বিড়ম্বনা
বর্তমান যুগ প্রযুক্তির যুগ। প্রযুক্তি এত দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে যে আপনি আজকে একটি জিনিস কিনলেন সেটা কয়েকদিন পরেই তা ব্যাকডেটেড হয়ে যাবে।এজন্য মাঝে মাঝে কোন কিছু কিনতেই ইচ্ছা করে না,মনে হয় কয়দিন পর কিনি। কয়দিন পরেই নতুন মডেল আসবে সেটাই নাহয় কিনব।কয়দিন পর আবার সেই একই কথা মনে হয়।
আমার ফ্রি টাইমের পুরাটাই প্রায় কাটে ইউটিউবে। নানা ধরনের ভিডিও দেখে। আর আমি লাউডে কিছু শুনতে পারি না। একটু পর মাথা ব্যাথা শুরু হয়।তাই একটা ইয়ার ফোন ছাড়া চলে না। আমি যে ইয়ারফোনটি ব্যবহার করছি সেটার নাম mi dual driver. ইয়ারফোনটি প্রায় দুইবছর সার্ভিস দিল। এখনো সবই ঠিক আছে।কিন্তু পিন টি ক্ষয় হয়ে যাওয়ার কারনে বারবার ফোন থেকে খুলে আসে।
আর এমন বারবার খুলে আসলে বিরক্ত লাগে। তাই ভাবলাম এবার একটা ইয়ারফোন কিনেই নেই।ইয়ার ফোন কিনতে গিয়ে দেখি প্রায় কাছাকাছি দামে বেশ ভাল মানের ইয়ার পড পাওয়া যাচ্ছে।তখন ভাবলাম আরে যখন একই দামে ইয়ার পড পাচ্ছি তখন কেন ব্যাকডেটেড হব? তখন ইউটিউবে ঘাটাঘাটি শুরু করলাম।
ঘাটাঘাটি করতে করতে joyroom jr-t03s pro ইয়ার পড টি পছন্দ হয়। জয়রুম বেশ পরিচিত একটি ব্র্যান্ড। আর ইয়ার পডের ডিজাইন,স্পেসিফিকেশন ভাল লাগল। দারাজে দেখলাম অফার চলছে।তাই অর্ডার করেই ফেললাম।সব সহ আমার খরচ হল ১৯০০ টাকা।কিন্তু যাই হোক আমি খুশি, কারন পছন্দের জিনিসটি হাতে পাব দুইদিন পর।
প্রিয় জিনিস এর জন্য অপেক্ষা করলে সময় যেন কাটতেই চায় না।দুই দিন পর ইয়ারপড টি হাতে পেলাম। হাতে পাওয়ার পর আমি খুবই উত্তেজিত ছিলাম।বাড়িতে গিয়ে খুলে দেখার তর সইছিল না।কিন্তু ভাবলাম একটি আনবক্সিং ভিডিও বানানো যাক। ভিডিও বানানোর এক পর্যায়ে দেখলাম ইয়ার পডের বক্সে joyroom jr-t03s pro লেখা থাকলেও ইয়ার পডের গায়ে লেখা আছে joyroom t-03pro।বিষয়টি দেখে আমার মাথা গরম হয়ে গেল।
মাথা গরম না হওয়া টাই অস্বাভাবিক। যে জিনিসের জন্য এতদিন অপেক্ষা করলাম সেটা না পেয়ে অন্য কিছু পেলে রাগ হবেই। আর jr-t03s pro লেটেস্ট ভার্সন, যেখানে jr-t03 pro পুরাতন ভার্সন। তাহলে আমি কেন টাকা দিয়ে পুরাতন ভার্সন নেব? তার থেকেও বড় কথা এটা বাটপারি।একটা দেখিয়ে আরেকটা কেন পাঠানো হবে?
আমি সাথে সাথেই দারাজ কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করি,উনারা কোন সমাধান করতে পারলেন না তখন আমাকে সেলারের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিলেন।আমি সেলারের সাথে যোগাযোগ করলে উনি তো কোন সমাধান দিলেনই না উলটো আমাকে বুঝেতে লাগলেন যে আমি মিথ্যা বলছি,উনি নাকি আরো অনেকগুলো প্রোডাক্ট খুলে দেখেছেন সব ঠিক আছে।তখন আমি বললাম ভাই আমার কাছে ভিডিও আছে।এরপর উনার আর কোন কথা নেই।
পর পর দুইদিন যোগাযোগ করলেও উনি আর রিপ্লাই দেন না।এবার আবার দারাজ কাস্টমার কেয়ারে আবার যোগাযোগ করলে তারা প্রোডাক্টটি রিটার্ন করতে বলেন।আমি তাদের থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা নিয়ে পরের দিনই প্রোডাক্টটি রিটার্ন করে দেই। এখন আমাকে সাতদিন অপেক্ষা করতে হবে আমার টাকা ফেরৎ পাওয়ার জন্য।আর আমার এই ক্ষতির জন্য দায়ি কে? কেন আমাকে এই বিড়ম্বনায় পড়তে হবে? এর কোন উত্তর নেই। না সেলার উত্তর দিতে পারল, না দিতে পারল দারাজ কাস্টমার কেয়ার।
OR
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
এটা বাংলাদেশের খুব কমন একটা সমস্যা। বাংলাদেশের আনাচে কানাচে এধরনের বাটপার ঘুরে বেড়ায়, তবে অনলাইন মার্কেটপ্লেস এরা এখন এই কারসাজি শুরু করেছো। এরকম চলতে থাকলে একসময় এদের উপর আর আস্থা থাকবে না। যাই হোক আপনি দ্রুত এই বিপদ থেকে উদ্ধার হোন এই কামনা করছি। আর পরামর্শ থাকবে এগুলো থেকে প্রডাক্ট না কেনার।
ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার মূল্যবান পরামর্শের জন্য।ভবিষ্যতে মেনে চলার চেষ্টা করব।
বর্তমান অনলাইনে যে কোন জিনিস কেনার ক্ষেত্রে এটাই অনেক বড় ঝুঁকি । আপনি যেটা পছন্দ করবেন দেখা গেছে প্যাকেট খুলে অন্যটা দিয়ে দিয়েছে। তখন মেজাজ খারাপ হওয়াটাই স্বাভাবিক এরকম ঘটনা আমার ক্ষেত্রেও হয়েছে খারাপ লাগলো ভাই । হয়তো তারা মনে করে জিতে গিয়েছে কিন্তু তাদের কাস্টমার এভাবে দিন দিন কমে যাবে সেই ধরনের চিন্তা ভাবনা তাদের মাথায় নেই। বিজনেস পলিসি একদমই খারাপ।
ঠিক বলেছেন।আমিই তো আর এরপর অর্ডার করব না।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যের জন্য।