শুভ নববর্ষ
প্রথমেই সবাইকে জানাই বাংলা নববর্ষের অনেক শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা।বাঙালিজাতি উৎসব প্রিয় জাতি। বলা যেতে পারে বারো মাসে তের পার্বন। প্রতি মাসেই কোন না কোন অনুষ্ঠান লেগে আছেই। এই অনুষ্ঠান গুলোর মাঝে অনেকগুলো ধর্মীয়,আবার অনেকগুলো ধর্ম নিরপেক্ষ।তবে বাংলাদেশ ধর্মীয় নিরপেক্ষ দেশ বলে সকলেই সব অনুষ্ঠানে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করেন। আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।
ধর্মীয় অনুষ্ঠানের বাইরে যেসব অনুষ্ঠান আছেন তার মাঝে পহেলা বৈশাখ বা নব বর্ষ অন্যতম। বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্য হচ্ছে এই নববর্ষ। আমরা অনেকেই হয়ত জানি যে বৈশাখ মাসের প্রথম দিন নববর্ষ পালন করা চালু করেন সম্রাট আকবর।তবে এই ধারনা ভুল। আমিও প্রথমে ভুলই জানতাম।তারপর আমাদের বড় দাদার এক কুইজ থেকে জানতে পারি রাজা শশাঙ্ক প্রথম এটি চালু করেন।
পহেলা বৈশাখের পেছনে উৎসবের থেকে বেশি ছিল অর্থনৈতিক কারন। রাজারা খাজনা আদায় করত বছরের প্রথমে। কারন ফসল বিক্রির পর এই সময়েই কৃষকদের টাকা পয়সা থাকত। ফলে সহজেই তারা খাজনা আদায় করতে পারত। শুধু রাজা রাই যে এই সময়ে টাকা পয়সা আদায় করত তা নয়। এই সময় বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা হয় হালখাতা।
হালখাতা অর্থাৎ নতুন খাতা। কৃষক রা সারাবছর যে বাকি খরচ করেন তা এই নব বর্ষে পরিশোধ করে আবার নতুন হিসেব শুরু করেন।বর্তমানেও অনেক জায়গায় এই হালখাতা উৎসব চালু রয়েছে।প্রাচীন কালে নববর্ষের সাথে অর্থনৈতিক গুরুত্ব থাকলে বর্তমানে এটি বিশুদ্ধ আনন্দ অনুষ্ঠান হিসেবেই পালিত হয়।
পহেলা বৈশাখের সাথে পান্তা ইলিশ ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে গেছে।এটা ঠিক কিভাবে পহেলা বৈশাখের সাথে কিভাবে জড়িয়ে গেছে তা আমি ঠিক জানিনা।তবে অনেক ফেসবুক পোস্টে দেখলাম যে এই ট্রেন্ড টা শুরু করে ছায়ানট ১৯৮২ সালে ওদিকে। তবে যখনই চালু হোক বর্তমানে পহেলা বৈশাখের সাথে পান্তা ইলিশ মিশে গেছে শরবতের চিনির মত।
যেহেতু পান্তা ইলিশ বর্তমানে আমাদের পহেলা বৈশাখ পালনের সাথে মিশে গেছে তাই এটি ছাড়া পহেলা বৈশাখ অপূর্ণ থেকে যায়। এগুলা নিয়ে আলোচনা করছিলাম গত কাল ঐশীর সাথে। তখন ঐশী বলল,"জানেন বৃত্ত দাদা মা অনেক সুন্দর পান্তা আর আলুভর্তা বানাতে পারে।" আমি বললাম তাইলে তো দাওয়াত নেওয়া দরকার। তখন ঐশী বলল ঠিক আছে তাইলে আগামীকাল সকালে আমরা একসাথে পান্তা খাব নি।
তো সেই অনুযায়ী আজ সকাল বেলা ঐশী ফোন দিল। আমিও গিয়ে হাজির হলাম।গিয়ে দেখি কাকিমা সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে খাবার রেডি করেই রেখেছেন।তাই দেরি না করে সাথে সাথে সবাই একসাথে বসে পড়লাম।আসলেই দেখলাম সব গুলো আইটেম অসাধারণ সুস্বাদু হয়েছে। অনেকেই ভাবতে পারেন পান্তা তো আছে কিন্তু ইলিশ কই? আসলে ইলিশ ই হত,হয়নি আমার জন্য। আমি মাছ খেতে পারি না,সেই সাথে গন্ধও সহ্য করতে পারি না। তাই আমার যাতে কোন সমস্যা না হয় সেজন্য মাছ সরিয়ে ডিম এর ব্যবস্থা।সব কিছু অনেক সুস্বাদু ছিল,তাই বেশ মজা করেই খেলাম সবাই।
পরিশেষে নতুন বছর সবার সুখে সমৃদ্ধিতে ভরে উঠুক এই কামনার মাধ্যমে আমি পোস্টটি সমাপ্ত করলাম।
|
---|
টুইটার লিংক
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
শুভ নববর্ষ। বাংলা বছরের প্রথম দিনে বরণ করে নিতে পান্তা ভাত ইলিশ মাছের কোন বিকল্প নেই। আর প্রথম দিনের শুরুতেই কিন্তু ব্যক্তিকে আর নতুন খাতা খুলতো সেই থেকে হালখাতার কার্যক্রম। যাইহোক আপনাদের সুন্দর এই মুহূর্ত দেখে খুবই ভালো লেগেছে ভাইয়া।
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
ইশ এত সুন্দর আয়োজন মিস করে গেলাম। পান্তা ভাত খেতে আমার বরাবরই ভালো লাগে। আর সবাই মিলে যদি এমন আয়োজনে সামিল হওয়া যায় তাহলে তো কোনো কথাই নেই।যাইহোক বাংলা নববর্ষের অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল। আর @bristychaki বৌদির কাছে খাওয়াটা পাওনা থাকলো।
শুভ নববর্ষ ভাই। ঘরোয়া পরিবেশে চমৎকার মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন নববর্ষকে কেন্দ্র করে। নববর্ষ বাঙালি জাতির অন্যতম প্রধান। জাতি বর্ণ ধর্ম নির্বিশেষে এই দিনটি সকলে বেশ উৎসবের সাথে পালন করে থাকে। এত চমৎকার পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
বৈশাখের সাথে পান্তা ইলিশ মিশে গেছে শরবতের চিনির মত কথাটা শুনে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া। পহেলা বৈশাখে পান্তা ইলিশ যেন একটা প্রথা হয়ে গিয়েছে ।ধন্যবাদ ভাইয়া বৈশাখের কিছু কথা আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।
আপনাকেও জানাই শুভ নববর্ষের শুভেচ্ছা। শুভ নববর্ষ কে কেন্দ্র করে আজকে আপনি আমাদের মাঝে চমৎকার একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। আসলে এই দিনটা বাঙ্গালীদের জন্য বড় একটি পাওয়া। পান্তা ভাত আর ইলিশ মাছ যেন খাবারের মুখ্য বিষয় হয়ে ওঠে বৈশাখে। এদিকে ব্যবসায়িকেরা তাদের নতুন খাতা খুলে বসে ব্যবসা কেন্দ্রে। যাইহোক খুবই সুন্দর অনুভূতি আপনি কিন্তু ব্যক্ত করেছেন এ পোষ্টের মাঝে। পাশাপাশি আপনাদের খাওয়ার এই মুহূর্তটা দেখে ভালো লাগলো।
পহেলা বৈশাখ আমাদের ঐতিহ্য। ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোর বাইরে এই অনুষ্ঠান আমরা সবাই একসাথে উদযাপন করি। আপনারা সবাই মিলে পান্তা ভাত খেয়েছেন দেখে ভালো লাগলো। আমিও গতকাল পান্তা ভাত খেয়েছি। পান্তা ভাতের সাথে প্রত্যেকটা আইটেম দেখে বেশ লোভনীয় লেগেছে।
বছরে একদিনই আমি পান্তাভাত খাই তা এই পহেলাবৈশাখে।এবার খাওয়া হয়নি কারণ উপোস ছিলোম লোকনাথ পূজার। তো তোমাদের লোভনীয় পান্তা ভাতের থালা সাজানো দেখে তো ভীষণ খেতে মন চাচ্ছে আমার।ভীষণ লোভনীয় ভাবে সাজিয়ে লোভনীয় সব খাবারের ব্যাবস্থা দেখছি।তোমার মতো বাঙ্গালী দরকার বেশিরভাগ তাহলে ইলিশের দাম কমবে আর আমরা মজা করে কিনে খেতে পারবো।ধন্যবাদ পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।
আমিও আসলে সেটাই জানতাম ভাই, যে সম্রাট আকবর প্রথম পহেলা বৈশাখ পালন চালু করেন। তবে আমাদের বড় দাদার একটা পোস্টের ভিতর এই সম্পর্কে সঠিক তথ্য দেওয়া ছিল। সব থেকে ভালো লাগলো যে আপনি সেদে পড়ে পহেলা বৈশাখের দাওয়াত নিয়েছেন। হা হা হা...🤭🤭 তাছাড়া আপনি মাছ খেতে পছন্দ করেন না বা গন্ধ লাগে খেতে গেলে, এটা আমি আজকেই প্রথম জানলাম মনে হয়। যাইহোক, পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য জানলাম আর কি।