|| স্কুলের বন্ধুদের সাথে কাটানো একটি দিন || ১০% বেনিফিট @shy-fox এর জন্যে
সকলকে নমস্কার জানিয়ে আমি শুরু করছি আমার আজকের লেখা। আমার আজকের বিষয়বস্তু আরো একটি পিকনিক। কিন্তু আজকের পিকনিক টি বাকিগুলোর থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। কারণ এই পিকনিক টি ছিল আমার স্কুলের বন্ধুদের সাথে। যাদের সাথে গত চার বছর থেকে দেখা-সাক্ষাৎ বা কথোপকথন কমতে শুরু করেছিল।
পিকনিক টা হঠাৎ করেই হয়েছে বলতে পারেন। প্রত্যেক বছরই পিকনিক করবো বলে একটা রব ওঠে ঠিকই,কিন্তু তা আর সম্পন্ন হয় না।
গতবছরও করবো করবো করে ২৮ থেকে ৩০ জন আগ্রহী ছিল ।কিন্তু শেষে গিয়ে সবাই আস্তে আস্তে তাদের মতামত চেঞ্জ করে পিকনিক ক্যান্সেল করে দেয় এবং সর্বশেষে আমরা মাত্র চারজন থাকি এবং সেই চার জন মিলে ছোটখাটো পিকনিক মতন করি। এই বছরও সবাই ভেবেছিল ওরকমই কিছু একটা হবে, কিন্তু না শেষ পর্যন্ত এই বছর যথেষ্ট ভালো পিকনিক হয়।
দিন দশেক আগে থেকেই দু চারজন মিলে আমাদের স্কুলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পিকনিকের জন্য বলাবলি করতে থাকে।
নতুন একটা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি হয়, যারা করতে ইচ্ছুক তারা সবাই সেই গ্রুপে এড হয়।
শুরুতে ৩০-৩৫ জন সেই গ্রুপে এড হয়। এরপর সবার কাছ থেকে ২-৩ টি ডেট নেওয়া হয় পিকনিকের জন্য। সবাই যে যার ফ্রী ডেট সাজেস্ট করে ।এইভাবে যেই ডেটে সবথেকে বেশি ভোট পড়ে সেটিই স্থির হয় মোটামুটি ভাবে।
ফাইনাল হওয়ার ডেটটি যাদের সাথে এডজাস্ট হলো না তাহলে এক একেক গ্রুপ লেফট করতে থাকে এইভাবে ১৬ জন গ্রুপে থেকে যায়।
এরপর সবার কাছ থেকে রান্নার আইটেম জানা হয় ,পিকনিক স্পট ঠিক করা হয় ।দুই তিন দিন ধরে সবাই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এটাই ডিসকাস করল।
এরপর সেই দিনের আগের দিন এলো বাজার-হাট এর পালা। পিকনিকের আগের দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি চলল বাজারহাট করা এবং বাসন-পত্র গোছানো ,সব রেডি করা, বাসনপত্র স্পটে নিয়ে যাওয়ার গাড়ি ঠিক করা, সাউন্ড সিস্টেম ব্যবস্থা করা এই সমস্ত।
রান্নার আইটেম এর মধ্যে ঠিক হয় ভাত, ভেজ ডাল, আলু ভাজা, মুরগির মাংস এবং সবশেষে দুটো করে নতুন গুড়ের রসগোল্লা আর টিফিনে ডালপুরি এবং তরকারি।
পিকনিকের দিন সকালবেলা আমার আমার দায়িত্ব ছিল মাংস এর দোকানে গিয়ে মাংস কাটিয়ে নেওয়ার।
সময়ের মধ্যে করার জন্য সকাল সাতটায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে আমি সোজা মাংসের দোকানে চলে যাই,সাথে আরেকটি বন্ধুকে নিয়ে। তারপর আমার কাজ হয়ে গেলে সবাই আমরা মিটআপ পয়েন্টে চলে যাই। আমাদের মিটআপ পয়েন্ট ছিল আমাদের স্কুলের সামনে। এরপর একে একে সবাই যে যার দায়িত্ব অনুযায়ী কাজ করে সেখানে আসে। কেউ বাজারহাট নিয়ে আসে, কেউ বাসনপত্র নিয়ে আসে ,কেউ সাউন্ড বক্স নিয়ে আসে।
নির্ধারিত সময় থেকে আধঘন্টা দেরী হয় সবার আসতে এবং সবাই আসার পরে আমরা আমাদের পিকনিক স্পটের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যাই।
|| পিকনিকের স্পট👇🏻 ||
অধিকাংশ বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে কয়েক বছর পর দেখা হয়ে খুব ভাল লাগল ।
শুরুতেই আমরা ডালপুরি দিয়ে সকালের টিফিন খেয়ে নিলাম ।তারপর আস্তে আস্তে আমরা রান্নার দিকে মনোযোগী হলাম । সবাইকে আলাদা আলাদা কাজ ভাগ করে দেওয়া হলো ।কেউ মাংস ধোবে কেউ সবজিতে ধোবে কেউ সবজি কাটাকাটি করবে এই সমস্ত।
মোটামুটি এক দেড় ঘন্টা লাগল সব রেডি করতে তারপর শুরু হল রান্নার পর্ব। রান্না করতে জানে এবং ভালোবাসে এরকম দুইজনকে রান্নার মূল দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বাকি আমরা ছিলাম তাদের হেল্পার।
রান্না করতে করতে অনেক আনন্দ করা হলো ,নাচানাচি করা হলো, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে স্কুল লাইফের পুরনো স্মৃতিচারণ করা হলো, সবার পেছনে লাগা হলো।
সব থেকে মজার বিষয় হচ্ছে অনেক বন্ধুকে দেখলাম তাদের মধ্যে অনেক পরিবর্তন এসেছে, যেই ছেলেটা স্কুলে স্যারদের কাছে পড়া না পারার জন্য প্রায়ই বকা খেতে এখন তার কাছে অন্য বন্ধু ফোন করে পড়া জিজ্ঞেস করছে এবং সে কোন দ্বিধা বোধ না করে পিকনিকের মধ্যেই তাকে বুঝিয়ে দিচ্ছে, বা ধরুন যেই ছেলেটা স্কুল ছুটির পরে স্কুলের মাঠে ঘন্টার পর ঘন্টা ক্রিকেট বা ফুটবল খেলত বাড়ির লোকে চিন্তা করতে পারে তা না ভেবে ,সেই ছেলেটা পিকনিক স্পটে পৌঁছে বাড়িতে ফোন করে দিচ্ছে -যে সে ঠিক মতন চলে এসেছে। স্কুলে যেই ছেলেটার পেছনে লাগলে বারবার করে সে স্যারদের কাছে নালিশ করত ,একা একা কান্নাকাটি করত সেই ছেলেটার পেছনে আজকে লাগার পরেও সে হাসি মুখে সবকিছু মেনে নিচ্ছে এবং সেউ আমাদের সাথে মজা করছে। যে ছেলেটা স্কুলে পড়ার সময় তার ভবিষ্যৎ নিয়ে বিন্দুমাত্র সিরিয়াস ছিল না সে আজকে আমাকে বোঝাচ্ছে,'ভাই ভেঙে পরিস না ঠিক পারবি তুই, চেষ্টা করে যা, আমরা পাশে আছি।
যাইহোক, তো এভাবেই অনেক বন্ধু এর মধ্যেই পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম এবং খুব ভালো লাগলো সেগুলো দেখে এরপর রান্নাও প্রায় শেষ হয়ে এসেছিল আমরা সবাই মিলে দুইবারে খেতে বসলাম।
প্রথমে আট-দশজন খেতে বসলো আমরা খাবার পরিবেশন করলাম তারপরে আমরা বাকিরা বসলাম এবং তারা খাবার পরিবেশন করলো।
আমাদের যে দুটি বন্ধু রান্না করেছিল অসাধারণ হয়েছিল রান্নার স্বাদ, মনে হল যেন পুরো বাড়ির খাবার খাচ্ছিলাম।
এরপর খাওয়া-দাওয়া করে সব সারতে সারতে বিকেল হয়ে গেছিল, তারপর বাকি কাজগুলো যেমন বাসনপত্র ধোয়া সব পরিষ্কার করা এগুলো করলাম।
দিয়ে তারপরে সবাই মিলে একসাথে যে যার বাড়ি চলে গেলাম।
বন্ধুরা মিলে খুব ভালো একটি দিন কাটালাম সেদিনকে, সবাই খুব আনন্দ পেয়েছি মজা করেছি।
আজ এখানেই আমি আমার লেখা শেষ করছি।
স্কুল বন্ধুরা মানেই মজা, মাস্তি সয়তানি ইত্যাদি লেগেই থাকে। আপনার স্কুল বন্ধুদের সাথে কাটানে সময়টুকু অনেক মধুর ছিল। দোয়া করি সারাজীবন যেন এই বন্ধুত্বতা অটুট থাকে
হ্যাঁ ভাই ওই কিছু ঘন্টার জন্য মনে হলো যেন ছেলেবেলা ফিরে পেয়েছিলাম, সত্যিই অনেক মধুর ছিল সময়টুকু।
ভালো থাকবেন আপনিও।
ভাইয়া আপনি ক্লাস করে লেভেল ওয়ান এর পরিক্ষা টি সম্পন্ন করে নিন।
দিদি,আমার লেভেল ওয়ানের লিখিত দেওয়া হয়ে গেছে।
মৌখিক পরীক্ষা আগামী শনিবার লেভেল ওয়ানের ক্লাস এ দেবো।
স্কুল জীবনের বন্ধুদের সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক অন্যরকম থাকে।আজও আমার জীবনের স্কুল জীবনের বন্ধুরাই সেরা।আপনি আপনার স্কুল জীবনের বন্ধুদের নিয়ে অনেক সুন্দর সময় পার করছেন। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল দাদা।