স্বরচিত কবিতা ও বিশ্লেষণ||~~


আসসালামু আলাইকুম/আদাব


1000014370.jpg


বন্ধুরা সবাইকে শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও বেশ ভালো আছি। আপনারা সবাই সব সময় ভালো থাকবেন এটাই প্রত্যাশা করি।

বন্ধুরা আজ আমি আমার স্বরচিত কবিতা এবং বিশ্লেষণ নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করছি আমার এই ধারাটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। কারণ অনেকেই গদ্য কবিতার মূল বিষয়বস্তুটি এড়িয়ে যান। আমার মনে হয় প্রতিটি কবিতা বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। আর এতে করে কবিতার মূলভাব প্রকাশিত হয়। আমার আজকের কবিতার শিরোনাম- চাঁদের আলোয়



🥀 বিশ্লেষণ:- 🥀

"চাঁদের আলোয়" কবিতাটি একটি জ্যোৎস্না ভেজা গভীর রাতের বর্ণনা এবং সেই রাতের মায়া ও শান্তির উপর ভিত্তি করে রচিত। আমি এই কবিতায় রাতের নিরবতা, নিস্তব্ধতা এবং চাঁদের আলোতে প্রকৃতির সৌন্দর্যকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

  • প্রথম স্তবকে আমি গভীর রাতের নিরবতা ও নিস্তব্ধতার মাঝে চাঁদের আলোয় ভেসে আসা মুহূর্তগুলোকে গল্পের সাথে তুলনা করেছি । এখানে প্রতিটি জ্যোৎস্না ভেজা মুহূর্ত যেন এক একটি গল্প বলে।
  • দ্বিতীয় স্তবকে -আমি জানালার পাশে বসে অস্থির মনের কথা বলেছিলাম । স্মৃতি বা অনুভূতির মধ্যে ডুবে থেকে , যে ভাবনায় উদয় হয়েছে, তা বুঝানোর চেষ্টা করেছি । চাঁদের আলো পৃথিবীকে ধীরে ধীরে স্নান করাচ্ছে, যা দিয়ে প্রকৃতির রূপ পরিবর্তনের কথা ব্যক্ত করছি।
  • তৃতীয় স্তবকে আমি জ্যোৎস্না ভেজা রাতের শান্তি ও নীরবতার মধ্যে আত্ম-অনুসন্ধানের কথা বলেছি । চাঁদের আলো আমার মনে শান্তি ও প্রশান্তি এনে দেয় এবং সমস্ত কষ্ট ও ব্যথা দূর করে দেয়, এই অনুভূতি টুকু বোঝানোর চেষ্টা করেছি।

  • চতুর্থ স্তবকে আমি নিজের লেখনী থামাতে পারবোনা । এবং কাগজের উপর কলমের আঁচড় চাঁদের আলোর মতো সহজ ও মসৃণ বলে বর্ণনা করেছি। প্রতিটি শব্দ যেন হৃদয়ের গভীর থেকে উঠে
    এসেছে।

  • পঞ্চম ও শেষ স্তবকে আমি , জ্যোৎস্না ভেজা রাতের এই মায়াবী মুহূর্তগুলোই আমাদের জীবনকে রঙিন করে তোলে। চাঁদের আলোয় ভিজে থাকা গভীর রাত এবং আমাদের স্মৃতির পাতায় অমলিন হয়ে থাকা কিছু অনুভূতিই জীবনের প্রকৃত রূপ,তুলে ধারার চেষ্টা করেছি।
    আশা করছি কবিতাটির বিশ্লেষণ আপনাদের কাছে সুস্পষ্ট হয়েছে।

আসুন তবে কবিতাটি পড়ে আসি -

1000014369.jpg


কবিতা- "চাঁদের আলোয়"

কলমে- সেলিনা সাথী



চাঁদের আলোয় ভেসে আসা এক
গভীর রাতের চারপাশে নীরবতা আর
নিস্তব্ধতার মায়া,প্রতিটি জ্যোৎস্না ভেজা
মুহূর্ত যেন এক, এক একটি গল্প বলে।

জানালার পাশে বসে আছি,
চোখে ঘুম নেই। মনটা কেমন অস্থির।
হয়ত কোনো স্মৃতি বা কোনো অনুভূতি
কুরে কুরে খাচ্ছে। বাইরে তাকিয়ে দেখি,
চাঁদের আলো যেন ধীরে ধীরে
পৃথিবীকে স্নান করাচ্ছে। গাছের পাতা,
ফুলের পাপড়ি, এমনকি পথের ধুলোও
যেন এক ভিন্ন রূপে সেজে উঠেছে।

এই জোসনা ভেজা রাতে মনটা
এক ধরণের শান্তি খুঁজে পায়।
যেন সব কষ্ট, সব ব্যথা ধুয়ে মুছে যায়।
জোসনা ভেজা রাতের এই নীরবতা
যেন এক গভীর আত্ম-অনুসন্ধানের
আলোর পথ দেখায়।

আমার হাতের লেখনী থামে না।
কাগজের উপর কলমের আঁচড়
যেন চাঁদের আলোর মতোই
সহজ আর মসৃণ প্রতিটি শব্দ।
প্রতিটি বাক্য যেন আমার হৃদয়ের
গভীর থেকে উঠে আসা।

জোসনা ভেজা রাতের এই মায়াবী-
মুহূর্তগুলোই তো আমাদের জীবনকে
রঙিন করে তোলে, চাঁদের আলোয়
ভিজে থাকা এই গভীর রাত,
আর আমাদের স্মৃতির পাতায়
অমলিন হয়ে থাকা
কিছু অনুভূতি— এটাই তো
জীবনের প্রকৃত রূপ।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
২৮ জুন ২০২৪
সময় রাত -৯:৩০
কবিতা কুটির -নীলফামারী।


বন্ধুরা আমার আজকের কবিতটি, নিশ্চয়ই আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আর আপনাদের ভালোলাগাই আমার সার্থকতা ও পরম পাওয়া। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। পরবর্তীতে আবারো সুন্দর সুন্দর কবিতা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব।

♥♥

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

photo_2023-07-07_17-27-00.jpg

আমি সেলিনা সাথী। ছন্দের রাজ্যে, ছন্দরাণী কাব্যময়ী-কাব্যকন্যা বর্তমান প্রজন্মের নান্দনিক ও দুই বাংলার জনপ্রিয় কবি সেলিনা সাথী। একধারে লেখক, কবি, বাচিক শিল্পী, সংগঠক, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার, মোটিভেটর ও সফল নারী উদ্যোক্তা তার পুরো নাম সেলিনা আক্তার সাথী। আর কাব্যিক নাম সেলিনা সাথী। আমি নীলফামারী সদর উপজেলায় ১৮ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। আমার বাবা পিতা মরহুম শহিদুল ইসলাম ও মাতা রওশনারা বেগম। ছড়া কবিতা, ছোট গল্প, গান, প্রবন্ধ, ব্লগ ও উপন্যাস ইত্যাদি আমার লেখার মূল উপজীব্য। আমার লেখনীর সমৃদ্ধ একক এবং যৌথ কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১৫ টি। আমার প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই অশ্রু ভেজা রাত, উপন্যাস মিষ্টি প্রেম, যৌথ কাব্যগ্রন্থ একুশের বুকে প্রেম। জীবন যখন যেমন। সম্পাদিত বই 'ত্রিধারার মাঝি' 'নারীকণ্ঠ' 'কাব্যকলি'সহ আরো বেশ কয়েকটি বই পাঠকহমলে বেশ সমাদৃত। আমি তৃণমূল নারী নেতৃত্ব সংঘ বাংলাদেশ-এর নির্বাচিত সভাপতি। সাথী পাঠাগার, নারী সংসদ, সাথী প্রকাশন ও নীলফামারী সাহিত্য ও সংস্কৃতি একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এছাড়াও আমি জেলা শাখার সভাপতি উত্তোরন পাবনা ও বাংলাদেশ বেসরকারি গ্রন্থাগার পরিষদ নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছি। তিনি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৪ সালে নীলফামারী জেলা ও রংপুর বিভাগীয় পর্যায়ে সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ জয়িতা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছি। এছাড়াও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় ও সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রাখায় আমি বহু সম্মামনা পদক অর্জন করেছি। যেমন সাহিত্যে খান মইনুদ্দিন পদক ২০১২। কবি আব্দুল হাকিম পদক ২০১৩। শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র কর্তৃক সম্ভাবনা স্মারক ২০১৩। সিনসা কাব্য সম্ভাবনা ২০১৩। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্মামনা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সম্মাননা স্মারক ২০১৩। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১১৫ তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ২০১৪। দৈনিক মানববার্তার সম্মামনার স্মারক ২০২৩। চাতক পুরস্কার চাতক অনন্যা নারী সম্মাননা ২০২৩ ওপার বাংলা মুর্শিদাবাদ থেকে মনোনীত হয়েছি।

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjddgXFQSs49C4STfzSVsuC3FFbePnB7C4GwVRpxUB36KEVxnuiA7vu67jQLLSEq12SJV1etMVkHVQBGVm1AfT2S916muAvY3e7MD1QYJxHDFjsxQDqXN3pTeN2wYBz7e62LRaU5P1fzAajXC55fSNAVZp1Z3Jsjpc4.gif



বিষয়: কবিতা

কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......


Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 days ago 

খুবই সুন্দর একটি কবিতা লিখেছেন। আপনার কবিতাগুলো পড়ে অনেক ভালো লাগে। ছন্দে খুবই সুন্দরভাবে মিলিয়ে লেখেন। অসাধারণ হয়েছে আজকের কবিতাটি।

 2 days ago 

আমার আজকের কবিতাটি ও মনের দাগ কেটেছে জেনে ভীষণ ভালো লাগলো। এভাবেই শুভ কামনা হয়ে পাশে থাকবেন প্রত্যাশা রাখছি। 💕

 2 days ago 

তোমার হাতের কবিতা মানেই অন্তমিলের কবিতা৷ কিন্তু ছক ভেঙে গদ্যে লিখলে দেখে খুবই ভালো লাগল৷ এই কবিতাটির পাঠের আলাদা গভীরতা আছে৷

খুব ভালো লিখেছ। এভাবেই লিখে চলো৷ শুভেচ্ছা নিরন্তর।

 2 days ago 

আমি অন্তমিল এবং গদ্য কবিতা দুটোই লেখি। তবে অন্তমিলের টা একটু বেশি লিখি কারণ অনেক পাঠকদের অনুরোধে।

সাথীর শত কবিতা কাব্যগ্রন্থটিতেও বেশ কয়েকটি গদ্য কবিতা আছে।
পুরোটা পড়লে বুঝতে পারবে তবে তোমাদের মত অত ভালো লিখতে পারি না।

আমার মনে আছে আমার লেখা একটি গদ্য কবিতা আমি ঢাকায় একটি মঞ্চে আবৃত্তি করেছিলাম। আর সেখানে থাকা আমাদের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মাননীয় মন্ত্রীর চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরে ছিল।
এবং তিনি আমার কবিতা এবং কবিতা আবৃত্তি দুটোই খুব পছন্দ করে আমাকে একটি দামি উপহার দিয়েছিলেন।

আরেকটা মজার ঘটনা বলি-
আমি ঢাকা শ্রীনগরী বিশাল বড় একটা অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে গিয়েছিলাম।আমার এক ভাইয়ের ইনভাইটে,সেখানে তৎক্ষণিক একটি অন্ত মিলের কবিতা লিখে এবং সেটা আবৃত্তি করে আমি ৩০ হাজার টাকা গিফট পেয়েছিলাম।

সেই স্মৃতিগুলো আজও মনে দাগ কেটে যায়।

 yesterday 

খুব চমৎকার একটি কবিতা লিখেছেন আপু কবিতাটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। কবিতার নামটি যেমন অসাধারণ তেমনি পুরো কবিতাটি ছন্দ মিলিয়ে রাতের চাঁদের আলোর অনুভূতিটা খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। ধন্যবাদ আপু দারুন একটি কবিতা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।

 yesterday 

আপু আপনার সুন্দর সুন্দর গঠনমূলক সাবলীল মাধুর্যপূর্ণ মন্তব্য আমাকে অনেক বেশি অনুপ্রাণিত করে। আপনিও খুবই চমৎকার চমৎকার কবিতা লিখে এবং শুনিয়ে সব সময় আমাদেরকে মুগ্ধ করেন। আর সেজন্য আপনাকে এত এত ভালোবাসা💕

 yesterday (edited)

ভীষণ সুন্দর লিখেছ চাঁদের আলোয় কবিতাটি। চাঁদের জ্যোৎস্না যেন পাঠকদেরও ভিজিয়ে দিয়ে গেল নিরন্তর। কবিতাটি পালকের মত নমনীয় ও কোমল। অবিরাম জ্যোৎস্না মাখা রাতে সৃষ্টিশীল মানুষেরা জীবন্ত হয়ে ওঠেন। তোমার কবিতাও তোমার সেই দিকটিই তুলে আনলো। সৃজন বজায় থাকুক। চাঁদের ছবিটাও কবিতার সাথে অনবদ্য সংযোজন

 yesterday 

তোমার সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য আমাকে অনেক বেশি অভিভূত করেছে প্রিয় দাদা।
কবিতা যেন রক্ত ধারার মতো বয়ে চলে শরীরে।
আর সেটা যেমনই হোক ভালো কিংবা মন্দ। তোমার কাছে ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।

আর চাঁদের এই ছবিটা তুলেছিলাম দীঘা সমুদ্র সৈকতে। সেদিন রাতে চাঁদ বুঝি আমাকে উঁকি দিয়ে দেখছিল। আর তাই ওকে ক্লিক করে রেখে দিয়েছি।
মন্তব্যে তোমার ছোট্ট একটি বানান ভুল হয়েছে।
আমারও খুব হয় এরকমটা। সময় সুযোগ হলে দেখে নিও। সব সময় খুব ভালো থেকো দাদা,,,

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 62579.62
ETH 3455.51
USDT 1.00
SBD 2.53