উন্নত জীবনের আশায় জীবন বিসর্জন (পঞ্চম পর্ব
কিন্তু শাকিল খেয়াল করে দেখে অ্যানাউন্সমেন্টে তাদের ফ্লাইটের গন্তব্য লিবিয়া দেখাচ্ছে। শাকিল কিছুটা কনফিউজড হয়ে যায়। তার বুকটা অজানা আশঙ্কায় দুরুদুরু করে কাঁপতে থাকে। সে তার সাথের যাত্রীদের সাথে আলাপ করতে থাকে। যে তাদের তো ইতালি যাওয়ার কথা ছিলো। তাহলে তাদেরকে এখন লিবিয়ার ফ্লাইটে উঠতে কেন বলা হচ্ছে? শাকিল একবার চিন্তা করে এখান থেকেই দেশে ফিরে যায়। পরবর্তীতে তার মাথায় খেলা করে যে সে তার পরিবারের প্রায় সর্বস্ব নিয়ে চলে এসেছে। যার ফলে এখন পরিণতি যেটাই হোক তাকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
ক্যানভা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
এই চিন্তা-ভাবনা থেকে শাকিল লিবিয়াগামি ফ্লাইটে উঠে। বসেই শাকিল বুঝতে পারে যে তারা কতো বড়ো বিপদে পড়েছে। লিবিয়া এয়ারপোর্ট থেকে তাদেরকে একদল সশস্ত্র লোক ধরে নিয়ে যায়। নিয়ে গিয়ে তাদেরকে একটা বড় ঘরের ভিতর আটকে রাখে। যে ঘরে ২০ জন মানুষ থাকা মুশকিল সেখানে প্রায় ২০০ লোক এনে জড়ো করে তারা। তখনও শাকিল বুঝতে পারেনি সামনে কতো বড়ো বিপদে পড়তে চলেছে সে। সেখানে শাকিল দেখতে পায় যারা তাদেরকে ধরে এনেছে তাদের ভেতর দুজন বাংলাদেশিও আছে। তাদের সাথে কথাবার্তা বলে বুঝতে পারে তারা এক দালালের খপ্পর থেকে এখন অন্য দালালের খপ্পরে পড়েছে।
এখান থেকে মুক্তি পেতে হলে এই সশস্ত্র লোকগুলিকে টাকা দিয়ে তারপর বের হতে হবে। তারপরে শাকিল তার সামনে এক নারকীয় দৃশ্য দেখতে পেলো। বেশ কিছু লোক স্টিলের পাইপ নিয়ে সেই ঘরে প্রবেশ করলো। তারপর তারা একচেটিয়া ভাবে সবাইকে মারতে শুরু করলো। সবাইকে প্রচন্ড মারধর করার পরে তাদের বাড়ি ফোন করতে বলা হোলো। বলা হোলো প্রত্যেকের পরিবারের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা করে না পেলে তাদেরকে মেরে ফেলা হবে। এইভাবে কয়েকদিন আটকে রেখে সমানে তাদের উপর নির্যাতন চললো। (চলবে)
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
বর্তমানে আমাদের দেশের অনেক দালালেরা ইতালি পাঠানোর কথা বলে লিবিয়া পাঠাচ্ছে এবং তারপর আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি করছে। আমাদের এলাকার প্রায় ১০ জন ছেলে লিবিয়া থেকে ইতালিতে প্রবেশ করেছে এবং তাদের ভাগ্য আসলেই খুব ভালো। যাইহোক শাকিলের বাবার পেনশনের বাকি ৫ লাখ টাকাও এখন দিয়ে দিতে হবে। নয়তো শাকিলকে তো একেবারে মেরে ফেলবে।