অনু গল্প-হারিয়ে যাওয়া গল্প||
আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।
বন্ধুরা, কেমন আছেন? আমি @shopon700 🇧🇩 বাংলাদেশ থেকে। গল্প লিখতে ভালো লাগে। তাই মাঝে মাঝে গল্প লিখার চেষ্টা করি। যদিও ভালো গল্প লেখার দক্ষতা এখনো তৈরি হয়নি। তবুও ছোট ছোট গল্প লেখার চেষ্টা করি। আজকে আমি যেই অনু গল্পটি আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো সেই অনু গল্পটির নাম দিয়েছি "হারিয়ে যাওয়া গল্প"। জীবন মানেই গল্প। তাই জীবনের কথা থেকে গল্পের সৃষ্টি হয়। আর তাই তো আমি এই সুন্দর নাম দিয়েছি। তো বন্ধুরা চলুন আমার লেখা গল্প পড়ে নেয়া যাক।
অনু গল্প-হারিয়ে যাওয়া গল্প:

আজ অনেক বছর পর সীমা আর রাহুল মুখোমুখি। দুজনে মুখোমুখি হয়ে বসে আছে। কিন্তু কারো মুখে কোন কথা নেই। সীমার সাথে তার পরিবার রয়েছে। স্বামী সন্তান নিয়ে ভালোই আছে মেয়েটি। অন্যদিকে রাহুল বিয়ে করেছে। তার স্ত্রী এবং ছোট্ট মেয়েকে নিয়েই তার সুখের সংসার। যেহেতু দুজনের গন্তব্য একই জায়গায় তাই চলার পথে হঠাৎই তাদের দেখা হয়ে গেছে। রাহুল যখন ট্রেনে উঠে প্রথমবার সীমাকে দেখেছে তখন হঠাৎ করে অবাক হয়ে গিয়েছিল। এরপর নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করেছে। রাহুলের চোখে যেন আজও সেই ভালোবাসা খুঁজে পেয়েছে সীমা। কিন্তু কিছু বলার ভাষা নেই তার।
রাহুল সীমাকে দেখে অনেকটা আবেগপ্রবণ হয়ে পরেছে। কি করে নিজেকে সামলাবে বুঝতে পারছিল না। অন্যদিকে সীমা বারবার রাহুলের দিকে তাকাচ্ছিল। রাহুল সীমার চোখে চোখ রাখতে পারছিল না। সীমার স্বামী আর সন্তান তার পাশেই বসা ছিল। সীমার ছেলেটি দেখতে খুবই সুন্দর হয়েছে। তার স্বামীটাকে দেখে মনে হচ্ছে সে অনেক ভালো মানুষ। কিন্তু রাহুলের কেন জানি খুবই কষ্ট হচ্ছিল। ভালোবাসার মানুষটিকে হারানো খুবই যন্ত্রনার। অন্যদিকে সীমা কেমন জানি হয়ে গেছে। রাহুলের মুখের দিকে বারবার তাকাচ্ছিল। হয়তো তার স্বামীর কারণে কিছু বলতে পারছে না।
রাহুল যেমন সীমাকে অনেক ভালোবাসতো সীমাও তেমনি রাহুলকে অনেক ভালোবাসতো। কিন্তু তাদের ভালোবাসা পূর্ণতা পায়নি। তাদের ভালোবাসা কেউ মেনে নেয়নি। দুটি পরিবার চেয়েছিল তারা আলাদা হয়ে যাক। রাহুল সীমাকে নিয়ে দূরে কোথাও ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখেছিল। পালিয়ে যেতে তারা দুজন। কিন্তু সারাদিন অপেক্ষার পরেও সীমা আসেনি। রাহুল সেদিন অনেক কেঁদেছিল। সারাদিন অপেক্ষার পর যখন সন্ধা নেমে আসে তখনও রাহুল অপেক্ষায় ছিল। ধীরে ধীরে রাত গভীর হয়ে যায়। রাতের অন্ধকার শেষ হয়ে আবারো নতুন ভোরের আলো ফুটে ওঠে। তখনো রাহুল অপেক্ষায় ছিল। তবুও সীমা আসেনি। এরপর কেটে যায় বেশ কিছুদিন। হঠাৎ একদিন রাহুল জানতে পারে সীমা অন্য কারো হয়ে গেছে। এরপর থেকে কখনো আর সীমার সাথে রাহুলের দেখা হয়নি।
আজ অনেক বছর পর যখন দুজনে মুখোমুখি তখন দুজনের মুখে কোন ভাষা নেই। হয়তো হৃদয়ে অনেক কথাই লুকিয়ে আছে। কিন্তু বলার মত সুযোগ নেই। কিংবা কথা বলার ভাষাগুলো আজ নিশ্চুপ হয়ে গেছে। দুজনের নীরবতা যেন তাদেরকে আরো বেশি কষ্ট দিচ্ছিল। তাদের জীবনের গল্পটা এরকম না হলেও পারতো। হয়তো দুজনে তাদের ভালোবাসার ঘর বাঁধতে পারতো। কিন্তু আজ দুজন দুজনার অনেক পর। ভালোবাসার মানুষকে হারানোর যন্ত্রণায় দুজনে আজও অসহায়। সীমা হয়তো পরিস্থিতি চাপে পড়ে তার ভালোবাসাকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে পারেনি। অন্যদিকে রাহুল জীবনের বাস্তবতা মেনে নিয়েছে। এভাবে হয়তো চলার পথে আবারো কোন একদিন তাদের দেখা হয়ে যাবে। আর তাদের হারিয়ে যাওয়া গল্পটি আবারও মনে পড়ে যাবে।
🥀ধন্যবাদ সকলকে।🌹
আমি মো: স্বপন । আমি একজন বাংলাদেশী। ব্যক্তিজীবনে আমি আইন পেশার সাথে জড়িত। এছাড়াও ফটোগ্রাফি, পেইন্টিং ও ব্লগিং করা হচ্ছে আমার অন্যতম শখ। আমার স্টিমিট আইডি নাম @shopon700। আমি ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে স্টিমিট ব্লগিং শুরু করি। আমি গর্বিত, কারণ আমি আমার বাংলা ব্লগের একজন ভেরিফাইড ব্লগার।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনার গল্পটা পড়ে অনেক খারাপ লাগলো রাহুলের জন্য। আসলে মেয়েটা হয়তো বিয়ে করে সংসার করছে তাই ভুলে আছে কিন্তু রাহুল। যাইহোক তাদের ভালোবাসা এভাবেই বেঁচে থাকুক। ধন্যবাদ ভাইয়া।
গল্পের মাধ্যমে একটি হৃদরবিদারক চিত্র এঁকেছেন। পড়তে পড়তে হারিয়ে গেছিলাম৷ এমন পূর্ণতা না পাওয়া প্রেম পরের দিকেও অনেক বেদনা নিয়ে আসে। বিশেষ করে মানুষটি যদি চোখের সামনে এসে দাঁড়ায়। সুন্দর ভাবে সেই কষ্টের কথাই তুলে ধরলেন গল্পে। সহজ ভাষায় সাবলীল ভাবে লিখেছেন। শুভকামনা রইল অনেক।
আসলে ভাইয়া ভালোবাসার মানুষ যখন দূরে চলে যায় হঠাৎ করে দেখা হলে মনের ভিতর অন্যরকম অনুভূতি আসে। ওই সময় মুখের ভাষা একদম থাকে না। সীমা এবং রাহুলের ক্ষেত্র একই হলো। তবে কিছু কিছু ভালোবাসার ক্ষেত্রে মানুষের সাথে দেখা হলে তখন মন চায় তাদের দিকে আরেকটু তাকিয়ে থাকতে। তবে আপনার গল্পটি যতই করতেছি ততই রহস্যময় মনে হচ্ছিল। তবে রাহুল জীবনে বাস্তবতা মেনে নিয়েছে এটিই বড় সান্তনা। এবং গল্পটি অনেক সুন্দর করে আমাদের মাঝে লিখে শেয়ার করেছেন।
এরকমভাবে অনেক সম্পর্কের ইতি ঘটে। অনেক বছর পর দুজনের দেখা। কিন্তু তবুও তারা একে অপরের সাথে কথা বলতে পারেনি। দুইজনই দিব্যি দুই জায়গায় সংসার করছে। হয়তো তাদের একসাথে সংসার করার কথা ছিল। যাই হোক গল্পটা পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাইয়া খুব সুন্দর করে লিখেছেন।