😔 " আব্বুর ডায়ালাসিসের প্রথম দিনটি "

in আমার বাংলা ব্লগ17 days ago

শুভ বিকাল সবাইকে


আমার বাংলা ব্লগ এ সবাইকে স্বাগতম।


হ্যালো বন্ধুরা,

মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার প্রিয় "আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই?আশা করি সবাই ভালো আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ্‌ আল্লাহ্‌র অশেষ রহমতে বেশ ভালো আছি।আর প্রতিনিয়ত ভালো থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছি।আশাকরি আপনারা ও এমনটাই চেষ্টা করে যাচ্ছেন ভালো থাকার।

বন্ধুরা,আজ আমি শেয়ার করতে চলে এলাম লাইফ স্টাইল পোস্ট।আশাকরি আমার পোস্ট আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।আমি আমার প্রতিদিনের নানা রকমের কর্মকান্ডের কিছু কিছু বিষয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করে থাকি।আশাকরি আমার শেয়ার করা অনুভূতি গুলো আপনাদের কাছে ভালো লাগে।চলুন তবে আজকের বিষয়টি তুলে ধরছি।

আব্বুর ডায়ালাসিসের প্রথম দিনটিঃ


20240625_214951.jpg

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPgGed8pU4cH2rA8Hx16HqG9PMWGnM3gfjBmGCHeMt4UCtucTcrF7jmweXEpit...ZGutiKi7KVTt5nDQoetrgsGgZGNELKiF2LVTivTiw6zUbx3qr8PhoJ4RufavUzR2x51cVwfS9ebHEGz1Yoiz7SSqpLp4z6AD13BwUvTWuACAUcDbvGNfob6NSa.png

বন্ধুরা,আগেই শেয়ার করেছিলাম আব্বু অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।আজ শেয়ার করবো ডায়ালাসিসের প্রথম দিনটি নিয়ে।আব্বুকে ২৫ তারিখে হাসপাতালে ডাক্তার দেখিয়ে ভর্তি করা হয়েছিল।সেই দিনটি সারাদিনই নানা রকমের পরীক্ষা -নিরীক্ষা চলছিল।দিনটি এভাবেই শেষ হলো।এরপর পরেরদিন টেস্টের সব রিপোর্ট দেখে ডাক্তার ডায়ালাসিসের কথা বলেন।আর এর জন্য প্রসেসিং করছিলো তারা।সবকিছু ঠিকঠাক করতে রাত ১১ টা বেজে গিয়েছিল।এরপর আব্বুকে ১১.৩০ মিনিটে ডায়ালাসিসের জন্য উপরে ডায়ালাসিসের রুমে নিয়ে গেলো।আমরা সবাই ছিলাম সেখানে।কিন্তু তারা রুমে কাউকে যেতে দিবেন না।

20240625_215009.jpg

20240625_214958.jpg

উপরের ফটোগ্রাফির রুমটিতে আমরা গিয়ে রিকুয়েষ্ট করছিলাম অন্তত আম্মুকে যেনো থাকতে দেয়া হয়।কিন্তু তারা বলছেন কোন সমস্যা নেই।আমরাই দেখবো কিছু হলে।আপনারা কেবিনে গিয়ে বসেন।আমাদের ৩ ঘন্টা সময় লাগবে।যেহেতু আজ প্রথম দিন।তাই বেশী সনয় করবে না ডায়ালাসিস।ডায়ালাসিসের রুমের সামনে ওয়েটিং রুমেও বসতে দেয়া হয় না।একে তো রাত ১২ টা।এরপর সেই রুমে সামান্য কজন পেসেন্ট ছিল।

20240625_215056.jpg

আব্বু এতো মন খারাপ করে বসেছিল তা আর কি বলবো।আমি সাহস দিলাম।আমি বললাম ভয়ের কিছু নেই।আপনি কিছু বুঝতে ই পারবেন না।তবুও যেনো আব্বুর মন কিছুতেই ঠিক হচ্ছিল না।রাজ্যের চিন্তা যেনো আব্বুর মাথায় তখন ভর করছিলো।কথায়ই বলছিলো না।আমি আমার শ্বাশুড়ি মাকে স্কয়ার হাসপাতালে ডায়ালাসিসের জন্য নিয়ে যেতাম।বাসা থেকে কিছু খাবার নিয়ে যেতাম শ্বাশুড়ি মাকে খাওয়ানোর জন্য ডায়ালাসিসের সময়।স্কয়ার হাসপাতালে পেসেন্টের সাথে একজন যেতে দিতো।কিন্তু এই হাসপাতালে নাকি নিয়ম নেই।

20240626_001112.jpg

20240626_001037.jpg

আব্বু টেনশনে একেবারেই চুপসে গেছে।কিন্তু আরো বেশী চিন্তার বিষয় হলো আম্মু।আম্মু আরো বেশী ভয়ে কাতর হয়ে গিয়েছিল।আব্বুকে বোঝাবো নাকি আম্মুকে বোঝাবো। কি একটা অবস্থা।আমার মা একজন সাহসী নারী।যে কিনা প্রতিনিয়ত আমাদেরকে সাহস জুগিয়ে আসছে।আমরা কেউ যখন কোন কিছু নিয়ে খুব বেশী চিন্তিত হই।তখন আমার মা ই আমাদের ভরসার জায়গা।সেদিন সেই মা ই যেনো অনেক বেশি ভেঙে পরেছিল।তাই ভাইয়া-ভাবীদের,বোনকে বাসায় চলে যেতে বললাম।আমি আম্মুর সাথে থাকব এটা ই ঠিক করলাম।

20240626_001023.jpg

সবাই চলে গেলো। আম্মু আর আমি কিছুতেই নীচে গিয়ে কেবিনে বসতে পারলাম না।তাই বারান্দায় দাঁড়িয়ে রাতের শহরের কিছু ফটোগ্রাফি করলাম আমি।বেশ কিছু সময় দাঁড়িয়ে আবার সেই রুমের সামনে গেলাম।একজন নার্স সামনে এসে বলল,আপনার আব্বু ভালো আছেন।নীচে গিয়ে বসেন।কোন সমস্যা নেই।হয়তো রাত ২ টা বাজবে শেষ হতে।এরপর আমরা দুজন কেবিনে গিয়ে বসলাম।আম্মু বলছিলো আমাকে ঘুৃমাতে।কিন্তু আমরা দুজনের কেউ আসলে ঘুমাতে পারলাম না।রাত দুইটার সময় হুইল চেয়ারে করে আব্বুকে নিয়ে আসা হলো।আব্বু ঠিক আছে কিনা জানতে চাইলে আব্বু বলল কোন সমস্যা নেই,ভালোই আছে।যাক,এই শুনে শান্তি পেলাম।আর আব্বুর ভয় ও কেটেছে কিছুটা বুঝলাম।এভাবে করে ই ৪ দিন ডায়ালাসিস করানো হয়েছে।আলহামদুলিল্লাহ এখন অনেকটা ই ভালো।কাল হয়তো আর একটা ডায়ালাসিস করে ছেড়ে দিবে।২৫ তারিখ থেকে আজ ৫ তারিখ দুজন হাসপাতালে আছেন।আব্বুর জন্য খাবার রান্না করি,আব্বুকে দেখতে যাই,ঘরের কাজ সবকিছু মিলিয়ে বেশ চাপের মধ্যে আছি।এসব চাপ আমার কাছে কিছু নয়।আব্বু যেনো সুস্থ থাকে।প্রথম দিনের ডায়ালাসিসের অনুভূতি সত্যিই খুব বেদনাদায়ক ছিল অন্তত আব্বুকে দেখে মনে হয়েছিল খুব কষ্টে আছেন।আমি চেষ্টা করলাম প্রথম দিনের আব্বুকে করা ডায়ালাসিসের অনুভূতি গুলো শেয়ার করার।

আজ আর নয়।আপনাদের কাছে মনের অনুভূতি গুলো শেয়ার করতে পেরে ভীষণ ভালো লাগলো।সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন।আবার নতুন কোন ব্লগ নিয়ে হাজির হবো।

পোস্ট বিবরন


শ্রেনিলাইফ স্টাইল
প্রয়োজনীয় ডিভাইসSamsung A 20
ফটোগ্রাফার@shimulakter
স্থানগনস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল-ধানমন্ডি,ঢাকা

আমার পরিচয়

gPCasciUWmEwHnsXKML7xF4NE4zxEVyvENsPKp9LmDaFv2JKCUcMNfCcMEjybGCW7SacrN1cXLYVvtF4WeVsso9rbDYeVDHvs3UwFMnhLNxFpJPxeDARUi4BdrHnKMpzjhwGwx9hNv4rY8pcMC.jpeg

আমি শিমুল আক্তার।আমি একজন বাংলাদেশী।আমি এম এস সি(জিওগ্রাফি) কমপ্লিট করি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।আমি বিবাহিতা।আমি একজন গৃহিণী।আমি স্বাধীনচেতা একজন মানুষ।ভালোবাসি বই পড়তে,নানা রকমের রান্না করতে,ফটোগ্রাফি করতেও আমি ভীষণ পছন্দ করি।বাংলায় লিখতে আর বলতে পারার মধ্যে অনেক বেশী আনন্দ খুঁজে পাই।নিজের মধ্যে থাকা সৃজনশীলতাকে সব সময় প্রকাশ করতে পছন্দ করি।এই বাংলার মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছি বলে নিজেকে অনেক ধন্য মনে করি।

2r8F9rTBenJQfQgENfxADE6EVYabczqmSF5KeWefV5WL9WQrQvqP5nhp7XM51LVxoiwvG4n2SMPJqq4jr2WDgyE2QvgqfT2KbJEaeoc2UiMkyE3Lt3BykMds72QZ36oyQ.png

2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvQjV74EiQgbJ1bHnuaQtMGJ82DmjK2jvfqXMgqNbyA8bTES8NsicPw9oefRmFaB9aZAvDYQNLHWt1W7g.png

6bhseHAdLtYRoe4mZ6fU3gFc8eKGc3JgYMfqGaKxkR3mYxeToZJatrzXJ26wyJvrfyUjWUHbwevxJfcy1wNaX2uYf5yHRjEM6kRmppRUgc...Y4qhGk41e9xshdKq7axZeLWprzfJqgtshHQPZjCGuXiyHFG1XqYcZSdGGLYKKmVtY1zvpEFteA1FrU83LMRPP7BcAne3avpKyGdHz9yne2nakYyhwHTfUardAv.png

6bhseHAdLtYRoe4mZ6fU3gFc8eKGc3JgYMfqGaKxkR3mYxgugFkjBFNEHgnHxgjqRLKWnKFTwwKJ9vDEph9jyEpATxyrkzsRxUofieSXvW...XVCPrZEiBQY3DNWnVp6gQMYW4TcQUU4y1uo3Ezg1XbNauP1DnGa1WaLqAP9WHuqV91uPvSqP1kx1PYJ64PVyuWqBr4dV3UwHGUMTVT74SoLbnwqJdiWJhDn669.gif

Sort:  
 17 days ago 

নিজের আপনজনের কিছু হলে ঘুম তো দূরের কথা স্থির হয়ে বসাই যায় না । আর আপনার আম্মুর অবস্থাও বুঝতে পারছি কিভাবে স্থির থাকবেন তিনি । সবসময় অন্যদেরকে সাহস দেন কিন্তু এখন সে নিজেই অস্থির হয়ে পড়েছেন । আর অসুস্থ অবস্থায় আপনজন কেউ পাশে থাকলে তখন ভালো লাগে । কাউকে সাথে না পাওয়ায় আপনার আব্বু একটু চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন ।যাক শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে কাজটা সম্পন্ন হয়েছে জেনে ভালো লাগলো ।

 16 days ago 

ধন্যবাদ আপু পাশে থাকার জন্য।

 17 days ago 
 17 days ago 

আসলে ডায়ালাসিসের সময় কাউকে সাথে থাকতে দেন না। ডায়ালাসিস করার সময় মনের মধ্যে একটু ভয় ভীতি কাজ করে, ঠিক অনুরুপ ভাবে আপনার বাবার ও মনের মধ্যে একটু ভয় কাজ করছিল। আপনারা আপনার বাবা কে একটু সাহস দেখিয়েছেন, এটা শুনে বেশ ভালো লাগলো আমার কাছে। আপনার বাবার সুস্থতা কামনা করছি। আশা করছি খুবই তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবে।

 16 days ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

 17 days ago 

আসলে যতই সাহসী হোক না কেন, নিজে কিনবা নিজের মানুষ অসুস্থ হলে বোঝা যায়।সৃষ্টিকর্তা আপনার বাবাকে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ করুক তাই প্রার্থনা করছি।আপনার বাবা ঠিক আছে শুনে ভালো লাগলো।আসলেই নিজের মানুষ অসুস্থ হলে একটু চাপ পরে যায় সবমিলে।আপু আপনাকে ধৈর্য্য দিক আল্লাহ।

 16 days ago 

অনেক ধন্যবাদ আপু মতামত প্রকাশ করে পাশে থাকার জন্য।

 17 days ago 

যে যত সাহসী হোক না কেন আপন জনের কিছু হলে দুর্বল হয়ে পড়েন। তখন কেউ পাশে থাকলে বেশ সাহস অনুভব করেন।আন্টির অবস্থাও হয়েছে তাই। নিজে অন্যকে সাহস দেন আর কাছের মানুষের অসুস্থতায় নিজেই ভেঙ্গে পড়েছেন।আর যে অসুস্থ তার মন খুব দুর্বল থাকে হাজারো চিন্তা ভর করে। তাইতো আঙ্কেল বেশ চিন্তিত ছিলেন। তবে এখন তিনি সুস্থ আছেন জেনে ভালো লাগলো।দোয়া করি যেন আঙ্কেল দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেন।অনেক অনেক শুভ কামনা আপনার জন্য।

 16 days ago 

সুন্দর মন্তব্য শেয়ার করে পাশে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।

 17 days ago 

এর আগের একটি পোস্টের মাধ্যমে জেনেছিলাম আপনার বাবার অসুস্থতার কথা। আপু আপনার বাবা অসুস্থ জেনে খুবই খারাপ লাগলো। আশা করছি সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে উনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। উনার জন্য দোয়া রইল আপু।

 16 days ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্য শেয়ার করে পাশে থাকার জন্য।

 16 days ago 

আপনার আব্বুর ডায়ালাসিসের প্রথম দিনের অনুভূতি পড়ে অনেক কিছুই বুঝলাম। আসলে এই ব্যাপারে আমার তেমন অভিজ্ঞতাও নেই। তবে আপনার ব্লগ পড়ে বুঝতে পারলাম আপনারা সবাই খুবই টেনশনে ছিলেন। আর এটা টেনশন করারই বিষয়। যায়হোক আপনার বাসা কাছে থাকার কারনে মা বাবার সেবা করতে পারছেন। কবে রিলিজ দিবে জানাবেন। আপনার আব্বুর সুস্থতা কামনা করি। ধন্যবাদ।

 16 days ago 

আজ ই বাসায় চলে গেছে রাতে।এখন আলহামদুলিল্লাহ সুস্থ। ধন্যবাদ মতামত প্রকাশ করে পাশে থাকার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 66552.34
ETH 3451.80
USDT 1.00
SBD 2.65