নাটক রিভিউ "উড়ে যায় বকপক্ষী" ১৪ তম পর্ব
আজ বৃহস্পতিবার
আজ
বৃহস্পতিবার ২০২৪
কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমি আপনাদের দোয়ায় মোটামুটি অনেক ভালো আছি। সকলকে শুভকামনা জানিয়ে শুরু করছি নতুন একটি পোস্ট। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি নাটক রিভিউ নিয়ে। নাটকের নাম 'উড়ে যায় বকপক্ষী', যা আমার অতি প্রিয় একটি নাটক। নাটকটির মূল পর্ব ২৬ টি। আজ আমি আপনাদের মাঝে ১৪ তম পর্ব রিভিউ আকারে শেয়ার করব। আশা করি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে।
❤️স্ক্রিনশট: ইউটিউব❤️
নাম | উড়ে যায় বকপক্ষী |
---|---|
রচনা | হুমায়ূন আহমেদ |
পরিচালক | হুমায়ূন আহমেদ |
অভিনয়ে | মেহের আফরোজ শাওন,রিয়াজ,চ্যালেঞ্জার,মাসুম আজিজ,ফারুক আহমেদ,স্বাধীন খসরু,এজাজুল ইসলাম,ড. ইনামুল হক,সালেহ আহমেদ সহ আরো অনেকে। |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
ধরণ | হাস্যরসাত্মক এবং সামাজিক |
পর্বের সংখ্যা | ২৬ |
রিভিউ | ১৪ তম পর্ব |
দৈর্ঘ্য | ২০ মিনিট ৫৫ সেকেন্ড |
প্ল্যাটফর্ম | ইউটিউব চ্যানেল @NTVNatok |
প্রধান চরিত্রেঃ
চ্যালেঞ্জার (ফজলু চাচা)
মেহের আফরোজ শাওন (পুষ্প)
ফারুক আহমেদ (তৈয়ব)
মাসুম আজিজ (মজিদ মিয়া) সহ আরো অনেকে
অনেকদিন পর আবার মজিদ মিয়ার গ্রামে মর্জিনা নামক মেয়েটার দেখা মিলল। রাস্তার মধ্য দিয়ে সোজা এসে উপস্থিত হলো সোলায়মান মাতুব্বরের বাড়িতে। সোলায়মান তাকে আগে কখনো দেখেনি। সে বিভিন্ন ফন্দি করে তার কাছে আশ্রয় গ্রহণ করলো এবং তার নাম জানতে চাইলে সে তার নাম বলল ফুলেশ্বরী । সে কোন জায়গায় কূলকিনারা না পেয়ে নতুন কোন ফন্দি খাটিয়ে সোলাইমানের বাড়িতে উপস্থিত হয়েছে, আর তার এই উপস্থিত হওয়ার পিছনে অবশ্যই কোন কারণ রয়েছে। সোলায়মান সাহেব খুবই সহজ সরল এবং দয়ালু মানুষ। তার মুখের মিথ্যা কথাগুলোকে সত্য ধরে নিয়ে তাকে আশ্রয় দিল। এটাও সে বলল তার বিবিজান বাড়িতে নেই সে আসলে যদি তাকে থাকতে দেয় থাকতে দিবে আর যদি না থাকতে দেয় তাহলে তাকে চলে যেতে হবে। কিন্তু এই মেয়েটা কোনরকম তার বাড়িতে ঢুকতে পারার চেষ্টা করছে মিথ্যা বলে। সে তাকে জানাই একদিন থেকেই চলে যাবে। পথের মধ্যে কিছু চ্যাংড়া ছেলেপেলে তাকে ঝামেলা করছিল তাই তার বাড়িতে আশ্রয় নিতে এসেছে। আর এভাবেই ফুলেশ্বরী অর্থাৎ মর্জিনা এসে আশ্রয় গ্রহণ করল সোলায়মানের বাড়িতে।
এদিকে এলাকার চেয়ারম্যান এর সাথে মারামারি করে বৈদেশিক হাসানের মনটা তেমন একটা ভালো নয়। একদিকে ফজলু চাচা গানের দলে যুক্ত হতে পারেনা মাথার সমস্যার কারণে। তৈয়ব পালিয়ে বেড়ায় গ্রামে নারীঘটিত এক কারণে। আবারো জালাল খার আবির্ভাব ঘটেছে অসুস্থ অবস্থায়। বিভিন্ন কারণে যেন কারোর মন মানসিকতা ভালো নেই। এজন্য বৈদেশি তার গিটারটা সাথে নিয়ে নির্জনে এক অন্ধকারে গাছ তলায় বসে বাজাতে শুরু করে। হঠাৎ তার পাশে মজিদ মিয়া এসে উপস্থিত হন। কি যেন বলবো বলবো আকুতি মিনতি করতে থাকে কিন্তু বলতে চায় না। কিন্তু কথায় কথায় বলে ফেলে তার কোন সন্তান নেই ছেলেমেয়ে নেই। তখনই হাসান বলে বসলো তাহলে পুষ্প কে? পুষ্প কি তার মেয়ে নয়? কিন্তু লক্ষ্য করা গেল মুজিব মিয়া খুব ভয় পেয়ে চাওয়ার মতো হলো এবং বলতে চাইলো না। পরবর্তীতে জানালো সে অন্য কোন একদিন বিস্তারিত তাকে বলবে।
এদিকে জালাল খার অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। তার কি সমস্যা সে নিজেও বলতে পারেনা। তবে প্রচন্ড জ্বর সর্দি কাশি লেগে রয়েছে। এমন অবস্থায় তার সেবা প্রদান করছেন পুষ্প। কিন্তু জালাল খার মনের মধ্যে রয়েছে গানের চিন্তা। পুষ্পর গাওয়া যমুনার জল গানটা তার মনের মধ্যে অটোমেটিক বেজে ওঠে। সে ওস্তাদ কে বলেছিল গানের আয়োজন করতে কিন্তু গানের আয়োজন করার মত পরিবেশ পরিস্থিতি নেই এখন। যে সমস্ত সদস্যরা মিলে গানের আয়োজন করা হয় তারা একেক জন একেক সমস্যায় জর্জরিত। তাই গানের আসর জমানো সম্ভব হয়ে ওঠেনি। এদিকে পুষ্প তাকে সেবা প্রদান করছে এবং বলছেন সে অন্য চিন্তা না করে দ্রুত সুস্থ হওয়ার চিন্তা করুক। গান-বাজনা পরেও করা সম্ভব হবে।
তৈয়ব মিস সেলিনা বেগমকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে কবুল পড়িয়ে বিবাহ করে নিয়েছে। কিন্তু তার দুলাভাই কোন মতেই এই বিষয়টা মন থেকে মানতে পারেনি। আর তৈয়বের মত মানুষকে কখনো এসে পছন্দ করে না, তাই যখন তখন দাও দিয়ে তাড়া করতে থাকে তৈয়বকে। এজন্য সেলিনার বেশ মন খারাপ। তাই সে খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে রেখেছে। বোন দুলাভাই একটু বকাঝকা করলে সে রাতে বের হয়ে পড়ে, বাগানের দিকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কান্না করে। পরবর্তীতে তার বোন এসে খুঁজে নিয়ে যায়। কিন্তু তার দুলাভাইয়ের ভয়েতে তৈয়েবের অবস্থা খুবই খারাপ। তৈয়ব পথে ঘাটে চলতে বোরকা পরে বের হয়। সারাদিন বোরকার মধ্যে থেকে তার শরীর ঘেমে গেছে গন্ধ হয়ে গেছে, তাই সে মনে করেছিল ফজলু ভাই যেই জায়গায় পুকুরের মধ্যে জল চিকিৎসা করছে নিজেকে, সেখানে একটু গোসল করবে। এখানে হাস্যকর বিষয় ফজলুকে যখন সে প্রশ্ন করল পানির ঠান্ডা না গরম। ফজলু পানির মধ্যে থাকা সত্ত্বেও হাত দিয়ে বারবার পরীক্ষা করে দেখলো পানি ঠান্ডা না গরম এরপর উত্তর দিল পানি ঠান্ডা। পুকুরের পানি ঠান্ডা জেনে তৈয়ব অনেক খুশি হল। সে ফজলুর সাথে গোসল শুরু করে দিল।
এদিকে বৈদেশিক চেয়ারম্যানের সাথে মারামারি করেছে এই জন্য চেয়ারম্যান তার নামে দাঙ্গা-হাঙ্গামার কেস দিয়েছে। পুলিশ এসে বৈদেশিকের ধরে নিয়ে যায়। আর এই ঘটনাটা দিনের বেলায় তৈয়ব জানতে পেরে ফজলুর কাছে বলতে যাই। ফজলু ততক্ষণে পানির মধ্যে জল চিকিৎসা করছিল। কারণ ফজলু জানে মাছ ব্যাঙের সর্দি কাশি হয় না তাদের সব সময় জল চিকিৎসা চলে বলে। তাই নিজেকে জল চিকিৎসা করার জন্য সারাদিন পানির মধ্যে সারারাত পানির মধ্যে রাখার চেষ্টা করে ফজলু চাচা। যখন সে জানতে পারলো বৈদেশিকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে কিন্তু সে পাগলা মানুষ উল্টা ভাবল বৈদেশিকে পুলিশে মেরে ফেলেছে। তাই সে বারবার আর্তনাদের সাথে বলতে থাকলো বৈদেশিকে পুলিশে মেরে ফেলেছে।
বৈদেশিক এ পুলিশে ধরে নিয়ে গেছে এই বিষয়টা তৈয়ব সোলাইমান সাহেবের কাছে বলতে যাই। সেখানে মর্জিনা অর্থাৎ ফুলেশ্বরী উপস্থিত ছিল। বিষয়টা সে জানতে পারে। এরপর গোপনে তয়ব কে মিথ্যা বলতে থাকে ফুলেশ্বর। সে বলতে থাকে সোলাইমান তাকে বিবাহ করে এনেছে, তার প্রথম পক্ষের ছেলের মেয়ে হয় না এই কারণে তাকে বিয়ে করেছে। তার শখ ছিল চ্যাংড়া কম বয়সী পুরুষের সাথে বিয়ে করার কিন্তু কপালের লিখন কি আর করা যাবে। এভাবে মিথ্যা কথা তৈয়েবের কানে প্রচার করলো মর্জিনা। তাই তৈয়ব মনে মনে ভাবতে থাকলো,মানুষটা তো খারাপ ছিল না কিন্তু এমন একটা কাম করলো কিভাবে।
এদিকে বৈদেশির ঘটনা শোনার পর ফজলুর মাথায় আর কাজ করছে না। সে পুষ্প এর কাছে ছুটে গেল বৈদেশীর বিষয়টা জানানোর জন্য। কিন্তু পুষ্প বললো বৈদেশিকে পুলিশে মেরে ফেলে নাই, ধরে নিয়ে গেছে। উস্তাদ জালাল এবং সোলাইমান ব্যবস্থা নিবে। এই নিয়ে ফজলু চাচার টেনশন করার কোন প্রয়োজন নেই। হঠাৎ পুষ্প তাকে চা বানিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করল। আরো দুজনা গল্প করার মুহূর্তে ফজলু বলে বসলো তুই অনেক ভালো মেয়ে পুষ্প কিন্তু তোর মা ভালো ছিল না। আর ঠিক এভাবে কথা বলতে বলতে একটা মুহূর্তে ফজলু চাচার মুখ দিয়ে বের হয়ে আসে পুষ্পর মা খারাপ মহিলা ছিল, ওস্তাদ মজিদ তাকে টুকায় আনছে। সে ওস্তাদ মজিদের মেয়ে নয়। এভাবে আরো অনেক কিছু জানতে পারলো পুষ্প ফজলুর মুখে। পূর্বে সে অনেক কিছু একটু একটু করে শুনে ছিল আজকে ফজলুর মুখে এই সমস্ত কথা শুনে যেন সে সমস্ত কথাগুলো মনের মধ্যে ভেজে আসলো। তাই পুষ্পর মনটা খুবই খারাপ হয়ে গেল এবং সে খোঁজ করতে থাকলো মনে মনে তাহলে তার মা কে? ফজলু আরো বলেন তার মা গোপনে তাকে দূর থেকে দেখে যায়। এরপর ফজলুর মুখ বন্ধ করলো। কারণ পূর্বে নিষেধ আছে সবকিছু যেন তাকে না বলা হয়। আর এভাবে হতাশ নয়নে তাকিয়ে থাকলো পুষ্প আর ভাবতে থাকলো তার জীবন বৃত্তান্ত নিয়ে।
এই পর্বে আমরা লক্ষ্য করে দেখেছি ফজলু চাচার জল চিকিৎসা, তৈয়ব আলীর বোরকার মধ্যে থেকে নিজেকে পলিয়ে রাখা। সেলিনা বেগমের তৈয়বের প্রতি টান। চেয়ারম্যানের মিথ্যা অভিযোগে বৈদেশিকে পুলিশে ধরে নিয়ে যাওয়া, ফজলু চাচা গল্পে গল্পে পুষ্পর জীবনের সত্য ঘটনা বলে ফেলল। আর এখানে সবার অভিনয় নিজ নিজ অবস্থান থেকে বেশ দুর্দান্ত ছিল। যে অভিনয় দেখলে মনে হয় না অভিনয়। যেন মনে হয় একদম বাস্তব মানুষের জীবনধারা। যেন এখনকার নাট্যকারদের মধ্যে এমন নিখুঁত অভিনয় খুঁজে পাওয়া যায় না। আর গ্রামীন পরিবেশে অভিনয়গুলো যেন একদম বাস্তব দৃশ্য তুলে আনে। তাই প্রত্যেকটা সংলাপ ও চরিত্রের অভিনয়ের বেশ ধারণ। তবে পূর্বের মতো সব সময় ভালো লাগে তৈয়ব আর ফজলু চাচার সংলাপ। তাই এক্ষেত্রে বলতে পারি এদের অভিনয় আছে বলে নাটকের সার্থকতা রয়েছে। এই দুইজনার অভিনয় আর সংলাপ যেন দর্শকের মনের প্রশান্তি। তবে আগামী পর্বে হয়তো আমরা নতুন কোন কিছু দেখতে পারবো মর্জিনার জন্য বৈদেশীর জামিনের ব্যবস্থা কি হয় না হয় এবং পুষ্পের রিঅ্যাকশন কেমন হয়। পুষ্পর জীবনের বাস্তবতা সত্যি সবার জন্য মনে আঘাত লাগার মত। কারন সে নাটকের মধ্যমণি।
রিভিউটা ভিজিট করার জন্য ধন্যবাদ।
আমি মোছাঃ সিমরান জারা। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সদস্য সুমন জিরো নাইন এর পরিবার। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর। আমি একজন গৃহিণী। আমি ফটোগ্রাফি, রেসিপি পাশাপাশি ব্লগ করতে বেশি পছন্দ করে থাকি। এছাড় বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করতে ভালো লাগে। আমি এসএসসি পাশ করেছি। গাংনী ডিগ্রী কলেজে অধ্যায়ণরত রয়েছি।
অনেক সুন্দর একটি নাটক রিভিউ করতে দেখে বেশ ভালো লাগলো আমার। এ নাটকটা আমারও খুব ভালো লাগে। তাই সুযোগ পেলে আমিও দেখার চেষ্টা করি। অনেক অনেক ভালো লেগেছে নাটকটা রিভিউ করে আমাদের মাঝে শেয়ার করতে দেখে।
দেখতে দেখতে উড়ে যায় বকপক্ষী নাটকের ১৪ তম পর্ব শেষ হয়ে গেল। আপনি একে একে অনেক সুন্দর করে এই নাটকের পর্বগুলোর রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করছেন। আপনার শেয়ার করা এই নাটকের এতগুলো পর্বের মধ্যে অনেকগুলো পর্বের রিভিউ আমার পড়া হয়েছে। অপেক্ষায় থাকলাম এখন এই নাটকের 15 তম পর্বের রিভিউ পড়ার জন্য। আশা করছি অনেক তাড়াতাড়ি শেয়ার করবেন।
অনেক সুন্দর হয়েছে এই নাটকের রিভিউ। খুবই সুন্দর করে আপনি নাটকটার ১৪ নাম্বার পর্ব শেয়ার করেছেন। এই নাটকের আরো কয়েকটা পর্বের রিভিউ আমার পড়া হয়েছে। আজকে আপনি অনেক সুন্দর করে দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করেছেন। এখন আমি অপেক্ষায় থাকলাম এই নাটকের 15 তম পর্বটা পড়ে নেওয়ার জন্য। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কাহিনীটা কি হয়।
আপনি খুব সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ পোস্ট শেয়ার করেছেন।নাটকের কাহিনী পড়ে দেখার আগ্রহ বেড়ে গেল।সময় করে নাটকটি দেখে নিব।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।