ছুটি শেষ,ফেরার পালা
জীবন হল সময়ের সমষ্টি মাত্র। এই সময় অসীম নয়৷ আবার মেয়াদ যে কতক্ষণ পর্যন্ত তাও জানার উপায় নেই। অনেকেই এই সময় কাটায় জীবন নিয়ে অভিযোগ করে,আবার অনেকেই কাটায় সব কিছু মেনে নিয়ে প্রত্যেকটি মুহুর্ত কে উপভোগ করে। আমি দ্বিতীয় দলে। আমার বন্ধুরাও অনেকটা আমার মত।
একসময় সারাদিন একসাথে থাকতাম। কিন্তু বর্তমানে সময়ের ফেরে সবাই এখন যার যার মত দেশের এক এক প্রান্তে আছি৷ বছরে খুব কম সময়ই একসাথে হবার সুযোগ পাই আমরা।সব থেকে বেশি সময় পাওয়া যায় রোজার ঈদে। রোজার ঈদেই বেশি ছুটি থাকে।প্রতিবার ঈদই আমরা দারুন উপভোগ করি।
তবে সব সুখেরই শেষ আছে। আস্তে আস্তে ভাল সময় গুলো শেষ হয়ে আসে,এক্ষেত্রে ছুটি শেষ হয়ে আসল। সবাইকে আবার ফিরে যেতে হবে নিজের গন্তব্যে। আবার কবে সবাই এক হব,আদৌ এক হতে পারব কিনা তার কোন নিশ্চয়তা নেই। তাই সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হল সবাই যাবার আগে আরেকবার একটা ছোট খাট গেট টুগেদার করা হবে।
তবে নাফিজ এর ছুটি ঈদের অনেক আগেই শেষ। ওকে অনেক মিস করতেছিলাম আমরা।ছিলাম শুধু আমি,তানভীর,শিমুল,এনামুল মামু আর মিয়াদ। তারপরেও যারা সামনে আছে তাদের নিয়েই আয়োজন করা হল। তানভীর,শিমুল কে আপনারা চেনেন। এনামুল আর মিয়াদ কে আগে কখনো দেখেন নি। এনামুল আমাদের ফ্রেন্ড হলেও ঠিক ফ্রেন্ড বলা যায়না। কারন এনামুল আমাদের এক বছরের সিনিয়র। তানভীর এর মামার বাড়ির ওদিকে ওর বাড়ি।
আমাদের সাথে মেন্টালিটির মিল হওয়ায় আমাদের সাথে মিশতে মিশতে এখন প্রায় বন্ধুর মতই হয়ে গেছে।আমরা প্রায় বন্ধুর মতই মিশি,তবে তার সিনিয়রিটির সম্মান দেই আমরা সবাই।মামু বলে ডাকি আমরা। মামু অনেক ভাল একজন মানুষ।আর মিয়াদ আমাদের ক্লাসমেট ছিল।যাই হোক এই কয়জন মিলেই একসাথে হয়ে আড্ডা দেব। এটাই ঠিক হয় সময় ঠিক করা হয় শেষ বিকেলে আর জায়গা আমাদের কলেজ মাঠ।
সেই অনুযায়ী সবাই পৌছে যাওয়া হল। কিন্তু আমার কাজ থাকায় আমার দেরি হচ্ছিল। তাই মামু এসে বাইকে করে নিয়ে গেল। গিয়ে দেখলাম নতুন মেহমান হিসেবে তানভীর এর মামাতো বোন তুবা ও এসেছে। সময় কত দ্রুত চলে যায়। কিছুদিন আগেই ওর বাবার বিয়ে খেয়ে আসলাম।সেই মেয়ে এখন ক্লাস ফোরে পড়ে। যাই হোক তানভীর দায়িত্ব নিয়ে খাবারের ও ব্যবস্থা করেছিল।যদিও পরে আমরাও কন্ট্রিবিউট করেছি।কারন একা ওর পক্ষে সব খরচ বহন করা চাপের। মেনুতে ছিল বিরিয়ানী আর বুটের ডাল।সেই সাথে পেয়াজু। তবে পেয়াজুটা কেউ খেতে পারলাম না।
পেয়াজু এনেছিল শিমুল। খুব গর্ব করে বলছিল বেস্ট পেয়াজু। কিন্তু পেয়াজুর এত বাজে অবস্থা যে কেউ পেয়াজুতে দাত বসাতে পারলাম না,ফলে ফেলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।তখনই সামনে দুইটি কুকুর চলে আসে। তাই নষ্ট না করে পেয়াজু গুলো কুকুর কে দেওয়া হল। তারাও মুখ বাকিয়ে চলে গেল।এই দৃশ্য দেখে শিমুলের মুখ একদম কালো হয়ে গেল।আমাদের আর কিছু বলা লাগল না। হাহাহাহা। এরপর খাওয়াদাওয়া শেষে কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে সবাই বাড়ি চলে আসলাম।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সময়ের সাথে আমাদের জীবন সত্যি ভিন্নতায় রূপ নেয় ভাইয়া।বন্ধুত্ব ঠিক থাকলে এরকম মাঝে মাঝে এক হওয়া যায়।জীবিকার তাগিদে সবাই সবার মত করে নিজ গন্তব্যে চলে যায়।তবে মাঝে মাঝে এরকম আয়োজন বন্ধুদের নিয়ে করতে পারলে বেশ ভালই লাগে।বন্ধুদের সাথে ছুটির শেষ মুহুর্তের কাটানো কিছু সুন্দর অনুভুতি শেয়ার করার জন্যে ধন্যবাদ।
এনামুল আমাদের ফ্রেন্ড হলেও ফ্রেন্ড বলা যায়না। কারন এনামুল এক বছরের সিনিয়র। আসলেই সব বন্ধু-বান্ধব একসঙ্গে তেমন একটা দেখা করা যায় না ।সম্ভবত রোজার ঈদের ছুটিতে হয়তো ভাগ্যবশতর কারণে দেখা হয়ে যায় । ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
ভালো সময়গুলো খুব তাড়াতাড়ি পার হয়ে যায়। আর সেই সময়গুলো আবার কবে ফিরে আসবে বা আদৌ ফিরে আসবে কি না তা জানা নেই। তবুও তো সবাই আশায় বুক বাঁধে। যাইহোক আপনাদের কাটানো এই মুহূর্ত পড়ে খুব ভালো লেগেছে। তবে মজা পেলাম শিমুল ভাইয়ের পেঁয়াজু আনা এবং সেটা না খেতে পারার বিষয়টা নিয়ে।
আমি মনে করি, যারা সবকিছু মানিয়ে নিয়ে প্রত্যেকটা মুহূর্তকে উপভোগ করে তারাই বুদ্ধিমান। আসলে আমাদের সবার ক্ষেত্রেই একই রকম হয়। প্রত্যেকের বন্ধু-বান্ধব বাইরে থাকে এবং তাদের সাথে খুবই কম দেখা হয়। তবে আপনারা সবাই মিলে বিরিয়ানি এবং বুটের ডাল খেয়েই ঠিক কাজ করেছেন, এই গরমে পেঁয়াজু খেলে অবস্থা খারাপ হয়ে যেত।
তবে এই হিসাবটা আমি কোন প্রকারেই মিলাতে পারলাম না ভাই। হা হা হা...😂😂