কবিতা -"ছেলের জন্য বিয়ের শপিং"||~~
স্বরচিত -কবিতা-
সকলকে অনাবিল শুভেচ্ছা। আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। আর আপনারা সবাই সব সময় ভালো থাকবেন,এটাই প্রত্যাশা করি। আজ আবারো আমার লেখা আর একটি কবিতা নিয়ে হাজির হলাম। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে, আজকের কবিতাটিও।
ছেলের জন্য বিয়ের শপিং করতে গিয়ে আমার মন বারবার ছুটে যায় অতীতের সেই দিনগুলোতে। যখন এই হাত ধরে প্রথম তাকে নিয়ে বাজারে গিয়েছিলাম, তার পছন্দের একটা খেলনা বা রঙিন জামা কেনার জন্য। তখনকার সেই ছোট ছোট আনন্দ আর তার মিষ্টি হাসি আমার হৃদয়ে চিরস্থায়ী হয়ে গেছে।
আজ, শপিংয়ের ব্যাগে রঙিন জামার বদলে জমা হয় শেরওয়ানি, গয়না আর কনের শাড়ি। প্রতিটি জিনিস কেনার সময় মনে হয়, যেন জীবনের নতুন একটি অধ্যায় লিখছি। ছেলের জীবনের এই বিশেষ দিনে তার জন্য নিখুঁত সবকিছু খুঁজে আনার দায়িত্ব যেন আমার জীবনের সবচেয়ে বড় কাজ হয়ে উঠেছে।
তবুও, শপিংয়ের ভিড়ে, হাসি-আনন্দের মাঝেও আমার মনের কোণে একটি চাপা শূন্যতা কাজ করে। ছোট্ট সেই ছেলেটি, যে একদিন আমার আঁচল ধরে হাঁটত, আজ নিজেই নিজের পরিবার গড়তে যাচ্ছে। তার জীবনের নতুন সূচনায় আমার হৃদয় ভরে উঠছে গর্বে, তবে মনের এক কোণায় শূন্যতার টুকরোটা রয়ে যায়।
আমি জানি, এই শপিং শুধু তার জন্য নয়, এ আমার নিজের জন্যও। প্রতিটি জিনিসে আমি আমার ভালোবাসা, আশীর্বাদ আর চিরন্তন মায়ের মমতা ঢেলে দিই। প্রতিটি জামায়, প্রতিটি আংটিতে আমার প্রার্থনা জড়িয়ে থাকে—সে যেন সুখী হয়, তার জীবনে যেন কোনো দুঃখ না থাকে।
এই শপিংয়ের প্রতিটি মুহূর্তে আমার চোখে ভেসে ওঠে তার শৈশব, তার বেড়ে ওঠা। মনে হয়, সময় যেন থমকে থাকত। তবু জানি, ছেলের জীবন তার নিজের, আর আমি শুধু তার জন্য এই পথের আলো জ্বালিয়ে দিই। এ গল্প আমার ভালোবাসার, আমার গর্বের, আর আমার একান্ত নিজের।
তুমি যখন ছোট ছিলে,
তোমার জন্য শপিং মানে ছিল
রঙিন পোশাক , ছোট ছোট খেলনা,
মাঝে মাঝে চকচকে সুন্দর সুন্দর জুতো।
আমি হাসিমুখে ছুটে বেড়াতাম
দোকান থেকে দোকানে,
তোমার পছন্দের জিনিস খুঁজে আনতে।
আজ, অনেক বছর পর,
শপিং ব্যাগে জমা হয় রেশমি শেরওয়ানি,
ঝলমলে নকশা করা জুতো,
আর কোলাহলমাখা বিয়ের গহনার বাক্স।
তুমি যে আজ বড় হয়েছো—
তোমার জন্য আজ শপিং মানে
জীবনের নতুন অধ্যায়।
হাটে-মাঠে, দোকানপাটে,
তোমার জন্য নিখুঁত জিনিসগুলো
খুঁজতে খুঁজতে মনে হয়,
সবটুকু যেন স্বপ্নের মতো।
তোমার হাতের আংটি,
তোমার কনে’র ওড়না, লেহেঙ্গা
সব যেন বলে দেয়, "এটাই সেই মুহূর্ত।"
আমি জানি, তোমার হাসি ছড়িয়ে পড়বে
বিয়ের রাতে, তোমার চোখে ফুটে উঠবে
খুশির আলো।
তোমার জন্য কেনা প্রতিটি জিনিস
হয়তো আমার ভালোবাসার
স্পর্শ বয়ে নিয়ে যাবে।
তবুও, শপিং ব্যাগের ওজনের চেয়েও
ভারী হয়ে থাকে একটি মায়ের হৃদয়।
প্রত্যেকটি কাপড়, প্রত্যেকটি অলংকার,
আমার আর্শীবাদের মতো ছড়িয়ে থাকবে
তোমার জীবনে।
তুমি সুখী হও—এটাই তো আমার চাওয়া।
বিয়ের শপিং যেন মায়ের প্রস্তুতি,
তার সন্তানের জীবনে নতুন সূর্যোদয় দেখার,,
২১ জানুয়ারি ২০২৫
সময় রাত -৮:৩০
কবিতা কুটির- নীলফানারী।
বন্ধুরা আমার আজকের কবিতটি, নিশ্চয়ই আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আর আপনাদের ভালোলাগাই আমার সার্থকতা ও পরম পাওয়া। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। পরবর্তীতে আবারো সুন্দর সুন্দর কবিতা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব, আমি সেলিনা সাথী...
আমি সেলিনা সাথী। ছন্দের রাজ্যে, ছন্দরাণী কাব্যময়ী-কাব্যকন্যা বর্তমান প্রজন্মের নান্দনিক ও দুই বাংলার জনপ্রিয় কবি সেলিনা সাথী। একধারে লেখক, কবি, বাচিক শিল্পী, সংগঠক, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার, মোটিভেটর ও সফল নারী উদ্যোক্তা তার পুরো নাম সেলিনা আক্তার সাথী। আর কাব্যিক নাম সেলিনা সাথী। আমি নীলফামারী সদর উপজেলায় ১৮ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। আমার বাবা পিতা মরহুম শহিদুল ইসলাম ও মাতা রওশনারা বেগম। ছড়া কবিতা, ছোট গল্প, গান, প্রবন্ধ, ব্লগ ও উপন্যাস ইত্যাদি আমার লেখার মূল উপজীব্য। আমার লেখনীর সমৃদ্ধ একক এবং যৌথ কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১৫ টি। আমার প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই অশ্রু ভেজা রাত, উপন্যাস মিষ্টি প্রেম, যৌথ কাব্যগ্রন্থ একুশের বুকে প্রেম। জীবন যখন যেমন। সম্পাদিত বই 'ত্রিধারার মাঝি' 'নারীকণ্ঠ' 'কাব্যকলি'সহ আরো বেশ কয়েকটি বই পাঠকহমলে বেশ সমাদৃত। আমি তৃণমূল নারী নেতৃত্ব সংঘ বাংলাদেশ-এর নির্বাচিত সভাপতি। সাথী পাঠাগার, নারী সংসদ, সাথী প্রকাশন ও নীলফামারী সাহিত্য ও সংস্কৃতি একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এছাড়াও আমি জেলা শাখার সভাপতি উত্তোরন পাবনা ও বাংলাদেশ বেসরকারি গ্রন্থাগার পরিষদ নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছি। তিনি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৪ সালে নীলফামারী জেলা ও রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ জয়িতা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি। এছাড়াও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় ও সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রাখায় আমি বহু সম্মামনা পদক অর্জন করেছি। যেমন সাহিত্যে খান মইনুদ্দিন পদক ২০১২। কবি আব্দুল হাকিম পদক ২০১৩। শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র কর্তৃক সম্ভাবনা স্মারক ২০১৩। সিনসা কাব্য সম্ভাবনা ২০১৩। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্মামনা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সম্মাননা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১১৫ তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ২০১৪। দৈনিক মানববার্তার সম্মামনার স্মারক ২০২৩। চাতক পুরস্কার চাতক অনন্যা নারী সম্মাননা ২০২৩ ওপার বাংলা মুর্শিদাবাদ থেকে মনোনীত হয়েছি।
বিষয়: ক্রিয়েটিভ রাইটিং
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
আসলে সময় এভাবেই ধীরে ধীরে বদলে যায় এবং কাছের মানুষগুলোর ভূমিকা বদলে যায়। তুমি দারুন সুন্দর করে সেই পরিবর্তনশীল বিষয়টা কবিতার মধ্যে তুলে আনলে। কবিতাটি পড়ে আমিও হারিয়ে যাচ্ছিলাম আমার জীবনের অতীতের দিনে। এমন সুন্দর করে স্মৃতিচারণ এবং বর্তমানকে মিশিয়ে একটি ব্লগ শেয়ার করেছ বলে খুব ভালো লাগলো।
অনেক অনেক ভালো লাগলো আপু আপনার ছেলের বিয়ের শপিং করতে পেরেছেন জেনে। আপনি খুব সুন্দর ভাবে কবিতার মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন আপনার অনুভূতি। দোয়া করি আপনার ছেলের সাথে যেন সুখে শান্তিতে জীবন যাপন করতে পারেন এবং আপনার বৌমা যেন আপনার মনের মত হয়।
বাহ একজন ভালো কবির গুণাবলী এটাই প্রমাণিত যে আপনি খুব সুন্দর কবিতা লিখলেন। ছেলের বিয়ের শপিং নিয়ে আপনি কবিতা লিখে নিলেন। সত্যি এত দক্ষতা আপু আপনার কবিতা না পড়লে বোঝা যায় না। অনেক সুন্দর একটি কবিতা লিখলেন। ভীষণ ভালো লেগেছে পড়ে আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
আপনি বেশ দারুন কবিতার মাধ্যমে আপনার বাবুর বিয়ের বিষয়টা উল্লেখ করেছেন। তার অতীত থেকে এই পর্যন্ত অনেক কিছু কথা কবিতার ভাষায় বলার চেষ্টা করেছেন আমাদের মাঝে। আশা করবো সারা জীবন এভাবেই দোয়া করে যাবেন আপনার সন্তানের জন্য।
অনেক অনেক ভালো লাগলো আপু আপনার ছেলের বিয়ের শপিং করতে পেরেছেন জেনে। আসলে আমি লেভেল ফাইভ এর ভাইবা দিবো ঐ সময় শুনেছিলাম যে আপনার ছেলের বিয়ে জানুয়ারি মাসে। আজকে আপনি আপনার ছেলের বিয়ের শপিং করেছেন এবং সেটা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে বেশ ভালো লাগলো। আপনার ছেলের এবং আপনার ছেলের বউয়ের জন্য দোয়া এবং শুভকামনা রইলো। উনারা যেন সারাজীবন একসাথে সুখে শান্তিতে থাকতে পারে।