ব্যস্তময় শহরে ভালোবাসার খুবই অভাব-@১০শতাংশ শিয়াল মামার জন্য
দিনদিন মানুষ গ্রাম থেকে শহরের দিকে কেন্দ্রিভুত হচ্ছে। আর শহরের স্থানীয় মানুষের তুলনায় গ্রাম থেকে মানুষ আসায় জনাকীর্ণতা বেড়েই চলছে।আর এই জনাকীর্ণতা বেড়ে যাওয়ার কারণে কাজ করার ক্ষেত্র গুলো আগের থেকে অনেক কমে যাচ্ছে।
আর শহরে একটি পরিবারকে সাধারণভাবে চলতে হলে অনেক খরচের দরকার হয়। আর এই জন্য মানুষ টাকার জন্য সব ধরনের কার্যকলাপে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আর তার কারণে মানুষ মানুষকে সম্মান দিতে চায়না এবং একজনের আরেকজনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ অবনতির দিকে ধাবিত হয়।
পেটে ক্ষুধা থাকলে দুনিয়ার কিছুই ভালো লাগবে না। আর ভালো না লাগলে মানুষের মানুষের প্রতি ন্যূনতম সম্মানবোধ ভেতর থেকে আসবে না। এই কারণে মানুষ কঠোর থেকে কঠোরতম হতেও পিছপা হয়না।
শহরে বিভিন্ন ধরনের পেশা রয়েছে এবং মানুষ এমন কোন কাজ নাই টাকার জন্য যা করছে না। টাকার জন্য হলেও একজন আরেকজনকে হত্যা করতেও দ্বিধাবোধ করছে না। আর এসব কিছুর পিছনে কাজ করে আর্থিক স্বচ্ছলতা এবং স্বাধীন ভাবে বেঁচে থাকার এক অকুতোভয় অনুভূতি।
গ্রামীণ জীবনের কার্যকলাপ শারীরিকভাবে কঠোর হওয়ায় মানুষ দিন দিন শহরের দিকে কাজ সহজভাবে পাওয়ার জন্য পাগলের মতো ছুটে যাচ্ছে। আরে ছুটে যাওয়ায় শহরের এবং শহরে আসা মানুষগুলো দিশেহারা হয়ে যায় আর্থিক সচ্ছলতার জন্য।
শহরে যে কোন মানুষ কোন ভুল করলে তার সাথে কঠোর ব্যবহার করে এবং সহজ সরল মন মানসিকতাকে কঠিন করে দেয়। আর সেই কঠোর ব্যবহার প্রতিদিন চোখের সামনে হাওয়ায় কোন অসহায় মানুষের জন্য তার কোমল হৃদয় কোন দাগ কাটে না।
আর এই কঠোরতম ব্যবহার করার কারণে অসহায় নিপীড়িত এবং কষ্টে জর্জরিত মানুষগুলো ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং তারা সব ধরনের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়।
এই ব্যস্ত শহরে ডাক্তার রোগী খোঁজার জন্য ব্যস্ত, রিক্সাওয়ালা তার যাত্রীকে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য, নাপিত নতুন লোকের চুল কাটার জন্য ব্যস্ত, মুচি আরেকজনের ছেড়া বা ফাটা জুতা ঠিক করায় ব্যস্ত, ছাত্র-ছাত্রী তাদের বিদ্যাপীঠে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত, দোকানদার নতুন ক্রেতা পাওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো, শোরুমে জুতো বা কাপড় বিক্রি করার জন্য নতুন কাস্টমারের জন্য ব্যস্ততা যা সবাইকে সবার থেকে আলাদা করে রেখেছে। সবাই সবার মত তার নিজ কাজে ব্যস্ত।
কিন্তু দিন শেষে আপনি একা। আপনি বড় একা এবং যা করার আপনাকেই করতে হবে। আর সব পেশার লোক তার নতুন কাস্টমার খোঁজায় ব্যস্ততা কিন্তু একজনের প্রতি আরেকজনের ভালোবাসার খুবই অভাব। শহরে একজন মানুষ অসুস্থ বা কেউ কাউকে মারার চেষ্টা করলে বাধা দেয় না বা কাছে এগিয়ে আসে না।
এই ব্যস্তময় শহরের ইট পাথরের দেয়াল মানুষগুলোকে এতটাই আলাদা করে ফেলেছেন যে তারা যে মানুষ সেটা তারা ভুলে গেছে। একজন ভালো মানুষের যে বৈশিষ্ট্য বিলুপ্ত হয়ে গেছে তা শহরের নিপীড়িত মানুষ গুলোর দিকে তাকালে সহজভাবে পরিলক্ষিত হয়।
Image source
একজন মানুষ আরেকজন মানুষের বিপদে এগিয়ে আসবে এটাই এটাই হওয়া উচিত। কিন্তু আমরা আমরা মনুষ্যত্বের বৈশিষ্ট্য থেকে অনেক দূরে সরে গিয়েছি। এই পৃথিবীতে সুন্দর ভাবে সবাইকে বাঁচতে হলে একজন জনের বিপদে, দুর অবস্থায় এগিয়ে আসতে হবে এবং ভ্রাতৃত্ব সুলভ সম্পর্ক বজায় রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তাহলে আমরা বিবেক বোধ সম্পন্ন এবং বন্ধুসুলভ মানুষগুলোকে খুঁজে পাবো।
একমাত্র ভালোবাসাই পারে মানুষকে সঠিক সুন্দর এবং সৎ পথে আনতে। অস্ত্র দিয়ে যে যুদ্ধ শেষ করা যায় না কিন্তু সেই যুদ্ধ ভালোবাসা দিয়ে জয় করে নেওয়া যায়। সুতরাং আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেকেই ভালোবাসা দিয়ে একজন আরেকজনের মাঝে মৃত্যুর পরও বেঁচে থাকা যাবে।
পোস্টটি আপনার মূল্যবান সময় দিয়েপড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি সামনে আরো ভালো কিছু নিয়ে হাজির হতে পারব। আপনাদের ভালোবাসার প্রত্যাশায় এই ক্ষুদ্র জীবনে বেঁচে থাকতে চাই।
গ্রামের জীবন ছেড়ে মানুষ এখন নগরমুখী। মানুষের যেন আর গ্রামের সাদামাটা জীবন উপভোগ করতে চায় না। দিনবদলের সাথে মানুষের আচার-আচরণ চিন্তাভাবনার পরিবর্তন হচ্ছে। মানুষ এখন আধুনিক থেকে আরও আধুনিক হতে চায়। এবং আধুনিক থেকে এতই আধুনিক হচ্ছে যে জীবন বাঁচানোর তাগিদে অথবা নিজের অবস্থানকে দাঁড় করাতে গিয়ে মানুষ যেন মানুষকে সম্মান করতে দিন দিন ভুলে যাচ্ছে। আপনি গ্রামীণ জীবন থেকে নগরমুখী মানুষের জীবনধারণের ভূমিকা নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোষ্ট লিখেছেন। আপনার ছবিগুলোও ছিল অসাধারণ। এমন সুন্দর একটি পোষ্ট উপহার দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ইট পাথরের এই শহরে সবাই নিজের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে নিজ নিজ কর্ম নিয়ে ব্যাস্ত।কেউ কারো জন্য নয়।কর্ম না করলে টিকে থাকা খুব কঠিন। সুন্দর লিখছেন।ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ সুন্দর কমেন্ট করার জন্য।
একটা সত্য কথায় উপস্থাপন করেছেন।এই আধুনিক জুগে সব কিছু থাকলেও মানুষ এর পায়াহে পাবার মতো আর কেউ থাকে না দিন শেষে। তাইতো মানুষ ক্রমে ক্রমে কেমন হয়ে যায়।অসাধারন দারুন একটি বিষয় নিয়ে উপস্থাপন করেছেন শুভ কামনা।
আপনি ঠিক বলেছেন।মানুষ বিবেকহীন এক জগতের দারস্থ হচ্ছে ক্রমশ।আপনার কমেন্ট করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।