স্বরচিত বিরহের কবিতা||~~
স্বরচিত কবিতা
সকলকে শুভেচ্ছা। আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। আর আপনারা সবাই সব সময় ভালো থাকবেন,এটাই প্রত্যাশা করি।
আজ আবার ও স্বরচিত আরেকটি বিরহের কবিতা নিয়ে হাজির হলাম। আশা করছি আজকের কবিতাটিও আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
বিরহের এই কবিতার মূলভাবটি গভীর ও মর্মস্পর্শী, যা প্রিয়জনের বিচ্ছেদজনিত বেদনার এক গভীর চিত্র তুলে ধরে। এটি একটি মানসিক যন্ত্রণা, যা মানুষকে একাকিত্বের মধ্যে ডুবিয়ে দেয়। প্রিয়জনের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো যেন জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান স্মৃতি, যা সময়ের সঙ্গে ফিকে হয়ে যেতে পারে, কিন্তু পুরোপুরি মুছে যায় না। প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি স্পর্শ, প্রতিটি হাসি, সবকিছুই যেন স্মৃতির ভেতরে আটকে থাকে, এবং প্রিয়জনের অনুপস্থিতি সেই স্মৃতিগুলোকে আরও বেশি স্পষ্ট করে তোলে।
এই গদ্য কবিতায় বিচ্ছেদের যন্ত্রণা কেবল শারীরিক অনুপস্থিতির কথা বলে না, বরং মনের গভীরে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়, সেটাই মূলত প্রকাশ পায়। প্রিয়জনের সাথে কাটানো সুখের দিনগুলো, ছোট ছোট আনন্দের মুহূর্তগুলো, সবকিছুই মনে হয় যেন স্বপ্নের মতো, যা ধরা যায় না, ছোঁয়া যায় না।
তবে এই বেদনাও একধরনের অপেক্ষা নিয়ে আসে। যদিও হৃদয় জানে যে সেই প্রিয়জন আর ফিরে আসবে না, তবুও মনের ভেতরে কোথাও একটি আশা বেঁচে থাকে—একটি অদ্ভুত আকাঙ্ক্ষা যে হয়তো কোনো একদিন সেই প্রিয়জনের মুখ দেখা যাবে, হয়তো আবার সেই দিনের মতো একসাথে হওয়া যাবে। কিন্তু এই অপেক্ষা বাস্তবে কখনো পূর্ণ হয় না, আর সেটাই বিরহের সবচেয়ে মর্মান্তিক দিক।
বিরহের কবিতায় মূলত হৃদয়ের সেই নীরব আর্তনাদই ফুটে ওঠে—যে প্রিয়জনকে সবকিছু দিয়ে ভালোবেসেছিল, তার অনুপস্থিতি জীবনের প্রতিটি ধাপে বয়ে নিয়ে আসে এক ধরনের নিঃসঙ্গতা। জীবনের প্রতিটি সুর, প্রতিটি হাওয়া, প্রতিটি মুহূর্তে প্রিয়জনের স্মৃতি জড়িয়ে থাকে। বিচ্ছেদ যেন একটি নিরন্তর অভিজ্ঞতা, যা কখনো শেষ হয় না।
"শেষ কথার জন্য"
জীবন যেনো এক অন্তহীন পথচলা,
যেখানে গন্তব্যের ঠিকানা হারিয়ে যায়।
আজকের এই সন্ধ্যায় বাতাসে বয়ে
যাওয়া প্রতিটি শীতল হাওয়া কানে কানে
বলে দেয় তার নাম, যে নাম একসময় ছিলো
হৃদয়ের সবচেয়ে প্রিয় সুর।
অথচ আজ সেই নামের উচ্চারণে যেন
এক অজানা কাঁপুনি—
কেমন করে হারিয়ে গেলো সব!
একদিনের সেই বৃষ্টিভেজা দুপুর,
তোমার চোখের মায়াবী চাহনি
আর মুখের সেই কোমল হাসি,
কী নিখুঁতভাবে মুছে গেছে!
সময় কি সত্যিই এতটা নিষ্ঠুর?
নাকি মনই আমাদের সব ভুলিয়ে দেয়?
জানি না। শুধু জানি, আজকের এই
একাকিত্ব, এই নিঃশব্দতা যেন তোমারই
প্রতিচ্ছবি হয়ে বসে আছে চারপাশে।
তুমি চলে গেছ, কিন্তু তোমার ছোঁয়া
রয়ে গেছে বাতাসে, প্রতিটি গন্ধে,
প্রতিটি ধ্বনিতে। তোমার উপস্থিতি
এখন কেবল স্মৃতির ক্যানভাসে আঁকা
এক ছবি, যা সময়ের সাথে ফিকে হয়ে
গেলেও তার রং কখনো পুরোপুরি মুছে যায় না।
তুমি ছিলে আমার পৃথিবীর সব আলো,
আর এখন সেই পৃথিবী
অন্ধকারে ঢেকে গেছে।
তোমার সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো
যেন স্বপ্ন, যা ঘুম ভাঙার পরও থেকে যায়—
কিন্তু ধরতে গেলে মিলিয়ে যায়।
তুমি চলে যাওয়ার পর থেকে আমার
হৃদয়ের প্রতিটি কণায় এক অদৃশ্য বেদনা
খেলে যায়, যা কাউকে বোঝানো যায় না।
আজকের এই সন্ধ্যায় আমি আবারও
বসে আছি তোমার অপেক্ষায়,
যদিও জানি তুমি আর ফিরে আসবে না।
তবু এই হৃদয় এখনও তোমার জন্য কাঁদে,
তোমার প্রতীক্ষায়, সেই শেষ দেখা,
শেষ কথার জন্য—যা আর কোনোদিন হবে না।
বন্ধুরা আমার আজকের কবিতটি, নিশ্চয়ই আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আর আপনাদের ভালোলাগাই আমার সার্থকতা ও পরম পাওয়া। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। পরবর্তীতে আবারো সুন্দর সুন্দর কবিতা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব, আমি সেলিনা সাথী...
আমি সেলিনা সাথী। ছন্দের রাজ্যে, ছন্দরাণী কাব্যময়ী-কাব্যকন্যা বর্তমান প্রজন্মের নান্দনিক ও দুই বাংলার জনপ্রিয় কবি সেলিনা সাথী। একধারে লেখক, কবি, বাচিক শিল্পী, সংগঠক, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার, মোটিভেটর ও সফল নারী উদ্যোক্তা তার পুরো নাম সেলিনা আক্তার সাথী। আর কাব্যিক নাম সেলিনা সাথী। আমি নীলফামারী সদর উপজেলায় ১৮ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। আমার বাবা পিতা মরহুম শহিদুল ইসলাম ও মাতা রওশনারা বেগম। ছড়া কবিতা, ছোট গল্প, গান, প্রবন্ধ, ব্লগ ও উপন্যাস ইত্যাদি আমার লেখার মূল উপজীব্য। আমার লেখনীর সমৃদ্ধ একক এবং যৌথ কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১৫ টি। আমার প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই অশ্রু ভেজা রাত, উপন্যাস মিষ্টি প্রেম, যৌথ কাব্যগ্রন্থ একুশের বুকে প্রেম। জীবন যখন যেমন। সম্পাদিত বই 'ত্রিধারার মাঝি' 'নারীকণ্ঠ' 'কাব্যকলি'সহ আরো বেশ কয়েকটি বই পাঠকহমলে বেশ সমাদৃত। আমি তৃণমূল নারী নেতৃত্ব সংঘ বাংলাদেশ-এর নির্বাচিত সভাপতি। সাথী পাঠাগার, নারী সংসদ, সাথী প্রকাশন ও নীলফামারী সাহিত্য ও সংস্কৃতি একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এছাড়াও আমি জেলা শাখার সভাপতি উত্তোরন পাবনা ও বাংলাদেশ বেসরকারি গ্রন্থাগার পরিষদ নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছি। তিনি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৪ সালে নীলফামারী জেলা ও রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ জয়িতা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি। এছাড়াও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় ও সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রাখায় আমি বহু সম্মামনা পদক অর্জন করেছি। যেমন সাহিত্যে খান মইনুদ্দিন পদক ২০১২। কবি আব্দুল হাকিম পদক ২০১৩। শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র কর্তৃক সম্ভাবনা স্মারক ২০১৩। সিনসা কাব্য সম্ভাবনা ২০১৩। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্মামনা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সম্মাননা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১১৫ তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ২০১৪। দৈনিক মানববার্তার সম্মামনার স্মারক ২০২৩। চাতক পুরস্কার চাতক অনন্যা নারী সম্মাননা ২০২৩ ওপার বাংলা মুর্শিদাবাদ থেকে মনোনীত হয়েছি।
বিষয়: ক্রিয়েটিভ রাইটিং
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
এমন বিরাহের কবিতাগুলো আমার খুব ভালো লাগে। যেখানে বিরহের অনুভূতিতে গড়া জীবনের কিছু অতীত মুহূর্তের স্মৃতি স্মরণ করে লেখা হয় এমন কবিতাগুলো। কিছু অব্যক্ত কথা এভাবেই ব্যক্ত করা যায় কবিতার মাধ্যমে। অনেক সুন্দর লিখেছেন আপনি। আপনারা লেখা বিরহের কবিতা পড়ে বেশ ভালো লাগলো।
আসলে বিরহের কবিতা গুলোতে অন্যরকম এক মুগ্ধতা ছড়িয়ে থাকে। যা বেশিরভাগ পাঠকের হৃদয় স্পর্শ করতে পারে। সুন্দর মন্তব্য করে আমাকে উৎসাহ দেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপু বিরহের কবিতাগুলো পড়তে বেশ ভালো লাগে। আজকে আপনি খুব সুন্দর একটি কবিতা লিখেছেন। তবে আপনার কবিতা মানি ভিন্ন কিছু। আপনার কবিতা থেকে অনেক কিছু উপলব্ধি করা যায়। প্রত্যেক মানুষ তার প্রিয়জনের জন্য অপেক্ষা করে। চমৎকার একটি কবিতা অনুভূতি দিয়ে লিখে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন তাই ধন্যবাদ আপনাকে।