অনুগল্প-এক পলকের একটু দেখা||
আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।
বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আমি @shopon700 🇧🇩 বাংলাদেশ থেকে। অনুগল্প লিখতে মাঝে মাঝে ভালো লাগে। তাই আজকে আমি একটি অনুগল্প লিখে আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো। আর আমার আজকের গল্পের নাম দিয়েছি "এক পলকের একটু দেখা"। তো বন্ধুরা চলুন আমার আজকের অনুগল্পটি পড়ে নেয়া যাক।
অনুগল্প:এক পলকের একটু দেখা
source
শুভ্র হঠাৎ একদিন তার বোনের বাসায় যাওয়ার জন্য রওনা দিয়েছিল। বোনকে সারপ্রাইজ দিবে বলে আগে থেকে কিছুই জানায়নি। তার ছোট্ট একটি ভাগ্নি আছে। ক্লাস টু তে পড়ে সে। ভাগ্নির সাথে শুভ্রর বেশ ভালো সম্পর্ক। ভাগ্নির জন্য কিছু খেলনা এবং চকলেট নিয়েছে শুভ্র। যেহেতু শুভ্রর দুলাভাই চাকরি সূত্রে ফ্যামিলি থেকে দূরে থাকেন তাই বাসায় বলতে গেলে শুধু তারা দুজনই রয়েছে। শুভ্র কোন কিছু না ভেবেই সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য চলে যায় বোনের বাসায়।
হঠাৎ করে কলিংবেলের শব্দ শুনে কেউ একজন এসে দরজা খুলে। এক পলকের একটু দেখায় শুভ্র যেন অন্য কোথাও হারিয়ে গিয়েছিল। অন্যরকমের এক ভালোলাগা যেন তার মনে সৃষ্টি হয়েছিল। মেয়েটির মায়া ভরা মুখের দিকে তাকিয়ে আছে শুভ্র। মেয়েটি লজ্জায় নিজেকে আড়াল করে নিয়েছে। বুঝতে পেরে শুভ্র নিজের চোখ নামিয়ে নিয়েছে। আসলে সে অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছিল। এরকম কেউ সামনে এসে দাঁড়াবে বুঝতে পারেনি।
মেয়েটিকে দেখার পর থেকে শুভ্রর যেন কিছুই ভালো লাগছিল না। কি করে মেয়েটির সম্পর্কে জানবে সেটাও বুঝতে পারছিল না। বোনকে তো বলতেই পারবে না। এবার কিছুক্ষণ পর শুভ্র খেয়াল করলো মেয়েটি মুখ ঢেকে বাহিরে চলে গেল। শুভ্র গল্পের ছলে তার ভাগ্নিকে বললো মেয়েটির কথা। তার ভাগ্নি বলে সে তার টিচার। অর্থাৎ তার ভাগ্নিকে টিউশনি করায় মেয়েটি। শুভ্রর বোন কাজে ব্যস্ত ছিল তাই মেয়েটি দরজা খুলেছিল। শুভ্র মেয়েটির সেই মায়া ভরা মুখ ভুলতেই পারছিল না। বারবার শুধু তার কথাই ভেবে যাচ্ছিল। অন্যদিকে শুভ্রর বোন শুভ্রকে পরম যত্নে আপ্যায়ন করে যাচ্ছিল। অনেকদিন পর তার ভাই এসেছে এটা ভেবেই তার ভালো লাগছিল।
শুভ্রর কেন জানি আবারো মেয়েটিকে দেখতে ইচ্ছে করছিল। তাই সেদিন শুভ্র থেকে গিয়েছিল তার বোনের বাসায়। পরদিন মেয়েটি আবারও সেই বাসায় আসে। শুভ্র মেয়েটিকে দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছিল। চুপিচুপি মেয়েটিকে দেখছিলাম। কিন্তু আজ তার মুখ ছিল একেবারে ঢাকা। তাই শুভ্র শুধু শুধু আড়াল থেকে তার অস্তিত্বটাই অনুভব করছিল। এভাবে কেটে যায় বেশ কয়েকদিন। এরপর থেকে শুভ্র মাঝে মাঝেই তার বোনের বাড়িতে আসতো। ব্যাপারটি শুভ্রর বোন সহজ ভাবেই নিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ একদিন শুভ্র বাধ্য হয়ে তার বোনকে সবকিছু খুলে বলে।
শুভ্রর বোন মেয়েটির সাথে কথা বলতে রাজি হয়ে যায়। কিন্তু যখনই শুভ্রর বোন মেয়েটিকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় এরপর দিন থেকে মেয়েটি আর পড়াতে আসিনি। মেয়েটির এভাবে না আসার কারণ কেউ বুঝতে পারছিল না। এরপর হঠাৎ একদিন রাস্তায় মেয়েটির সাথে শুভ্রর দেখা হয়ে যায়। তার মায়াবী চোখ দুটো দেখে শুভ্র তাকে চিনে ফেলেছিল। এরপর অনেক অনুরোধ করার পর মেয়েটি শুভ্রর সাথে কথা বলে। আর বলে সে নতুন করে কারো জীবনে জড়াতে চায় না। সে ডিভোর্সি। এই কথা শুনে শুভ্রর ভীষণ খারাপ লাগে। তবুও সে মেয়েটিকে বিয়ে করতে চায়। কিন্তু মেয়েটি কিছুতেই আর রাজি হয় না। শুভ্র আজও মাঝে মাঝে সেই মায়াভরা মুখের কথা মনে করে। এক পলকের দেখায় যাকে ভালোবেসে ছিল তাকে হৃদয় দিয়ে অনুভব করে।
🥀ধন্যবাদ সকলকে।🌹
আমি মো: স্বপন । আমি একজন বাংলাদেশী। বাংলা আমার মাতৃভাষা। তাই আমি বাংলায় লেখালেখি করতে ভালোবাসি। ফটোগ্রাফি, পেইন্টিং এবং ক্রাফটিং করা হচ্ছে আমার অন্যতম শখ। অবসর সময়ে গান শুনতেও অনেক ভালোবাসি। এছাড়া বাগান করতে আমার অনেক ভালো লাগে। মাঝে মাঝে রান্না করতেও অনেক ভালো লাগে। আমার স্টিমিট আইডি নাম @shopon700। আমি ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে স্টিমিট ব্লগিং শুরু করি। আমি গর্বিত, কারণ আমি আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাইড ব্লগার।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আসলে ভালো লাগার অনুভূতটা ঠিক এমনই হয়ে থাকে। যার জন্য শুভ অস্থির হয়ে পড়েছিল। এমন ঘটনা আমার বন্ধুর সাথে ঘটেছিল। আমার এক বন্ধু একটা মেয়েকে দেখার পর তিন-চারটা গোলি ঘুরে বেড়িয়েছে মেয়েটার সন্ধান পেতে। অতঃপর ব্যর্থ হয়ে আর দেখা পায়নি। এমন ঘটনা প্রায় মানুষের জীবনে থেকে থাকে।
ঠিক বলেছেন ভাই ভালোলাগার অনুভূতিটা আগের মতই থেকে যায়। এরকম ঘটনা আপনার বন্ধুর সাথে ঘটেছিল এটা জেনে খুবই খারাপ লাগছে।
শুভ্র যদিও কোনো কিছু না জেনেই মেয়েটাকে ভালোবেসে ছিল। তবে মেয়েটার জীবনে মনে হয় অনেক দুঃখ রয়েছে। সেই মেয়েটা ডিভোর্সী ছিল, এটা শুনে অনেক খারাপ লাগলো। শুভ্র তবুও বিয়ে করার জন্য রাজি হয়েছিল, কিন্তু মেয়েটা আর রাজি হয়নি দেখছি। অনেক সুন্দর করে আপনি আজকের এই গল্পটা লিখে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার লেখা আজকের গল্পটি পড়তে আমার অনেক বেশি ভালো লেগেছে।
ছেলেটি মেয়েটিকে ভালোবেসে ছিল ঠিকই কিন্তু মেয়েটি আর কাউকে বিশ্বাস করতে পারছিল না। ধন্যবাদ আপু মন্তব্য করার জন্য।