রাণী একে অপরের প্রতি বিশ্বস্ততা বজায় রাখলেও আমার মনে হয় আমরা মানুষ একমাত্র প্রাণী যারা কারো প্রতি বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে পারেন। আমার ২ যুগ বয়সে আমি শত শত মানুষের সাথে চলাফেরা করেছি এবং তাদের সাথে বন্ধুত্ব করেছি। বিশেষ করে স্কুল জীবন থেকে শুরু করে মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক এমনকি কর্মক্ষেত্রে আমার অনেক ভালো মানের বন্ধু ছিল এবং তাদের সাথে আমার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল শুধুমাত্র বিশ্বাসের ফলে।

এদের ভেতর থেকে কেউ কেউ আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে এবং আমার সাথে খারাপ আচরণ ও আমার সাথে অনেক অসহনীয় আচরণ করেছে। কিন্তু আমি তখনো তাদের প্রতি অনেক বিশ্বাস ও আস্থা রেখেছিলাম।

আবার এমন কিছু বন্ধু রয়েছে যারা প্রতিনিয়ত আমার বিশ্বাসের বাহিরে ছিল। কিন্তু তারাই এক সময় বিপদে আমার পাশে থেকেছে এবং আমাকে সাহায্য করেছে।

মূলত এখানে আসলে পৃথিবীতে বিশ্বাসের মর্যাদা কতটুকু আমরা এ বিষয়টি কখনোই উপলব্ধি করতে পারবোনা স্বল্প মস্তিষ্কে। তবে আমার মনে হয় আমরা যদি বিশ্বাসের মর্যাদা দিতে চাই তাহলে এই পৃথিবীতে আমাদের বসবাসের জন্য অযোগ্য হয়ে যাবে। কারণ এই পৃথিবীতে এখন অসৎ ব্যক্তির সংখ্যা অনেক বেশি।

গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে চাকরি করা অবস্থায় যখন আমার প্রচুর পরিমাণে বন্ধু হয়েছিল তখন তাদের সাথে অর্থ আদান-প্রদান লেনদেন এমনকি সবকিছুতেই বেশ বিশ্বস্ততা লুকিয়ে ছিল।কিন্তু ফ্যাক্টরির ভিতরে এমন কিছু বন্ধু রয়েছে যারা কিছু অর্থ ধার নেওয়ার পর পরবর্তী দিন তারা সেই স্থান ত্যাগ করে এবং তারা দেশের বাড়িতে চলে যেত। এমনও আমার অনেক বন্ধু রয়েছে যারা আমার সাথে বিশ্বাসের মর্যাদা পর্যন্ত বজায় রাখতে পারেনি। এখানে মূলত আমি কাউকে দোষারোপ করছি না, কারণ এই পৃথিবীতে মানুষের ভেতরে যে মনুষত্ববোধ থাকা দরকার সেই মনুষত্ববোধের অভাব। মানুষের স্বল্প জ্ঞানে এই মনুষত্ববোধ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা অত্যন্ত কঠিন। তবে আমি মনে করি আমাদের সর্বোপরি বিশ্বাসের মর্যাদা রাখা উচিত।

আমার যে সকল বন্ধু বিপদের সময় সাহায্যের জন্য আমার কাছে আবেদন করেছিল আমি কিন্তু তাদেরকে মানবতা দেখিয়ে তাদেরকে বিশ্বাস করে এবং তাদেরকে উপকার করেছে। কিন্তু পরবর্তীতে যখন তার সাহায্যের প্রয়োজন ফুরিয়ে গিয়েছে এবং তখন সে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে।

অর্থাৎ মানুষের মধ্যে সবথেকে বেশি ব্যবধান তৈরি হয় বিশ্বাস ভেঙে গেলে। পৃথিবীতে একমাত্র পিলার অর্থাৎ খুটি হলো বিশ্বাস। আর সেই বিষয় যদি একবার ভেঙ্গে যায় তাহলে মানুষের মাঝে তার প্রতি সন্দেহের দিকটা আরো বেশি বৃদ্ধি পায়।

সুতরাং আসুন আমরা একে অপরের বিশ্বাস এর গুরুত্ব দেই এবং একে অপরকে বিশ্বাস করি। পরিশেষে বলতে চাই আমরা এমন কোন কাজ করবো না যে কাজের মাঝে আমাদের প্রতি অন্যদের বিশ্বাসের হানি হয়। কারণ দুই দিনের পৃথিবীতে কারো সাথে বেইমানি কিংবা বিশ্বাসঘাতকতা করে আমরা কখনোই ইহকাল এবং পরকালের জীবনে সুখী হতে পারব না। সৃষ্টিকর্তা আমাদের সকলকে এই বিষয়ে আরো জ্ঞান লাভ করার সুযোগ করে দিন।