আসসালামু আলাইকুম
সম্মানিত স্টিমিট ব্লগার ভাই ও বোনেরা আসসালামু আলাইকুম। আপনারা কেমন আছেন বন্ধুরা। আশা করি দিনের শুরুতেই বেশ ভালো সময় যাচ্ছে। যদি দিনের শুরুটা খুব সুন্দরভাবে শুরু হয় তাহলে বোঝা যায় যে পুরো দিনটা ভালো যায়। আজকে আমি কিছুটা সুস্থ বোধ করছি তবে বেশি না একটু। আসলে বোঝা যায় না কখন অসুস্থতা বেড়ে যায় আবার কখন ভালো লাগে। সবাইকে শুভেচ্ছা ও স্বাগতম জানাচ্ছি আমার আজকের নতুন ব্লগে। বন্ধুরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি আপনাদের সাথে ভিন্ন ধারাবাহিকতায় ভিন্ন ভিন্ন পোস্ট শেয়ার করে নিতে। যদিও অসুস্থতার কারণে ইউনিক কিছু তৈরি করতে পারছিনা এবং ভালোভাবে কাজের এনগেজমেন্ট ধরে রাখতে পারছি না।
যদি ভালো লাগে তাহলে চলে আসি আপনাদের সাথে ব্লগ শেয়ার করতে। যেহেতু প্রতি সপ্তাহে একটি করে রেসিপি পোস্ট শেয়ার করি। তাই ভাবলাম আজকে আপনাদের সাথে একটি চিকেন রেসিপি শেয়ার করি। আমাদের বাসায় বিভিন্ন সময় সামুদ্রিক মাছ রান্না করা হয়ে থাকে। আর বাচ্চারা সব সময় একই জিনিস দুইবার খেতে চাই না। তাই মাঝেমধ্যে খাবারের পরিবর্তন এনে দিতে হয়। আরে মুরগির মাংস একইভাবে রান্না করলে খেতে ভালো লাগে না। বাচ্চারা বিশেষ করে মুরগির মাংস খেতে খুব বেশি পছন্দ করে। তাছাড়াও চিংড়ি মাছ খেতে অনেক বেশি পছন্দ করে। আমি চেষ্টা করি মুরগির মাংস বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে রান্না করে তাদেরকে খেতে দিতে।
গতকালকে আমি এই রেসিপিটি করেছিলাম। আমি একটু ভিন্নভাবে রেসিপি তৈরি করেছি যাতে বাচ্চারা খেতে স্বাদ পাই। সব সময় একই পদ্ধতিতে রান্না করতে কেমন জানি লাগে। তো বন্ধুরা আমি মুরগির মাংসের ভুনা রেসিপিটি আপনাদের সাথে শেয়ার করে নিলাম। আশা করি আমার আজকের শেয়ার করা রেসিপি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। ঘরে থাকা বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে তৈরি করেছি। খেতে বেশ ভালো হয়েছে আর বাচ্চারা অনেক প্রশংসা করেছে। আমি আজকে সেই রেসিপিটি আপনাদেরকে প্রতিটি ধাপ উপস্থাপন করে নিব কিভাবে তৈরি করেছি। তাহলে বন্ধুরা আর দেরি না করে শুরু করে নেওয়া যাক—
রেসিপির প্রয়োজনীয় উপকরণ সমূহঃ |
বন্ধুরা আপনারা দেখতে পাচ্ছেন প্রথমে আমি উপকরণসমূহ পরিমাণ মতো উল্লেখ করেছি এবং পরিমাণ মত আপনাদেরকে নিয়ে দেখিয়েছি। মুরগির মাংস পরিষ্কার করে ধুয়ে নিয়েছি এবং অন্যান্য উপকরণ সমূহ সাজিয়ে নিয়েছি।
মুরগির মাংস-৫০০ গ্রাম।
টমেটো- ১ টি।
পেঁয়াজ - ২ টি।
রসুন - ৩ চামচ।
আদা বাটা- ৩ চামচ।
বাদাম বাটা- ১ চামচ।
সরিষ বাটা- ২ চামচ।
শুকনা মরিচ - ৩ চামচ।
ধনে গুঁড়া, জিরে গুঁড়া, হলুদ গুঁড়া - এক চামচ করে।
গরম মসলা - ২ চামচ।
লবঙ্গ, এলাচ, দারুচিনি, তেজ পাতা - অল্প করে।
তরল দুধ- হাফ বাটি।
লবণ- স্বাদমত।
সরিষার তেল- পছন্দমত।
মুরগির মাংসের ভিন্ন স্বাদের ভুনা রেসিপি তৈরীর ধাপ সমূহঃ
রান্নার ধাপ-১
আমি যেহেতু আপনাদেরকে উপকরণ সমূহ পরিমাণ মতো উল্লেখ করে দেখিয়েছি এখন সরাসরি রান্নার ধাপে চলে যাব। রান্না করার জন্য একটি পাত্র বসিয়ে দিয়েছি। তাতে পরিমাণ মতো তেল দিয়ে গরম হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। যখন গরম হয়ে আসে তখন গরম মসলা গুলো তেলের মধ্যে ছেড়ে দিয়েছি। এরপরে নেড়েচেড়ে ভেজে নিয়ে পেঁয়াজ দিয়েছি।
রান্নার ধাপ-২
পেঁয়াজ দেওয়ার পরে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন আমি কেটে রাখা টমেটো দিলাম। যাতে ভালোভাবে সিদ্ধ হয়ে পেস্ট হয়ে যায় সেজন্য। সাথে দিয়ে দিয়েছি রসুন বাটা।
রান্নার ধাপ-৩
এরপরে দিয়ে দিলাম অন্যান্য উপকরণ সমূহ বিশেষ করে বাটা মসলা গুলো। আমি এর মধ্যে টমেটোর খোসা ছাড়িয়ে নিয়েছি এবং মাংস দিয়ে দিলাম। ভালোভাবে মাংসগুলো কষিয়ে নিতে হবে সব মসলার সাথে অনেকক্ষণ।
রান্নার ধাপ-৪
আপনারা দেখতে পাচ্ছেন বন্ধুরা আমি মাংসগুলোকে অনেকক্ষণ কষিয়ে নিয়েছি। সেই সাথে দিয়ে দিলাম মরিচ, হলুদ, লবণ, ধনে গুঁড়া, জিরা গুঁড়া আর গরম মসলার গুঁড়া।
রান্নার ধাপ-৫
আরো কিছুক্ষণ সিদ্ধ করার পরে দিয়ে দিলাম নিয়ে রাখা হাফ বাটি তরল দুধ। তরল দুধ দেওয়ার পরেই ঢাকনা দিয়ে সিদ্ধ করে নিতে হবে অনেকক্ষণ যাতে সব উপকরণ ভালোমতো সিদ্ধ হয়ে আসে।
রান্নার ধাপ-৬
যখন পুরোপুরি সিদ্ধ হয়ে আসে তখন এক চামচ ঘি দিয়ে দিলাম। ঘি দেওয়ার পরে নেড়েচেড়ে দিয়ে আরো দুই এক মিনিট সিদ্ধ করে নিলাম। যখন পারফেক্ট হয়ে আসে তখন চুলা বন্ধ করে দিয়ে নামিয়ে নিলাম পরিবেশনের জন্য।
রেসিপির পরিবেশনা
আশা করি বন্ধুরা আমার আজকের শেয়ার করা রেসিপিটি ভালো লাগবে। রেসিপিটি খুবই সুস্বাদু ছিল। যেহেতু মুরগির মাংসের মাটন ভুনা করেছি দারুণ হয়েছে খেতে। মাখা মাখা করে করার কারণে গরম ভাতের সাথে খুবই সুস্বাদু ছিল। বিশেষ করে বাচ্চারা অনেক পছন্দ করেছে। মাঝে মধ্যে যদি ভিন্ন ভাবে রান্না করা হয় খাবারের স্বাদ অনেক বেড়ে যায় খেতেও খুব ভালো লাগে। একই রেসিপি বারবার একই রকম রান্না করে খেতে ইচ্ছে করে না। তাই আমরা চেষ্টা করে থাকি বিভিন্নভাবে বিভিন্ন পদ্ধতিতে রান্না করে খাওয়ার। বন্ধুরা আপনাদের কেমন লেগেছে জানালে অনেক ভালো লাগবে। সময় দিয়ে দেখার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
ডিভাইসের নাম | Wiko,T3 |
মডেল | W-V770 |
ফটোগ্রাফার | @samhunnahar |
ক্যাটাগরি | রেসিপি |
আজ এখানে আমার লেখা সমাপ্তি করছি। আবার উপস্থিত হব নতুন কোন ব্লগ নিয়ে। সবাই সুস্থ থাকবেন আর ভাল থাকবেন।
💘ধন্যবাদ সবাইকে💘
@samhunnahar
আমার পরিচয়
আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে ভালবাসি। আমি রান্না করতে পছন্দ করি। ভ্রমণ আমার কাছে অনেক ভাল লাগে। আমি সব ধরনের ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি গান গাইতে এবং কবিতা আবৃত্তি করতে ভীষণ ভালবাসি। আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।
মুরগির মাংসের ভিন্ন স্বাদের ভুনা রেসিপিটি।ভীষণ চমৎকার সুন্দর হয়েছে আপনার রেসিপিটি। আসলে প্রায় প্রতিদিন মাছ মাংস খেতে খেতে রুচি থাকে না কিন্তুু যদি ভিন্ন স্বাদে রান্না করা হয় তাহলে খুব ভালো লাগে খেতে।আপনার রেসিপিটি ভীষণ চমৎকার সুন্দর হয়েছে। ধাপে ধাপে খুব সুন্দর করে মুরগির মাংস রেসিপি আমাদের সাথে ভাগ করে নিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে সুস্বাদু রেসিপিটি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।
হ্যাঁ আপু আপনিও রান্না করে দেখবেন এভাবে খেতে অবশ্যই ভালো লাগবে।
মুরগির মাংস একইভাবে রান্না না করে আলাদা আলাদা রেসিপি রান্না করলে খেতেও খুবই ভালো লাগে আপু। আপনার রান্না করা মুরগির মাংসের রেসিপি টা দেখে বেশ লোভনীয় লাগছে এবং গ্রেভি দেখেই তো খেতে ইচ্ছে করছে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু মুরগির মাংসের মজাদার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপু যেহেতু আমার রান্না করা রেসিপিটি আপনার অনেক ভালো লেগেছে।
মুরগির মাংস দিয়ে অনেক সুন্দর একটি রেসিপি তৈরি করেছে। রেসিপি তৈরির প্রতিটি ধাপে ছবি সহ এত সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন যা পড়ে আপনার রেসিপিটি সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেয়েছি।এতো সুন্দর একটি রেসিপি আর কালারটি দেখেও মনে হচ্ছে অনেক মজাদার ও টেস্টি ছিল।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু সময় দিয়ে আমার রেসিপিটি দেখার জন্য।
ঠিকই বলেছেন আপু প্রতিনিয়ত একইভাবে রান্না করলে খাবারে অরুচি চলে আসে ।বাচ্চারা সেটা খেতে চায় না ।আজ আপনি বেশ ভিন্নভাবে মুরগির মাংসটি রান্না করেছেন দেখে বেশ ভালো লাগলো ।খেতেও নিশ্চয়ই খুবই চমৎকার হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।
একদম আপু একই ধরনের রেসিপি বার বার করলে একঘেয়েমি চলে আসে।
কমিউনিটিটা যদি আমার মহল্লা হইত, যারা এমন সুন্দর সুন্দর রেসিপি পোস্ট করে তাদের বাসায় যাইয়া খাইয়া আসতাম! কি দারুণ রান্না! আহ!
বাহ বেশ আইডিয়া তাহলে এখনো চলে আসতে পারেন আপনি খুশি হব ভাইয়া।
কক্সবাজার ম্যালা দূর! তয় ওদিকে গেলে অন্য হিসাব।
আপু, গতকালকে আপনি দারুন একটি রেসিপি তৈরি করেছিলেন। আসলেই আপু সবসময় একই ভাবে রান্না না করে মাঝে মাঝে ভিন্নভাবে রান্না করা যেতেই পারে। যাইহোক, ভিন্নভাবে আপনার এই চিকেন রান্নার পদ্ধতিটি আমার বেশ ভালো লাগলো। এত সুন্দর ভাবে রেসিপিটি তৈরি করে ধাপে ধাপে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার এই মুরগির মাংসের ভুনা রেসিপি দেখে নিঃসন্দেহে অনেক সুস্বাদু হয়েছে বলে মনে হয়৷ যেভাবে আপনি এটি তৈরি করেছেন এবং শেষ পর্যন্ত যেভাবে খুব সুন্দরভাবে ডেকোরেশন করেছেন এটিকে এখনি খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে৷ একইসাথে এখানে আপনি ধাপে ধাপে যেভাবে রেসিপি তৈরি করেছেন তা খুব সুন্দরভাবে শেয়ার করেছেন৷ অসংখ্য ধন্যবাদ৷
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আরিব্বাস। আপনার শেয়ার করা মুরগীর রেসিপি পুরো জমে গেল। দেখেই খিদে পাচ্ছে। অসাধারণ ভাবে ব্যাখ্যা করলেন রেসিপিটি। দেখেই মনে হচ্ছে স্বাদে গন্ধে অতুলনীয় হয়েছে। শুধু খাওয়াটাই বাকি রয়ে গেল। দুর্দান্ত পোস্ট। এমন পোস্ট বারবার দেখার অপেক্ষায় রইলাম। শুভেচ্ছা নেবেন।
মাঝে মাঝে চেষ্টা করি ভিন্ন স্বাদের রান্না করতে। কারণ একই ধরনের খাবার বারবার খেতে ইচ্ছে করে না। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ খুশি হলাম।
মুরগির মাংস ভুনা রেসিপির মধ্যে আপনি আবার তরল দুধ দিয়েছেন। এটা বেশ ইউনিক লেগেছে আমার কাছে। আপনার রেসিপি টার কালার টা দেখে বেশ ভালো লাগছে। দারুণ তৈরি করেছেন রেসিপি টা আপু। রেসিপি টার প্রতিটা ধাপ দারুণ উপস্থাপন করেছেন। সবমিলিয়ে দারুণ ছিল আপনার রেসিপি টা। ধন্যবাদ আমাদের সাথে রেসিপি টা শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।
এভাবে তরল দুধ দিয়ে রান্না করলে খেতে ভিন্ন ধরনের একটি স্বাদ পাওয়া যায়।