কবিতা || শিক্ষার্থীদের রক্তের দাগ" 😭||~~

in আমার বাংলা ব্লগ7 months ago

আসসালামু আলাইকুম/আদাব

"শিক্ষার্থীদের রক্তের দাগ" 😭


1000016548.jpg
(ক্লে দিয়ে বানানো রক্তের দাগ )


সকলকে শুভেচ্ছা। আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ হঠাৎ করে আসা,কিছু কালো রাত্রি পেরিয়ে ঠোঁটে মুখে বিষণ্ণতার প্রলেপ মেখে, আমিও বেশ ভালো আছি। আর আপনারা সবাই সব সময় ভালো থাকবেন, এটাই প্রত্যাশা করি।


1000016547.jpg


বন্ধুরা আজ আবারো নিজের লেখা একটি গদ্য কবিতা নিয়ে হাজির হলাম। সমসাময়িক বিষয়ের উপর লেখা। আমি জানিনা আপনাদের কেমন লাগবে কবিতাটি। তবে পথে ঘাটে এখনো রক্তের ছোঁপ ছোঁপ দাগ দেখে এই অনুভূতি উদয় হয়েছিল। আর সেই অনুভূতি থেকে এই কবিতার সৃষ্টি।
'শিক্ষার্থীদের রক্তের দাগ' শিরোনামে রচিত এই গদ্য কবিতাটি কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে এক মর্মান্তিক, প্রেরণাদায়ক ও জ্বলন্ত চিত্র তুলে ধরেছে। কবিতার প্রতিটি লাইনই যেন সেই আন্দোলনের তীব্রতা, কষ্ট ও সংগ্রামের চিহ্ন বহন করছে।

"শিক্ষার্থীদের রক্তের দাগ" একটি গভীর ও আবেগপ্রবণ গদ্য কবিতা যা বাংলাদেশের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের সংগ্রাম এবং আত্মত্যাগের প্রতিফলন। কবিতাটি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ থিম ও ভাবধারাকে ধারণ করে:

কবিতার শুরুতেই আন্দোলনের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রামে নেমেছিল। পোস্টার হাতে নিয়ে, চোখে অশ্রু এবং হৃদয়ে যন্ত্রণার ক্ষত নিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের স্বপ্নের নতুন ভোরের আশায় আন্দোলন করছে।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় ঘটে যাওয়া নির্মমতার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। রাস্তায় পড়ে থাকা রক্তের দাগ, ব্যানার, ছেঁড়া পোস্টার এবং ভাঙা স্বপ্নের মাধ্যমে আত্মত্যাগ এবং সেই আন্দোলনের বেদনাদায়ক স্মৃতিগুলি প্রকাশ করা হয়েছে।

কবিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল শিক্ষার্থীদের পুনরায় শপথ গ্রহণ। তাদের রক্তে ভেজা পথে দাঁড়িয়ে, তারা আবারো শপথ করে যে তারা তাদের সংগ্রাম চালিয়ে যাবে। এই রক্তের দাগ তাদের হাল ছাড়তে দেয় না এবং তাদের নতুন স্বপ্ন এবং সার্থকতার পথে উৎসাহিত করে।

এবং কবিতার শেষ অংশে, শিক্ষার্থীদের নতুন প্রভাতের স্বপ্ন এবং তাদের দাবি আদায়ের প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে। তাদের রক্তের দাগ কখনো শুকাবে না যতক্ষণ না তারা তাদের কাঙ্ক্ষিত নতুন ভোরে পৌঁছাতে পারবে।

কবিতায় ব্যবহৃত ভাষা অত্যন্ত আবেগপ্রবণ এবং চিত্রময়। রক্তের দাগ, পোড়া যন্ত্রণা, নীরব সাক্ষী, চিৎকার করা রক্তের দাগের মতো রূপক গুলি অত্যন্ত প্রভাবশালীভাবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং তাদের আত্মত্যাগের কথা প্রকাশ করেছে।

সর্বোপরি, "শিক্ষার্থীদের রক্তের দাগ" একটি শক্তিশালী এবং প্রেরণাদায়ক গদ্য কবিতা যা শিক্ষার্থীদের সংগ্রাম, আত্মত্যাগ, এবং তাদের অধিকার আদায়ের প্রতিজ্ঞাকে স্মরণ করিয়ে দেয়।

চলুন তাহলে কবিতাটি পড়ে আসা যাক,,


কবিতা- "শিক্ষার্থীদের রক্তের দাগ"

কলমে- সেলিনা সাথী

💞-


1000016549.jpg

শহরের প্রান্তে, রক্তের দাগে ভেজা রাস্তায়,
রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিলাম আমি।
কাঁপা কাঁপা হাতে ধরে রাখা পোস্টার,
চোখের কোণায় জমে থাকা অশ্রু,
আর হৃদয়ের গভীরে পোড়া যন্ত্রণার ক্ষত।
কোটা আন্দোলনের দাবিতে সংগ্রামে -
নেমেছিলাম আমরা শিক্ষার্থীরা
স্বপ্নের এক নতুন ভোরের আশায়।


শিক্ষার্থীদের শোরগোল, স্লোগান আর
সংগ্রামের মিছিলের মাঝে, ছিল অগণিত
কণ্ঠের এক মিলিত স্বর, কিন্তু এই রাস্তায়,
যেখানে দাঁড়িয়ে আছি এখন, সেখানে আর নেই
সেই কণ্ঠের জোরালো ধ্বনি, রক্তের দাগে
লেপ্টে থাকা সেই জমিনে, নিঃশব্দে পড়ে থাকা ব্যানার, ছেঁড়া পোস্টার আর ভাঙা স্বপ্ন।

কাজলা হানিফ ফ্লাইওভারের নিচে
পড়ে থাকা সেই রক্ত, যেন এক নীরব সাক্ষী।
সেদিনের লড়াই, সেদিনের চিৎকার,
আর সেদিনের হারানো প্রাণের গল্প বলে যায়।
এক একটি রক্তের দাগ যেন চিৎকার করে,
জানিয়ে দেয় আমাদের অবিনশ্বর স্বপ্নের কথা।

আমাদের রক্তে ভেজা সেই
পথের ধারে দাঁড়িয়ে, আবারো
নতুন করে শপথ নিই।
এই রক্তের দাগ, এই ব্যথার চিহ্ন,
আমাদের হাল ছাড়তে দেয় না।
আমাদের সংগ্রামের পথে,
আমাদের অঙ্গীকারের মাটিতে,
আবারো নতুন করে ফুল ফোটাতে হবে
জাগাতে হবে ভেঙে যাওয়া স্বপ্ন।

স্বপ্নের নতুন প্রভাতে, আমাদের দাবি,
আমাদের সংগ্রাম, আর আমাদের
সার্থকতার পথ রচনা করতে হবে।
কারণ শিক্ষার্থীদের রক্তের দাগ,
কখনোই শুকোবে না, যতদিন না
আসবে সেই কাঙ্ক্ষিত নতুন ভোর।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
২৬ জুলাই ২০২৪
সময় বিকেল ৪: ১৫
কবিতা কুটির-নীলফামারী।



1000015338.jpg

বন্ধুরা আমার আজকের কবিতটি, নিশ্চয়ই আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আর আপনাদের ভালোলাগাই আমার সার্থকতা ও পরম পাওয়া। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। পরবর্তীতে আবারো সুন্দর সুন্দর কবিতা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব।

আমি সেলিনা সাথী
💞

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

photo_2023-07-07_17-27-00.jpg

আমি সেলিনা সাথী। ছন্দের রাজ্যে, ছন্দরাণী কাব্যময়ী-কাব্যকন্যা বর্তমান প্রজন্মের নান্দনিক ও দুই বাংলার জনপ্রিয় কবি সেলিনা সাথী। একধারে লেখক, কবি, বাচিক শিল্পী, সংগঠক, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার, মোটিভেটর ও সফল নারী উদ্যোক্তা তার পুরো নাম সেলিনা আক্তার সাথী। আর কাব্যিক নাম সেলিনা সাথী। আমি নীলফামারী সদর উপজেলায় ১৮ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। আমার বাবা পিতা মরহুম শহিদুল ইসলাম ও মাতা রওশনারা বেগম। ছড়া কবিতা, ছোট গল্প, গান, প্রবন্ধ, ব্লগ ও উপন্যাস ইত্যাদি আমার লেখার মূল উপজীব্য। আমার লেখনীর সমৃদ্ধ একক এবং যৌথ কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১৫ টি। আমার প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই অশ্রু ভেজা রাত, উপন্যাস মিষ্টি প্রেম, যৌথ কাব্যগ্রন্থ একুশের বুকে প্রেম। জীবন যখন যেমন। সম্পাদিত বই 'ত্রিধারার মাঝি' 'নারীকণ্ঠ' 'কাব্যকলি'সহ আরো বেশ কয়েকটি বই পাঠকহমলে বেশ সমাদৃত। আমি তৃণমূল নারী নেতৃত্ব সংঘ বাংলাদেশ-এর নির্বাচিত সভাপতি। সাথী পাঠাগার, নারী সংসদ, সাথী প্রকাশন ও নীলফামারী সাহিত্য ও সংস্কৃতি একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এছাড়াও আমি জেলা শাখার সভাপতি উত্তোরন পাবনা ও বাংলাদেশ বেসরকারি গ্রন্থাগার পরিষদ নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছি। তিনি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৪ সালে নীলফামারী জেলা ও রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ জয়িতা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি। এছাড়াও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় ও সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রাখায় আমি বহু সম্মামনা পদক অর্জন করেছি। যেমন সাহিত্যে খান মইনুদ্দিন পদক ২০১২। কবি আব্দুল হাকিম পদক ২০১৩। শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র কর্তৃক সম্ভাবনা স্মারক ২০১৩। সিনসা কাব্য সম্ভাবনা ২০১৩। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্মামনা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সম্মাননা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১১৫ তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ২০১৪। দৈনিক মানববার্তার সম্মামনার স্মারক ২০২৩। চাতক পুরস্কার চাতক অনন্যা নারী সম্মাননা ২০২৩ ওপার বাংলা মুর্শিদাবাদ থেকে মনোনীত হয়েছি।

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjddgXFQSs49C4STfzSVsuC3FFbePnB7C4GwVRpxUB36KEVxnuiA7vu67jQLLSEq12SJV1etMVkHVQBGVm1AfT2S916muAvY3e7MD1QYJxHDFjsxQDqXN3pTeN2wYBz7e62LRaU5P1fzAajXC55fSNAVZp1Z3Jsjpc4.gif



বিষয়: ক্রিয়েটিভ রাইটিং

কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......


Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 7 months ago 

কোটা সংস্কার আন্দোলন ও রাজপথে অধিকার আদায়ের জন্য যে আত্নত্যাগ তা বাংলার বুকে নতুন এক অধ্যায়, নতুন ইতিহাস রচনা করে গেল। যেসব ভাইরা মহান আত্নত্যাগের মহিমায় শাহাদাত বরণ করেছেন, জীবন বাজি রেখেছেন, মিছিলে অংশ নিয়ে মৃত্যুঝুঁকি তোয়াক্কা করে সামনে অগ্রসর হয়েছেন - তাদের প্রত্যেকের প্রতি গভীর ভালোবাসা ও সালাম জানাই।

আপনার এই গদ্যছন্দের কবিতাটি সত্যিই তুলে ধরে জীবন্ত কিছু ছবি, রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় ছাত্ররা বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছে। পড়ে খুব ভালো লাগলো। বাস্তবসম্মত ও যুক্তিনিষ্ঠ একটি কবিতা নিঃসন্দেহে বটে।

 7 months ago 

বর্তমানে যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে এরকম অবস্থা আমরা কেউই চাই না। তারপরও সৃষ্টিকর্তার কাছে অনেক অনেক প্রার্থনা করি যেন এই পরিস্থিতি খুব তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক হয়।

 7 months ago 

বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে যতই চিন্তা করি ততই খারাপ লাগা বেড়ে যায়। এতগুলো তাজা প্রাণ এত অল্প বয়সেই ঝরে গেল। পরিবারগুলো এই কষ্ট কিভাবে সহ্য করবে তাই মনে হয়। আপু আপনার আজকের কবিতাটি খুব চমৎকার হয়েছে। আসলেই এই রক্তের দাগ মুছে ফেলা যাবে না যতক্ষণ না বিজয় নিশ্চিত হয়। ভালো লাগলো আপনার কবিতাটি পড়ে।

 7 months ago 

বর্তমানে যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে এরকম অবস্থা আমরা কেউই চাই না, তারপরও সৃষ্টিকর্তার কাছে অনেক অনেক প্রার্থনা করি এই পরিস্থিতি যেন খুব তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক হয়।

 7 months ago 

আপু আজ আপনি খুব সুন্দর একটি কবিতা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আপনার লেখা কবিতাটি পড়ে সত্যি অনেক ভালো লাগলো।আপনার এই কবিতাটি সত্যিই তুলে ধরে জীবন্ত কিছু ছবি। আসলে এই রক্তের দাগ মুছে ফেলা যাবে না ততক্ষণ,যতক্ষণ পর্যন্ত বিজয় নিশ্চিত হয়। আজ আপনার কবিতাটি অনেক সুন্দর ছিলো।আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটি কবিতা পোস্ট করার জন্য।

 7 months ago 

ঠিক বলেছেন।

 7 months ago 

হুম আপু।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.24
JST 0.034
BTC 96170.07
ETH 2806.40
SBD 0.67