দাদার আশীর্বাদ
আপনারা অনেকেই আশীর্বার বিষয়টা হয়ত জানেন না।তাদের জন্য বলি, আশীর্বাদ হল আমারের সনাতন ধর্মে বিয়ের আগের একটি আনুষ্ঠানিকতা। সাধারণত এই দিনে বিয়ের কথাবার্তা ফাইনাল করে,বিয়ে পাকাপাকি করা হয়। এবং ছেলে কে মেয়ের বাড়ির লোকজন কিছু উপঢৌকন দিয়ে যায়। আমার দাদা,পল্লব।আমার জ্যাঠাতো ভাই। আমাদের পরিবারের সব থেকে বড় ছেলে। দাদার বিয়ের কথাবার্তা চলতেছে।তবে কিছুতেই ফাইনাল হচ্ছিল না। কিছুদিন আগে পাত্রী দেখে আসলাম।দাদার পছন্দ।কিন্তু আমার দিদিত আবার একটু অমত ছিল।এবার দাদা আমাকে বলে বাড়ির লোকজন দের ম্যানেজ করতে। আমার বাড়িতে আমি দ্বিতীয়।তবে দাদার তুলনায় বাড়িতে আমার প্রভাব বেশি। সবার সাথেই আমার সুসম্পর্ক বিদ্যমান। তাই দায়িত্বটা নিজ কাধে নিলাম।এবং বাকি সবাইকেই রাজি করিয়ে ফেললাম। তবে এবার আবার মেয়ের বাড়ির লোকজন গরিমসি শুরু করল।এখন বিষয়টা স্বাভাবিক৷ কথায় আছে বিশ কথা ছাড়া নাকি বিয়ে হয়না। পরে পরিবারের বড়রা কথা বলে সব ঠিকঠাক করে নিল। এরপর খোজখবর নিয়ে সব ঠিকঠাক মনে হওয়ায় বিয়ের কথা পাকাপাকি করার জন্য মেয়ের বাড়ির লোকজন আসতে চায়।কিন্তু আবার বাধা হয়ে দাঁড়ায় দাদার ছুটি। দাদা কিছুতেই ছুটি পাচ্ছিল না। অবশেষে ঠিক হয় ঈদের ছুটিতে দাদা আসলেই বিয়ে পাকা করা হবে। অবশেষে গতপড়শু ছিল সেই শুভ দিন। মেয়েদের বাড়ি থেকে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমরাও সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। সকাল সকাল মা, কাকিমারা সবাই দাদা দের বাড়ি গিয়ে রান্না ও বাকি প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ফেলে। কনের বাড়ির লোকজন আসে দুপুরে। প্রথমেই তাদের চা নাস্তা দিয়ে আপ্যায়ন করা হল। এরপর উনারা আশেপাশে ঘুরে দেখলেন। তারপর বিকেল চারটা নাগাদ আশীর্বাদ এর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হল। প্রথমে মেয়ের বাবা স্বর্ণের চেইন দিয়ে দাদাকে আশীর্বাদ করলেন।তারপর মেয়ের বাড়ির বাকি সবাই একে একে বিভিন্ন উপঢৌকোন দিয়ে ও মিষ্টি খাইয়ে আশীর্বাদ করলেন। দাদার পাশে থাকায় আমাকেও মিষ্টি খেতে হচ্ছিল।আর পাশে থেকে তো কাকিরা বারবার খোচা দিচ্ছিল এই বলে যে,"এরপর তো তোমার পালা,এই বেলা শিখে নাও"। আমিও হাসতে হাসতে বলছিলাম পাত্রী তো দেখাই আছে, দাদার বিয়ে টা হলেই সরাসরি বাড়ি নিয়ে আসব।এত অপেক্ষা করতেই পারব না। হাহাহাহা। এর মাঝে আবার হবু বৌদি বার বার ফোন করে খোজ খবর নিচ্ছিল।কিছুক্ষণের মাঝেই সব কাজ সুন্দর ভাবে সম্পন্ন হয়ে গেল। এবং সর্বশেষ ছেলের মামা এবং মেয়ের মামার মাঝে পানের বাটা বদলের মাধ্যমে সব কিছু পাকাপাকি হয়ে গেল। বিয়ের তারিখ ও মোটামুটি ঠিক হল। কুরবানী ঈদের ছুটির মাঝেই শুভ বিবাহ সম্পন্ন হবে।এরপর খাওয়া দাওয়ার পালা।তবে আমি পুরোটা সমত এত ব্যস্ত ছিলাম যে ছবি ও তুলতে পারি নি।
|
---|
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
অভিনন্দন পল্লব দাদার প্রতি ৷ কি বড় দাদার তো হলো তোমার টা কবে হবে শ্যাম দাদা ৷
তবে এটা ঠিক বিশ কথা না বিয়ে হবেই না ৷ কত কথা বলাবলি তারপর না হয় ৷ পল্লব দাদার আর্শিবাদে বিয়ের দিন নিশ্চয়ই ধার্য হয়েছে ৷ এখন শুধু সেই দিনের অপেক্ষা৷
শুভকামনা রইল অবিরাম ৷
যাক অনেক ঝামেলা সমস্যার পর আপনার দাদার বিয়েটা তাহলে হচ্ছে। যদিও যা বুঝলাম এখানে আপনার একটা ক্রেডিট আছে আপনার পরিবারের অন্যদের ম্যানেজ করার ক্ষেএে। সবাই তাহলে আপনার সাথেও মজা নিয়েছে। তা ভাই সত্যি কী মেয়ে দেখা আছে?? দেখা থাকলে ভালো বাড়ির লোকের কষ্ট হবে না মেয়ে খুজতে হবে না হা হা।
হ্যা ভাই মেয়ে দেখা আছে সত্যই। বাড়ির লোকের কষ্ট বাচিয়ে দিয়েছি। হাহাহা। ধন্যবাদ ভাই সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
খুবই আনন্দঘন একটা মুহূর্ত কাটিয়েছেন দেখছি দাদার বিয়ে উপলক্ষে। মেয়ে যখন দেখা আছে আপনিও শাদী মোবারক করে ফেলুন। যাই হোক বেশ ভালো লাগলো আপনাদের এই সুন্দর আয়োজন বিবাহের অনুষ্ঠান আর অনেক অজানা জিনিস জানতে পেরে।
ভাই বেকার তো।দোয়া করেন একটা ভাল কিছু হলেই শাদী মোবারক সেরে ফেলব। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
টুইটার লিংক
আপনি তাহলে বিয়ে ম্যানেজ করার প্রধান মাতব্বর, তাই তো ভাই? হা হা হা..🤭 তবে ভালো লাগছে এটা জেনে যে টুকটাক ঝামেলা হলেও শেষ পর্যন্ত বিয়েটা হচ্ছে। আর এরকম টুকটাক ঝামেলা সব জায়গাতেই হয় বিয়ের আগে। তাছাড়া একটা কথা জানতে খুব ইচ্ছা করছে, আপনার কি সত্যি মেয়ে দেখা আছে নিজের জন্য, নাকি আমাদের সাথে মিথ্যে বললেন...?🤔
না না সত্যই মেয়ে দেখা আছে। হ্যা বাড়িতে আমার মতামত একটু আধটু শোনা হয়। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য দাদা।
বাহ! বেশ ভাল ব্যাপার ভাই। তাহলে তো খুব শীঘ্রই খুশির খবর পেতে যাচ্ছি আপনার কাছ থেকে।