দীর্ঘদিন পর ফুটবল মাঠে
সপ্তাহে দুই একদিন সময় পেলেই, বাবুকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ি ঘুরতে। এইতো কিছুদিন আগেও গিয়েছিলাম আমার শৈশবের স্কুল মাঠে। মূলত ফুটবল খেলা দেখতে। এমনিতেই দিনের বেলা যে পরিমাণ তাপমাত্রা থাকে, তাতে কোন অবস্থাতেই বাহিরে যাওয়ার মত পরিবেশ থাকে না।
তাছাড়া আমার জীবন অনেকটা গৃহবন্দী কাটে, সেদিক থেকে বলতে গেলে বাড়িতেই আমি বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি থাকতে। যেহেতু সুযোগ পেয়েই গিয়েছিলাম, তাই ফুটবল খেলা দেখতে চলে গিয়েছিলাম স্কুল মাঠে। পড়ন্ত বেলার দিকে খুব একটা সেদিন গরম ছিল না, যেহেতু প্রবীণ শিক্ষার্থী আমি এই স্কুলের, তাছাড়া মোটামুটি টুকটাক সবাই চেনে। সেই জায়গা থেকে ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়েছিল, কেননা দাঁড়িয়ে খেলা দেখতে হয়নি।
মাঝে মাঝেই এলাকার তরুণদের নিয়ে ফুটবল খেলার আয়োজন করে স্থানীয় ক্রীড়া সংস্থা। যেহেতু বাপ বেটা উভয়েই গিয়েছিলাম, তাই বলতে গেলে খেলা দেখার আমেজেই ছিলাম। পুরো মাঠ ভর্তি লোকজন, তবে তারপরেও আমাদের বসার জায়গা হয়েছিল একদম প্রধান মঞ্চে। বাবু বেশ খুশি হয়েছিল। যখনই বল আমাদের দিকে ছুটে আসছিল, তখনই ও ধরার চেষ্টা করছিল।
স্থানীয় ক্রীড়া সংস্থার এমন আয়োজনকে আমি সাধুবাদ জানাই, কেননা বর্তমানে তরুণরা তো খেলাধুলাতে খুব একটা আগ্রহী নয়। সময় যতই গড়িয়ে যাচ্ছে, ততই যেন তরুণদের প্রতিনিয়ত চিন্তা চেতনায় পরিবর্তন আসছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে মাঝেমধ্যে যখন আমি টিভির সামনে বসি নিজের দেশের ঘরোয়া ফুটবল খেলা দেখার জন্য, তখন সত্যিই হতাশ হয়ে যাই,কেননা স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে দর্শক শূন্য থাকে।
আসলে ঢাকার মত যান্ত্রিক শহরে আর যাইহোক ফুটবল কে ঘিরে তেমনটা উত্তেজনা দেখা যায় না। অথচ সামান্য স্থানীয় ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে এই মফস্বলের মাঠে ফুটবল খেলা কে ঘিরে কতই না কর্মসূচি। যা অনেকটাই মনোমুগ্ধকর, প্রচুর লোকজনের ভিড় লেগেই ছিল মাঠে। যতটা সময় খেলা দেখেছি, মনে হচ্ছিল যেন একটা উৎসবমুখর পরিবেশের ভিতরে আছি।
টানটান উত্তেজনা কাজ করছিল, স্থানীয় তরুণরা বেশ ভালোই খেলছিল। তবে দুঃখের বিষয়, এই তরুণদের খেলা এ পর্যন্তই শেষ। এদের কে আসলে ভালোভাবে দেখাশোনা কিংবা নজর দেওয়ার ব্যাপারে, ভবিষ্যতে তেমন কোনো উদ্যোগ থাকবে না। বলতে গেলে, গৎবাঁধা নিয়মের মাঝে বন্দী এরা।
এই যে কালেভদ্রে টুকটাক খেলা হয়, তাতেই এদের অংশগ্রহণটা থাকে একটু চোখের পড়ার মতো। একদম প্রান্তিক পর্যায়ে থেকে যে খেলোয়াড় বাছাই করে তুলে নিয়ে আসবে, এমনটা নেই বললেই চলে। যদি থেকেও থাকে, তাহলে সেই নিয়মে বড্ড ত্রুটি আছে। যার কারণে হাজারো প্রতিভা, শুরুতেই শেষ।
এসব বিষয় নিয়ে আর বলতে ভালো লাগে না, সবকিছুই সবাই দেখে কিন্তু মুখ ফুটে যে দুটো কথা বলবে, সেই বিষয়ে কেউ নেই। অবশেষে খেলা দেখে, পুরস্কার বিতরণী পর্বের কাজটুকু শেষ করে, নিজ দায়িত্বে বাড়ি ফিরে এলাম।
একসময় নিজেও কত খেলেছি এই মাঠে, তার কোন হিসাব নেই। তবে দিন যত পরিবর্তন হয়েছে, পারিপার্শ্বিক চাপে সময়টা নিজেরও বড্ড জটিল হয়ে গিয়েছে। হয়তো এটাই বাস্তবতা, যা মানতে কষ্ট হলেও, কিচ্ছু করার থাকে না।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
পারিপার্শ্বিক অবস্থা আমাদের নিজেদেরকে বদলে ফেলছে। কিংবা আমরা পরিস্থিতির চাপে বদলে যাচ্ছি। তাই তো এখন আর খেলাধুলা দেখার সময় হয় না। কিংবা চিরচেনা সেই মাঠে গিয়ে সময় কাটানো হয় না। অনেকদিন পর ফুটবল খেলা দেখতে গিয়েছেন দেখে ভালো লাগলো ভাইয়া। সাথে আবার ভাতিজাকেউ নিয়ে গিয়েছেন দেখে ভালো লাগলো ভাইয়া।
মূলত আপনার ভাতিজাকে একটু বিনোদন দেওয়ার জন্যই মাঠে যাওয়া হয়েছিল।
এখনকার তরুণরা খেলাধুলা থেকে অনেকটাই দূরে থাকার চেষ্টা করে। আপনাদের এলাকায় এখনো তরুণদের নিয়ে খেলার আয়োজন করা হয় জেনে ভালো লাগলো ভাইয়া। অনেকদিন পর চিরচেনা সেই খেলার মাঠে গিয়েছেন আর অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন দেখে ভালো লাগলো ভাইয়া।
এটা সত্য, সেদিন ফুটবল খেলা দেখতে গিয়ে আমরা বেশ ভালোই সময় কাটিয়েছিলাম।
স্থানীয় ক্রীড়া সংস্থার এমন আয়োজনকে অবশ্যই সাধুবাদ জানানো উচিত। কারণ খেলাধুলার মধ্যে থাকলে মন-মানসিকতা এমনিতেই ভালো থাকে। আগে তো বেশিরভাগ তরুণেরা ফুটবল এবং ক্রিকেট খেলা নিয়ে মেতে থাকতো। কিন্তু এখন এসব খুবই কম দেখা যায়। তাইতো অনেক তরুণেরা দিনদিন মাদকাসক্ত হয়ে যাচ্ছে। যাইহোক আমাদের দেশে আসলেই প্রতিভার মূল্যায়ন করা হয় না। সেটা খেলাধুলার ব্যাপারে হোক, কিংবা কোনো কিছু আবিষ্কার করা নিয়েই হোক না কেনো। আপনারা বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন মাঠে গিয়ে। এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
প্রতিভার মূল্যায়ন করা হয় না বিধায়, সবকিছু ধ্বংসের দিকে চলে যাচ্ছে ভাই। এসব দেখে আর কিছুই বলতে ইচ্ছে করে না।
আপনাদের ফটোগ্রাফি দেখে বুঝতে পারছি বাপ বেটা মিলে মাঠে বসে ফুটবল খেলা দারুন উপভোগ করেছেন। তাও আবার একদম মঞ্চের প্রথম সারিতে বসে,এত কাছ থেকে ফুটবল খেলে দেখতে পেয়ে নিশ্চয়ই বাবু খুব আনন্দ পেয়েছে। ছোটবেলায় যখন গ্ৰামে ছিলাম তখন ঈদের পরে আমাদের বাড়ির সামনে ফসলের খালি জমিতে এভাবে ফুটবল খেলাসহ বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করা হতো। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এসব কিছুর পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। শহরের মানুষ শুধু ক্রিকেট খেলা নিয়েই ব্যস্ত। কিন্তু আমাদের জাতীয় খেলার নাম যে ফুটবল তা তারা একদমই ভুলে গিয়েছে। সেজন্য ফুটবলের গ্যালারি একদমই দর্শক শূন্য হয়ে থাকে। আমাদের দেশে প্রতিভার সঠিক মূল্য দেয় না বলেই প্রতিভাবান ব্যক্তিরা বিদেশে চলে যায়। জাতীয় খেলা হয়েও আজ সেই খেলার কোনো জনপ্রিয়তা নেই। যখন চোখের সামনে তরুণ বয়সের স্মৃতি চলে আসে তখন সত্যিই খুব কষ্ট হয়। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে মানুষের মধ্যে অনেক পরিবর্তন চলে আসে। সেজন্য কষ্ট হলেও মেনে নিতে হয়। ধন্যবাদ এত সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ আপু, বাবু ভীষণ আনন্দিত হয়েছিল কেননা ও স্বচক্ষে সামনে থেকে দেখছিল সবকিছু এজন্য। তাছাড়া খেলাধুলার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আর কি বলবো, সবটাই তো জানেন।
বিবেকানন্দ বলেছিলেন গীতা পাঠের থেকে ফুটবল খেলা কৈশোর জীবনে গুরুত্বপূর্ণ। আপনারই ফুটবল যাপন খুব ভালো লাগলো। ছবিগুলো ভীষণ সুন্দর। মাঠে মানুষ সতেজ থাকে। তবে এবার শুধু দেখা নয়, নেমে পড়ুন মাঠে। আমি একসময় নিয়মিত কলকাতা ময়দানে যেতাম খেলা দেখতে। এখন সময় সুযোগের অভাবে আর যাওয়া হয় না।
এখন আর সময় কই বলুন, বাস্তবতা বড্ড জর্জরিত করে ফেলেছে জীবনকে। আপনার ফুটবল খেলার বিষয়টা জেনে ভালো লাগলো।
এখনকার তরুণ প্রজন্মের যারা তারা তো খেলাধুলা থেকে দূরেই বলা যায়।ইন্টারনেট নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেন সবসময় তারা।আপনাদের এলাকায় এখনো তরুণদের নিয়ে ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করা হয়।যেটা আসলেই ভালো লাগার একটি বিষয়।জুন জুলাই মাসে মূলত সব এলাকায় এই আয়োজন করা হয় ।বৃষ্টির সময় ফুটবল খেলার একটি দারুন সময় এজন্য।অনেকদিন পর চিরচেনা মাঠে গিয়ে বেশ ভালো লেগেছিল আপনার বুঝলাম।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।