ভ্রমনঃদিনাজপুরে একদিন।
শুভেচ্ছা সবাইকে।
কেমন আছেন সবাই? আশাকরি ভালো আছেন।আমিও ভালো আছি।প্রত্যাশা করি সবাই সবসময় ভালো থাকেন,নিরাপদে থাকেন। আজ ১৪ই মাঘ ,শীতকাল,১৪৩১ বঙ্গাব্দ। ২৮শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ। আজ একটি ভ্রমন পোস্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
বন্ধুর, বর্তমানে আমি গ্রামের বাড়ি পার্বতীপুরে অবস্থান করছি। এক সপ্তাহের মতো থাকবো আশাকরি। হাড় কাঁপানো শীত অনুভূত হচ্ছে। আমি আসার পর কিছুটা সময়ের জন্য হলেও সূর্য উঠছে। তাই দিনের বেলা কিছু্টা ঠান্ডা কম অনুভূত হচ্ছে। কিন্তু রাতের বেলায় প্রচন্ড ঠান্ডা। স্যুয়াটার,চাদর ও মোজা পরে থাকতে হচ্ছে।পানি ব্যবহার করতে সব চেয়ে বেশি ভয় লাগে। যদিও গরম পানি খাওয়া ও ব্যবহার করা হচ্ছে। আমি ফ্রেব্রুয়ারী মাসেই সাধারনত গ্রামের বাড়ি আসি। তবে হঠাৎ করে আমার শ্বশুর অসুস্থ হয়ে পরায় আসতে হলো। এসেই তো ঠান্ডার কবলে পরলাম। তবুও রক্ষা যে সূর্য উঠছে আমি আসার পর। এসে দেখলাম আমার শ্বশুর বেশ ভালই আছেন। টেস্ট এ তেমন কিছু সমস্যা নেই। তবে ডায়াবেটিস কিছুটা বেশি।এক্টু হাটাচলা করলেই সুস্থ্য থাকবেন, বলেছেন ডাক্তার। তিনি তাই করছেন। যদিও ঠান্ডার কারনে নিয়ম মেনে হাঁটছেন না। তবে ভালই আছেন। সবাই আমার শ্বশুরের জন্য দোয়া করবেন. তিনি যেনো দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেন।
বাড়িতেই এসে জানতে পারলাম তিনি আমার শাশুড়িকে নিয়ে ওমরা করতে যেতে চান। আমার শ্বশুর অবশ্য ২০১৩ সালে হজ্জ্ব করেছেন। তখন আমার শাশুড়ি হজ্জ্ব করেননি। তাই তিনি তাকে নিয়ে এবার ওমরা হজ্জ্ব করতে যেতে চাইছেন। এরই মধ্যে তাদের দু'জনেরই পাসপোর্ট এর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য দিনাজপুর যেতে হবে। এর আগে একবার দিনাজপুরে গিয়েছিলাম। এবার শাশুড়ি তাদের সাথে যেতে বলায় রাজি হয়ে গেলাম। ঠিক হলো ২৭ জানুয়ারী সকাল সকাল আমরা দিনাজপুরের উদ্দেশ্য রওনা দিবো। গাড়িতে যেতে ৫০ মিঃ থেকে ১ ঘন্টা সময় লাগবে। আর ট্রেনে যেতে প্রায় দের ঘন্টা লাগবে।তাই আমরা গাড়িতেই রওয়া দেবো ঠিক করলাম। তাহলে তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করে ফেরা যাবে।সকাল সকাল গাড়ি চলে আসে বাসায়। আমরা সকাল ৯,৩০ মিঃ রওয়ানা দিয়ে ১০,৩০ মিঃ পাসপোর্ট অফিসে পৌছে গেলাম। পাসপোর্ট অফিসে পৌঁছেই আমার দেওর সকল কাগজ পত্র সহ অফিস স্টাফের সাথে কথা বললেন। আগেই অবশ্য অফিস নিয়ম মেনে অবহিত করা ছিল। তার পরেও কাজ শেষ করতে প্রায় ২ ঘন্টা সময় লাগলো। এই সময়ের মধ্যে আমি এল জি আর ডি অফিসে ঢুকে পরলাম ফটোগ্রাফি করতে। এল জি আর ডি অফিস পারপোর্ট অফিস এর অপোজিটেই অবস্থিত। অফিস ভবনের সামনে বেশ সুন্দর বাগান করা। আর ভবন এরিয়া বেশ পরিস্কার। আপনারদের সাথে শেয়ার করবো বলে ফটোগ্রাফি করছিলাম ভবনের। পরে কর্তব্যরত গার্ড নিষেধ করায় আর বেশি ফটোগ্রাফি করা সম্ভব হয়নি। তবে ফুলের ফটোগ্রাফি করার সুযোগ দিলো। সেখান থেকে কিছু ফুলের ফটোগ্রাফি করেছি। যা আপনাদের সাথে গতকাল শেয়ার করেছি। পাসপোর্ট অফিসের আশে পাশে ঘুরতে ঘুরতে আমার শ্বশুর-শাশুড়ির কাগজ পাসপোর্ট অফিসের কাজ শেষ হয়ে যায়। কাজ শেষ করতে করতে প্রায় ১টা বেজে যায়। পাসপোর্ট অফিস থেকে বের হয়ে আমরা একটি হোটেলে দুপুরের খাবার খেয়ে নেই। কিছুটা রেস্ট করার পর আমরা রামসাগর ও জাতীয় উদ্যান দেখার জন্য রওনা দেই। রাম সাগরে ঢোকার এন্ট্রি ফি প্রতি জন ২০ টাকা আর মাইক্রো ভাড়া ৩০০ টাকা নেয়। বেশ বড় এরিয়া নিয়ে রামসাগর। দিনাজপুর শহর থেকে আট কিলোমিটার দূরে তাজপুর গ্রামে অবস্থিত। বাংলাদশের সবেচেয়ে বড় দীঘি রামসাগর। রামসাগরের লোককথা ও ইতিহাস নিয়ে আর একদিন বিস্তারিত লেখার ইচ্ছে আছে।আমরা মাইক্রো নিয়ে ও পায়ে হেটে রামসাগরের চারপাশ ঘুরে বেড়িয়েছি।
রামসাগরের পাড়ে একটি ছোট চিড়িয়াখানা আছে। যেখানে রয়েছে অনেকগুলো চিত্রা হরিণ।আর তিনটি খাঁচায় রয়েছে,অজগর সাপ,বানর ও হনুমান । তবে দেখে বোঝা যাচ্ছে তেমন যত্ন নেয়া হয় না পশু পাখিগুলোর। অপরিস্কার প্রতিটি খাঁচা।তবুও লোকজন আসে এই রামসাগর ও চিড়িয়াখানা দেখতে। ওয়ার্কিংডেয় থাকায় কোন পিকনিক দল দেখতে পাইনি। তবে ছুটির দিনে বেশ লোক সমাগম হয় বলে জানালো বিভিন্ন বিক্রেতারা।কিছুটা সময় অবস্থান করে আমরা বিকাল ৪টায় বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেই। আসার সময় শহরের রাস্তায় বেশ জ্যাম ছিল। আর তা ছিল চার্জার গাড়ি্র। রাস্তা দখল করে চলছে এই চার্জার গাড়ি। ব্যক্তিগত গাড়ি ও পাবলিক বাস তেমন একটা দেখতে পেলাম না। পরে দেওর এর কাছ থেকে জানলাম যে,,এই জেলা শহরে পাবলিক বাস নেই। শুধু আন্তঃজেলা পাবলিক বাস আছে। এই চার্জার গাড়িই যাতায়ত এর বাহন হিসাবে সবাই ব্যবহার করে। আমারা বাড়িতে পৌছাই সন্ধ্যা ৫,৩০ মিঃ।যদিও কোন কাজে কোথায় গেলে তেমন বেড়ানো যায় না। তবে কিছুটা হলেও ঘুরে দেখেছি শহরটি।ইচ্ছে আছে এরপর দিনাজপুর কেবল ঘুরার জন্য যাবো।একটি রাজবাড়ি আছে দিনাজপুরে যা দেখা হয়নি। কিন্তু কান্তজিউ মন্দির আমার দেখা হয়ে গেছে আগেই। বেশ ভালো লেগেছে দিনাজপুর শহর। আজ এই পর্যন্তই। আবার দেখা হবে অন্য কোন ব্লগ নিয়ে। সবাই ভালো থাকুন-নিরাপদে থাকুন। শুভ রাত্রি।
পোস্ট বিবরণ
শ্রেনী | ভ্রমন | |
---|---|---|
পোস্ট তৈরি | @ selina 75 | |
তারিখ | ২৮শে জানুয়ারি, ২০২৫ ইং | |
লোকেশন | পার্বতীপুর,দিনাজপুর |
আমার পরিচয়
আমি সেলিনা আখতার শেলী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম শহরে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি। স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা। এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Daily task
https://x.com/selina_akh/status/1884301455626231942
পাসপোর্ট এর মেয়াদ বৃদ্ধি করার দৌলতে টুকটাক ঘোরাফেরা হয়েছে তবে অফিশিয়াল কার্যক্রমের ক্ষেত্রে যদি সেখানে পরিচিত কোন লোক থাকে তবে অনেকটাই সুবিধা পাওয়া যায়। চিড়িয়াখানা সহ রামসাগর লেক ঘুরে দেখেছেন আর সেই বিষয় গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া। এ ধরনের কাজে পরিচিত লোক থাকলে বেশ সুবিধা পাওয়া যায়। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
প্রথমের আপনার শ্বশুড়ের সুস্থতা কামনা করি আপু। আশা করছি দ্রুতই নিয়ম মেনে চলে ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ এ নিয়ে আসতে পারবেন। যেহেতু মনের জোর রয়েছে উনার ওমরা করতে যাওয়ার। আপনারা পাসপোর্ট এর কাজ শেষ করে পরে আবার রামসাগর ও ঘুরে এসেছেন সুযোগে, বেশ ভালো করেছেন। ওখানে বিকেলের সময়টা কাটাতে পারলে বেশ ভালো লাগে। তবে আমি ভাবছি কি পরিমাণ শীতল বাতাস আপনারা পেয়েছেন এই শীতের মাঝে ওখানে, সেই কথা! 🫢
শ্বশুরের অসুস্থতার জন্য আসতে হলো। বেশ ঠান্ডা আপু। তবে দিনে রোদ হচ্ছে। সেটাই রক্ষা। ধন্যবাদ আপু।
বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। খুবই ভালো লাগলো আপনার ভ্রমণের এই পোস্টটি পড়ে। আর বিশেষ করে রামসাগরের পাশে অবস্থিত চিড়িয়াখানার চিত্রা হরিণের ফটোগ্রাফিটি দেখতে দারুণ লাগলো। সব মিলে অনেক সুন্দর একটি ভ্রমণের পোস্ট আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।
কাজে গিয়ে কিছুটা ভ্রমন। এক ডিলে দুই পাখি মারা। ধন্যবাদ ভাইয়া।