রবিবারের আড্ডা -৯৬ | উন্মুক্ত আড্ডা - ১১ পর্ব
ব্যানার ক্রেডিটঃ @hafizullah
আমার বাংলা ব্লগের আয়োজন রবিবারের আড্ডার নতুন সংযোজন হচ্ছে এবিবি উন্মুক্ত আড্ডা । মূলত এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকে তাদের সামনে একটা বিষয় তুলে ধরা হয়। যে সকল সদস্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেই বিষয়ে কথা বলতে আগ্রহী হয়, তাদের নিয়েই মূলত এই অনুষ্ঠানটা পরিচালিত করা হয়।
তাছাড়া এই অনুষ্ঠানটি তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে, যেহেতু চার-পাঁচজন অতিথি থাকে প্রথমত দুইবারে সকল অতিথির মতামত শোনা হয়, দ্বিতীয়তঃ কিছুটা বিরতি দিয়ে উপস্থিত দর্শকদের মতামত গ্রহণ করা হয় এবং নিজেদের পছন্দের গান শোনা হয়। সর্বশেষে উপস্থিত সকল দর্শক ও শ্রোতাদের জন্য থাকে শুভেচ্ছা পুরস্কার।
টপিকঃ শৈশব জীবনের শীতের সন্ধ্যার স্মৃতিচারণ।
প্রথম অতিথিঃ @kausikchak123
ভেরিফাইড সদস্য, আমার বাংলা ব্লগ
মতামতঃ দেখুন প্রতিটা ঋতুর কিন্তু আলাদা কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। যেমন গ্রীষ্মের সকাল সুন্দর, হেমন্তের পড়ন্ত বেলা আর সেই দিক থেকে শীতকালের দুপুর বেলা কিন্তু অনেক সুন্দর। আমার বাড়ি থেকে সুন্দরবন খুব কাছেই ছিল। বলতে গেলে বিশ কিলোমিটার দূরত্বে। যেহেতু ছোট ছিলাম, তাই শীতের দিনে স্কুল থেকে এসেই লেপের নিচে ঢুকে যেতাম। পড়াশুনা থেকে সবকিছু বিছানায় লেপের নিচে করতাম। সে সময়ে কাঁথা ছিল, বর্তমানে তা নেই। যেহেতু বেশ ভালোই ঠান্ডা পড়তো সেই সময়। তাছাড়া সন্ধ্যাবেলা করে বাবা কাকুরা প্রচুর পরিমাণে কফি খেত। তবে আমাদের খাওয়া সেসময় বারণ ছিল। তাও লুকিয়ে লুকিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করতাম। তাছাড়া বাড়ির উঠোনে সন্ধ্যেবেলা করে সবাই মিলে বসে যেতাম আগুন পোহাতে। তাছাড়া তেলে ভাজা খাবার তো থাকতেই, সবমিলিয়ে শীতকালটা যেন শৈশবে দারুণ কেটেছিল।
দ্বিতীয় অতিথিঃ @neelamsamanta
ভেরিফাইড সদস্য, আমার বাংলা ব্লগ
মতামতঃ যেহেতু আমি অনেক বড় পরিবারে বড় হয়েছি, তাই বলতে গেলে শৈশবে শীতকালে দারুণ সময় কাটিয়েছি পরিবারের সঙ্গে। আমাদের বাড়িতে মূলত ৪০ থেকে ৫০ জন মানুষের বসবাস ছিল, তবে হাঁড়ি আলাদা ছিল। তাছাড়া, সেসময় আমাদের বাড়ির ধান কাটার জন্য দিনমজুররা আসতো। যদিও তারা আদিবাসী ছিল, তাই তাদের জীবনযাত্রা নিয়ে আমার জানার ভীষণ আগ্রহ ছিল। যেহেতু আমাদের অনেক বড় রান্নাঘর তাই সন্ধ্যার পর থেকে মা কাকিদের সঙ্গে অনেকটা সময় রান্নাঘরেই কেটে যেত। তাছাড়া আদিবাসীদের কাজকর্ম দেখতাম দুপুরবেলাতে। এছাড়া মূলত প্রতি রবিবার করে আমাদের ছোটদের উদ্যোগে বাড়িতে খিচুড়ির আয়োজন হত যা অনেকটা পিকনিকের মত। সেখানে অবশ্য আমার বাবা কাকুরাও সহযোগিতা করত বিভিন্ন রকম মিষ্টান্ন জাতীয় খাবার দিয়ে। তাছাড়া আগুন পোহানোর ব্যাপার তো ছিলই। আমার অনেক কাকিমারা বেশ ভালোই নকশি কাঁথা সেলাই করত। কোথায় যেন হারিয়ে গেল সেই শৈশব, এখন মানুষ সবাই পরিবর্তন হয়ে গেছে।
তৃতীয় অতিথিঃ @shahid540
ভেরিফাইড সদস্য, আমার বাংলা ব্লগ
মতামতঃ যেহেতু আমি ছোটবেলা থেকে বিতর্ক করতে পছন্দ করতাম, তাই একবার স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতার আগের দিন রাত্রিবেলা আমার বন্ধুকে সঙ্গে করে নিয়ে আমাদের শিক্ষকের বাসায় গিয়েছিলাম, যাত্রাপথে একটু ভিন্ন রকম ঘটনা ঘটে। মূলত আমার বন্ধু সাদা রংয়ের হুডি পড়েছিল আর আমি হাতে টর্চলাইট নিয়ে যাচ্ছিলাম। এ সময় রাস্তার কুকুরদের চোখে টর্চ মেরেছিলাম যার কারণে কুকুররা আমাদেরকে তাড়া করেছিল। আমরা অবশেষে এমন দৌড় দিয়েছিলাম যে আমার বন্ধুর লুঙ্গি হারিয়ে গিয়েছিল। তাছাড়া আমরা একবার মাদ্রাসা থেকে পিকনিক খেতে গিয়েছিলাম মহাস্থানগড়ে, ফেরার পথে আমাদের গাড়ির চাকা পাংচার হয়ে গিয়েছিল। সেসময় আমরা বাস থেকে সবাই নেমেছিলাম এবং সবাই মিলে স্থানীয় এলাকার ছেলেদের সঙ্গে ভলিবল খেলেছিলাম। সেখানেও একটা দুর্ঘটনা ঘটেছিল, এক ছেলের নাক ফেটে গিয়েছিল। সেসময় স্যার সেই ছেলের ট্রিটমেন্ট বাবদ টাকা দিয়েছিল।
চতুর্থ অতিথিঃ @kazi-raihan
ভেরিফাইড সদস্য, আমার বাংলা ব্লগ
মতামতঃ ডিসেম্বর মাসের দিকে স্কুল ছুটি হয়ে যেত। সেসময় আমার ফুফাতো ভাই-বোনেরা শহর থেকে বেড়াতে আসতো, ওদের নিয়ে বেশ ভালই সময় কাটতো সে সময়। আমরা মূলত ওদেরকে নিয়ে বেড়াতে যেতাম নদীর তীরবর্তী এলাকায় আর বাড়ি থেকে সঙ্গে গরম মচমচে মুড়ি নিয়ে যেতাম। কেননা নদীর তীরবর্তী এলাকায় আখের গুড় তৈরির ব্যবস্থা হতো। আমরা সেগুলো স্বচক্ষে দেখতাম এবং ভালই মজা করতাম। তাছাড়া একবার ফেরার পথে সাপ দেখে আমার বোনেরা বেশ ভয় পেয়েছিল এবং অনেক জোরে চিৎকার করেছিল। তাছাড়া ২০০৯ সালে প্রথম আমি ব্যাডমিন্টন খেলার সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলাম, সেসময় শহর থেকে আত্মীয়-স্বজনরা আসতো, ওরা খেলতো আমাদের পুরাতন বাড়িতে। ওদের খেলা দেখেই মূলত অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল। এগুলো ছিল শৈশবের শীতকালের মুহূর্ত।
তাৎক্ষণিক অতিথি ও শ্রোতার মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
পুরস্কারের স্পন্সর কমিউনিটির প্রতিষ্ঠাতা @rme দাদা
মূলত এভাবেই আয়োজন করা হয়েছিল এবিবি উন্মুক্ত আড্ডা। আমাদের চিন্তাধারা প্রতিনিয়তই ব্যতিক্রম, তাই সব ব্যতিক্রম চিন্তা-ভাবনা নিয়েই আমরা এগিয়ে যেতে চাই প্রতিনিয়ত সামনের দিকে। আশাকরি আমাদের সঙ্গে সকলেই থাকবেন, এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।
ধন্যবাদ সবাইকে।
ডিসকর্ড লিংকঃ
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
শীতকালকে ঘিরে আমাদের শৈশবের অনেক স্মৃতি রয়েছে। শৈশবের স্মৃতি গুলো সত্যি অনেক মধুর ছিল। যদিও এবারের রবিবারের উন্মুক্ত আড্ডায় উপস্থিত থাকতে পারিনি তবে এই পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া। অতিথিদের কথাগুলো জানতে পেরে ভালো লাগলো।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
রবিবারের আড্ডা মানে অন্যরকম আয়োজন। শৈশবের স্মৃতিময় কথাগুলো অতিথিদের মুখে শুনতে পেয়ে বেশ ভালো লাগছিল। শৈশব মানেই মধুময় দিনগুলো।যদিও আড্ডার কিছুটা অংশ মিস করেছিলাম আপনার রিপোর্টটি পড়ে সুন্দর ভাবে সব বুঝে নিতে পারলাম। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে দারুন একটি রিপোর্ট সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার জন্য।
রবিবারের আড্ডাটা কিন্তু দারুন ছিল। নিজে বলে তো আনন্দ পেয়েইছি, উপরন্তু অন্যদের কথা শুনে আরো মজা পেয়েছি। রবিবারের আড্ডা আমার বরাবরই ভালো লাগে। অনেকের থেকে অনেক কথা জানা যায়। অনেক মজার মজার কথাও বেরিয়ে আসে। সব থেকে বড় কথা হল সকলে মিলে আনন্দ করতে করতে বেশ সময়টা কেটে যায়।
এটা সত্য গতকালকের সময়টা বেশ ভালই কেটেছিল, তাছাড়া আপনি নিজেও বেশ দারুণ গুছিয়ে কথা বলেছিলেন।
আমি বরাবরই জনসমাবেশে কথা বলতে ভীষণ ভালোবাসি। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে রবিবারের আড্ডায় কথা বলতে পেরে অত্যন্ত ভালো লাগছিল। সেই সাথে বাকি অতিথিদের কথা শুনেও বেশ ভালো লাগছিল। সব মিলিয়ে এইবারের রবিবারের উন্মুক্ত আড্ডা আমরা দারুণভাবে উপভোগ করেছি। রবিবারের আড্ডার প্রত্যেকটা বিষয়কে পুনরায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনি গতকাল বেশ দারুণ সাবলীলভাবে কথা বলেছিলেন , ভালো লেগেছিল আপনার গল্প।
গত কালকের রবিবারের আড্ডার মুহূর্তটা অনেক ভালোভাবে উপভোগ করেছিলাম। সবাই অনেক সুন্দর করে শৈশবের স্মৃতিময় কথাগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করেছিল। আসলে আমাদের সবার শৈশবটা অনেক বেশি সুন্দর ছিল। এত সুন্দর করে মুহূর্তটা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে আরো বেশি ভালো লেগেছে। যারা উপস্থিত ছিল না তারা ভালোভাবে পুরোটা জেনে নিতে পারবে।
এই সপ্তাহের উন্মুক্ত আড্ডার টপিকটা সত্যিই দারুণ ছিলো। অতিথিরা দারুণভাবে শৈশবের শীতকালের স্মৃতিচারণ করেছে। সবমিলিয়ে পুরোটা সময় বেশ উপভোগ করেছি। যাইহোক এই রিপোর্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
প্রতিটি রবিবারের আড্ডা দারুন উপভোগ করি। এত সুন্দর ওপেন বিষয় যখন সবার সাথে তুলে ধরা হয় সবাই যার যার মত মতামত গুলো নিজেদের অভিজ্ঞতা গুলো শেয়ার করেন। গতকালকের বিষয়টি আমার খুবই ভালো লাগছিল। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে প্রতিনিয়ত বিষয়গুলো আমাদেরকে পুনরায় আপনি শেয়ার করে যাচ্ছেন।
প্রতি সপ্তাহে রবিবারের আড্ডায় দারুন সময় অতিবাহিত করি। আসলে জীবনে এরকম মুহূর্ত খুবই প্রয়োজন। প্রতিটা মানুষের জীবনে অনেক সুন্দর সুন্দর গল্প এবং ঘটনা থাকে। যেগুলো শুনতে খুবই ভালো লাগে। এরকম মুহূর্তগুলো আমাদের সবারই উপভোগ করা উচিত।
গতকালের আড্ডায় থাকতে পেরে আমার নিজেরও খুব ভালো লেগেছিল। শৈশবের অনেক গল্পই থাকে কিন্তু সবটা তো আর বলা হয় না। কিছুটা বলেছি। আবার ভেবেছি যে এসব কিছু গল্প নিয়ে স্মৃতিচারণের সিরিজ হিসেবে ব্লগে লিখব। খুব ভালো লাগলো আপনাকে অনেক ধন্যবাদ গুছিয়ে পোস্টটি সবার জন্য লিখেন।
অবশ্যই সিরিজ লিখতে পারেন, পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।